Class Nine Model Activity Task Bengali
January, 2022
নবম শ্রেণি মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্ক বাংলা
জানুয়ারি, ২০২২
করোনা পরিস্থিতিতে যখন দীর্ঘদিন বিদ্যালয় বন্ধ তখন শিক্ষার্থীদের নিরবিচ্ছিন্ন শিক্ষা গ্রহণ অব্যাহত রাখতে স্কুল শিক্ষা দপ্তর থেকে ২০২২ নতুন শিক্ষাবর্ষে মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্কের ব্যবস্থা করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে এই মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্কের উত্তরগুলি খাতায় লিখে তাদের বিদ্যালয়ের নির্দেশানুসারে নিজস্ব বিদ্যালয়ে জমা করতে হবে।
শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্কের উত্তরগুলির সমাধানের সুবিধার্থে সহায়তা প্রদান করা হলো।
১) ঠিক উত্তরটি বেছে নিয়ে লেখোঃ ১*৩=৩
১.১) ‘অম্বিকামঙ্গল গান শ্রী কবিকঙ্কণ’। ‘অম্বিকা’ হলেন- গ) দেবী চন্ডী
১.২) ‘সঘনে চিকুর পড়ে বেঙ্গ-তড়কা বাজ’। এক্ষেত্রে ‘চিকুর’ শব্দের অর্থ- গ) বিদ্যুৎ
১.৩) যাঁর নাম স্মরণ করলে বজ্রপাত বন্ধ হয় বলে মানুষের বিশ্বাস, তিনি হলেন- খ) জৈমিনি
২) কমবেশি ২০টি শব্দে উত্তর লেখোঃ ১*৩=৩
২.১) ‘দেখিতে না পায় কেহ অঙ্গ আপনার’।- কেন এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল?
উত্তরঃ কবিকঙ্কন “মুকুন্দরাম চক্রবর্তী” রচিত “চন্ডীমঙ্গল” কাব্যের আখেটিক খন্ডের অন্তর্গত আমাদের পাঠ্য “কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি” কাব্যাংশ থেকে গৃহীত অংশে কলিঙ্গদেশের সমগ্র আকাশ ঘন কালো মেঘে ঢেকে যাওয়ায় কলিঙ্গবাসী নিজেদের অঙ্গ পর্যন্ত দেখতে অসমর্থ হয়েছিল বলে জানা যায়।
২.২) ‘বিপাকে ভবন ছাড়ি প্রজা দিল রড়।।’- প্রজারা কোন বিপাকে পরেছিল?
উত্তরঃ কবিকঙ্কন “মুকুন্দরাম চক্রবর্তী” রচিত “চন্ডীমঙ্গল” কাব্যের আখেটিক খন্ডের অন্তর্গত আমাদের পাঠ্য “কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি” কাব্যাংশ থেকে গৃহীত অংশে কলিঙ্গদেশে প্রলয়ংকর পরিস্থিতিতে প্রবল ঝড় শুরু হলে প্রজারা বিপদ্গ্রস্থ হয়ে তাদের গৃহ ত্যাগ করে পালাতে বাধ্য হয়।
২.৩) কলিঙ্গদেশে একটানা কতদিন বৃষ্টি চলেছিল?
উত্তরঃ কবিকঙ্কন “মুকুন্দরাম চক্রবর্তী” রচিত “চন্ডীমঙ্গল” কাব্যের আখেটিক খন্ডের অন্তর্গত আমাদের পাঠ্য “কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি” কাব্যাংশে জানা যায় যে, কলিঙ্গদেশে ‘নিরবধি’ অর্থাৎ একটানা সাত দিন বৃষ্টি চলেছিল।
৩) প্রসঙ্গ নির্দেশসহ কম-বেশি ৬০টি শব্দে উত্তর লেখোঃ ৩*৩=৯
৩.১) ‘চারি মেঘে জল দেয় অষত গজরাজ’।- ‘চারি মেঘ’ বলতে কী বোঝ? ‘অষ্ট গজরাজ’-এর পৌরাণিক অনুসঙ্গটি কী?
