প্রলয়োল্লাস কবিতার সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর

প্রলয়োল্লাস কবিতার সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর

শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের পক্ষ থেকে দশম শ্রেণির মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের জন্য বাংলা প্রলয়োল্লাস কবিতার সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর প্রদান করা হলো। শিক্ষার্থীরা এই প্রলয়োল্লাস কবিতার সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর অনুশীলনের মধ্য দিয়ে তাদের পরীক্ষা প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারবে। এই প্রলয়োল্লাস কবিতার সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর আলোচনাগুলি শিক্ষার্থীদের কবিতাটি বুঝতে সহায়তা প্রদান করবে। 

শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের সকল প্রকার আপডেট লাভ করতে মোবাইল স্ক্রিনের বা’দিকের নিম্নের অংশে থাকা বেল আইকনটিতে (🔔) টাচ করে শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের নোটিফিকেশন অন করে রাখুন। 

প্রলয়োল্লাস কবিতার সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর : 

১) ‘তোরা সব জয়ধ্বনি কর’- ‘তোরা’ কারা ? তাদের জয়ধ্বনি করতে বলা হচ্ছে কেন ?

উৎসঃ

বাংলা সাহিত্যের বিদ্রোহী কবি “কাজি নজরুল ইসলাম” রচিত “অগ্নিবীণা” কাব্যগ্রন্থের প্রথম কবিতা “প্রলয়োল্লাস” থেকে এই তাৎপর্যপূর্ণ অংশটি চয়ন করা হয়েছে। 

তোরা বলতে যাদের বোঝানো হয়েছেঃ

পাঠ্য কবিতায় ‘তোরা’ বলতে পরাধীন দেশের স্বাধীনতার প্রত্যাশী আপামর জনসাধারণকে বোঝানো হয়েছে। 

তাদের জয়ধ্বনি করতে বলার কারণঃ

ভারতবর্ষের পরাধীনতা কবি নজরুলের কাছে ভীষণ পীড়াদায়ক ছিল। তিনি সর্বদাই এই অবস্থার অবসান চাইতেন। তিনি বুঝেছিলেন কালবৈশাখীর মতো ভয়ংকর শক্তি কিংবা প্রলয় নেশায় মত্ত মহাদেবের মতোই কেউ এসে এই অবস্থার অবসান ঘটাতে পারবে। তাই কবি ভারতীয়দের এই ধ্বংস ও সৃষ্টির দেবতার আগমনের উদ্দেশ্যে জয়ধ্বনি করার আহ্বান জানিয়েছেন।

 

২) ‘এবার মহানিশার শেষে/ আসবে ঊষা অরুন হেসে’- মহানিশা কি? এই মন্তব্যের মধ্য দিয়ে কবি কিসের ইঙ্গিত দিয়েছেন? 

উৎসঃ

বাংলা সাহিত্যের বিদ্রোহী কবি “কাজি নজরুল ইসলাম” রচিত “অগ্নিবীণা” কাব্যগ্রন্থের প্রথম কবিতা “প্রলয়োল্লাস” থেকে এই তাৎপর্যপূর্ণ অংশটি চয়ন করা হয়েছে। 

মহানিশার স্বরূপঃ 

‘মহানিশা’ বলতে রাত্রি দ্বিতীয় প্রহর এবং তৃতীয় প্রহরের মাঝের সময় অর্থাৎ মধ্যরাত্রিকালকে বোঝানো হয়, এই সময় রাত্রি গভীরতম হয়। চারপাশ ডুবে যায় রাত্রির কালো অন্ধকারে।

কবির উদ্দেশ্যঃ 

কবি এই নিকষ কালো অন্ধকার সময়টিকে ভারতের পরাধীনতার কালিমা হিসাবে ইঙ্গিত করেছেন। অন্ধকার যতই গাঢ় হোক না কেন, অন্ধকার কিন্তু চিরস্থায়ী হয়না। কালের নিয়ম মেনে আলোর উদয় হয়। সূর্য ওঠার আগের মুহূর্ত বা ভোরবেলাকে ঊষাকাল বলা হয়, এর কিছুপর অরুন অর্থাৎ সূর্যের উদয় হয়। সূর্যের তীব্র তেজে রাত্রির সকল অন্ধকার দূর হয়ে যায়। কবি স্বাধীনতাকে সকালের সাথে তুলনা করেছেন, কবি বিশ্বাস করেন যে ভারতের বুকেও সূর্যের উদয় হবে যার তীব্র তেজে পরাধীনতার সকল গ্লানি ধুয়ে যাবে। 

