কোনি প্রশ্নের উত্তর
শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের পক্ষ থেকে দশম শ্রেণির মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের জন্য বাংলা কোনি প্রশ্নের উত্তর প্রদান করা হলো। শিক্ষার্থীরা এই কোনি প্রশ্নের উত্তর সমাধানের মধ্য দিয়ে তাদের পাঠ্য উপন্যাসটি সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা লাভ করতে পারবে। এই কোনি প্রশ্নের উত্তর অনুশীলনের দ্বারা দশম শ্রেণির মাধ্যমিক দিতে চলা শিক্ষার্থীরা তাদের পরীক্ষা প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারবে।
শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের সকল প্রকার আপডেট লাভ করতে মোবাইল স্ক্রিনের বা’দিকের নিম্নের অংশে থাকা বেল আইকনটিতে (🔔) টাচ করে শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের নোটিফিকেশন অন করে রাখুন।
কোনি প্রশ্নের উত্তরঃ
১) “আজ বারুণী”- ‘বারুণী’ কী? বারুণীর দিন গঙ্গার ঘাটে যে দৃশ্যটি ফুটে উঠেছে তা বর্ণনা করো। ১+৪
উৎসঃ
বিশিষ্ট সাহিত্যিক “মতি নন্দী” রচিত “কোনি” উপন্যাস থেকে প্রশ্নোক্ত অংশটি গ্রহণ করা হয়েছে।
বারুণী উৎসবের পরিচয়ঃ
হিন্দু ধর্মমতানুসারে জলদেবতা হলেন বরুণ। বরুণ দেবের পূজা উপলক্ষে পালনীয় এক উৎসব হল ‘বারুণী’। শতভিষা নক্ষত্রযুক্ত চৈত্র মাসের কৃষ্ণাত্রয়োদশী তিথিতে এই উৎসব পালন করা হয়। এই দিন গঙ্গাস্নানের পুণ্যলাভ করতে ধর্মপ্রাণ মানুষ গঙ্গা বা বড়ো নদীতে আম নিবেদন করেন।
ঘাটের দৃশ্যঃ
বারুণীর দিন গঙ্গার ঘাটে বিপুল মানুষের সমাগম ঘটে। ছোট ছেলেরা সাঁতার কেটে আম সংগ্রহ করে পথের ধারে বাজারে তা কম দামে বিক্রি করে দেয়। ভাটার টানে জল নেমে গেলে কর্দমাক্ত সিঁড়ি অনেকেরই বিরক্তির কারণ হয়ে ওঠে। ঘাটের মাথায় বা ট্রেন লাইনের দিকে মুখ করে বসা বামনেরা জামাকাপড় রাখে, সরষে বা নারকেল তেল বিক্রি করে এবং আগত পুণ্যার্থীদের কপালে চন্দনের ছাপ এঁকে দেয়। রাস্তার ভিখিরিদের পয়সা দান করে কেউ কেউ পুণ্য অর্জন করতে চান।
সাধারণ মানুষ তাদের পুণ্যস্নান সেরে পথের দু-ধারে দেবদেবীর মাথায় জল প্রদান করতে করতে এবং হরেক প্রকারের দোকানের দিকে কৌতুহলী দৃষ্টিপাত করতে করতে গৃহে প্রত্যাবর্তন করেন। কেউ বা আবার পথের বাজার থেকে ওল, থোর, কমলালেবুর মত কিছু ক্রয় করে গরম রাস্তায় বিরক্তিভরে পা ফেলতে ফেলতে বাড়ি ফেরেন।
পাঠ্য ‘কোনি’ উপন্যাসে বারুণীর দিন গঙ্গাঘাটের দৃশ্যকে ঔপন্যাসিক এভাবেই আমাদের সম্মুখে তুলে ধরেছেন।
২) “’ক্ষিদ্দা, এবার আমরা কী খাবো?”- উদ্ধৃতিটির আলোকে কোনির যন্ত্রণাবিদ্ধ জীবনযাত্রার পরিচয় দাও।
অথবা, দারিদ্র ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে কোনির জীবনসংগ্রামের কাহিনি লিপিবদ্ধ করো।
উৎসঃ
খেলাধূলাকে কেন্দ্র করে সার্থক উপন্যাসের স্রষ্টা “মতি নন্দী” রচিত “কোনি” উপন্যাসে আমরা উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র সাঁতারু কনকচাঁপা পাল বা কোনির দারিদ্র ও বঞ্চনাকে জয় করে সাফল্যের শীর্ষস্থানে আরোহণের সংগ্রামী কাহিনির পরিচয় লাভ করি।
দারিদ্রের বিরুদ্ধে লড়াইঃ
আজন্ম দারিদ্রকে সঙ্গী করে বড়ো হয়ে ওঠা কোনির কাছে সফল সাঁতারু হয়ে ওঠার পথে সব থেকে বড়ো প্রতিবন্ধকতা ছিল তার দারিদ্র। সাত ভাই-বোন ও মায়ের খাদ্য সংস্থানের জন্য তার দাদা কমল পালকে সাঁতার ছেড়ে কাজে যোগ দিতে হয়েছে। তাদের ছোট ভাইকেও সংসারের আর্থিক বোঝা বহন করতে চায়ের দোকানে পনেরো টাকার বিনিময়ে কাজ করতে হয়েছে। এমনকি কোনিকেও তার দাদা ষাট টাকা মাইনের বিনিময়ে সুতো কারখানায় কাজে লাগিয়ে দেবে বলে মনস্থির করে ফেলেছিল।
