ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর প্রবন্ধ রচনা

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর প্রবন্ধ রচনা

শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের জন্য ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর প্রবন্ধ রচনা প্রবন্ধ রচনাটি প্রদান করা হলো। শিক্ষার্থীরা এই ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর প্রবন্ধ রচনাটি পাঠ করে তাদের পরীক্ষা প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারবে। 

শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের সকল প্রকার আপডেট লাভ করতে মোবাইল স্ক্রিনের বা’দিকের নিম্নের অংশে থাকা বেল আইকনটিতে (🔔) টাচ করে শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের নোটিফিকেশন অন করে রাখুন। 

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর প্রবন্ধ রচনা : 

ভূমিকা :

যুগে যুগে কিছু মানুষ জন্মগ্রহণ করেন, যাঁরা চিন্তায়, কর্মে সাধারণ মানুষ থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। তাঁদের লক্ষ্য মানবকল্যাণ। এমনই একজন মানুষ ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর হিমালয়ের মতো বিশাল ও উন্নত। তাঁর পাণ্ডিত্য, চারিত্রিক দৃঢ়তা, কর্মনিষ্ঠা, নির্ভীকতা, হৃদয়বত্তা মানবসমাজে এক জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত৷

জন্ম ও বংশ পরিচয় :

মেদিনীপুর জেলার এক শান্তশ্যামলিমা ঘেরা গ্রাম বীরসিংহ। জন্ম নিলেন বীরসিংহের সিংহশিশু ঈশ্বরচন্দ্র। ১৮২০ খ্রিস্টাব্দের ২৬ সেপ্টেম্বর। দরিদ্র ব্রাহ্মণ পরিবার। পিতা ঠাকুরদাস বন্দ্যোপাধ্যায়, মাতা করুণাঘন মূর্তি ভগবতী দেবী। পিতামহ রামজয় তর্কভূষণ এক অনন্যসাধারণ বলিষ্ঠ, উন্নত চরিত্রের মানুষ। তিনি ছিলেন এক অনন্যসাধারণ মাতৃভক্তির চরম পরাকাষ্ঠা। শিশু ঈশ্বরচন্দ্র দারিদ্র্যকে সঙ্গী করেই পথচলা শুরু করেন।

শিক্ষাজীবন :

শিক্ষার প্রথম পাঠ শুরু হয় গ্রামেরই চতুষ্পাঠীতে। আট বছর বয়সে পায়ে হেঁটে পিতার সঙ্গে আসেন কলকাতায়। ভরতি হন সংস্কৃত কলেজে। সংস্কৃত কলেজের সর্বোচ্চ উপাধি ‘বিদ্যাসাগর’ তাঁরই শীর্ষে স্থাপিত হল। সংস্কৃত ছাড়াও ইংরেজি শিক্ষাতেও তিনি ছিলেন কঠোর অধ্যবসায়ী।

কর্মজীবন :

কর্মই মানুষের শ্রেষ্ঠ পরিচিতি। কর্মজীবনের শুরুতে ফোর্ট উইলিয়াম কলেজে প্রধান পণ্ডিতের পদ অলংকৃত করেন। পরে সংস্কৃত কলেজে সহকারী সম্পাদক পদে যোগদান। ক্রমে সম্পাদক ও অধ্যক্ষের পদ গ্রহণ করেন। তিনি স্কুল পরিদর্শকের দায়িত্বও গ্রহণ করেছিলেন। কিন্তু শিক্ষাবিভাগের কর্মকর্তার সঙ্গে মতান্তরে ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে চাকরি থেকে পদত্যাগ করেন। শুরু হয় জীবনের আর এক অধ্যায়।

সমাজসেবা :

