তৎপুরুষ সমাস
শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের জন্য বাংলা ব্যাকরণের সমাস থেকে এই পোষ্টে তৎপুরুষ সমাস সম্পর্কে বিষদ আলোচনা প্রদান করা হলো।
শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের সকল প্রকার আপডেট লাভ করতে মোবাইল স্ক্রিনের বা’দিকের নিম্নের অংশে থাকা বেল আইকনটিতে (🔔) টাচ করে শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের নোটিফিকেশন অন করে রাখুন।
তৎপুরুষ সমাসঃ
যে সমাসে পূর্বপদের বিভক্তি বা অনুসর্গ লোপ পায় এবং পরপদের অর্থ প্রাধান্য পায়, তাকে তৎপুরুষ সমাস বলে।
যেমন-
রাজার প্রাসাদ= রাজপ্রাসাদ
গৃহের কর্তা= গৃহকর্তা
তৎপুরুষ সমাসের শ্রেণিবিভাগঃ
১) কর্ম তৎপুরুষঃ
যে তৎপুরুষ সমাসে পূর্বপদে কর্মকারকের বিভক্তি থাকে এবং সমাসবদ্ধ হবার পর সেই বিভক্তিটি লোপ পায়, তাকে কর্ম তৎপুরুষ সমাস বলে।
যেমন-
বধুকে বরণ = বধূবরণ
রথকে দেখা = রথদেখা
বিপদকে আপন্ন= বিপদাপন্ন
২) করণ তৎপুরুষঃ
যে তৎপুরুষ সমাসে পূর্বপদে করণকারকের বিভক্তি বা অনুসর্গ থাকে এবং সমস্তপদে তা লোপ পায়, তাকে করণ তৎপুরুষ সমাস বলে।
যেমন-
বিজ্ঞান দ্বারা সম্মত = বিজ্ঞানসম্মত
মন দ্বারা গড়া = মনগড়া
তৃণশূন্য = তৃণ দ্বারা শূন্য
৩) নিমিত্ত-তংপুরুষঃ
যে তৎপুরুষ সমাসে পূর্বপদে নিমিত্ত কারকের অনুসর্গ থাকে এবং সমস্তপদে তা লোপ পায়, তাকে নিমিত্ত তৎপুরুষ সমাস বলে।
যেমন-
বিদ্যার নিমিত্ত আলয়= বিদ্যালয়
ডাকের নিমিত্ত মাশুল= ডাকমাশুল
বিয়ের জন্য পাগল= বিয়েপাগল
৪) অপাদান-তৎপুরুষঃ
যে তৎপুরুষ সমাসে পূর্বপদে অপাদান কারকের বিভক্তি বা অনুসর্গ থাকে এবং সমস্তপদে তা লোপ পায়, তাকে অপাদান তৎপুরুষ সমাস বলে।
যেমন-
বিলাত হইতে ফেরত = বিলাতফেরত
পদ হইতে চ্যুত= পদচ্যুত
স্কুল থেকে পালনো = স্কুলপালানো
৫) অধিকরণ-তৎপুরুষঃ
যে তৎপুরুষ সমাসের পূর্বপদে অধিকরণ কারকের বিভক্তি থাকে এবং সমস্তপদে তা লোপ পায়, তাকে অধিকরণ তৎপুরুষ সমাস বলে।
যেমন-
গাছে পাকা = গাছপাকা
গোলাতে ভরা = গোলাভরা
জলে মগ্ন= জলমগ্ন
দশম শ্রেণির বাংলা পাঠ্য বিষয়ের নোট দেখতে এই লেখাতে ক্লিক/টাচ করতে হবে
৬) সম্বন্ধ তৎপুরুষঃ
যে তৎপুরুষ সমাসে পূর্বপদের সম্বন্ধসূচক বিভক্তি লোপ পায়, তাকে সম্বন্ধ তৎপুরুষ সমাস বলে।
যেমন-
ধানের খেত= ধানখেত
মামার বাড়ি = মামাবাড়ি
বামুনদের পাড়া = বামুনপাড়া
৭) না-তৎপুরুষঃ
যে তৎপুরুষ সমাসের পূর্বপদে না-বাচক শব্দ থাকে, তাকে না-তৎপুরুষ সমাস বলে।
যেমন-
নয় অভিজ্ঞ = অনভিজ্ঞ
নয় শিক্ষিত = অশিক্ষিত
