আদরিনী- প্রভাত কুমার মুখোপাধ্যায় ।। দ্বাদশ শ্রেণি বাংলা তৃতীয় সেমিস্টার

আদরিনী- প্রভাত কুমার মুখোপাধ্যায় ।। দ্বাদশ শ্রেণি বাংলা তৃতীয় সেমিস্টার

শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের পক্ষ থেকে দ্বাদশ শ্রেণির উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের জন্য ‘আদরিনী- প্রভাত কুমার মুখোপাধ্যায় ।। দ্বাদশ শ্রেণি বাংলা তৃতীয় সেমিস্টার’ প্রদান করা হলো। ২০২৬ সাল থেকে উচ্চমাধ্যমিক দিতে চলা শিক্ষার্থীদের তৃতীয় সেমিস্টার পরীক্ষার প্রস্তুতির লক্ষ্যে এই ‘আদরিনী- প্রভাত কুমার মুখোপাধ্যায় ।। দ্বাদশ শ্রেণি বাংলা তৃতীয় সেমিস্টার’ প্রদান করা হলো। শিক্ষার্থীরা গল্পটি পাঠ করে, গল্পের বিষয়বস্তু অনুধাবন করতে পারবে। দ্বাদশ শ্রেণির উচ্চমাধ্যমিক তৃতীয় সেমিস্টারের প্রস্তুতির লক্ষ্যে এখানে আদরিনী গল্পের MCQ প্রশ্নের উত্তর প্রদান করা হয়েছে।

শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের সকল প্রকার আপডেট লাভ করতে মোবাইল স্ক্রিনের বা’দিকের নিম্নের অংশে থাকা বেল আইকনটিতে (🔔) টাচ করে শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের নোটিফিকেশন অন করে রাখুন।

আদরিনী- প্রভাত কুমার মুখোপাধ্যায় ।। দ্বাদশ শ্রেণি বাংলা তৃতীয় সেমিস্টারঃ 

আদরিনী- প্রভাত কুমার মুখোপাধ্যায় গল্পের বিষয়বস্তুঃ 

পাড়ার নগেন ডাক্তার ও জুনিয়র উখিল কুঞ্জবিহারীবাবু এবং খ্যাতনামা মোক্তার জয়রাম মুখোপাধ্যায় এরা সবাই পীরগন্জের জমিদার মেজোবাবুর মেয়ের বিয়েতে নিমন্ত্রণ পেয়েছেন। ঘোড়ার গাড়ির উপায় নেই। আর গরুর গাড়িতে করে যেতে কমপক্ষে দু’দিন এবং আসতে দু’দিন লাগে। ডাক্তার ও জুনিয়র উকিল বাবু দুজনের অনাবোধে জয়রাম মোক্তার বিয়ের বাড়ীতে যাওয়ার জন্য চৌধুরী বাবুদের কাছে একটি হাতি চেয়ে পত্র পাঠান। চৌধুরীবাবুর জানান বিয়ে বাড়িতে আসার জন্য হাতি পাঠানো যাবে না।

এতে জয়রামপুর আত্মসম্মানে আঘাত লাগে। জয়রাম মুখোপাধ্যায়ের বয়স পঞ্চাশ পেরিয়েছে। মানুষটি লম্বা ছাদের, গায়ের রং আরেকটু পরিষ্কার হলে গৌরবর্ণ বলা যেত। কাঁচাপাকা মিশ্রিত মোটা মোটা মাথার সামনে টাক আছে। চোখ দুটো বড় বড় আর ভাসা ভাসা। তার হৃদয়ের কোমলতা যেন তার দুচোখ দিয়ে উঠলে পড়ছে। তার আদি নিবাস যশোর জেলায়। এখানে যখন প্রথম মুক্তারি করতে আসেন তখন তার সহায় সম্পত্তি বলতে কিছুই ছিল না। তিনি মুক্তারি করে প্রচুর টাকা উপার্জন করেছেন। পাকা দালান কোঠা ও বাগান কিনেছেন। এছাড়া অনেকগুলি কোম্পানির কাগজেও কিনেছেন।

