আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি কবিতার বড়ো প্রশ্নের উত্তর

আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি কবিতার বড়ো প্রশ্নের উত্তর

শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের পক্ষ থেকে দশম শ্রেণির মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের জন্য আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি কবিতার বড়ো প্রশ্নের উত্তর প্রদান করা হলো। এই আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি কবিতার বড়ো প্রশ্নের উত্তর সমাধানের মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীরা তাদের পাঠ্য কবিতাটি সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা লাভ করতে সমর্থ হবে।
শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের সকল প্রকার আপডেট লাভ করতে মোবাইল স্ক্রিনের বা’দিকের নিম্নের অংশে থাকা বেল আইকনটিতে (🔔) টাচ করে শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের নোটিফিকেশন অন করে রাখুন। 

আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি কবিতার বড়ো প্রশ্নের উত্তরঃ 

১) “আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি”- কবি কাদের বেঁধে বেঁধে থাকতে বলেছেন? ‘বেঁধে বেঁধে থাকা’ বলতে কী বোঝায়? কবি ‘বেঁধে বেঁধে থাকা’র প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছেন কেন? ১+১+৩

উৎসঃ

আধুনিক কবি “শঙ্খ ঘোষ” রচিত “জলই পাষাণ হয়ে আছে” কাব্যগ্রন্থের “আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি” কবিতা থেকে প্রশ্নোক্ত অংশটি চয়ন করা হয়েছে।

উদ্দিষ্ট ব্যক্তিঃ

প্রতিকূল পরিস্থিতিতে এখনও যাদের মধ্যে মানবতা অবশিষ্ট রয়েছে, তাদের উদ্দেশ্যেই কবি উদ্ধৃত মন্তব্যটি করেছেন।

বেঁধে বেঁধে থাকার তাৎপর্যঃ

কবি ‘বেঁধে বেঁধে থাকা’ বলতে সংঘবদ্ধভাবে থাকা বা ঐক্যবদ্ধ হয়ে থাকার প্রতি ইঙ্গিত প্রদান করেছেন। প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে শুভ বুদ্ধিসম্পন্ন মানবতাবাদী মানুষেরা সংঘবদ্ধ হলে কঠিন সময় অতিক্রম করা সম্ভবপর বলেই কবি মনে করেছেন।

বেঁধে বেঁধে থাকার প্রয়োজনীয়তাঃ

আলোচ্য কবিতায় কবি বিশ্বব্যাপী প্রতিকূল পরিবেশের কথা তুলে ধরতে গিয়ে বোমারু বিমানের আক্রমণ, নিরাপরাধ মানুষের নির্বিচারে প্রাণদান ও ভবিষ্যত প্রজন্মের ধ্বংস হয়ে যাওয়ার বর্ণনা প্রদান করেছেন। মানবতার অপমৃত্যুতে কবির মন ব্যাথিত হয়ে উঠেছে। তিনি উপলব্ধি করেছেন এই পরিস্থিতি থেকে উত্তোরণের জন্য মানুষে মানুষে সৌভাতৃত্ব, সহযোগিতা ও সহমর্মিতা একান্ত আবশ্যক।

সমগ্র বিশ্বব্যাপী যুদ্ধ, সাম্প্রদায়িকতা ও সাম্রাজ্যবাদীতার বিষবাষ্প যখন ছড়িয়ে পরেছে, মানুষের জীবন যখন বিপন্ন তখন কবি তাঁর কবিতার মধ্য দিয়ে তাই সঙ্গত কারণেই যুগ-প্রয়োজনকে উপলব্ধি করে সকল শুভবুদ্ধি ও মানবতাবোধসম্পন্ন মানুষদের আহ্বান জানিয়েছেন-

“আয় আরো হাতে হাত রেখে

আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি।”

২) ‘আমাদের ডানপাশে ধ্বস / আমাদের বাঁয়ে গিরিখাদ’ – সমগ্র কবিতার পরিপ্রেক্ষিতে এই মন্তব্যের তাৎপর্য লেখো। ৫ 

