শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের জন্য বাংলা ব্যাকরণের বিবিধ আলোচনা নিয়মিত প্রদান করা হয়। এখানে বাংলা ব্যাকরণের শব্দ ও পদ থেকে ক্রিয়াপদ বিষয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর প্রদান করা হলো। এই প্রশ্নের উত্তরগুলি শিক্ষার্থীরা তৈরি করলে বাংলা ব্যাকরণের শব্দ ও পদ বিষয়ে সুস্পষ্ট জ্ঞান অর্জন করতে পারবে।
ক্রিয়াপদ থেকে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তরঃ
১) ক্রিয়াপদ কাকে বলে?
উঃ বাক্যের যে পদে কাল, ভাব, পুরুষ ইত্যাদির চিহ্ন থাকে এবং কোনো ঘটনা, প্রকৃয়া, সাধন ইত্যাদি প্রকাশিত হয় তাকে ক্রিয়াপদ বলে।
যেমনঃ কর্+ইতেছে= করিতেছে
কর্+ইল= করিল
২) বাক্যে অবস্থানের দিক থেকে ক্রিয়াপদ কতো প্রকার ও কী কী?
উঃ দুই প্রকার। যথাঃ
১) সমাপিকা ক্রিয়া
২) অসমাপিকা ক্রিয়া
৩) সমাপিকা ক্রিয়া কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উঃ যে ক্রিয়াপদের ব্যবহারে বাক্যের ভাব ও অর্থ সম্পূর্ণভাবে প্রকাশিত হয় তাকে সমাপিকা ক্রিয়া বলে।
যেমনঃ আমি ভাত খাবো।
৪) অসমাপিকা ক্রিয়াপদ কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উঃ যে ক্রিয়াপদের ব্যবহারে বাক্যের ভাব ও অর্থ সম্পূর্ণভাবে প্রকাশিত হয় না তাকে অসমাপিকা ক্রিয়া বলে।
যেমনঃ আমি ভাত খেয়ে বাজারে যাবো।
৫) অন্বয়গত দিক থেকে ক্রিয়াপদ কত প্রকার ও কী কী?
উঃ আট প্রকার। যথাঃ
১) সকর্মক ক্রিয়া
২) অকর্মক ক্রিয়া
৩) মৌলিক ক্রিয়া
৪) সাধিত ক্রিয়া
৫) যৌগিক ক্রিয়া
৬) সংযোগমূলক ক্রিয়া
৭) কর্মবাচ্যের ক্রিয়া
৮) পঙ্গু ক্রিয়া
৬) সকর্মক ক্রিয়া কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উঃ যে ক্রিয়ার কর্ম আছে তাকে সকর্মক ক্রিয়া বলে।
যেমনঃ আমি ভাত খাবো।
৭) দ্বিকর্মক ক্রিয়া কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উঃ যে ক্রিয়ায় মুখ্য ও গৌণ দুটি কর্মই থাকে তাকে দ্বিকর্মক ক্রিয়া বলে।
যেমনঃ মা শিশুকে চাঁদ দেখাচ্ছেন।
৮) মুখ্য কর্ম কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উঃ অপ্রাণীবাচক যে কর্ম ক্রিয়াকে “কী” প্রশ্নের মাধ্যমে পাওয়া যায় তাকে মুখ্য কর্ম বলে।
যেমনঃ মা শিশুকে চাঁদ দেখাচ্ছেন।
এখানে “চাঁদ” হলো মুখ্য কর্ম।
৯) গৌণ কর্ম কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উঃ প্রাণীবাচক যে কর্ম ক্রিয়াকে “কাকে” প্রশ্নের মাধ্যমে পাওয়া যায় তাকে মুখ্য কর্ম বলে।
যেমনঃ মা শিশুকে চাঁদ দেখাচ্ছেন।
এখানে “শিশু” হলো গৌণ কর্ম।
১০) অকর্মক ক্রিয়া কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উঃ যে ক্রিয়ার কর্ম থাকে না তাকে অকর্মক ক্রিয়া বলে।
যেমনঃ আমি খাই।
১১) মৌলিক ক্রিয়া কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উঃ মৌলিক ধাতু বা সিদ্ধ ধাতুর সাথে ধাতু বিভক্তি যুক্ত হয়ে যে ক্রিয়াপদ গঠিত হয়, তাকে মৌলিক ক্রিয়া বলা হয়।
যেমনঃ
পশ্+ইল= পশিল
গা+ইল= গাইল
১২) সাধিত ক্রিয়া কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উঃ সাধিত ধাতু থেকে যে ক্রিয়া গঠিত হয় তাকে সাধিত ক্রিয়া বলে।
যেমনঃ
ধর+আ=ধরা+ইতেছে= ধরাইতেছে
১৩) সাধিত ক্রিয়া কত প্রকার ও কী কী?