পরিবারের প্রধান উপার্জনকারী কমল পালের যক্ষ্মায় আকস্মিক মৃত্যুর ফলে সংসারের হাল ধরতে কোনিকে তার সাঁতার প্রশিক্ষক ক্ষীতিশ সিংহের স্ত্রী লীলাবতীর ‘প্রজাপতি’ নামক দর্জির দোকানে মাসিক চল্লিশ টাকার বিনিময়ে কাজ করতে হয় এবং তার মাও ছিট কাপর সেলাইয়ের কাজ করতে বাধ্য হন।
বঞ্চনার বিরুদ্ধে লড়াইঃ
কোনির সাঁতার প্রশিক্ষক ক্ষিতীশ সিংহের সাথে জুপিটার সুইমিং ক্লাবের হরিচরণ, ধীরেন ঘোষ, বদু চাটুজ্জে প্রমুখের দ্বন্দ্বের কারণে তাকেও বারংবার বিবিধ ষড়যন্তের ও বৈষম্যের শিকার হতে হয় এবং তাকে জুপিটার সুইমিং ক্লাবে স্থান প্রদান করা হয় না। পরবর্তীতে ক্ষিতীশ তাকে অ্যাপেলো ক্লাবে নিয়ে গেলে সেখানে তাকে অমিয়া ও বেলার মতো অভিজ্ঞ সাঁতারুদের ক্ষোভ ও ঈর্ষার মুখে পরতে হয়। তাকে অপমান করে অমিয়া বলে, “কম্পিটিশনে পড়লে মেয়েটা আমার পা ধোয়া জল খাবে।”
চক্রান্ত করে কোনিকে জুপিটার সুইমিং ক্লাবের বার্ষিক প্রতিযোগিতায় প্রবেশাধিকার প্রদান করা হয় নি। ষ্টেট চ্যাম্পিয়নশিপ প্রতিযোগিতায় কোনিকে ইচ্ছাকৃতভাবে ডিসকোয়ালিফাই করা হয়। এমনকি সকল যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও তাকে মাদ্রাজে জাতীয় সাঁতার চ্যাম্পিয়নশিপে প্রাথমিকভাবে নিয়ে যেতে সম্মতি প্রদান করা হয় নি। বালিগঞ্জ সুইমিং ক্লাবের প্রশিক্ষক প্রণবেন্দু বিশ্বাসের চাপে তাকে বাংলা দলের সাথে নিয়ে যাওয়া হলেও জলে নামার সুযোগ প্রদান করা হয় নি। এমনকি সেখানে অমিয়া, হিয়া প্রমুখের কাছে তাকে বিনা অপরাধে অপমানিতও হতে হয়েছিল।
বঞ্চনাকে জয়ঃ
কোনি তার অদম্য জেদ ও অধ্যবসায়কে সঙ্গী করে অবশেষে দেশের সেরা সাঁতারু রমা যোশিকে পরাজিত করে বাংলা দলকে দেশের সেরার শিরোপা অর্জনে সাহায্য করে তার জীবনের সকল দারিদ্র ও বঞ্চনার যোগ্য জবাব প্রদান করেছে।
৩) “আপনি আমার থেকে চার হাজার গুণ বড়োলোক, কিন্তু চার লক্ষ টাকা খরচ করেও আপনি নিজে শরীরটাকে চাকর বানাতে পারবেন না।” – বক্তা কাকে, কেন এ কথা বলেছিলেন?
উৎসঃ
খেলাধূলাকে কেন্দ্র করে সার্থক উপন্যাসের স্রষ্টা “মতি নন্দী” রচিত “কোনি” উপন্যাস থেকে প্রশ্নোক্ত অংশটি গৃহীত হয়েছে।
বক্তা ও উদ্দিষ্ট ব্যক্তিঃ
উপন্যাসের প্রথম পরিচ্ছেদে ক্ষিতীশ সিংহ বিষ্টুচরণ ধরকে উদ্দেশ্য করে এ কথা বলেছিলেন।
মন্তব্যের কারণঃ
উপন্যাসে গঙ্গার তীরে বিষ্টুচরণ ধর শরীর ম্যাসেজ করাচ্ছিলেন। সেই সময় স্নান করার জন্য ক্ষিতীশ সিংহ গঙ্গার ঘাটে উপস্থিত ছিলেন। বিষ্টুচরণ ধরের বিশাল বপু ম্যাসেজের তালে তালে ওঠানামা করছিল। ক্ষিতীশ সিংহ এই দৃশ্য অবলোকন করে হাসি চেপে রাখতে পারেন না। বিষ্টুচরণ ধর অপমানিত বোধ করেন এবং নিজের অর্থ ও প্রভাবের কথা ঘোষণা করেন। বিষ্টুচরণ ধর তাচ্ছিল্য প্রকাশ করেন। আবার একইসঙ্গে ক্ষিতীশ সিংহের শারীরিক দক্ষতা দেখে অবাক হন। বিষ্টুচরণ ধর টাকার গর্বে অন্ধ ছিলেন। কিন্তু টাকা থাকলেই শরীরকে বশে রাখা যায় না। সেই প্রসঙ্গেই ক্ষিতীশ সিংহ উপরিউক্ত মন্তব্যটি করেন।
৪) কোনির পারিবারিক জীবনের পরিচয় দাও। ৫
উৎসঃ
খেলাধূলাকে কেন্দ্র করে সার্থক উপন্যাসের স্রষ্টা “মতি নন্দী” রচিত “কোনি” উপন্যাসে আমরা উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র সাঁতারু কনকচাঁপা পাল বা কোনির জীবনের পরিচয় লাভ করি।
কোনির পারিবারিক জীবনের পরিচয়ঃ
কোনি ছিল নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের কন্যা। সুতরাং তার জীবনের সাথে দারিদ্র্য ও বঞ্চনা জড়িয়ে ছিল ওতপ্রোতভাবে। বেদনায় বিধুর কোনির জীবনে দারিদ্র্যই হয়ে উঠেছিল তার জীবনের সঙ্গী। কবির কথায়-