জয়রাম মুখোপাধ্যায়ের হৃদয় অত্যন্ত নরম ও স্নেহ স্নেহপ্রবণ হলেও মেজাজটা একটু রক্ষ প্রকৃতির। যৌবনে তিনি রীতিমতো বদরাগী ছিলেন। তিনি যেমন অনেক অর্থ উপার্জন করতেন তেমনি তার ব্যয় এর পরিমাণ ছিল যথেষ্ট। তিনি অকাতরে অন্ন দান করতেন। উৎপীড়িত গরিব লোকের বিনা পারিশ্রমিকে লড়তেন। এমনকি কখনো কখনো নিজের অর্থ ব্যয় করে তাদের মামলা চালাতেন। বন্ধু বান্ধব সকলকে নিয়ে তিনি থাকতে ভালবাসতেন। জয় রাম বাবুর বৈঠকখানায় সকলে মিলে তাস পাশা খেলত চৌধুরী বাবুদের কাছ থেকে হাতিয়ে আসবে এই আশা নিয়ে তিনি বাগানের কিছুটা অংশ পরিস্কার করিয়ে হাতির রাতে খাবারের জন্য বড় বড় পাতাযুক্ত কলাগাছ ও অন্যান্য গাছের ডালপালা ব্যবস্থা করলেন। কিন্তু সন্ধ্যার সময় একজন চাকর চৌধুরী বাবুদের ওখান থেকে ফিরে এসে জানালো যে তারা জানিয়েছে বিয়ের নিমন্ত্রণ হয়েছে, তার জন্য হাতি কেন? গরুর গাড়িতে আসতে বল।

একথা শুনে জয়রাম বাবু খুব লজ্জায় রাগে ক্ষিপ্ত প্রাপ্ত হয়ে উঠলেন। চৌধুরী বাবুদের এরূপ ব্যবহারে তিনি অপমানিত বোধ করলেন। জেদ করে বসলেন হাতি ছাড়া তিনি কোনোভাবেই বিয়ে বাড়িতে যাবেন না। তাই সে রাত্রে খবর নিয়ে পরের দিন সকালে উমাচরণ লাহিড়ীর কাছ থেকে দু’হাজার টাকার বিনিময়ে একটি মালিহাতি কিনে নিলেন। বাড়িতে হাতি নিয়ে আসা মাত্র গ্রামের সবাই এসে ভিড় জমাল। মুখোপাধ্যায় মহাশয় এর বড় বউ মা হাতির কপালে সিঁদুর লাগিয়ে হাতিটিকে বরণ করে নেন। হাতির নাম রাখা হয় আদরিনী। পীরগঞ্জে গিয়ে নিমন্ত্রণ রক্ষা করে পরদিন বিকেলে মহারাজের কাছে হাতির পিঠে চড়ে দেখা করতে যান। মহারাজ কার হাতি জানতে চাইলে জয় রাম বাবু তাকে হুজুর বাহাদুরের হাতি বলে কিছুটা অপমানিত করার চেষ্টা করেন। পরে সমস্ত ঘটনা বন্ধু-বান্ধবদের বিস্তারিতভাবে বলেন।

এ ঘটনার পর দীর্ঘ পাঁচ বছর অতিবাহিত হয় মুক্তার জয়রামবাবুর অবস্থার অনেক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। নতুন নিয়মে পাস করা শিক্ষিত মুক্তার জেলা কোর্ট ভরে গেছে। পুরনো আইন ব্যবসায়ীদের কেউ আদর করে না। ধীরে ধীরে মুখোপাধ্যায়ের আয় কমতে আরম্ভ করল। অপরদিকে তার সংসারের ব্যয় বেড়েই চলেছে। মুক্তার মহাশয় এর তিন ছেলে। প্রথম দুটি কোনো কাজ করে না, কেবল আনন্দ ফুর্তি করে দিন কাটায়। ইংরেজি না জানার জন্য জয়রাম মুক্তারের এজলাসে যেতে ইচ্ছে করে না। কারণ অনেক ছোট উকিলেরাও ইংরেজিতে অনর্গল কথা বলে, যা জয় রাম বাবুর বোধগম্য হয় না।

