আড্ডা প্রবন্ধে আড্ডার বৈশিষ্ট্য । একাদশ শ্রেণির বাংলা দ্বিতীয় সেমিস্টার
শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের (www.sikkhalaya.in) পক্ষ থেকে একাদশ শ্রেণির দ্বিতীয় সেমিস্টার প্রদান করতে চলা শিক্ষার্থীদের জন্য আড্ডা প্রবন্ধে আড্ডার বৈশিষ্ট্য আলোচনাটি প্রদান করা হলো। একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা এই আড্ডা প্রবন্ধের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তরটি তৈরি করলে তাদের দ্বিতীয় সেমিস্টার বাংলা পরীক্ষায় বিশেষভাবে উপকৃত হবে।
আড্ডা প্রবন্ধে আড্ডার বৈশিষ্ট্য । একাদশ শ্রেণির বাংলা দ্বিতীয় সেমিস্টার :
১) ‘আড্ডা’ রচনাংশে লেখক আড্ডার কোন্ কোন্ বৈশিষ্ট্য ফুটিয়ে তুলেছেন, আলোচনা করো।
উৎসঃ
রবীন্দ্র-সান্নিধ্যধন্য প্রাবন্ধিক ‘সৈয়দ মুজতবা আলী’ তাঁর ‘পঞ্চতন্ত্র’ গ্রন্থের অন্তর্গত ‘আড্ডা’ রচনায় বিবিধ আড্ডার বর্ণনা দিয়েছেন।
আড্ডার বিবিধ বৈশিষ্ট্যসমূহঃ
আমরা ক্রমান্বয়ে প্রাবন্ধিক বর্ণিত আড্ডার বৈশিষ্ট্যগুলি আলোচনা করে দেখবো-
প্রথমত, তিনি বলেছেন আড্ডা সব দেশেই বিদ্যমান, শুধু নাম ও স্থান আলাদা। উদাহরণস্বরূপ মিশরের রাজধানী কায়রোর ‘নীলনদ কাফে’-তে ভিন্ন জাতীয় বর্ণের মানুষের আড্ডার উদাহরণ প্রদান করেছেন।
দ্বিতীয়ত, তিনি বলেছেন, কারো বাড়িতে আড্ডা দিলে আড্ডার গণতন্ত্র বজায় থাকে না। কেন-না, সেখানে গৃহস্থের অন্যান্য সদস্যদের অসন্তোষের মুখে পড়তে হয়, আর আড্ডার সময়সীমাও হয়ে যায় নির্দিষ্ট। তার বর্ণনায় – ‘কাইরোর আড্ডা কক্খনো কোন অবস্থাতেই কারো বাড়িতে বসে না।’
তৃতীয়ত, আড্ডার মধ্যে যত গুণীজনই আসুন না কেন, সেখানে পান্ডিত্য জাহির করার কোনো জায়গা নেই। তাহলে আড্ডা বক্তৃতাধর্মী হয়ে যায় ও আড্ডার আসল প্রাণ মারা পড়ে- ‘বক্তৃতা আড্ডার সবচেয়ে ভাঙর দুশমন।’
চতুর্থত, আড্ডায় সকলের কথার পিঠে কথা চলবে, এমন কোনো দিব্যি নেই। কেন-না, আড্ডা পার্লামেন্ট নয়। কোনো নির্বাক শ্রোতাও আড্ডায় অংশ নিতে পারে।
পঞ্চমত, নতুন আড্ডা ছেড়ে পুরাতন আড্ডায় কদাচিত কেউ প্রবেশ করলে তাকে অভ্যর্থনা জানানো হয় ঠিকই, তবে পক্ষাধিক কাল ধরে যেসব আলোচনা তাদের মধ্যে হয়েছে, তা উত্থাপন করে পুনরাগত ব্যক্তির রায় জানতে চাওয়া হয়।
ষষ্ঠত, আড্ডা কোনো নির্দিষ্ট বিষয়কেন্দ্রিক হয় না। বিভিন্ন বিষয় আড্ডার মধ্যে প্রবেশ করে আড্ডাকে বহুমুখী করে তোলে।
এইরূপে আমরা সমগ্র রচনাংশ জুড়ে আড্ডার বিবিধ বৈশিষ্ট্যের পরিচয় লাভ করি।