“হে দারিদ্র্য, তুমি মোরে করেছ মহান।”
কোনির দরিদ্র পরিবারে ছিল তার মা, তার দাদা কমল পাল, তার ছোট ভাই গোপাল এবং আরো দুই বোন। তার এক দাদা মারা গিয়েছে ইলেকট্রিক তারে কাটা পড়ে, অপর এক দাদা থাকে পিসির বাড়ি, কাঁচড়াপাড়ায়। দারিদ্র্যক্লিষ্ট কোনির সংসারে একমাত্র উপার্জনশীল ছিল কমল পাল, সে রাজাবাজারে মোটর গ্যারেজে কাজ করে। সামান্য আয়ে সংসার চলে। কোনির শৈশবের কুয়াশার আড়ালে বাবা হারিয়ে গেছে টি.বি. রোগে। কমলও আকস্মিকভাবে একই রোগে পৃথিবী থেকে বিদায় নেয়। ফলে, কোনির পরিবার থেকে হারিয়ে যায় সুখের কলরোল। শ্যামপুকুর বস্তির চালার ঝুপড়ি ঘরে নেমে আসে বিষন্নতা। হতাশার বেনোজলে স্বপ্নের ফেরিওয়ালা হয়ে আসে সাঁতার প্রশিক্ষক ক্ষিতীশ সিংহ।
সাঁতারে আসার আগে, কোনি গঙ্গায় সাঁতার কেটে আম কুড়োত আর পয়সা উপার্জনের আশায় সেই আম বাজারে বিক্রি করতো। সামান্য ফ্যান ভাত, তেঁতুল, কাঁচা লঙ্কা আর কাঁচা পেঁয়াজ খেয়েই জীবন ধারণ করতো । থাকতো অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে ছোট্ট একটা ঘরে। কিন্তু কমলের মৃত্যুর পর, কোনিদের অবস্থা আরো সঙ্গীন হয়ে পড়ে। ছোট ভাই পনেরো টাকা মাইনেতে চায়ের দোকানে কাজ করতে লেগে পড়ে। কোনি চল্লিশ টাকা মাইনেতে ক্ষিতিশের স্ত্রী লীলাবতীর টেলারিং দোকান, ‘প্রজাপতি’ তে ফাইফরমাশ খাটতে থাকে আর কমলের কাছে দেওয়া প্রতিশ্রুতি রাখতে যে সে ভারতসেরা সাঁতারু হয়ে উঠবে, কোনি কমল দীঘির জলে স্বপ্নের ঢেউ তোলে। ক্ষিতিশের বদান্যতায় কোনির পরিবার কমলের অনুপস্থিতিতে মুখে ভাতটুকু তুলতে পারে। দু-টাকার ডিম, কলা, টোস্টের জন্য লালায়িত কোনি ও তার যৌথ পরিবারকে ক্ষিতীশ নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছিল। এভাবেই উপন্যাসে কোনির বেদনাদীর্ণ পারিবারিক জীবনের চালচিত্র ফুটে উঠেছিল।
৫) “এটা বুকের মধ্যে পুষে রাখুক”- কী পুষে রাখার কথা বলা হয়েছে ? কী কারণে এই পুষে রাখা?
উৎসঃ
খেলাধূলাকে কেন্দ্র করে সার্থক উপন্যাসের স্রষ্টা “মতি নন্দী” রচিত “কোনি” উপন্যাস থেকে প্রশ্নোক্ত অংশটি চয়ন করা হয়েছে।
যা পুষে রাখার কথা বলা হয়েছেঃ
ক্ষিতীশ সিংহ কোনিকে নিয়ে চিড়িয়াখানায় বেড়াতে গিয়েছিলেন। সেখানে তিন ঘন্টা ঘোরার পর দুজনে বাড়ি থেকে নিয়ে আসা খাবার খেতে বসেছিল। কিন্তু তাদের সঙ্গে খাবার জল ছিল না। এমত অবস্থায় কোনি তাদের পাশে খেতে বসা ছাত্রীদলের কাছে জল চাইতে যায়, কিন্তু একজন দিদিমণি তাকে ফিরিয়ে দেয়। পরে ওই দলের হিয়া মিত্র নামের একটি মেয়ে কোনিকে জল দিতে আসলে কোনি আগের অপমানের জবাব হিসেবে ওই জলের গ্লাস ফেলে দেয়। হিয়ার প্রতি কোনির যে আক্রোশ প্রকাশ পেল জলের গ্লাস ফেলে দেওয়ার মধ্য দিয়ে রাগটাই মনের মধ্যে পুষে রাখার কথা বলা হয়েছে।
পুষে রাখার কারণঃ
কোনি হিয়া মিত্রকে চিনত না, কিন্তু ক্ষিতীশ সিংহ এই হিয়া মিত্রকে চিনত। শুধু চিনতই না, সে জানত কোনির থেকে হিয়া মিত্র সাঁতারে অনেক ভালো অবস্থানে আছে। রবীন্দ্র সরোবরের সাঁতার প্রতিযোগিতায় হিয়ার সাঁতার ক্ষিতীশ সিংহ দেখেছে। বালিগঞ্জ সুইমিং ক্লাবে গিয়েও সে হিয়ার ট্রেনিং দেখে এসেছে। তাই ক্ষিতীশ সিংহ মনে করেছিল হিয়াই কোনির ভবিষ্যৎ প্রতিদ্বন্দ্বি। এই অপমানের যন্ত্রণাই কোনিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। তাই হিয়া মিত্রকে হারিয়ে অপমানের প্রতিশোধ নেবার বাসনা জাগিয়ে রাখবার জন্যই ক্ষিতীশ সিংহ এই অপমানটাকে পুষে রাখতে বলেছিল।
