দশম শ্রেণির মাধ্যমিক আফ্রিকা কবিতার SAQ প্রশ্নের উত্তর শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের জন্য প্রদান করা হলো। শিক্ষার্থীরা এই দশম শ্রেণির মাধ্যমিক আফ্রিকা কবিতার SAQ প্রশ্নের উত্তর সমাধানের মধ্য দিয়ে তাদের পাঠ্য আফ্রিকা কবিতাটির পরীক্ষা প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারবে।
শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের সকল প্রকার আপডেট লাভ করতে মোবাইল স্ক্রিনের বা’দিকের নিম্নের অংশে থাকা বেল আইকনটিতে (🔔) টাচ করে শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের নোটিফিকেশন অন করে রাখুন।
আফ্রিকা কবিতার SAQ প্রশ্নের উত্তর :
১) বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কার অনুরোধে ‘আফ্রিকা’ কবিতাটি রচনা করেন?
উঃ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার স্নেহধন্য কবি অমিয় চক্রবর্তীর অনুরোধে আফ্রিকা কবিতাটি রচনা করেন।
২) “ছিনিয়ে নিয়ে গেল তোমাকে,” —কে, কাকে কোথা থেকে ছিনিয়ে নিয়ে গেল?
উঃ বিশ্বসৃষ্টির আদিপর্বে যখন পার্থিব ভূগোলে নানা পরিবর্তন সাধিত হচ্ছিল, তখন রুদ্র সমুদের বাহু আফ্রিকাকে ছিনিয়ে নিয়ে গেল ভুখন্ড থেকে।
৩) “কৃপণ আলোর অন্তঃপুরে।” —আলোকে ‘কৃপণ’ বলা হয়েছে কেন?
উঃ সৌরসংসারে সূর্যের আলো অপরিমেয় হয়ে পৃথিবীর উপর পতিত হলেও, অরণ্যসঙ্কুল আফ্রিকায় তার প্রবেশ কম বলেই কবি ‘কৃপণ’ আলো বলেছেন।
উঃ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘আফ্রিকা’ কবিতায় প্রকৃতির ঘন রহস্যমাখা বুকে জেগে থাকা ভীষণ বা ভয়ালকে স্বয়ং, আফ্রিকা বিরূপের ছদ্মবেশে বিদ্রুপ করেছিল।
৫) “অপরিচিত ছিল তোমার মানব রূপ” —কেন মানবরূপ অর্পরিচিত ছিল?
উঃ জঙ্গলাকীর্ণ ও বনস্পতির পাহারায় নিবিড় ছায়াচ্ছন্ন আফ্রিকাকে সভ্যতার উগ্রতা স্পর্শ করতে পারেনি। তাই মানবিকতাবোধের চিরস্নিগ্দ্ধ রূপটি সমগ্র পৃথিবীর কাছে অপরিচিত ছিল।
৬) “এল ওরা লোহার হাতকড়ি নিয়ে” —লোহার হাতকড়ি নিয়ে তারা কী করেছিল?
উঃ নেকড়ের চেয়ে তীক্ষ্ণ নখযুক্ত সাম্রাজ্যবাদী মানুষ ধরার দল আফ্রিকার বস্তুসম্পদ ও মানব সম্পদের লোভে কঠিন হাতকড়িতে বন্দি করল আফ্রিকাকে।
৭) “মানুষ-ধরার দল” বলতে কবিতায় কাদের বোঝানো হয়েছে?
উঃ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ‘আফ্রিকা’ কবিতায় -‘মানুষ ধরার দল’ বলতে সাম্রাজ্যবাদীদের বোঝানো হয়েছে।
উঃ আপন সত্তার রহস্য উন্মোচনে মগ্ন ‘আফ্রিকা’ অকস্মাৎ সাম্রাজ্যবাদীদের দ্বারা আক্রান্ত হলে, সে উদ্গত ভাষাহীন ক্রন্দনে ভেসে গিয়েছিল।
৯) আফ্রিকার ধূলি কীভাবে পঙ্কিল হয়ে উঠেছিল?
উঃ সামাজ্যবাদীদের বর্বর লোভ ও নির্মম অত্যাচারে আফ্রিকাবাসীদের বেদনার অশ্রু ও প্রতিবাদের রক্ত মিশে ধূলি পঙ্কিল হয়ে উঠেছিল।
১০) “সমুদ্রপাড়ে সেই মুহূর্তেই” কী ঘটেছিল?
উঃ সমুদ্রপারে সেই মুহূর্তেই সাম্রাজ্যবাদীদের পাড়ায় পাড়ায় মন্দিরে বাজছিল পূজার ঘন্টা এবং শিশুরা পরম নিশ্চিন্তে মায়ের কোলে খেলছিল।
১১) পত্রপুট কাব্যগ্রন্থের প্রথম সংস্করণের প্রকাশকাল উল্লেখ করো।
উঃ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত পত্রপুট কাব্যগ্রন্থের প্রথম সংস্করণের প্রকাশকাল ১৩৪৩ বঙ্গাব্দের ২৫ বৈশাখ।
১২) পত্রপুট কাব্যগ্রন্থের প্রথম সংস্করণে ‘আফ্রিকা’ কবিতাটি ছিল কি?