উৎসঃ
কবিকঙ্কন “মুকুন্দরাম চক্রবর্তী” রচিত “চন্ডীমঙ্গল” কাব্যের “আখেটিক খন্ড”-এর অন্তর্গত “কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি আরম্ভ” অংশটি আমাদের পাঠ্য “কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি” নামে গৃহীত হয়েছে। প্রশ্নোক্ত অংশটি এই কবিতার অন্তর্গত।
‘চারি মেঘ’-এর পরিচয়ঃ
‘চারি মেঘ’ বলতে পৌরাণিক মতে বিশেষ চার প্রকার মেঘকে বোঝানো হয়। এই চার প্রকার মেঘ হল সম্বর্ত, আবর্ত, পুষ্কর ও দ্রোণ।
অষ্ট গজরাজের পরিচয়ঃ
‘অমরকোষ’ গ্রন্থে অষ্ট গজরাজ বলতে আটটি হাতির নাম উল্লিখিত হয়েছে। যথা- ঐরাবত, পুন্ডরীক, বামন, কুমুদ, অঞ্জন, পুষ্পদন্ত, সার্বভৌম এবং সুপ্রতীক। এরা দেবরাজ ইন্দ্রের অষ্ট হাতি। এই অষ্ট হাতি তাদের শুঁড় দিয়ে পৃথিবীকে ধরে রেখেছে বলে মনে করা হয়।
৩.২) ‘ভাদ্রপদ মাসে যেন পড়ে থাকা তাল’- কোন্ প্রসঙ্গে উদ্ধৃতিটির অবতারণা করা হয়েছে?
উৎসঃ
কবিকঙ্কন “মুকুন্দরাম চক্রবর্তী” রচিত “চন্ডীমঙ্গল” কাব্যের “আখেটিক খন্ড”-এর অন্তর্গত “কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি আরম্ভ” অংশটি আমাদের পাঠ্য “কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি” নামে গৃহীত হয়েছে। প্রশ্নোক্ত অংশটি এই কবিতার অন্তর্গত।
প্রসঙ্গঃ
কলিঙ্গদেশে যে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সৃষ্টি হয়েছিল তার বর্ণনা প্রদান করতে গিয়ে কবি প্রশ্নোক্ত তাৎপর্যপূর্ণ অংশটি ব্যবহার করেছেন। নিরন্তর সাতদিন ঝড়-বৃষ্টির সাথে কলিঙ্গদেশে প্রবল শিলাবৃষ্টি শুরু হয়। শিলগুলি এতোই বড়ো ছিল যে, সেগুলি কলিঙ্গবাসীদের ঘরের চাল ভেদ করে ফেলেছিল। আর এই প্রসঙ্গটিকেই মধ্যযুগের বিশিষ্ট কবি মুকুন্দরাম চক্রবর্তী ভাদ্র মাসে তাল পড়ার উপমায় উপমিত করেছেন।
৩.৩) ‘চন্ডীর আদেশ পান বীর হনুমান’।- চন্ডীর আদেশে বীর হনুমান কী করেছিল?
উৎসঃ
কবিকঙ্কন “মুকুন্দরাম চক্রবর্তী” রচিত “চন্ডীমঙ্গল” কাব্যের “আখেটিক খন্ড”-এর অন্তর্গত “কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি আরম্ভ” অংশটি আমাদের পাঠ্য “কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি” নামে গৃহীত হয়েছে। প্রশ্নোক্ত অংশটি এই কবিতার অন্তর্গত।
বীর হনুমানের কর্মঃ
দেবী চন্ডী কলিঙ্গদেশে যে প্রবল প্রাকৃতিক দুর্যোগ সৃষ্টি করেছিলেন তাকে আরো ভয়াবহ করে তুলতে রামভক্ত হনুমানকে এক আদেশ প্রদান করেন। দেবী চন্ডীর আদেশে বীর হনুমান কলিঙ্গদেশের সকল মঠ ও অট্টালিকা ভেঙ্গে ‘খান খান’ অর্থাৎ টুকরো টুকরো করে ফেলেন। এরফলে কলিঙ্গবাসীর দুর্ভোগ আরো বৃদ্ধি পায়।
৪) কম-বেশি ১৫০ শব্দে নীচের প্রশ্নটির উত্তর নিজের ভাষায় লেখোঃ ৫
‘কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি’ কাব্যাংশ অনুসরণে প্রবল প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিপর্যস্ত জনজীবনের ছবি কীভাবে ফুটে উঠেছে, তা আলোচনা করো।
উৎসঃ
