বাংলা ব্যাকরণ বাক্য

বাংলা ব্যাকরণ থেকে বাক্য বিষয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য একটি সার্বিক আলোচনা প্রদান করা হলো।


বাক্যঃ
এক বা একাধিক পদ বা পদসমষ্টির মিলিত রূপ দ্বারা যদি মনের ভাব প্রকাশ পায় তাহলে উক্ত পদসমষ্টিকে বাক্য বলে।
যেমনঃ আমি ভাত খাই।

প্রতিটি বাক্যই প্রধান দুটি অংশে বিভক্ত। যথা-
ক) উদ্দেশ্য
খ) বিধেয়

ক) উদ্দেশ্যঃ
বাক্যের যে-অংশ সম্মন্ধে কিছু বলা হয় বা বাক্যের যে অংশে কারও সম্মন্ধে কিছু বলা হয়, তাকেই বলা হয় উদ্দেশ্য।
যেমনঃ কোহলি ভালো ক্রিকেট খেলে। এই বাক্যে কোহলি হল উদ্দেশ্য। কারন তার সম্মন্ধেই কিছু বলা হয়েছে।

খ) বিধেয়ঃ
বাক্যের যে অংশে উদ্দেশ্য সম্পর্কে কিছু বলা হয় তাকেই বলা হয় বিধেয়।
যেমনঃ কোহলি ভালো ক্রিকেট খেলে।
এই বাক্যে “ভালো ক্রিকেট খেলে”- হল বিধেয়।

বাক্যের গঠনগত শ্রেণিবিভাগঃ
গঠনগত ভাবে বাক্যকে প্রধানত তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়। যথা-

ক) সরল বাক্য
খ) জটিল বাক্য
গ) যৌগিক বাক্য
এছাড়াও ঘ) মিশ্র বাক্য

 

bengali mcq mock test

ক) সরল বাক্যঃ
যে বাক্যে একটি মাত্র সমাপিকা ক্রিয়া থাকে, তাকে সরল বাক্য বা সাধারণ বাক্য বলা হয়।
যেমনঃ সে ভাত খায়। এই বাক্যের একটি মাত্র সমাপিকা হল “খায়”।

খ) জটিল বাক্যঃ
যে বাক্য একটি স্বাধীন সরল বাক্য এবং এক বা একাধিক আশ্রিত খণ্ডবাক্য থাকে, তাকে জটিল বাক্য বলা হয়।
যেমনঃ তুমি জানো যে সে কোথায়। এখানে ‘’তুমি জানো” হল সরল বাক্য এবং “যে সে কোথায়” হল আশ্রিত খণ্ডবাক্য।

গ) যৌগিক বাক্যঃ
একাধিক সরলবাক্য যখন অর্থ ও গঠন অপরিবর্তিত রেখে এক বা একাধিক সংযোজক অব্যয়ের দ্বারা মিলিত হয়ে বাক্য গঠন করে, তখন সেই বাক্যকে যৌগিক বাক্য বলা হয়।
যেমনঃ তুমি মানুষটি ভালো কিন্তু খুব কৃপণ। এখানে দুটি সরল বাক্য একটি সংযোজক অব্যয় “কিন্তু” দ্বারা যুক্ত হয়ে যৌগিক বাক্য গঠন করেছে।

ঘ) মিশ্র বাক্যঃ
সরল, জটিল ও যৌগিক বাক্যের মধ্যে যে-কোনো দু-প্রকার বাক্য যুক্ত হয়ে মিশ্র আকারের বৃহত্তর কোনো জটিল বা যৌগিক বাক্য গঠন করলে তাকে মিশ্র বাক্য বলা হয়।
যেমনঃ তুমি আমার বন্ধু যে সর্বদা আমার পাশে থাকে এবং আমাকে সব বিষয়ে সহায়তা করে। এখানে “তুমি আমার বন্ধু” সরলবাক্য, “যে সর্বদা আমার পাশে থাকে” খন্ডবাক্য, “এবং” সংযোজক অব্যয়।