উঃ পত্রপুট কাব্যগ্রন্থের প্রথম সংস্করণে (প্রকাশ ২৫ বৈশাখ, ১৩৪৩ বঙ্গাব্দ) ‘আফ্রিকা’ কবিতাটি ছিল না।
১৩) পত্রপুট কাব্যগ্রন্থের দ্বিতীয় সংস্করণের প্রকাশকাল উল্লেখ করো।
উঃ পত্রপুট কাব্যগ্রন্থের দ্বিতীয় সংস্করণ ১৩৪৫ বঙ্গাব্দের ২৫ শ্রাবণ প্রকাশিত হয়।
১৪) পত্রপুট কাব্যগ্রন্থের দ্বিতীয় সংস্করণে ক-টি কবিতা সংযোজিত হয়?
উঃ পত্রপুট কাব্যগ্রন্থের দ্বিতীয় সংস্করণে দুটি কবিতা সংযোজিত হয়, যার একটি হল আফ্রিকা।
১৫) পত্রপুট কাব্যগ্রন্থের দ্বিতীয় সংস্করণে ‘আফ্রিকা’ কবিতাটি কত সংখ্যক কবিতা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়?
উঃ পত্রপুট কাব্যগ্রন্থের দ্বিতীয় সংস্করণে ‘আফ্রিকা’ কবিতাটি ষোলো সংখ্যক কবিতা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়।
১৬) আফ্রিকা কবিতাটি প্রথম কোন্ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়?
উঃ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘আফ্রিকা’ কবিতাটি প্রথম প্রকাশিত হয় প্রবাসী পত্রিকায়, চৈত্র, ১৩৪৩ বঙ্গাব্দে।
১৭) রবীন্দ্রনাথের জীবনকালে ‘আফ্রিকা’ কবিতাটির ভিন্নতর পাঠ কোথায় প্রকাশিত হয়েছিল?
উঃ রবীন্দ্রনাথের জীবনকালে ‘আফ্রিকা’ কবিতাটির ভিন্নতর একটি পাঠ প্রকাশিত হয়েছিল কবিতা পত্রিকায়, আশ্বিন, ১৩৪৪ বঙ্গাব্দে।
১৮) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মৃত্যুর পর ‘আফ্রিকা’ কবিতার আর-একটি পাঠ কোথায় প্রকাশিত হয়েছিল?
উঃ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মৃত্যুর পর ‘আফ্রিকা’ কবিতার আর-একটি পাঠ বিশ্বভারতী পত্রিকা-র শ্রাবণ-আশ্বিন ১৩৫১ সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছিল।
১৯) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কার অনুরোধে ‘আফ্রিকা’ কবিতাটি লেখেন?
উঃ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কবি অমিয় চক্রবর্তীর অনুরোধে ‘আফ্রিকা’ কবিতাটি লেখেন।
২০) আফ্রিকা কবিতাটি কোন্ সময়ের রচনা?
উঃ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ‘আফ্রিকা’ শীর্ষক কবিতাটি ২৮ মাঘ, ১৩৪৭ বঙ্গাব্দ (৮ ফেব্রুয়ারি, ১৯৩৭ খ্রিস্টাব্দ)-এর রচনা।
২১) উনিশ শতকের শেষভাগে কোন্ কোন্ সাম্রাজ্যবাদী রাষ্ট্র এশিয়া ও আফ্রিকার বুকে নিজেদের উপনিবেশ গড়ে তুলতে ও সাম্রাজ্যবিস্তারের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছিল?
উঃ উনিশ শতকের শেষভাগে ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া প্রভৃতি ইউরোপীয় রাষ্ট্রগুলি এশিয়া ও আফ্রিকার বুকে নিজেদের সাম্রাজ্যবিস্তারের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছিল।
২২) সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলি কোন অজুহাতে এশিয়া ও আফ্রিকায় তাদের অনুপ্রবেশ ঘটায়?
উঃ অসভ্য জাতিকে সভ্য করার অজুহাতে সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলি এশিয়া ও আফ্রিকায় তাদের অনুপ্রবেশ ঘটায়। যার প্রকৃত উদ্দেশ্য ছিল লুণ্ঠন ও উপনিবেশ বিস্তার।
২৩) “উদ্ভ্রান্ত সেই আদিম যুগে” – ‘আদিম যুগ’ বলতে কোন্ সময়পর্বের কথা বোঝানো হয়েছে?