নয় উত্তীর্ণ = অনুত্তীর্ণ
৮) উপপদ তংপুরুষঃ
কৃৎ প্রত্যয়ান্ত শব্দকে বলা হয় কৃদন্ত পদ এবং তার পূর্ববর্তী পদকে বলা হয় উপপদ। যে তৎপুরুষ সমাসে উপপদের সঙ্গে কৃদন্ত পদের সমাস হয়, তাকে উপপদ-তৎপুরুষ সমাস বলা হয়।
যেমন-
অন্ধ করে যে = অন্ধকার
পঙ্কে জন্মে যে= পঙ্কজ
অগ্রে জন্মে যে= অগ্রজ
৯) ব্যাপ্তি তৎপুরুষঃ
একটি নির্দিষ্ট কালপর্বের বিস্তৃতি বোঝাতে ব্যাপ্তিবাচক পদের সঙ্গে নামপদের যে সমাস হয় এবং সমস্তপদে ব্যাপ্তিবাচক শব্দটি লোপ পায়, তাকে ব্যাপ্তি তৎপুরুষ সমাস বলা হয়।
যেমন-
চিরকাল ব্যাপিয়া স্থায়ী= চিরস্থায়ী
ক্ষণকাল ব্যাপিয়া স্থায়ী = ক্ষণস্থায়ী
নিত্যকাল ব্যাপিয়া আনন্দ = নিত্যানন্দ
১০) ক্রিয়াবিশেষণ তৎপুরুষঃ
যে তৎপুরুষ সমাসে পূর্বপদটি একটি ক্রিয়াবিশেষণ, তাকে ক্রিয়াবিশেষণ তৎপুরুষ সমাস বলা হয়।
যেমন-
অর্ধ ভাবে মৃত = অর্ধমৃত
অর্ধ ভাবে স্ফুট= অর্ধস্ফুট
নিম রূপে রাজি= নিমরাজি
১১) অলুক তৎপুরুষঃ
যে তৎপুরুষ সমাসে পুর্বপদের বিভক্তি লোপ পায় না, তাকে অলোপ বা অলুক তৎপুরুষ সমাস বলে।
যেমন-
গরুর গাড়ি= গরুরগাড়ি
মামার বাড়ি= মামারবাড়ি
তেলে ভাজা = তেলেভাজা
১২) উপসর্গ তৎপুরুষঃ
যে সমাসের প্রথম পদটি একটি উপসর্গ অথবা উপসর্গ স্থানীয় অব্যয় হয় এবং সমাসবদ্ধ পদে উক্ত উপসর্গ বা অব্যয়ের ভাবটি প্রধান ভাবে প্রতীয়মান হয়, তাকে উপসর্গ তৎপুরুষ সমাস বলা হয়।
যেমন-
কূলের সমীপে = উপকূল
মিলের অভাব = গরমিল
মূর্তির সদৃশ = প্রতিমূর্তি
১৩) একদেশী তৎপুরুষঃ
যে তৎপুরুষ সমাসে একদেশবাচক পদের সঙ্গে সমাস হয়, তাকে একদেশী তৎপুরুষ সমাস বলে।
যেমন-
নদীর মাঝ= মাঝনদী
অহ্নের মধ্য= মধ্যাহ্ন
রাত্রির মধ্য= মধ্যরাত্রি
সমাস থেকে সব আলোচনার লিঙ্ক নিম্নে প্রদান করা হলো-
শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের কিছু গুরুত্বপূর্ণ লিঙ্ক নিম্নে প্রদান করা হলোঃ
- বাংলা ব্যাকরণের আলোচনাগুলি দেখতে এই লিঙ্কে ক্লিক/টাচ করতে হবে
- শিক্ষালয় ওয়েবসাইটে প্রদান করা প্রবন্ধ রচনাগুলি দেখতে এই লিঙ্কে ক্লিক/টাচ করতে হবে
- পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা অধ্যায়ভিত্তিক নোট দেখতে এই লিঙ্কে ক্লিক করতে হবে
- পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির MCQ TEST প্রদান করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করতে হবে
- শিক্ষালয় ইউটিউব চ্যানেলটি দেখতে এই লিঙ্কে ক্লিক/টাচ করতে হবে
শিক্ষালয়ের সাথে ফেসবুকে যুক্ত হতে নিম্নের ছবিতে ক্লিক/টাচ করতে হবেঃ