এ সময় একদিন দায়ের আরেকটি খুদের আসে। ওই আসামি জয়রাম মুক্তার কে নিজ মুক্তার হিসেবে নিযুক্ত করল। একজন নতুন ইংরেজ জজ সাহেবের এজলাসে বিচার প্রক্রিয়া আরম্ভ হয়। তিন মাস ধরে মোকদ্দমা চলে। অবশেষে জয়রাম মুক্তার জজ সাহেবের সম্মুখে দীর্ঘ বক্তৃতা দেন। বক্তৃতা শেষে জয়রাম মুক্তারের মক্কেলকে নির্দিষ্ট করেন এবং তাদের অভিমত শিকার করে আসামিকে খুনের অপরাধ থেকে অব্যাহতি দেন।

জয়রামবাবুর আইন সম্পর্কে প্রচুর জ্ঞান থাকার জন্য তার খুব প্রশংসা করেন। এরপর থেকে তিনি আর কখনো কাচারি যাননি। আইন ব্যবসা ছেড়ে দেবার পর জয় রাম বাবুর সংসার কোন রকম চলছিল। সুদের টাকার টাকায় সংসার চলছিল না। ফলস্বরূপ মূলধনে হাত পড়ল। ধীরে ধীরে কোম্পানির কাগজের সংখ্যাও কমতে শুরু হল। এমতাবস্থায় তার বন্ধুবান্ধবরা আদরিনী কে বেঁচে মাসে ৩০-৪০ টাকা খরচ কমানোর কথা বলেছিল। এতে মুক্তার মহাশয় বেজায় চটে ছিলেন। পরে তিনি নিজেই একটি উপায় বের করেছিলেন। তিনি হাতিটি ভাড়া দেওয়ার কথা ভেবে বিজ্ঞাপন দেন।

কিন্তু এতে তিনি সফলতা পাননি। অবশেষে সবার পরামর্শে হাতিটি বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হন। কারণ বড় নাতিনি কল্যাণীর বিয়ের বয়স হয়েছে। কিন্তু বিয়ে দেওয়ার মতো তার আর্থিক সামর্থ্য নেই। এ ব্যাপারে মেয়ের বাপের কোন ভাবনা চিন্তা নেই। যত দায় এই ষাট বছরের বৃদ্ধ জয়রামের ঘাড়েই ছিল। অবশেষে একদিন কল্যাণীর বিয়ের তারিখ ঠিক হয়। আদরিনী কে বিক্রি করে ওই টাকার বিয়ের গয়না বানানো হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সেই উদ্দেশ্যে আদরিনীকে চৈত্রসংক্রান্তির বামনহাট মেলায় পাঠানো হয়। কিন্তু সেখানে উপযুক্ত দাম দেওয়ার গ্রাহকের অভাবে আদরিনী বিক্রি না হয়ে বাড়িতে ফিরে আসে। আদরিনীকে ফিরতে দেখে বাড়িতে আনন্দের কোলাহলে শুরু হয়ে যায়। কিন্তু কল্যাণীর বিয়ের কথা মাথায় রেখে জয়রাম মুক্তার পুনরায় বন্ধুদের পরামর্শে রসুলগঞ্জ সপ্তাহব্যাপী অন্য আরেক মেলায় আদরিনীকে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন। পূর্বের দিন বিকালে জয়রাম মুখোপাধ্যায় উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু রসূলগণের মেলায় পাঠানোর তিনি দুঃখে উপস্থিত থাকলেন না। কিন্তু কল্যাণী যখন এসে তাকে জানায় আদরিনী যাবার সময় কাদছিল, তখন তিনি আরো বেশি দুঃখ পান। মেঝেতে বসে দীর্ঘ শ্বাস ফেলতে থাকে আর বলতে থাকেন “জানতে পেরেছে ওরা অন্তর্যামী কিনা, ও বাড়িতে যে আর ফিরে আসবে না তা জানতে পেরেছে”।