 

৩) ‘অট্টরোলের হট্টগোলে স্তব্ধ চরাচর’- ‘চরাচর’ শব্দের অর্থ কী ? চরাচর স্তব্ধ কেন তা লেখো।  

উৎসঃ

বাংলা সাহিত্যের বিদ্রোহী কবি “কাজি নজরুল ইসলাম” রচিত “অগ্নিবীণা” কাব্যগ্রন্থের প্রথম কবিতা “প্রলয়োল্লাস” থেকে এই তাৎপর্যপূর্ণ অংশটি চয়ন করা হয়েছে। 

চরাচর শব্দের অর্থঃ 

‘চরাচর’ শব্দের অর্থ হল সমগ্র পৃথিবী বা জগৎ। 

চরাচরের স্তব্ধতার কারণঃ 

কবি প্রলয় বা ধ্বংসকে ফুটিয়ে তুলতে কখনও শিব, আবার কখনও সর্বনাশী জ্বালামুখী স্বরূপ চণ্ডীমূর্তির রুদ্রতাণ্ডবের চরাচর স্তব্ধ কেন উপমা টেনে এনেছেন। বিনাশের অট্টহাসির গভীর ব্যঞ্জনা যেন সমগ্র জগতে সৃষ্টি করেছে এক রুদ্ধশ্বাস পরিবেশ। আর তাই প্রলয়ের ভয়াবহ বিস্ফোরণের অজানা আশঙ্কায় এ পৃথিবী নিষ্কম্প-নিস্তব্ধ। 

 

৪) ‘দিগম্বর জটায় হাসে শিশু-চাঁদের কর’- দিগম্বর বলতে কী বোঝায় ? উদ্ধৃতাংশটির বক্তব্য বিষয় নিজের ভাষায় লেখো। 

উৎসঃ

বাংলা সাহিত্যের বিদ্রোহী কবি “কাজি নজরুল ইসলাম” রচিত “অগ্নিবীণা” কাব্যগ্রন্থের প্রথম কবিতা “প্রলয়োল্লাস” থেকে এই তাৎপর্যপূর্ণ অংশটি চয়ন করা হয়েছে।

দিগম্বরের পরিচয়ঃ 

দিগম্বর বলতে দেবাদিদেব মহাদেবকে বোঝানো হয়েছে। ‘দিগম্বর’ শব্দের অর্থ ‘দিক অম্বর’ যাহার, মহাদেব শিবের বস্ত্রসম্ভারের স্বল্পতার কারণে তাঁকে এই নামে সম্বোধন করা হয়েছে।

মূল বক্তব্যঃ 

আমরা জানি শিবের জটায় পবিত্র চন্দ্রের অধিষ্ঠান। পুরাণ মতে তেজস্বিনী গঙ্গা যখন স্বর্গলোক থেকে পৃথিবী ধ্বংসের জন্য আসেন, তখন মহাদেব তা নিজ জটায় ধারণ করেন। এর অর্থ  মহাদেবের জটায় একাধারে ধ্বংস এবং চন্দ্রের আলোকোজ্জল পবিত্র স্নিগ্ধতা সহাবস্থান করে। আজ যখন নবযুগের বার্তায় পৃথিবী উল্লাসিত, প্রাচীন ধারণার অবসান আসন্ন, সেই সময় মানুষের মনের অবস্থা বোঝাতে কবি এই উপমা ব্যবহার করেছেন।

 

৫) ‘আসছে নবীন-জীবনহারা অ-সুন্দরে করতে করতে ছেদন!’- কোন কবিতার পঙ্‌ক্তি এটি ? উদ্ধৃতিটির তাৎপর্য লেখো।

উৎসঃ

বাংলা সাহিত্যের বিদ্রোহী কবি “কাজি নজরুল ইসলাম” রচিত “অগ্নিবীণা” কাব্যগ্রন্থের প্রথম কবিতা “প্রলয়োল্লাস” থেকে এই তাৎপর্যপূর্ণ অংশটি চয়ন করা হয়েছে।