উৎসঃ

আধুনিক কবি “শঙ্খ ঘোষ” রচিত “জলই পাষাণ হয়ে আছে” কাব্যগ্রন্থের “আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি” কবিতা থেকে প্রশ্নোক্ত অংশটি চয়ন করা হয়েছে।

মন্তব্যের তাৎপর্যঃ 

সংশয়ার্কীর্ণ ইতিহাসের রূপ সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন ও সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্পে আজকের পৃথিবী বিষাক্ত হয়ে উঠেছে। মানুষের অস্তিত্ব আজ বিপন্ন। এই সময়ে আমরা বিশেষ করে সাধারণ মানুষ এক ভয়ংকর দুঃসময়ের মধ্যে দিয়ে চলেছি। আমরা ডাইনে–বাঁয়ে বিপদকে রেখে, মাথার ওপর হানাদারি শত্রুকে উপেক্ষা করে, সামনের প্রতিকূল পথ ধরে এগিয়ে চলেছি। এ ছাড়া আমাদের সামনে আর কোনো পথ নেই। ভাবী প্রজন্মকে রক্ষা করতে আমরা ব্যর্থ। প্রতিক্ষণে হানাদারি মৃত্যুর ভয়ে আমরা ভীত। সাম্রাজ্যবাদী ও সুবিধাবাদী শক্তির কাছে আজ আমরা পর্যুদস্ত। কিন্তু আমাদের এই দুঃখের ইতিহাস অলিখিতই রয়ে যাবে চিরকাল। রানারের বেদনার মতো কালোরাত্রির খামে চিরকাল তা আবদ্ধ থেকে যাবে, এটাই কবির আক্ষেপ।

বিশ্বাসের ভিত যেখানে আলগা হয়ে যায়, সেখানেই সংশয়ের সৃষ্টি হয়। কবি মনে করেন, সারাপৃথিবীর ইতিহাসে সাধারণ মানুষের কথা সঠিকভাবে প্রতিফলিত হয়নি। কারণ ইতিহাসকে কবির দৃষ্টিতে আমাদের ইতিহাস নিয়ন্ত্রণ করে শাসক ও সাম্রাজ্যবাদী শক্তি। আর সাধারণ মানুষের যদিও বা কোনো ইতিহাস থাকে তবে তা অস্পষ্ট, অর্ধসত্য এবং অসম্পূর্ণ। ক্ষমতাবান শাসকের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ইতিহাসে মানুষের অবস্থার যথার্থ প্রতিফলন ঘটে না। তাদের অসহায় বিপন্নতা কিংবা জীবন্মুত পরিস্থিতির খোঁজ, শাসকের ইতিহাসে অনুপস্থিত বলেই তথাকথিত বিকৃত ইতিহাস সম্পর্কে কবির এই সংশয়।

 

৩) ‘আমাদের ইতিহাস নেই’ – কাদের, কেন ইতিহাস নেই ? এই মন্তব্যের মধ্য দিয়ে সভ্যতার কোন্ কলঙ্কিত ইতিহাসকে বোঝাতে চাওয়া হয়েছে ? ২+৩ 

উৎসঃ

আধুনিক কবি “শঙ্খ ঘোষ” রচিত “জলই পাষাণ হয়ে আছে” কাব্যগ্রন্থের “আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি” কবিতা থেকে প্রশ্নোক্ত অংশটি চয়ন করা হয়েছে।

যাদের ইতিহাস নেইঃ 

কবিতায় কবি সারাপৃথিবীর খেটে খাওয়া সাধারণ শ্রমজীবী মানুষের ইতিহাসহীনতার কথা বলা হয়েছে। 