৬) “তোর আসল লজ্জা জলে আসল গর্বও জলে”- কোন প্রসঙ্গে এই উক্তি? উক্তিটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।
উৎসঃ
খেলাধূলাকে কেন্দ্র করে সার্থক উপন্যাসের স্রষ্টা “মতি নন্দী” রচিত “কোনি” উপন্যাসের দশম পরিচ্ছেদ থেকে উদ্ধৃত অংশটি নেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গঃ
কোনি ৪০ টাকার বিনিময়ে লীলাবতীর টেলারিং শপ ‘প্রজাপতি’তে ঝাঁট দেয় ও ফাইফরমাশ খাটে। একদিন অমিয়া ওই দোকানে ব্লাউজ তৈরি করাতে এসেছিল। কোনিকে সেখানে দেখে অমিয়া বলেছিল- “তুই এখানে ঝিয়ের কাজ করিস।” এই কথায় কোনি খুব লজ্জা পেয়েছিল। ক্ষিতীশ তাকে সান্তনা দিতে প্রশ্নোক্ত উক্তিটি করেছেন।
মন্তব্যের তাৎপর্যঃ
কোনি সম্ভাবনাময় সাঁতারু। তার সম্পর্ক জলের সঙ্গে। যার যেখানে অবস্থান তার লজ্জা এবং সম্মান সেখানেই। একজন ক্রিকেটার বা ফুটবলারের সম্মান, লজ্জা, গর্ব খেলার মাঠেই। দোকানে ঝিয়ের কাজ করে বলে কোনিকে তাচ্ছিল্য করেছিল অমিয়া। কিন্তু সেটা তার প্রকৃত কর্মক্ষেত্র নয়। সেখানে তার সাফল্য, ব্যর্থতা বা গর্বের কোন স্থান নেই। কেননা কোনি প্রতিভাবান সাঁতারু।
যেহেতু সাঁতারের সঙ্গে জলের সম্পর্ক নির্দিষ্ট, তাই কোনির সাফল্য-ব্যর্থতা জলেই সীমাবদ্ধ। সাঁতারে ব্যর্থ হলে তার লজ্জিত হওয়া উচিত, আবার সাফল্য লাভ করলে গর্ব। কোনির মনে প্রেরণার সঞ্চার করতে কোনির মনে প্রাণ সঞ্চার করতে ক্ষিতীশ বলেছে অমিয়ার কথায় লজ্জিত না হয়ে সাঁতারটা মন দিয়ে করতে। জলের বাইরে কোনির কোনো লজ্জা বা গর্বের কোনো কিছু নেই।
৭) ক্ষিদ্দা কীভাবে কোনির জীবনে প্রেরণা হিসেবে কাজ করেছিল সে সম্পর্কে আলোচনা করো। ৫
উৎসঃ
খেলাধূলাকে কেন্দ্র করে সার্থক উপন্যাসের স্রষ্টা “মতি নন্দী” রচিত “কোনি” উপন্যাসে আমরা উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র সাঁতারু কনকচাঁপা পাল বা কোনির জীবনে প্রেরণা হিসেবে কাজ করেছিল তার সাঁতার প্রশিক্ষক ক্ষিতীশ সিংহ অর্থাৎ ক্ষিদ্দা।
কোনির জীবনে প্রেরণা সঞ্চারকারী ক্ষিদ্দাঃ
কোনির ক্ষিদ্দা ক্ষিতীশ সিংহ আগাগোড়া এক ব্যতিক্রমী মানুষ। সাধারণ এক দরিদ্র পরিবারের মেয়ে থেকে নিজের একগুঁয়েমি নিষ্ঠা ও অধ্যাবসায়কে পাথেয় করে কোনির কাঙ্খিত উচ্চতায় উত্তরনের পিছনে যে মানুষটির অবদান অনস্বীকার্য তিনি হলেন কোনির ক্ষিদ্দা অর্থাৎ ক্ষিতীশ সিংহ।
প্রতিভাকে চিনে নিয়ে তাকে সুশৃংখল প্রশিক্ষণের মধ্য দিয়ে চালনা করতে যে অভিজ্ঞতার প্রয়োজন, তা ক্ষিতীশের ছিল। ক্ষিতীশ দেশের জন্য গৌরব এনে দেওয়া একজন খেলোয়াড় তৈরি করতে জলের মতো অর্থ ব্যয় করেছেন। কোনিকে তিনি শিক্ষা দিয়েছেন কেবল একজন সুযোগ্য খেলোয়াড় তৈরির জন্য। নিজে রোজগার বা অন্য কোন স্বার্থের জন্য নয়। নিজের সংসারে অভাব থাকা সত্ত্বেও তিনি কোনির খাওয়া-দাওয়া ও ঘুমের দায়িত্ব নিয়েছেন। কোনিকে অনিচ্ছাকৃত হলেও তাকে দিয়ে প্রবল পরিশ্রম করিয়েছেন। আবার বড় দাদার মতো তাকে চিড়িয়াখানায় কুমীর দেখাতে নিয়ে গিয়েছেন। যে ক্ষিদ্দা কোনি কেঁদে ফেললেও প্র্যাকটিস থেকে রেহাই দেন নি। খাওয়ার টোপ দিয়ে সাঁতার কাটানোর মতো অমানবিক আচরণ করেছেন। তিনিই আবার কোনি ঘুমিয়ে পড়লে তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়েছেন। ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশিপে কোনি নিজেকে প্রমাণ করার পর তার মাথার উপর ঝরে পড়েছে তার আনন্দাশ্রু।
৮) “জোচ্চুরি করে আমাকে বসিয়ে রেখে এখন ঠেকায় পড়ে এসেছ আমার কাছে”- কোনির এই অভিমানের কারণ কী ? এর পরবর্তী ঘটনা সংক্ষেপে বর্ণনা করো।