উঃ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘আফ্রিকা’ কবিতায় ‘আদিম যুগ’ বলতে বিশ্বসৃষ্টির সূচনাপর্বের কথা বোঝানো হয়েছে।
উঃ প্রকৃতির দৃষ্টি-অতীত জাদু বলতে প্রকৃতির বৈচিত্র্যপূর্ণ নানা অচেনা দিকগুলির কথা বলা হয়েছে। যার রহস্য আদিম মানুষ তার বুদ্ধি ও জ্ঞান দিয়ে ভেদ করতে পারেনি।
উঃ সাম্রাজ্যবিস্তারের লক্ষ্যে মানুষ মানুষকে দীর্ঘকাল ধরে শিকল পরিয়েছে। তথাকথিত সভ্য মানুষের ক্ষমতার প্রতি এই বর্বর লোভের মধ্য দিয়েই তাদের নির্লজ্জ অমানুষতা প্রকাশ পেয়েছে।
৪৪) “পঙ্কিল হলো ধূলি তোমার রক্তে অশ্রুতে মিশে” – কীভাবে এমন পরিস্থিতি তৈরি হল?
উঃ পৃথিবীর নানা সাম্রাজ্যবাদী শক্তি নিজেদের উপনিবেশ গড়ার জন্যে স্বাধীন আফ্রিকার মানুষকে শৃঙ্খলিত করল এবং তাদের ওপর বর্বর, অমানুষিক অত্যাচার চালাল। এভাবেই এমন পরিস্থিতি তৈরি হল।
উঃ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘আফ্রিকা’ কবিতার আলোচ্য অংশে করি সংগীতে বেজে উঠেছিল সুন্দরের আরাধনা।
৫০) “প্রদোষকাল ঝঞ্ঝাবাতাসে রুদ্ধশ্বাস”— ‘প্রদোষকাল’ বলতে কোন্ সময়কে বোঝানো হয়েছে?
উঃ প্রদোষকাল বলতে সান্ধ্যকাল বা দিনের অন্তিম সময়কে বোঝালে হয়েছে।
৫১) “আজ যখন পশ্চিম দিগন্তে/প্রদোষকাল ঝঞ্ঝাবাতাসে রুদ্ধশ্বাস/যখন গুপ্ত গহ্বর থেকে পশুরা বেরিয়ে এল/অশুভ ধ্বনিতে ঘোষণা করল দিনের অন্তিমকাল” – উদ্ধৃতাংশে কোন রাজনৈতিক ঘটনার স্পর্শ রয়েছে?
উঃ উদ্ধৃতাংশে আফ্রিকার কৃষ্ণাঙ্গ মানুষদের প্রতি শ্বেতাঙ্গ মানুষদের এবং তথাকথিত সভ্য ও উন্নত রাষ্ট্রগুলির অত্যাচার ও উৎপীড়নের মতো রাজনৈতিক ঘটনার ছোঁয়া রয়েছে।
৫২) গুপ্ত গহবর থেকে পশুরা বেরিয়ে এসে কী ঘোষণা করেছিল?
উঃ গুপ্ত গহবর থেকে বেরিয়ে এসে পশুরা দিনের অন্তিমকাল ঘোষণা করেছিল।
৫৩) “এসো যুগান্তের কবি” – কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ‘যুগান্তের কবি’-র কাছে কোন্ ডাক দিয়েছেন?
উঃ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যুগান্তরের কবিকে আসন্ন সন্ধ্যার শেষে অপমানিত আফ্রিকার পাশে দাঁড়ানোর ডাক দিয়েছেন।
৫৪) “আসন্ন সন্ধ্যার শেষ রশ্মিপাতে” – সন্ধ্যাকাল আসন্ন কেন?
উঃ অশুভ ধ্বনিতে দিনের অন্তিমকাল ঘোষণা করেছে গুপ্ত গহ্বরের পশুরা, দিনের শেষে পশ্চিম দিগন্তও ঝঞ্ঝাবাতাসে শ্বাসরুদ্ধ। সভ্যতার যেন সংকটকাল উপস্থিত। তাই রূপকার্থে বলা হয়েছে সন্ধ্যাকাল আসন্ন।
৫৫) “ক্ষমা করো” – এই ক্ষমাপ্রার্থনার মধ্য দিয়ে কবির কোন্ মনোভাবের প্রকাশ ঘটেছে?
উঃ এই ক্ষমাপ্রার্থনার মধ্য দিয়ে কবির অনুশোচনা এবং বিবেকবোধের প্রকাশ ঘটেছে।
৫৬) “সেই হোক তোমার সভ্যতার শেষ পুণ্যবাণী” – সভ্যতার শেষ ‘পুণ্যবাণী’-টি কী হওয়া বাঞ্ছনীয় বলে কবি মনে করেন?
উঃ আফ্রিকা কবিতায় কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মনে করেন যুগান্তের কবির কণ্ঠে সভ্যতার শেষ ‘পুণ্যবাণী’-টি হওয়া উচিত ‘ক্ষমা করো’।