কারক ও অকারক পদ
শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের পক্ষ থেকে সকল শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য বাংলা ব্যাকরণ থেকে গুরুত্বপূর্ণ নোট প্রদান করা হয়। বিগত পোষ্টগুলিতে আমরা আলোচনা করেছিলাম বিভক্তি, অনুসর্গ ও নির্দেশক সম্পর্কে। এই পর্বে আমরা আলোচনা করবো কারক কাকে বলে ও কারকের শ্রেণিবিভাগ সম্পর্কে। শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের সকল প্রকার আপডেট লাভ করতে ডাউনলোড করো শিক্ষালয় অ্যাপ, অথবা সাইন ইন করো নিম্নে প্রদান করা NewsLetter বিভাগে।
○ কারক কাকে বলে?
উঃ কারক শব্দটির ব্যুৎপত্তি নির্ণয় করলে পাওয়া যায় ‘√কৃ+ণক’ অর্থাৎ ক্রিয়া সম্পাদন করে যে। সংস্কৃত ব্যাকরণে কারক সম্পর্কে বলা হয়েছে ‘ক্রিয়ান্বয়ী কারকম্’ অর্থাৎ ক্রিয়ার সঙ্গে সম্পর্কই হল কারক। বাংলা ব্যাকরণে কারকের ধারণাটি এসেছে সংস্কৃত ব্যাকরণ থেকে। একসময় বাংলা কারক-বিভক্তি নির্ণয় করা হত সংস্কৃত ব্যাকরণকে অনুসরণ করে। এখন বাংলা কারক-বিভক্তির বিষয়টি সংস্কৃত ব্যাকরণ থেকে অনেকটাই স্বতন্ত্র।
কারকের সংজ্ঞা হিসেবে বলা যেতে পারে- বাক্যের ক্রিয়াপদের সঙ্গে অন্যান্য পদের সম্পর্ককে বলা হয় কারক। কারক হল পদের অন্বয়গত পরিচয়।
কারক থেকে MCQ প্রশ্নের মক টেষ্ট প্রদান করতে এই লিঙ্কে ক্লিক/টাচ করতে হবে
○ কারকের শ্রেণিবিভাগঃ
বাক্যে ক্রিয়াপদের সঙ্গে অন্যান্য পদের সম্পর্ক ছয় রকমের হতে পারে। সেইজন্য কারকও ছয় প্রকার। ক্রিয়াপদের সঙ্গে সম্পর্কের নিরিখে কারকগুলি হল এইরকম-
(১) কর্তৃ কারক– যে ক্রিয়া সম্পন্ন করে
(২) কর্ম কারক– যাকে অবলম্বন করে কর্তা ক্রিয়া সম্পন্ন করে
(৩) করণ কারক– যার সাহায্যে কর্তা ক্রিয়া সম্পন্ন করে
(৪) নিমিত্ত কারক– যার জন্য ক্রিয়া সম্পন্ন হয়
(৫) অপাদান কারক– যেখান থেকে/যখন থেকে ক্রিয়া নিষ্পন্ন হয়
(৬) অধিকরণ কারক– যখন/ যেখানে/ যেভাবে/ যে বিষয়ে ক্রিয়া সম্পন্ন হয়।
○ অকারক পদঃ
উঃ বাক্যে এমন কিছু পদ থাকে যাদের সঙ্গে ক্রিয়াপদের সরাসরি সম্পর্ক থাকে না। ক্রিয়াপদের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্ক নেই এমন পদগুলিকে বলা হয় অকারক পদ।
অকারক পদ দুই প্রকার। যথা-
(ক) সম্বন্ধ পদঃ
উঃ যে পদের সঙ্গে ক্রিয়াপদের সরাসরি কোনো সম্পর্ক থাকে না বরং অন্য কোনো নামপদের সম্পর্ক থাকে তাকে সম্বন্ধ পদ বলে। ক্রিয়াপদের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্ক থাকে না বলে একে অকারক পদ হিসেবে গণ্য করা হয়।
যেমনঃ আমি কাকার বাড়ি যাবো।
অন্যান্য উদাহরণঃ-
১) গরুর দুধ খুব পুষ্টিকর।
২) গ্রামের যোগী ভিক্ষা পায় না।
৩) রাজার ছেলে রাজা হয়।
৪) আমি বাবার ঘড়িটা পড়েছি।
৫) বাড়ির প্রাচীরটা ভেঙে গেছে।
(খ) সম্বোধন পদঃ
উঃ সম্বোধন করার অর্থ হল ডাকা বা আহ্বান করা। যে পদের সাহায্যে কাউকে সম্বোধন করা হয় বা ডাকা হয় সেই পদকে সম্বোধন পদ বলা হয়। সম্বোধন পদের সঙ্গেও ক্রিয়াপদের সরাসরি সম্পর্ক থাকে না। তাই এটি অকারক পদ। যেমনঃ
১) মহারাজা, আদেশ করুন
২) দাদা, এইদিকে আসুন।
৩) মহাশয়, আপনার নাম কী?
৪) হে পিতৃব্য, তব বাক্যে ইচ্ছি মরিবারে।
৫) এই যে দিদি, এদিকে শুনুন।
কারক থেকে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার লিঙ্কসমূহঃ
২) বিভক্তি ও অনুসর্গের পার্থক্য
৪) কর্তৃকারক ও তার শ্রেণিবিভাগ
শিক্ষালয় ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বাংলা ব্যাকরণের অন্যান্য নোটগুলি দেখতে এই লিঙ্কে ক্লিক/টাচ করতে হবে