উঃ সাধিত ক্রিয়া তিন প্রকার। যথা-
১) প্রযোজক ক্রিয়া
২) নামধাতুজ ক্রিয়া
৩) ধ্বন্যাত্মক বা অনুকার ক্রিয়া
১৪) প্রযোজক ক্রিয়া কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উঃ যে ক্রিয়া দ্বারা অপরকে দিয়ে কাজ করানো বোঝায়, তাকে প্রযোজক ক্রিয়া বলে।
যেমনঃ
শিক্ষক ছাত্রদের পড়াচ্ছেন।
১৫) নামধাতুজ ক্রিয়া কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উঃ নামধাতুর সঙ্গে কাল বা পুরুষবাচক বিভক্তি যুক্ত হয়ে যে ক্রিয়া গঠিত হয়, তাকে নামধাতুজ ক্রিয়া বলে।
যেমনঃ
ঘুমা+ইতেছে= ঘুমাইতেছে
১৬) ধ্বন্যাত্মক ক্রিয়া কাকে বলে?
উঃ ধ্বন্যাত্মক ধাতু থেকে নিষ্পন্ন হওয়া ক্রিয়াকে ধ্বন্যাত্মক বা অনুকার ধ্বনিজ ক্রিয়া বলা হয়।
যেমনঃ
টনটনা+ছে= টনটনাচ্ছে
১৭) যৌগিক ক্রিয়া কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উঃএকটি অসমাপিকা ও একটি সমাপিকা ক্রিয়া যুক্ত হয়ে যে ক্রিয়াপদ গঠন করে তাকে যৌগিক ক্রিয়া বলে।
যেমনঃ
খেয়ে ফেললো।
১৮) সংযোগমূলক ক্রিয়া কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উঃ একটি বিশেষ্য ও বিশেষণ পদ এবং ক্রিয়াপদের সংযোগে তৈরি ক্রিয়াপদকে সংযোগমূলক ক্রিয়াপদ বলে।
যেমনঃ
হাত ধোওয়া।
১৯) কর্মবাচ্যের ক্রিয়া কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উঃ মূল ধাতুর সঙ্গে ‘আ’ প্রত্যয় যুক্ত হয়ে গঠিত কর্মবাচ্যের ধাতুর সঙ্গে ধাতু বিভক্তি যোগে যে ক্রিয়া গঠিত হয়, তাকে কর্মবাচ্যের ক্রিয়া বলে।
যেমনঃ
দেখ্+আ=দেখা+ছে= দেখাচ্ছে
২০) পঙ্গুক্রিয়া কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উঃ যেসব ক্রিয়াকে সব কালে ও ভাবে ব্যবহার করা যায় না, তাদের পঙ্গু ক্রিয়া বলে।
যেমনঃ
একা দেখি কূলবধূ কে বট আপনি
“বট” ধাতুর ব্যবহার বর্তমান ছাড়া অন্য কোন কালে পরিলক্ষিত হয় না।
বাংলা ব্যাকরণের বিবিধ আলোচনা দেখতে নিম্নের ছবিতে ক্লিক/টাচ করতে হবেঃ