কবিকঙ্কন “মুকুন্দরাম চক্রবর্তী” রচিত “চন্ডীমঙ্গল” কাব্যের “আখেটিক খন্ড”-এর অন্তর্গত “কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি আরম্ভ” অংশটি আমাদের পাঠ্য “কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি” নামে গৃহীত হয়েছে।
বিপর্যস্ত জনজীবনের পরিচয়ঃ
দেবী চন্ডীর ইচ্ছায় ব্যাধ কালকেতু সাত ঘড়া ধন লাভ করে গুজুরাট নগরি নির্মাণ করলে সেখানে প্রজা স্থাপনের উদ্দেশ্যে দেবী চন্ডী পার্শবর্তী কলিঙ্গদেশে প্রবল প্রাকৃতিক দুর্যোগের সৃষ্টি করেন। আমাদের পাঠ্য কবিতায় আমরা যার পরিচয় লাভ করি।
সমগ্র কলিঙ্গদেশের আকাশ এমনভাবে ঘন কালো মেঘ দ্বারা আচ্ছাদিত হয়ে যায় যে কেউ কারো মুখ পর্যন্ত দেখতে পায় না। উত্তর-পূর্ব কোণ জুড়ে কালো মেঘ বিদ্যুতের ভয়াবহ চমক সৃষ্টি করে-
“ঈশানে উড়িল মেঘ সঘনে চিকুর”
উত্তর দিক থেকে প্রবল বাতাস বইতে থাকে ও মুহূর্তের মধ্যে সমগ্র কলিঙ্গদেশের আকাশে বিস্তৃত কালো মেঘে ঢেকে যায়। সম্বর্ত, আবর্ত, পুষ্কর ও দ্রোণ– এই চার প্রকার মেঘের সম্মিলিত বৃষ্টিপাত শুরু হয়ে যায়-
“চারি মেঘে বরিষে মুষুলধারে জল”
মেঘের উচ্চনাদে কলিঙ্গের প্রজারা মহাপ্রলয়ের আশঙ্কায় আশঙ্কিত হয়ে ওঠে। ঝড়ের তান্ডবে প্রজারা নিদের গৃহ ত্যাগ করতে বাধ্য হয়। প্রচন্ড ঝড়ে পথের ধুলো দ্বারা সকল সবুজ আচ্ছাদিত হয়ে যায়। এমনকি ঝড়ের আঘাতে প্রজাদের মজুদ করা শস্য উলটে পড়ে যায়। চার প্রকার মেঘ যেন ঐরাবত, পুন্ডরীক, বামন, কুমুদ, অঞ্জন, পুষ্পদন্ত, সার্বভৌম ও সুপ্রতীক নামক অষ্ট গজরাজের সহায়তায় কলিঙ্গের বুকে বৃষ্টিপাতে ব্রতী হয়-
“চারি মেঘে জল দেয় অষ্ট গজরাজ”
ব্যঙের মতো লাফিয়ে লাফিয়ে বাজ পড়তে থাকে। কলিঙ্গদেশের জল-স্থল মিলেমিশে একাকার হয়ে যায় বলে প্রজারা পথ হারিয়ে ফেলে ও গর্ত থেকে সাপ বেরিয়ে পড়ে জলে ভেসে বেড়াতে থাকে। প্রচন্ড মেঘের গর্জনে কলিঙ্গবাসী নিজেদের কথা পর্যন্ত শুনতে পারছিল না। এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে দিন ও রাতের প্রভেদ পর্যন্ত অবলুপ্ত হয়ে যায়-
“পরিচ্ছিন্ন নাহি সন্ধ্যা দিবস রজনী”
ভীত কলিঙ্গবাসী পরিত্রাণের উদ্দেশ্যে জৈমিনি মুনিকে স্মরণ করতে থাকে। নিরন্তর সাত দিন বৃষ্টিতে ফসল সঠিক ভাবে ঝাড়াই-মাড়াই না হওয়ায় তা পচে যেতে থাকে। প্রজাদের ঘরের চাল ভেদ করে ভাদ্রমাসে তাল পড়ার মতো শিল পড়তে থাকে-
“মেঝ্যাতে পড়য়ে শিল বিদারিয়া চাল
ভাদ্রপদ মাসে যেন পড়ে থাকা তাল।।”
ভয়ংকর প্রাকৃতিক দুর্যোগের মাঝে দেবী চন্ডীর আদেশে বীর হনুমান কলিঙ্গের সমস্ত মঠ ও অট্টালিকা ভেঙে টুকরো টুকরো করে দিতে থাকেন। দেবী চন্ডীর আদেশে নদ-নদীরা কলিঙ্গের উদ্দেশ্যে ধাবিত হলে পর্বতসম ঢেউ কলিঙ্গদেশে আছড়ে পড়ে।
এইরূপে কলিঙ্গদেশে যে প্রাকৃতিক অস্থিরতার সৃষ্টি হয়েছিল তা কলিঙ্গবাসীকে বিপদগ্রস্থ করে তুলেছিল।
নবম শ্রেণির বাংলা বিষয়ের অন্যান্য গল্প, কবিতাগুলি থেকে MCQ প্রশ্নের উত্তর সমাধান করতে নিম্নের লিংকে টাচ/ক্লিক করতে হবে
নবম শ্রেণি ইতিহাস MCQ মক টেষ্ট