মন্তব্যের অন্তর্নিহিত ব্যাখ্যাঃ 

এই বিশ্বের ইতিহাস লিপিবদ্ধ হয় শাসক কিংবা সাম্রাজ্যবাদীর ইচ্ছা আর পরিকল্পনায়। তাই সেখানে উপেক্ষিত দুর্বলের বাস্তব অবস্থার যথার্থ প্রতিচ্ছবি কখনোই ফুটে ওঠে না। ক্ষমতাবানের দত্ত আর আস্ফালনে শিকড়হারা মানুষের সম্পূর্ণ বিস্মৃত দৈন্যদশাটি আমাদের ইতিহাস নেই এই শব্দবন্ধের মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।

কলঙ্কিত ইতিহাসের পরিচয় বর্তমান সময়ে হিংসা ও রণরক্তে পর্যুদস্ত সাধারণ মানুষের দুরবস্থার কথা বলতে গিয়ে কবি ইতিহাসের প্রসঙ্গকে টেনে এনেছেন। কোনো দেশ কিংবা জাতির সমাজ, সভ্যতা ও সংস্কৃতির বিবর্তনের ধারাবাহিক ভাষ্য আর বিশ্লেষণকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে মানুষের ইতিহাস। কিন্তু প্রথাগত ইতিহাস বা ক্ষমতাবানের পরিকল্পিত ইতিহাসে প্রাধান্য পায় শাসকের স্বার্থ। সেখানে বিকৃতি বিভ্রান্তি ও মিথ্যা প্রচারে প্রকৃত ইতিহাস তার নিজস্বতা হারায়। সাধারণ মানুষ ক্রমশ ভুলে যেতে থাকে নিজের ঐতিহ্য–শিকড়–স্বপ্ন ও সংঘর্ষের ইতিবৃত্তকে। তারা দিশাহীন বিচ্ছিন্নতার স্রোতে ক্রমশ পথ হারায়। তাই কবি আমজনতার ইতিহাস থাকা না থাকার সঙ্গে যখন ‘এমনই ইতিহাস’ লেখেন তখন মানুষের বিভ্রান্তির দিকটিও স্পষ্ট হয়ে ওঠে। শাসকের উদ্দেশ্যপূরণ করে এমন চাপিয়ে দেওয়া মিথ্যা ইতিহাসের কলঙ্কিত রূপটিকেই তাই কবি এভাবে কটাক্ষ করেছেন।

৪) ‘তবু তো কজন আছি বাকি / আয় আরো হাতে হাত রেখে / আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’ – কবিতাটির মধ্যে কবি যে মূল বক্তব্য তুলে ধরতে চেয়েছেন তার সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও। এর পরিপ্রেক্ষিতে কবির মানসিকতার পরিচয় দাও। ৩+২ 

উৎসঃ

আধুনিক কবি “শঙ্খ ঘোষ” রচিত “জলই পাষাণ হয়ে আছে” কাব্যগ্রন্থের “আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি” কবিতা থেকে প্রশ্নোক্ত অংশটি চয়ন করা হয়েছে।

মূল বক্তব্যঃ 

শঙ্খ ঘোষের ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’ কবিতায় ‘বেঁধে বেঁধে’ থাকি বলতে কবি সংঘবদ্ধভাবে বেঁচে থাকাকে বোঝাতে চেয়েছেন। বর্তমান বিশ্ব ক্ষমতাবান শাসক, সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ও মৌলবাদীদের যৌথ ষড়যন্ত্রে বিধ্বস্ত। মানুষ আজ বিপন্ন। প্রতি পদে পদে তার বিপদ। তার মাথার উপর ছাদ নেই। তারা তাদের ভাবী প্রজন্মকে রক্ষা করতে অক্ষম। এমনকি তারা নিজেরাই প্রতি মুহূর্তে প্রাণসংশয়ের ভয়ে ভীত। তাই এভাবে ক্রমাগত শোষিত মানুষগুলিকে কবি প্রত্যাঘাতের পথে এগোতে বলেছেন। এই প্রত্যাঘাতের পথ হল সংঘবদ্ধতা। কবি পৃথিবীর অংসখ্য শ্রমজীবী, শান্তিকামী সাধারণ মানুষদের ‘বেঁধে বেঁধে’ অর্থাৎ একত্রিত হয়ে এই সমস্ত প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে বলেছেন।