মহৎ প্রাণ, মহান জীবনের অধিকারী ঈশ্বরচন্দ্র। আর্ত, পীড়িত, অসহায় মানুষের সকরুণ আবেদন তাঁর হৃদয়কে উদ্‌বেল করেছিল। তাই তাদের সেবাতেই আত্মনিয়োগ করলেন তিনি। সমাজসংস্কারে ব্রতী হলেন] কৌলীন্য ও বহুবিবাহ প্রথা ছিল তখন এক সামাজিক ব্যাধি। বাল্যবিধবার অশ্রুমোচনের জন্য দয়ার সাগর বিদ্যাসাগর সচেষ্ট হলেন। খুঁজে বার করলেন শাস্ত্রীয় সমর্থন। গর্জে উঠল রক্ষণশীল সমাজ। তাঁর প্রাণসংহারেরও চেষ্টা হয়েছিল। তবু বিদ্যাসাগর ছিলেন অবিচল, দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। আপসহীন সংগ্রামে ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দে ২৬ জুলাই ‘বিধবা বিবাহ’ আইন পাস হল। বিধবা বিবাহ প্রবর্তন ও বাল্যবিবাহ নিবারণ ছিল তাঁর জীবনের এক মহান ব্রত। শিক্ষাবিস্তার ও বিশেষত নারীশিক্ষা বিস্তারে তিনি ছিলেন অন্যতম পথিকৃৎ। বহু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তাঁর উদ্যোগে গড়ে ওঠে। দুস্থ মানুষ, কন্যাদায়গ্রস্ত পিতার তিনি ছিলেন অনাহৃত বন্ধু।

সাহিত্যসেবা :

ঈশ্বরচন্দ্র সাহিত্যসেবায়ও নিজেকে যুক্ত করেছিলেন। তিনি বর্ণপরিচয় (১ম ও ২য় ভাগ), ব্যাকরণ কৌমুদী, কথামালা, ঋজুপাঠ, উপক্রমণিকা, সীতার বনবাস, বেতাল পঞ্চবিংশতি, শকুন্তলা, ভ্রান্তিবিলাস, বাংলার ইতিহাস প্রভৃতি গ্রন্থ রচনা করেন। বাংলা গদ্যকে তিনি সাবলীল ছন্দময় করে তুললেন।

করুণাসাগর :

বিদ্যাসাগর ছিলেন করুণাঘন মূর্তির বাস্তব রূপকার। মানবতার মূর্ত প্রতীক। কার্মাটারে দরিদ্র শবর সম্প্রদায়ের সেবায় তিনি ছিলেন আত্মমগ্ন। অন্ন-বস্ত্র-ওষুধ দিয়ে সেবা দিয়ে তাদের আপন করে নিয়েছিলেন।

উপসংহার :

মানবজীবন চিরস্থায়ী নয়। ‘জন্মিলে মরিতে হবে অমর কে কোথা কবে?’ ১৮৯১ খ্রিস্টাব্দের ২৯ জুলাই। । শোকাহত, বাকরুদ্ধ মানুষ। বিদ্যাসাগর শ্রাবণ রাত্রির ঘনঘোর অন্ধকারে একা যাত্রা করলেন অমৃতলোকের পথে। এক অনির্বাণ দীপশিখা নিভে গেল আকাশপথে। মানুষকে দিয়েছেন চলার পথের সন্ধান, রেখে গিয়েছেন অক্ষয় কীর্তি।

এমনই আরো প্রবন্ধ রচনা দেখতে এই লিঙ্কটি অনুসরণ করতে হবে 

শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের এই পেজে নিয়মিত প্রবন্ধ রচনা প্রদান করা হয়। শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের সকল প্রকার আপডেট লাভ করতে মোবাইল স্ক্রিনের বা’দিকের নিম্নের অংশে থাকা বেল আইকনটিতে (🔔) টাচ করে শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের নোটিফিকেশন অন করে রাখুন। 

শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের কিছু গুরুত্বপূর্ণ লিঙ্ক নিম্নে প্রদান করা হলোঃ

শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের সকল প্রকার নোট, সাজেশন, প্রশ্নপত্র ও মক টেষ্টের সুবিধা গ্রহণ করতে নিম্নের ছবিতে ক্লিক/টাচ করে বিষদ তথ্য জেনে নাওঃ 

paid courses

Ads Blocker Image Powered by Code Help Pro

Ads Blocker Detected!!!

আমরা শনাক্ত করেছি যে আপনি বিজ্ঞাপন ব্লক করতে এক্সটেনশন ব্যবহার করছেন। এই বিজ্ঞাপন ব্লকার নিষ্ক্রিয় করে আমাদের সমর্থন করুন।

Powered By
Best Wordpress Adblock Detecting Plugin | CHP Adblock

You cannot copy content of this page

Need Help?