online quiz

বাক্যের অর্থগত শ্রেণিবিভাগঃ
অর্থগত ভাবে বাক্যকে সাতটি ভাগে ভাগ করা হয়-

ক) নির্দেশক বাক্য
খ) প্রশ্নবাচক বাক্য
গ) অনুজ্ঞাসূচক বাক্য
ঘ) প্রার্থনা সূচক বাক্য
ঙ) সন্দেহসূচক বাক্য
চ) আবেগসূচক বাক্য
ছ) শর্তসাপেক্ষ বাক্য

ক) নির্দেশক বাক্যঃ
যে বাক্য কোনো বক্তব্য সাধারণভাবে নির্দেশিত হয় বা স্বীকার অথবা অস্বীকার করা হয়, তাকেই নির্দেশক বাক্য বলে।
যেমনঃ বিদ্যাসাগর ১৮২০ সালে জন্মগ্রহণ করেন।

খ) প্রশ্নবাচক বাক্যঃ
যে-বাক্যে কোনো কিছু জানতে চেয়ে প্রশ্ন করা হয় বা যে-বাক্যের মাধ্যমে প্রশ্ন বোঝায়, তাকেই প্রশ্নবাচক বাক্য বলে।
যেমনঃ শিক্ষালয় ওয়েবসাইট তোমার কেমন লাগে?

গ) অনুজ্ঞাসূচক বাক্যঃ
যে-বাক্যে আদেশ, অনুরোধ, উপদেশ ইত্যাদি অর্থ প্রকাশিত হয়, তাকেই অনুজ্ঞাসূচক বাক্য বলে।
যেমনঃ মাস্ক পড়ে বাইরে বেরোবে।

ঘ) প্রার্থনাসূচক বাক্যঃ
যে-বাক্যে বক্তার মনের ইচ্ছা, আকাঙ্খা, প্রার্থনা বা কামনা প্রকাশিত হয়, সেই বাক্যকে প্রার্থনাসূচক বাক্য বলে।
যেমনঃ আমি উচ্চমাধ্যমিকে ৯৫ শতাংশ নম্বর পাবো।

ঙ) সন্দেহসূচক বাক্যঃ
যে-বাক্যে বক্তার মনের কোনো সন্দেহ, সংশয় বা অনুমান প্রকাশিত হয়, তাকে সন্দেহসূচক বাক্য বলে। যেমনঃ আজকে বোধহয় তোমার পড়া হয় নি।

চ) আবেগসূচক বাক্যঃ
যে-বাক্যে আনন্দ, শোক, ক্রোধ, ঘৃণা, বিরক্তি, বিস্ময়, উৎসাহ ইত্যাদি কোনো একটি আবেগ প্রকাশিত হয়, তাকেই বলে আবেগসূচক বাক্য।
যেমনঃ কি মজা! আজ দাদা পড়াবে না।

ছ) শর্তসাপেক্ষ বাক্যঃ
যে-বাক্যে বর্ণিত একটা ঘটনা বা অবস্থার উপর অন্য একটি ঘটনা বা অবস্থার নির্ভরশীলতা ব্যক্ত হয়, তাকেই শর্তসাপেক্ষ বাক্য বলে।
যেমনঃ যদি মন দিয়ে পড়াশোনা করো, তবে পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করতে পারবে। 

subscribe to sikkhalaya

Ads Blocker Image Powered by Code Help Pro

Ads Blocker Detected!!!

আমরা শনাক্ত করেছি যে আপনি বিজ্ঞাপন ব্লক করতে এক্সটেনশন ব্যবহার করছেন। এই বিজ্ঞাপন ব্লকার নিষ্ক্রিয় করে আমাদের সমর্থন করুন।

Powered By
Best Wordpress Adblock Detecting Plugin | CHP Adblock

You cannot copy content of this page

Need Help?