কবি মানসিকতাঃ 

বন্য জীবজন্তুর হাত থেকে নিজেদের রক্ষার্থে আদিম অরণ্যচারী মানুষের মনেও একদিন সংঘবদ্ধভাবে বাস করার ভাবনা জেগেছিল। এইভাবেই গড়ে উঠেছিল পরিবার, পাড়া, গ্রাম, প্রদেশ ও রাষ্ট্র। সৃষ্টি হয়েছিল নতুন নতুন সভ্যতা। আজ বন্য জন্তুর ভয়ে নয়; সাম্রাজ্যবাদী, ক্ষমতাবান ও মৌলবাদী শক্তি তাদের নৃশংসতায় সাধারণ মানুষের সামনে অস্তিত্বের সংকট সৃষ্টি করেছে। এই সংকট থেকে রক্ষা পেতে, ভাবী প্রজন্মের কাছে এক সুন্দর পৃথিবী রেখে যেতে হলে প্রয়োজন মানুষের সংঘবন্ধতা। সুস্থ–শান্তিকামী ও বিবেকমান মানুষের ঐক্যবদ্ধ অঙ্গীকারেই একমাত্র এই সভ্যতার সংকটমোচন সম্ভব, কবি এ কথাই বলেছেন।

আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি কবিতার আলোচনা, MCQ, SAQ ও সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর দেখতে এই লিঙ্কটি অনুসরণ করতে হবে 

আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি কবিতা থেকে আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর শুধুমাত্র শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের সাবস্ক্রাইবারদের জন্যঃ 

‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’ কবিতার মর্মার্থ বুঝিয়ে দাও।

উত্তর জানতে এখানে টাচ/ক্লিক করতে হবে

‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’ কবিতার নামকরণ কতটা সার্থক তা আলোচনা করো।

উত্তর জানতে এখানে টাচ/ক্লিক করতে হবে

“আমাদের শিশুদের শব/ ছড়ানো রয়েছে কাছে দূরে”- কার, কোন কবিতার অংশ? মূলগ্রন্থের নাম কী? পাঠ্য কবিতা অনুসারে পঙ্‌ক্তি দুটির তাৎপর্য আলোচনা করো। ১+১+৩=৫

উত্তর জানতে এখানে টাচ/ক্লিক করতে হবে

“আমাদের ইতিহাস নেই” বলে কবি সংশয় প্রকাশ করেছেন কেন? ৫

উত্তর জানতে এখানে টাচ/ক্লিক করতে হবে

“আমরা ভিখারি বারোমাস”- ‘আমরা’ বলতে কাদের বোঝানো হয়েছে? তারা নিজেদের সর্বদা ভিখারি বলে মনে করেছেন কেন? ২+৩=৫

দশম শ্রেণির অধ্যায়ভিত্তিক বাংলা প্রশ্নের উত্তর দেখতে নিম্নের ছবিতে ক্লিক/টাচ করতে হবে 

class ten bengali note

শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের কিছু গুরুত্বপূর্ণ লিঙ্ক নিম্নে প্রদান করা হলোঃ

শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের সকল প্রকার নোট, সাজেশন, প্রশ্নপত্র ও মক টেষ্টের সুবিধা গ্রহণ করতে নিম্নের ছবিতে ক্লিক/টাচ করে বিষদ তথ্য জেনে নাওঃ 

paid courses

Ads Blocker Image Powered by Code Help Pro

Ads Blocker Detected!!!

আমরা শনাক্ত করেছি যে আপনি বিজ্ঞাপন ব্লক করতে এক্সটেনশন ব্যবহার করছেন। এই বিজ্ঞাপন ব্লকার নিষ্ক্রিয় করে আমাদের সমর্থন করুন।

Powered By
100% Free SEO Tools - Tool Kits PRO

You cannot copy content of this page

Need Help?