শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের জন্য বাংলা ব্যাকরণের সমাস থেকে এই পোষ্টে কর্মধারয় সমাস সম্পর্কে বিষদ আলোচনা প্রদান করা হলো।
কর্মধারয় সমাসঃ
যখন দুটি বিশেষ্যপদ বা দুটি বিশেষণপদ কিম্বা একটি বিশেষ্য পদ ও একটি বিশেষণপদের মধ্যে সমাস হয় এবং সমাসবদ্ধ পদটিতে পরপদের অর্থ প্রাধান্য পায়, তখন তাকে কর্মধারয় সমাস বলে। যেমন-
মহান যে পুরুষ= মহাপুরুষ
যিনি রাজা তিনি ঋষি = রাজর্ষি
কাঁচা অথচ মিঠে = কাঁচামিঠে।
কর্মধারয় সমাসের শ্রেণিবিভাগঃ
কর্মধারয় সমাসের বিবিধ বিভাগগুলি নিম্নে আলোচিত হল-
১) সাধারণ কর্মধারয় সমাসঃ
দুটি বিশেষ্যপদ বা দুটি বিশেষণপদ কিম্বা একটি বিশেষ্য পদ ও একটি বিশেষণপদের মধ্যে সমাস হলে এবং সমাসবদ্ধ পদটিতে পরপদের অর্থ প্রাধান্য পেলে, তাকে কর্মধারয় সমাস বলে। যেমন-
যিনি পিতা তিনি ঠাকুর= পিতাঠাকুর
মিঠে অথচ কড়া= মিঠেকড়া
মহান যে আশয়= মহাশয়।
২) মধ্যপদলোপী কর্মধারয় সমাসঃ
যে কর্মধারয় সমাসের সমস্তপদে মধ্যপদটি লোপ পায়, তাকে মধ্যপদলোপী কর্মধারয় সমাস বলা হয়। যেমন-
সিংহ চিহ্নিত আসন= সিংহাসন
পল মিশ্রিত অন্ন = পলান্ন
এক অধিক দশ = একাদশ।
গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়ঃ
উপমানঃ
যার সঙ্গে তুলনা করা হয়, সে উপমান। উপরের বাক্যে শ্যাম হল উপমান।
উপমেয় বা উপমিতঃ
যাকে তুলনা করা হয়, সে উপমেয় বা উপমিত। উপরের বাক্যে রাম হল উপমেয় বা উপমিত পদ।
সাধারণ ধর্মঃ
উপমান এবং উপমেয়ের মধ্যে যে বৈশিষ্ট্য বা ধর্ম বা গুণটি সাধারণ তাকে সাধারণ ধর্ম বলে। উপরের বাক্যটিতে ‘বুদ্ধিমান’ হল সাধারণ ধর্ম।
তুলনাবাচক শব্দঃ
একের সঙ্গে অপরের তুলনা করতে গিয়ে যেসব শব্দ ব্যবহার করা হয়, তাকে বলে তুলনা বাচক শব্দ। উপরের বাক্যটিতে ‘মতো’ হল তুলনাবাচক শব্দ। একই রকম শব্দ হল ন্যায়, সদৃশ, রূপ ইত্যাদি।
৩) উপমান কর্মথারয় সমাসঃ
যে কর্মধারয় সমাসে উপমান পদের সঙ্গে সাধারণ ধর্মবাচক পদের সমাস হয়, তাকে উপমান কর্মধারয় সমাস বলা হয়। যেমন-
কাজলের মতো কালো= কাজলকালো
শশকের মতো ব্যস্ত= শশব্যস্ত
ফুটির ন্যায় ফাটা= ফুটিফাটা।
৪) উপমিত কর্মধারয় সমাসঃ
যে কর্মধারয় সমাসে উপমেয় পদের সঙ্গে উপমান পদের সমাস হয় এবং সাধারণ সাধারণ ধর্মের উল্লেখ থাকে না, তাকে উপমিত কর্মধারয় সমাস বলা হয়। যেমন-
চরণ কমলের ন্যায়= চরণ কমলের ন্যায়
পুরুষ সিংহের ন্যায় = পুরুষসিংহ
অধর পল্লবের ন্যায় = অধরপল্লব।
৫) রূপক কর্মধারয় সমাসঃ
যে কর্মধারয় সমাসে উপমেয় পদ এবং উপমান পদের মধ্যে অভেদ কল্পনা করা হয়, তাকে রূপক কর্মধারয় সমাস বলা হয়। যেমন-
ভব রূপ সাগর= ভবসাগর
শোক রূপ অগ্নি = শোকগ্নি
আঁখি রূপ পখি = আঁখিপাখি।
সমাস থেকে সব আলোচনার লিঙ্ক নিম্নে প্রদান করা হলো-
বাংলা ব্যাকরণের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ আলোচনাগুলি দেখতে এই লেখাতে ক্লিক/টাচ করতে হবে