উৎসঃ
খেলাধূলাকে কেন্দ্র করে সার্থক উপন্যাসের স্রষ্টা “মতি নন্দী” রচিত “কোনি” উপন্যাস থেকে প্রশ্নোক্ত তাৎপর্যপূর্ণ অংশটি চয়ন করা হয়েছে।
কোনির অভিমানের কারণঃ
কোনি যখন হিয়ার কাছ থেকে জানতে পারে, জাতীয় সাঁতারের শেষ ইভেন্টে ৪×১০০ মিটার রিলেরেসের চতুর্থ ব্যক্তি, অমিয়ার অসুস্থতা জনিত কারণবশত কোনিকে জলে নামতে হবে তখন সে রাজি হয় নি। কারণ, সুদূর এই মাদ্রাজে অনুষ্ঠিত জাতীয় সাঁতার কম্পিটিশনে কোনি প্রতিযোগী হয়ে আসা সত্বেও তাকে বিভিন্ন অজুহাতে বসিয়ে রাখা হয়, প্রতিযোগীদের লিস্টে কোনির নাম নেই, এই কারণে কোনি কোনো ইভেন্টে অংশ নিতে পারে না। শুধু তাই নয় কোনিকে ‘চোর’ অপবাদও সহ্য করতে হয়েছিল, চড়ও মারা হয়েছিল। এই দুর্ব্যবহারে ক্রুদ্ধ কোনি তাই বাংলার স্বার্থে আর প্রতিযোগিতায় নামতে চায়নি।
পরবর্তী ঘটনার বিবরণঃ
কোনি হিয়ার অনুরোধে হিয়ারই দেওয়া অতিরিক্ত কস্টিউম পরে রিলে রেসে নামার জন্য রাজি হয়েছিল। এরপর মেয়েদের ৪০০ মিটার রিলে রেস শুরু হয়। প্রথমে বাংলার হয়ে জলে ঝাঁপ দেয় হিয়া মিত্র। সে সবার আগে বোর্ড স্পর্শ করে ফিরে এসে বাংলার পুষ্পিতাকে কিছুটা আগুয়ান থাকার সুবিধা দেয়। কিন্তু মহারাষ্ট্র এবার বাংলার থেকে এগিয়ে যায়। এরপর জলে নামে বাংলার বেলা। সে মহারাষ্ট্রের দীপ্তি কারমারকারের সাথে জোর প্রতিযোগিতা করেছিল। বেলার এই সাফল্যকে পরিপূর্ণতা দান করেছিল কোনি। কোনির সাথে প্রতিযোগিতা হয়েছিল মহারাষ্ট্রের নামী সাঁতারু রমা যোশীর। রমার জলে পড়ার তিন সেকেন্ড পরে কোনি জলে ঝাঁপ দেয়। জলে নামার পূর্ব মুহূর্তে সে দেখতে পায়, তার সাঁতার প্রশিক্ষক ক্ষিতীশ সিংহকে। তাঁর মুখে উচ্চারিত হয়েই চলেছিল- “ফাইট কোনি ফাইট।”
দীর্ঘ অদর্শনের পর কোনি ক্ষিদ্দাকে দেখে মনে বল পায়। রমার পরে জলে নামলেও সে নিজেকে উজাড় করে দেয়। ক্ষিদ্দার আপ্তবাক্যকে স্মরণ করে সে রমার সাথে ইঞ্চি ইঞ্চি করে ব্যবধান কমাতে থাকে এবং এগিয়ে যায়। নিজের সমস্ত ক্ষোভ যন্ত্রণাকে উজাড় করে দিয়ে কোনি রমার আগে বোর্ড স্পর্শ করে ও বেঙ্গল লেডিস টিমকে জাতীয় সাঁতারে চ্যাম্পিয়ন করে দেয় ও হিয়াকে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ স্বর্ণপদক প্রাপ্ত সাঁতারু হওয়ার সুযোগ করে দেয়।
এভাবেই কোনি সকল প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে সাফল্যের জয়মুকুট পরে নিয়েছিল।
৯) ‘কোনি’ উপন্যাস অবলম্বনে সাঁতার প্রশিক্ষক ক্ষিতীশ সিংহের চরিত্র সংক্ষেপে আলোচনা করো। ৫
উৎসঃ
খেলাধূলাকে কেন্দ্র করে সার্থক উপন্যাসের স্রষ্টা “মতি নন্দী” রচিত “কোনি” উপন্যাসের অন্যতম চরিত্র হলেন সাঁতার প্রশিক্ষক ক্ষিতীশ সিংহ, যিনি উপন্যাসে ক্ষিদ্দা নামেই অধিক পরিচিত।
চরিত্র বিশ্লেষণঃ
ক্ষিতীশ সিংহের যেসকল চরিত্র বৈশিষ্ট্যগুলি তার প্রতি পাঠককূলকে আকর্ষিত করে তা ক্রমান্বয়ে আলোচিত হল-
জাত শিক্ষকঃ
ক্ষিতীশ সিংহ ছিলেন একজন জাত শিক্ষক তাই তিনি যেকোনো প্রকারে বা মূল্যে কোনিকে স্বপ্ন পূরণের রাস্তায় তুলে দেন।
প্রতিভা চেতনার ক্ষমতাঃ
তিনি একজন প্রকৃত শিক্ষক বলেই গঙ্গার ঘাটে পাওয়া মেয়েটির সুপ্ত প্রতিভাকে দেখতে পান ও তা বিকশিত করার চেষ্টা করেন।
স্নেহশীলঃ
ক্ষিতীশ সিংহ ছিলেন স্নেহশীল শিক্ষক যিনি কোনিকে মেয়ের মতো দেখতেন ও ভালোবাসতেন।
দায়িত্ববোধঃ
তিনি কোনির শিক্ষক হওয়ায় কোনিকে নিজ খরচে, নিজ দায়িত্বে খাওয়াতেন, রাখতেন ও তার বাড়ির কথা জেনে লীলাবতীর দোকানে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেন।
গরীব দরদিঃ
