ভাষাবিজ্ঞানের যে শাখায় একাধিক ভাষার মধ্যে তুলনামূলক আলোচনার মাধ্যমে সেই ভাষার উৎস, প্রকৃতি ও ক্রমবিকাশের ইতিহাস সম্পর্কে আলোচনা করা হয় তাকে তুলনামূলক ভাষাবিজ্ঞান বলে।
তুলনামূলক ভাষাবিজ্ঞানের আলোচনার সূত্রপাত করেছিলেন স্যার উইলিয়াম জোন্স। কোন ভাষার বিজ্ঞানসম্মত আলোচনায় সেই ভাষার সঙ্গে নিকট বা দূর সম্পর্কিত ভাষার সম্পর্ক বিষয়ে এই ধারায় আলোকপাত করা হয়।
বৈশিষ্ট্যঃ
ভাষাবিজ্ঞানের এই ধারার বিবিধ বৈশিষ্ট্যগুলি নিমরূপ–
ক) কোন ভাষার ভাষাগত দিকের আলোচনার প্রতিই তুলনামূলক ভাষাবিজ্ঞানে মনোনিবেশ করা হয়।
খ)বিবিধ ভাষার ধ্বনিগত ঐক্য, রূপগত বৈপরীত্য ও সাদৃশ্যের মধ্যে তুলনামূলক আলোচনা করা হয়।
গ) কোন ভাষার অন্তর্গত বিবিধ ধ্বনি বা শব্দের উৎস, ইতিহাস, ক্রমবিকাশ সম্পর্কে তুলনামূলক ভাষাবিজ্ঞান আলোচনা করে।
ঘ) তুলনামূলক ভাষাবিজ্ঞান বিবিধ ভাষার ক্রিয়াগত, অর্থগত ও রূপগত দিকের বিশ্লেষণ করে তাদের মূল উৎস নির্ণয় করে থাকে।
উদাহরণঃ
“মা” এই বাংলা শব্দটির আদিরূপ বৈদিক ভাষায় “মাতৃ”। ঠিক তেমনই, ইউরোপের বিবিধ ভাষায়ও শব্দের আদিরূপের সঙ্গে বর্তমান শব্দের সাদৃশ্য পরিলক্ষিত হয়। এক্ষেত্রে ভাষাগুলির মধ্যে তুলনামূলক ভাষাবিজ্ঞানের সাহায্য গ্রহণ করতে হয়।
মূল্যায়নঃ
অতএব আলোচনা করে দেখা গেল, ভাষাবিজ্ঞানের আলোচনায় তুলনামূলক ভাষাবিজ্ঞান এক গুরুত্বপূর্ণ স্থান অর্জন করেছে।