তাৎপর্যঃ 

এই কবিতায় কবি প্রলয়ের ভয়ংকর অথচ সুন্দররূপ চিত্রিত করেছেন। এখানে ‘নবীন’ বলতে কবি দেশের তরুণদের কথা বলেছেন, সাম্যবাদী কবি নজরুল যে সময়ে এই কবিতাটি রচনা করেছেন, সেই সময়ে বিশ্বে রুশবিপ্লব সংগঠিত হয়েছে, সাম্যবাদী ভাবধারার ধাক্কায় একে একে প্রাচীন রাজতান্ত্রিক শক্তির পতন হচ্ছে। কবি চান পরাধীন ভারতে এই নবীনদের আগমন ঘটুক। যাহা সত্য তাহাই সুন্দর, তাই কবি চান পুরাতন, গতানুগতিক ভাবধারা যা কবির ভাষায় অসুন্দর তার বিনাশ ঘটুক নবীনের আগমনে।

 

৬) ‘ভাঙা-গড়া খেলা যে তার’ – কবি ‘ভাঙা- গড়া খেলা’ বলতে কী বুঝিয়েছেন? 

উৎসঃ

বাংলা সাহিত্যের বিদ্রোহী কবি “কাজি নজরুল ইসলাম” রচিত “অগ্নিবীণা” কাব্যগ্রন্থের প্রথম কবিতা “প্রলয়োল্লাস” থেকে এই তাৎপর্যপূর্ণ অংশটি চয়ন করা হয়েছে।

‘ভাঙা-গড়া খেলা’র তাৎপর্যঃ

কোনো কিছু সৃষ্টির জন্য ধ্বংসের প্রয়োজন, এটাই বিশ্বের নিয়ম। কবি যে সময়ে তাঁর এই প্রলয়োল্লাস কবিতাটি লিখেছেন, সেই সময় ভারতবর্ষ ছিল পরাধীন। সাম্রাজ্যবাদী ইংরেজদের দ্বারা শাসিত হত আমাদের দেশ। সাম্যবাদী কবি স্বপ্ন দেখতেন যে একদিন এই পরাধীন দেশে স্বাধীনতা-সূর্য এর উদয় হবে। এই ভাবনা আরো বিস্তৃত হয় রুশ বিপ্লবের হাত ধরে। এই বিপ্লব বিশ্বের মূল সাম্রাজ্যবাদী শক্তির মুলে কুঠারাঘাত করে, সকল পুরানো ধারণাকে জলাঞ্জলি দিয়ে বেঁচে থাকার শক্তি হিসাবে সাম্যবাদকে বেছে নেওয়া হয়। কবি বিশ্বাস করেন যে, আমাদের দেশের তরুণদের হাত ধরে দেশে বিপ্লব আসবে, সেদিন সমস্ত প্রাচীন ধারণা ভেঙে দিয়ে নতুন ভাবে গড়ে উঠবে আমাদের দেশ।

 

৭) ‘ভয়াল তাহার নয়নকটায়’- এখানে তাহার বলতে কার কথা বোঝানো হয়েছে ? ভয়াল শব্দের তাৎপর্য কি ? 

উৎসঃ

বাংলা সাহিত্যের বিদ্রোহী কবি “কাজি নজরুল ইসলাম” রচিত “অগ্নিবীণা” কাব্যগ্রন্থের প্রথম কবিতা “প্রলয়োল্লাস” থেকে এই তাৎপর্যপূর্ণ অংশটি চয়ন করা হয়েছে।

তাহার বলতে যার কথা বোঝানো হয়েছেঃ

এখানে কবি ‘তাহার’ বলতে প্রলয়রূপী নটরাজকে বুঝিয়েছেন।

‘ভয়াল’ শব্দের তাৎপর্যঃ

কবি উল্লিখিত দ্বাদশ রবি হল- বিবস্বান, অর্যমান, পুষা, ত্বষ্টা, সবিদা, ভগ, ধাতা, বিধাতা, বরুণ, মিত্র, শত্রু, উরুক্রম। এই দ্বাদশ রবির তেজ মিশে আছে সেই ভয়ংকরের চোখে, হতাশাগ্রস্ত দেশের আকাশে সে তার উন্মত্ত জটায় ছড়িয়ে দিচ্ছে নতুনের তেজ। তার চোখের জলে সাতটি মহাসাগর দুলে উঠেছে। এই ভয়াল রূপ যেন বিশ্বপ্রকৃতিরই অনুরূপ। সর্বশক্তিমান প্রকৃতিও যেন এই পরাধীনতার বিরুদ্ধে জাগ্রত হয়েছে। 

 

৮) ‘আসছে এবার অনাগত প্রলয়-নেশার নৃত্য পাগল’- ‘অনাগত’ কে ? সে ‘প্রলয়-নেশার নৃত্য পাগল’ কেন ?   