ক্ষিতীশ সিংহ ছিলেন একজন গরিব ও দরদি ব্যক্তি। তিনি গরীব মানুষের কাছে যেচে সাহায্যের হাত বাড়াতে দ্বিধা করতেন না।
সততাঃ
ক্ষিতীশ সিংহ ছিলেন সৎ। তিনি জুপিটার থেকে বেরিয়ে আসার পরও জুপিটারের প্রতি তার ভালোবাসা একটুকুও কমাননি। তিনি তার জীবনে এই সততা বজায় রেখেছিলেন।
তীক্ষ্ণ বুদ্ধিঃ
ক্ষিতীশ সিংহ ছিলেন তীক্ষ্ণ বুদ্ধির অধিকারী। তিনি কোনির মানসিক অবস্থা দেখে তাকে খাটানোর জন্য টোস্ট, রুটি ও কলার লোভ দেখান।
কোনি চরিত্রের পরিপূরক চরিত্রঃ
কোনি উপন্যাসে ক্ষিতীশ চরিত্র ছিল কোনি চরিত্রের পরিপূরক। কোনি সারাজীবন একজন শিক্ষক ও ক্ষিতীশ একজন ছাত্রের খোঁজে জীবন অতিবাহিত করেছেন।
এইভাবে সমগ্র উপন্যাস জুড়ে আশা, নিরাশার দোলাচালে দুলতে দুলতে কল্পনা বাস্তবের সম্মুখ সমরে পড়ে ক্ষিতীশ সিংহ চরিত্রটি জীবনের বিচিত্র সাধ লাভ করে।
১০) “অবশেষে কোনি বাংলা সাঁতার দলে জায়গা পেল”- কোনি কীভাবে বাংলা সাঁতার দলে জায়গা পেল তা সংক্ষেপে লেখো। ৫
উৎসঃ
খেলাধূলাকে কেন্দ্র করে সার্থক উপন্যাসের স্রষ্টা “মতি নন্দী” রচিত “কোনি” উপন্যাসে আমরা উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র সাঁতারু কনকচাঁপা পাল বা কোনির বাংলা সাঁতার দলে জায়গা পাওয়ার সংগ্রামী কাহিনির পরিচয় লাভ করি।
কোনির বাংলা সাঁতার দলে জায়গা পাওয়ার কাহিনিঃ
কোনির প্রথম সাঁতার কাটা গঙ্গায়। সেখান থেকে বাংলা দলে জায়গা করে নেওয়া নেহাত সোজা ছিল না। দারিদ্রতা ও অশিক্ষার কারণে তাকে তথাকথিত শিক্ষিত ও সভ্য সমাজের কাছে হেনস্থা হতে হয়েছে।
কোনির নাম প্রথম বাংলা দলে তুলে ধরেন প্রণবেন্দু বিশ্বাস। তিনি কোনির প্রতিবন্ধী হিয়ার প্রশিক্ষক হওয়া সত্বেও বলেন “কনকচাঁপা পালকে বাংলা দলে রাখতে হবে।” মাদ্রাজের নির্বাচনী সভায় তাই কোনির কথা বলেন। কিন্তু জুপিটারের ক্ষিতীশ বিরোধিতার জন্য তারা কোনিকে দলে রাখতে অসম্মত হয়। এর আগে কম্পিটিশনে কোনিকে ডিসকোয়ালিফাই করা ও প্রথম হওয়া সত্ত্বেও দ্বিতীয় বলে ঘোষণা করেন। হরিচরণ, ধীরেন ঘোষ গোপন শলাপরামর্শে এসব করা হয়। তবে প্রণবেন্দু বাবু বুঝতে পারেন মহারাষ্ট্রের রমা যোশিকে হারানোর ক্ষমতা কারও থাকলে তা কোনির। তিনি এটাও বলেন যে কোনিকে বাদ দিলে বালিগঞ্জ সুইমিং ক্লাবকে বাদ দিয়ে বাংলা সাঁতার দল গঠিত হবে। তখন ধীরেন ঘোষ ভাবে একটা মেয়ের জন্য এত সমস্যা হলে তাকে নেওয়াই ভালো।
এইভাবে নানাবিধ বাগবিতণ্ডার মধ্যে দিয়ে প্রতিবাদ সামলে প্রণবেন্দুবাবুর সুবিচারের মাধ্যমে কোনি বঙ্গবাসীর নয়ণের মনি হওয়ার সুযোগ পায় ।
১১) ‘কোনি’ উপন্যাসের কাহিনি অবলম্বনে লীলাবতী চরিত্রের পরিচয় দাও। ৫
উৎসঃ
খেলাধূলাকে কেন্দ্র করে সার্থক উপন্যাসের স্রষ্টা “মতি নন্দী” রচিত “কোনি” উপন্যাসে আমরা লীলাবতী চরিত্রের পরিচয় লাভ করি।
চরিত্র বিশ্লেষণঃ
উপন্যাসের অন্যতম পার্শ্বচরিত্র ক্ষিতীশ সিংহের স্ত্রী লীলাবতীর যেসকল চরিত্র বৈশিষ্ট্যের পরিচয় আমরা পাই তা ক্রমান্বয়ে আলোচিত হল-
পরিশ্রমী ও কর্মপটুঃ
ছোটখাটো চেহারার, গৌরবর্ণা এবং গম্ভীর স্বভাবের লীলাবতী যথেষ্ট পরিশ্রমী। তাঁর সাংসারিক জ্ঞান ও সমস্ত কিছু দেখভাল করার জন্যই ক্ষিতীশ সিংহের সংসার টিকে ছিল। লীলাবতীর কর্মতৎপরতাতেই তাঁদের সংসার চলত। ‘সিনহা টেলারিং’ যখন লোকসানের মুখে সেই সময় লীলাবতী নিজের গয়না বন্ধক রেখে নতুন ধরনের কাজ শুরু করেন। এসময় তিনি দোকানের নাম পালটে ‘প্রজাপতি’ রেখে অসম্ভব পরিশ্রম ও কর্মতৎপরতার মাধ্যমে চার বছরের মধ্যেই ‘প্রজাপতি’র শ্রীবৃদ্ধি ঘটান।
ব্যবসায়ী মানসিকতাসম্পন্নঃ