বৃদ্ধ জয়রামের সবচেয়ে বড় দুঃখ আদরিনী যাবার সময় তার সঙ্গে দেখা না করা। তবু মনকে সান্ত্বনা দিতে বলেছিলেন “খুকির বিয়েটা হয়ে যাক তারপর তুই যার ঘরে যাবে তাদের বাড়িতে গিয়ে আমি তোকে সন্দেশ দিয়ে আসবো রসগোল্লা নিয়ে যাব, যতদিন বেঁচে থাকবো তোকে কি ভুলতে পারবো, মাঝে মাঝে গিয়ে তোকে দেখে আসব, তুই মনে কোন অভিমান করিস নে মা”।

পরদিন বিকেলে খবর এলো আদরিনী পথিমধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এই সংবাদ বৃদ্ধ জয়রাম আরো বিচলিত হয়ে পড়লেন।বাড়ির উঠোনে পাগলের মত পায়চারি করতে থাকেন এবং বলতে থাকেন “আদরের অসুখ যন্ত্রণায় সে ছটপট করছে আমাকে দেখতে না পেলে সে সুস্থ হবে না, আমি আর দেরি করতে পারব না”। রাত্রি দশটার সময় ছাড়লো পরদিন সকালে গন্তব্য স্থানে পৌঁছে বৃদ্ধ দেখলেন সব শেষ হয়ে গেছে। আদরিনীর বিশাল দেহ খানি আম বাগানের ভেতর পড়ে আছে। তা নিশ্চল নিস্পন্দ। বৃদ্ধ ছুটে গিয়ে আদরিনীর মৃতদেহের কাছে লুটিয়ে পড়েন। তার বুকের নিকট মুখ রেখে কাঁদতে কাঁদতে বারবার বলতে থাকেন- “অভিমান করে চলে গেলি মা, তোকে বিক্রি করতে পাঠিয়ে ছিলাম বলে তুই অভিমান করে চলে গেলি”।

এ ঘটনার পর মাত্র দু’মাস মুখোপাধ্যায় মশাই জীবিত ছিলেন।

 

আদরিনী- প্রভাত কুমার মুখোপাধ্যায় গল্পের প্রশ্নের উত্তরঃ 

….. খুব শীঘ্রই এখানে শিক্ষালয়ের পক্ষ থেকে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তরগুলি প্রদান করা হবে। শিক্ষালয়ের সকল প্রকার আপডেট লাভ করতে নিয়মিত ভিজিট করো শিক্ষালয় ওয়েবসাইট।  

 

দ্বাদশ শ্রেণির সব বিষয়ের সিলেবাস দেখতে এই লিঙ্কটি অনুসরণ করতে হবে 

উচ্চমাধ্যমিক সেমিস্টার ৩ ও সেমিস্টার ৪ এর সব বাংলা নোট দেখতে নিম্নের ছবিতে ক্লিক/টাচ করতে হবে

class-twelve-bengali-note-semester-3-and-4 

একাদশ শ্রেণি বাংলা পড়া ও নোট দেখতে নিম্নের ছবিতে ক্লিক/টাচ করতে হবে

class-eleven-bengali-notes

শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের কিছু গুরুত্বপূর্ণ লিঙ্ক নিম্নে প্রদান করা হলোঃ

শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের সকল প্রকার নোট, সাজেশন, প্রশ্নপত্র ও মক টেষ্টের সুবিধা গ্রহণ করতে নিম্নের ছবিতে ক্লিক/টাচ করে বিষদ তথ্য জেনে নাওঃ 

paid courses

You cannot copy content of this page

Need Help?