উৎসঃ

বাংলা সাহিত্যের বিদ্রোহী কবি “কাজি নজরুল ইসলাম” রচিত “অগ্নিবীণা” কাব্যগ্রন্থের প্রথম কবিতা “প্রলয়োল্লাস” থেকে এই তাৎপর্যপূর্ণ অংশটি চয়ন করা হয়েছে।

অনাগত-র পরিচয়ঃ

‘অনাগত’ শব্দটির আক্ষরিক অর্থ যা আসেনি। এক্ষেত্রে পরাধীনতার নাগপাশ থেকে আমাদের মুক্ত করতে পারে এমন শক্তির আগমন যে আসন্ন তা আশাবাদী কবি মনশ্চক্ষে প্রত্যক্ষ করেছেন। শিব বা রুদ্ররূপী এই শক্তিকেই কবি ‘অনাগত’ বলেছেন। 

তাৎপর্যঃ 

‘প্রলয়’ ও ‘নৃত্য পাগল’ শব্দ দুটির দ্বারা কবি শিবের বিধ্বংসী ও নটরাজরূপের কথা বলতে চেয়েছেন। কবির কাঙ্ক্ষিত অনাগত শক্তি অত্যাচারী ব্রিটিশ শক্তিকে ধ্বংসের ও মন্থনের দ্বারা আমাদের স্বাধীনতার নতুন সকাল উপহার দেওয়ার স্বপ্নে বিভোর। 

 

৯) ‘বজ্রশিখার মশাল জ্বেলে আসছে ভয়ংকর !’ -‘ভয়ংকর’ বলতে কবি কী বোঝাতে চেয়েছেন ? তার আসার তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো। 

উৎসঃ

বাংলা সাহিত্যের বিদ্রোহী কবি “কাজি নজরুল ইসলাম” রচিত “অগ্নিবীণা” কাব্যগ্রন্থের প্রথম কবিতা “প্রলয়োল্লাস” থেকে এই তাৎপর্যপূর্ণ অংশটি চয়ন করা হয়েছে।

‘ভয়ংকর’-এর তাৎপর্যঃ 

‘ভয়ংকর’ শব্দের অর্থ নবযুগের বার্তাবহ প্রলয়রূপী বিপ্লব বা বিদ্রোহ। রুদ্ররূপী শিবকে কবি ভয়ংকরের প্রতীক রূপে কল্পনা করেছেন। 

ভয়ংকরের আসার তাৎপর্যঃ  

অত্যাচারী ব্রিটিশের শাসনে ভারতবাসী স্থবির হয়ে গিয়েছিল। আর ভারতবর্ষ হয়ে গিয়েছিল অচলায়তন। কালের নিয়মে অশুভ শক্তির বিনাশ ঘটবেই। সেই অচলায়তন ভাঙবে মানুষের সম্মিলিত বিপ্লবের দ্বারা। আশাবাদী কবি আসন্ন বিপ্লবের এই আছড়ে পড়া ঢেউকে ভয়ংকর প্রলয়ের সঙ্গে তুলনা করেছেন।

 

১০) ‘মাভৈঃ মাভৈঃ ! জগৎ জুড়ে প্রলয় এবার ঘনিয়ে আসে’- কবি ‘মাভৈঃ’ বলে কী জানাতে চেয়েছেন ? প্রলয় এসে কোন কাজ করবে বলে কবির মনে হয়েছে ? 