ব্যবসায়িক মনের পরিচয় দিয়ে তিনি পুরুষদের পোশাক তৈরি বন্ধ করে দুজন মহিলা কর্মচারীকে দোকানে রেখে শুধু মেয়ে ও শিশুদের পোশাক তৈরি শুরু করেন। তাঁর নেতৃত্বেই ব্যবসা ক্রমশ বড়ো হয়ে ওঠে এবং আরও বড়ো স্থানের প্রয়োজন হয়ে পড়ে। সেক্ষেত্রেও তিনি নিজেই হাতিবাগানের মতো এলাকায় পাঁচ হাজার টাকার সেলামিতে একটি ভাড়ার দোকানের ব্যবস্থা করেন।
যোগ্য সহধর্মিনীঃ
গম্ভীর স্বভাবের হলেও লীলাবতী স্বামীর প্রতি যথেষ্ট শ্রদ্ধাশীল এবং পতিপ্রাণা ছিলেন। স্বামীর স্বভাব এবং সাঁতারপ্রীতির কথা জানতেন বলেই সাংসারিক ও ব্যবসায়ীক সমস্তরকম দেখভাল নিজেই করতেন। স্বামীর আদর্শ বা ভাবনা মেনে নিয়েই তাঁরই ইচ্ছামতো খাওয়ার পদ্ধতিও প্রায় মেনে নিয়েছিলেন। স্বামীর পরিশ্রমী সত্তার প্রতি শ্রদ্ধা ও বিশ্বাস অটুট ছিল বলেই তিনি কোনির সাঁতার দেখতে হাজির হয়েছিলেন। স্বল্প পরিসরেও তাঁর কর্মপ্রাণা, সংসারী এবং পরোক্ষে স্বামী অনুরাগী চরিত্রটি উপন্যাসে ধরা পড়েছে।
১২) কোনি উপন্যাস অবলম্বনে কোনির চরিত্রটি বিশ্লেষণ করো। ৫
উৎসঃ
খেলাধূলাকে কেন্দ্র করে সার্থক উপন্যাসের স্রষ্টা “মতি নন্দী” রচিত “কোনি” উপন্যাসে আমরা উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র সাঁতারু কনকচাঁপা পাল বা কোনি।
চরিত্র বিশ্লেষণঃ
উপন্যাসের প্রধান চরিত্র হলো কোনি। ক্ষিতীশের অভিভাবকত্বে সকল বাধা জয় করে জীবনের জয়স্তম্ভে পদার্পণই ‘কোনি’ উপন্যাসের মূল উপজীব্য। কোনির চরিত্র বিশ্লেষণ করলে যে বৈশিষ্ট্যগুলি পাওয়া যায় তা নিম্নরূপ-
কঠোর জীবন সংগ্রামঃ
কোনি ওরফে কনকচাঁপা পাল অতি দারিদ্র্যপীড়িত সংসারের মেয়ে। চেহারা ছেলেদের মতো,মেয়েমদ্দানি। কোনো কিছুতেই ভয়ে পিছুপা হয়না। কঠোর সংগ্রামের ফলেই সে শেষ পর্যন্ত জয় লাভ করে।
চারিত্রিক দৃঢ়তাঃ
কোনি দৃঢ় চরিত্রের অধিকারী। গঙ্গায় আম কুড়ানো নিয়ে ঝগড়াই হোক বা হিয়া মিত্রের হাতে আঘাত করে জল ফেলে দেওয়া সব কিছুর মধ্যেই তাঁর চারিত্রিক দৃঢ়তা প্রকাশিত।
পরিবারের প্রতি দায়বদ্ধতাঃ
পরিবারের অন্নসংস্থানের জন্য কোনি ট্রেনিং- এর পরই ছুটে যায় প্রজাপতিতে কাজ করার জন্য। ক্ষিতীশ তার জন্য পুষ্টিকর খাদ্যের ব্যবস্থা করলে সে খাদ্যের বদলে একটা টাকা চেয়ে নেই চাল কেনার জন্য।
প্রখর আত্মসম্মানবোধঃ
কোনির আত্মসম্মানবোধ ছিল প্রখর। মাদ্রাজে জাতীয় স্তরে খেলতে গিয়ে হিয়ার জন্য যখন চোর বদনাম পেয়ে চড় খায় তখন হিয়াকেও সে চড় না ফিরিয়ে দিয়ে ছাড়ে না। চিড়িয়াখানার ঘটনাতেও তার আত্মসম্মানবোধ প্রকাশ পেয়েছে।
পরিশ্রমী ও কষ্টসহিষ্ণুঃ
কোনি ছিল অসম্ভব পরিশ্রমী। পারিবারিক দারিদ্র্য, নিজের ক্ষুধাকে হারিয়েও সে নিজেকে পরিশ্রমে যুক্ত রাখে। কঠোর পরিশ্রমের ফলেই কোনি জয়মাল্য ছিনিয়ে নেয়।
প্রতিবাদীঃ
অপমান অবহেলা সমস্ত কিছুর প্রতিবাদ সে করেছে তার সাঁতারের মাধ্যমে।
এইরূপে কোনির নিষ্ঠা, একাগ্রতা, লড়াকু পরিশ্রমী মানসিকতা চরিত্রটিকে পাঠকের প্রিয় করে তুলেছে।
দশম শ্রেণি বাংলা কোনি থেকে আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর শুধুমাত্র শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের সাবস্ক্রাইবারদের জন্যঃ
“ম্যাসেজ হচ্ছে না সংগীতচর্চা হচ্ছে”- কে বলেছে? কাকে বলেছে? তার ম্যাসেজ পদ্ধতিগুলির বর্ণনা দাও।
“খাওয়ায় আমার লোভ নেই ডায়েটিং করি”- বক্তা কে? তার ডায়েটিং-এর পরিচয় দাও।
“আপনি আমার থেকে চার হাজার গুণ বড়োলোক, কিন্তু চার লক্ষ টাকা খরচ করেও আপনি নিজের শরীরটাকে চাকর বানাতে পারবেন না”- বক্তা কে? তিনি কাকে একথা বলেছেন? তার এমন কথা বলার কারণ কী?