উৎসঃ

বাংলা সাহিত্যের বিদ্রোহী কবি “কাজি নজরুল ইসলাম” রচিত “অগ্নিবীণা” কাব্যগ্রন্থের প্রথম কবিতা “প্রলয়োল্লাস” থেকে এই তাৎপর্যপূর্ণ অংশটি চয়ন করা হয়েছে।

মাভৈ বলতে কবি যা বুঝিয়েছেনঃ 

বিদ্রোহী সত্তার অধিকারী কবি নজরুল ‘মাভৈঃ মাভৈঃ’ শব্দযুগলের ব্যবহার করেছেন, যার অর্থ ভয় কোরো না; অর্থাৎ নির্ভয়ে এগিয়ে চলো।

প্রলয় এসে যে কাজ করবেঃ 

পরাধীনতার অন্ধকার থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য প্রহর গণনারত ভারতবাসীকে কবি পুরাতনকে ধ্বংস করে নূতনের বিজয় পতাকা ওড়ানোর জন্য হৃদয়ে সাহস সঞ্চার করার কথা বলেছেন। মহাপ্রলয়ের ফলে পৃথিবীতে বারে বারে অশুভ শক্তি ধ্বংস হয়ে সৃষ্টির বীজ বপিত হয়েছে। প্রলয়ের ফলে দীর্ঘ পরাধীনতার শেষে স্বাধীনতার সূর্যালোকে ভারতবর্ষ উদ্ভাসিত হয়ে উঠবে- এটাই কবির আশা। 

 

১১) ‘জরায় মরা মুমূর্ষুদের প্রাণ – লুকানো ওই বিনাশে ?’- পঙ্ক্তিটির তাৎপর্য বুঝিয়ে দাও। 

উৎসঃ

বাংলা সাহিত্যের বিদ্রোহী কবি “কাজি নজরুল ইসলাম” রচিত “অগ্নিবীণা” কাব্যগ্রন্থের প্রথম কবিতা “প্রলয়োল্লাস” থেকে এই তাৎপর্যপূর্ণ অংশটি চয়ন করা হয়েছে।

তাৎপর্যঃ 

বিপ্লব আসছে যোদ্ধার বেশে, নতুন সূর্যের সন্ধানে তার অগ্রগমন। কিন্তু এই অগ্রগতির পথে অনেক বাধা। বহু সংস্কার, বহু জরাগ্রস্ত, অন্ধ ও মুমূর্ষু মতবাদ এসে পথের গতি পঙক্তিটির তাৎপর্য শ্লথ করতে চায়। কিন্তু এসবকে বিনাশ করে নতুন দিনের সন্ধানী আলোয়, প্রলয়রূপী বৈপ্লবিক সৃজন তার নিজের পথ করে নেবে। কবি প্রশ্নোধৃত অংশে এই ভাবনাই ব্যক্ত করেছেন। 

 

১২) ‘এই তো রে তার আসার সময়’- ‘তার’ বলতে কাকে বোঝানো হয়েছে ? তার আসার চিহ্নগুলি কী ছিল ?  

উৎসঃ

বাংলা সাহিত্যের বিদ্রোহী কবি “কাজি নজরুল ইসলাম” রচিত “অগ্নিবীণা” কাব্যগ্রন্থের প্রথম কবিতা “প্রলয়োল্লাস” থেকে এই তাৎপর্যপূর্ণ অংশটি চয়ন করা হয়েছে। 

‘তার’ বলতে যাকে বোঝানো হয়েছেঃ 

কবি প্রশ্নোক্ত অংশে ‘তার’ বলতে ‘মহাকাল’-কে বুঝিয়েছেন। 

তার আসার চিহ্নসমূহঃ 

কবি মনে করেছেন, মহাকালই পারেন তার মহাপ্রলয়ের দ্বারা অত্যাচারী ব্রিটিশ শক্তির বিনাশ করে স্বাধীনতা আনতে। আশাবাদী কবি মহাকালের আগমন যে আসন্ন তা যেন অন্তর দিয়ে প্রত্যক্ষ করেছেন। মহাকালের হাতের চাবুক বিদ্যুতের মতো চমকিত হচ্ছে বারবার। বজ্রের শব্দ হ্রেষাধ্বনির মতো অনুরণিত হচ্ছে। আর ঘোড়ার খুরের আঘাতে নীল আকাশ থেকে উল্কা খসে পড়ছে। মহাকালে আগমনবার্তা তার রথের চাকার ঘর্ষণই সূচিত করছে। 

 

১৩) ‘ধ্বংস দেখে ভয় কেন তোর ?’- ধ্বংসকে ভয় না পাওয়ার কারণটি বুঝিয়ে দাও। 

উৎসঃ

বাংলা সাহিত্যের বিদ্রোহী কবি “কাজি নজরুল ইসলাম” রচিত “অগ্নিবীণা” কাব্যগ্রন্থের প্রথম কবিতা “প্রলয়োল্লাস” থেকে এই তাৎপর্যপূর্ণ অংশটি চয়ন করা হয়েছে। 

ধ্বংসকে ভয় না পাওয়ার কারণঃ 

কালের রথে চড়ে মহাপ্রলয়ের মধ্যে দিয়ে মহাকালের বা ভয়ংকরের আগমন দেখে কবি অগ্রদূতকে ভয় না পেতে বলেছেন। প্রলয় ধ্বংসকারী, কিন্তু এটাও সত্য যে প্রলয়ই সৃষ্টির হাতছানি। ধ্বংসের ভয় না পাওয়ার কারণ প্রলয় আমাদের মধ্যে বেদনাবোধ জাগালেও নতুন কিছু সৃষ্টি করে। প্রলয়ই পারে নবচেতনার আলোকে প্রাণহীন অসুন্দরের মধ্যে নতুন প্রাণের সঞ্চার করতে। কবি তাই তার অগ্রদূতকে অভয় দিয়ে বলেছেন প্রলয় চিরসুন্দর। সে ভেঙে আবার গড়তেও পারে। তাই প্ররকে ভয় পাওয়ার কিছু নেই।

 

১৪) ‘কাল ভয়ংকরের বেশে এবার ওই আসে… !’- এমন উক্তি কার সম্পর্কে করা হয়েছে ? এমন উক্তির কারণ কী ?

উৎসঃ

বাংলা সাহিত্যের বিদ্রোহী কবি “কাজি নজরুল ইসলাম” রচিত “অগ্নিবীণা” কাব্যগ্রন্থের প্রথম কবিতা “প্রলয়োল্লাস” থেকে এই তাৎপর্যপূর্ণ অংশটি চয়ন করা হয়েছে। 

যার কথা বলা হয়েছেঃ 

উদ্ধৃত অংশে কবি চিরসুন্দর বা চিরনবীন সম্পর্কে মন্তব্যটি করেছেন। 

কবির মন্তব্যের কারণঃ 

বিদ্রোহী কবি পরাধীন ভারতের মুক্তিকামী মানুষের অন্তরের বৈপ্লবিক শক্তিকে উদ্বুদ্ধ করতে চেয়েছেন। তাঁর বিশ্বাস জীর্ণ লোকাচার, প্রচলিত জড়তা, নিশ্চল প্রাণহীনতা এবং দাসত্বের অবসান ঘটলেই গড়ে উঠবে নতুন জীবন। সুতরাং, বিনাশের ভয়াবহতার মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে সত্য ও সুন্দরের বীজ। কবি ধ্বংসের মধ্যেই খুঁজে পেয়েছেন নব সৃষ্টির অনুপ্রেরণা। আর তাই তিনি সেই ভয়ংকর সুন্দরেরই বন্দনা গান রচনা করেছেন। 

প্রলয়োল্লাস কবিতার সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দেখতে এই লিঙ্কটি অনুসরণ করতে হবে 

দশম শ্রেণির অধ্যায়ভিত্তিক বাংলা প্রশ্নের উত্তর দেখতে নিম্নের ছবিতে ক্লিক/টাচ করতে হবে 

class ten bengali note

শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের কিছু গুরুত্বপূর্ণ লিঙ্ক নিম্নে প্রদান করা হলোঃ

শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের সকল প্রকার নোট, সাজেশন, প্রশ্নপত্র ও মক টেষ্টের সুবিধা গ্রহণ করতে নিম্নের ছবিতে ক্লিক/টাচ করে বিষদ তথ্য জেনে নাওঃ 

paid courses

Ads Blocker Image Powered by Code Help Pro

Ads Blocker Detected!!!

আমরা শনাক্ত করেছি যে আপনি বিজ্ঞাপন ব্লক করতে এক্সটেনশন ব্যবহার করছেন। এই বিজ্ঞাপন ব্লকার নিষ্ক্রিয় করে আমাদের সমর্থন করুন।

Powered By
Best Wordpress Adblock Detecting Plugin | CHP Adblock

You cannot copy content of this page

Need Help?