“চ্যাম্পিয়ানরা জন্মায়, ওদের তৈরি করা যায় না”- বক্তা কে? তার এই বক্তব্যের সত্যতা উপন্যাসে কীভাবে প্রকাশ পেয়েছিল?
উত্তর জানতে এখানে টাচ/ক্লিক করতে হবে
“ক্লাবই সুইমার তৈরি করে, ওরা করে মোড়লি।” – কাকে উদ্দেশ্য করে কথাটা বলা হয়েছে ? এর তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।
“কম্পিটিশনে পড়লে মেয়েটা তো আমার পা ধোয়া জল খাবে”- বক্তা কে? মন্তব্যটির তাৎপর্য লেখো।
“সাঁতারু অনেক বড়ো সেনাপতির থেকে”- বক্তা কে? মন্তব্যের তাৎপর্য আলোচনা করো।
কোনির পারিবারিক জীবনের পরিচয় দাও।
“এটা বুকের মধ্যে পুষে রাখুক” – কী পুষে রাখার কথা বলা হয়েছে? কী কারণে এই পুষে রাখা?
“খিদ্দা, এবার আমরা কী খাব?”- বক্তা কে? কোন প্রসঙ্গে মন্তব্যটি করা হয়েছে? উদ্দিষ্ট ব্যক্তি কীভাবে তাদের সাহায্য করেছেন?
“তোর আসল লজ্জা জলে আসল গর্বও জলে”- কে কাকে একথা বলেছিল? প্রসঙ্গ উল্লেখ করে কথাটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।
“ওইটেই তো আমি রে, যন্ত্রণাটাই তো আমি।”- কোন্ প্রসঙ্গে এই উক্তি? উক্তিটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।
কোনি কীভাবে বাংলা সাঁতার দলে জায়গা পেল তা আলোচনা করো।
“কোনিকে বিভ্রান্ত করল হিয়ার এই কথাটা”- হিয়ার কোন কথা, কেন কোনিকে বিভ্রান্ত করল? এই বিভ্রান্তি দূর করার জন্য সে নিজের মনে কী বলেছিল?
“জোচ্চুরি করে আমাকে বসিয়ে রেখে…” – প্রসঙ্গ আলোচনা করো।
“ফাইট কোনি ফাইট”- উপন্যাসে কথাটির তাৎপর্য বিচার করো।
কোনি উপন্যাস অবলম্বনে কোনি চরিত্রের পরিচয় দাও।
কোনির জীবনে ক্ষিতীশ সিংহের ভূমিকা আলোচনা করো।
কোনি উপন্যাস অবলম্বনে ক্ষিতীশ সিংহের চরিত্র আলোচনা করো।
দারিদ্র ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে কোনির লড়াই আলোচনা করো।
লীলাবতী চরিত্র সম্পর্কে আলোচনা করো।
“বাংলা তাহলে চ্যাম্পিয়নশিপটা পেল না”- কে এই আশঙ্কা করেছিল? এমন আশঙ্কার কারণ কী ছিল? শেষ পর্যন্ত কী ঘটেছিল?
দশম শ্রেণি বাংলা নোটঃ
- জ্ঞানচক্ষু
- অসুখী একজন
- আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি
- আফ্রিকা
- হারিয়ে যাওয়া কালি কলম
- বহুরুপী
- সিরাজদ্দৌলা
- অভিষেক
- পথের দাবী
- প্রলয়োল্লাস
- সিন্ধুতীরে
- অদল বদল
- অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান
- বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান
- নদীর বিদ্রোহ
- কোনি
- বাংলা ব্যাকরণ
শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের কিছু গুরুত্বপূর্ণ লিঙ্ক নিম্নে প্রদান করা হলোঃ
- বাংলা ব্যাকরণের আলোচনাগুলি দেখতে এই লিঙ্কে ক্লিক/টাচ করতে হবে
- শিক্ষালয় ওয়েবসাইটে প্রদান করা প্রবন্ধ রচনাগুলি দেখতে এই লিঙ্কে ক্লিক/টাচ করতে হবে
- পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা অধ্যায়ভিত্তিক নোট দেখতে এই লিঙ্কে ক্লিক করতে হবে
- পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা অধ্যায়ভিত্তিক MCQ TEST প্রদান করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করতে হবে
- শিক্ষালয় ইউটিউব চ্যানেলটি দেখতে এই লিঙ্কে ক্লিক/টাচ করতে হবে
- পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির সাজেশন দেখতে এই লিঙ্কটি অনুসরণ করতে হবে
শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের সকল প্রকার নোট, সাজেশন, প্রশ্নপত্র ও মক টেষ্টের সুবিধা গ্রহণ করতে নিম্নের ছবিতে ক্লিক/টাচ করে বিষদ তথ্য জেনে নাওঃ