দশম শ্রেণি বাংলাঃ প্রলয়োল্লাস

শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের পক্ষ থেকে প্রলয়োল্লাস কবিতাটি এবং প্রলয়োল্লাস কবিতা থেকে দশম শ্রেণি বাংলাঃ প্রলয়োল্লাস পেজে গুরুত্বপূর্ণ কিছু নোট প্রদান করা হলো। শিক্ষার্থীরা নির্দিষ্ট নোটে টাচ/ক্লিক করে সেই বিষয়ের নোটগুলি দেখতে পারবে।

শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের সকল প্রকার আপডেট লাভ করতে মোবাইল স্ক্রিনের বা’দিকের নিম্নের অংশে থাকা বেল আইকনটিতে (🔔) টাচ করে শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের নোটিফিকেশন অন করে রাখুন। 

দশম শ্রেণি বাংলাঃ প্রলয়োল্লাস- কাজি নজরুল ইসলাম

তোরা সব জয়ধ্বনি কর!
তোরা সব জয়ধ্বনি কর!!
ঐ নূতনের কেতন ওড়ে কাল্-বোশেখির ঝড়।
তোরা সব জয়ধ্বনি কর!
তোরা সব জয়ধ্বনি কর!!
আসছে এবার অনাগত প্রলয়-নেশার নৃত্য-পাগল,
সিন্ধু-পারের সিংহ-দ্বারে ধমক হেনে ভাল আগল।
মৃত্যু-গহন অন্ধ-কৃপে
মহাকালের চণ্ড-রূপে-
ধূম্ৰ-ধূপে
বজ্র-শিখার মশাল জ্বেলে আসছে ভয়ঙ্কর-
ওরে ঐ হাসছে ভয়ঙ্কর!
তোরা সব জয়ধ্বনি কর!
তোরা সব জয়ধ্বনি কর!!
ঝামর তাহার কেশের দোলায় ঝাপ্‌টা মেরে গগন দুলায়,
সর্বনাশী জ্বালা-মুখী ধূমকেতু তার চামর ঢুলায়!
বিশ্ব পাতার বক্ষ-কোলে
রক্ত তাহার কৃপাণ ঝোলে
দোদুল দোলে!
অদ্ভরোলের হট্টগোলে স্তব্ধ চরাচর-
ওরে ঐ স্তব্ধ চরাচর!
তোরা সব জয়ধ্বনি কর!
তোরা সব জয়ধ্বনি কর!!
দ্বাদশ রবির বহ্নি-জ্বালা ভয়াল তাহার নয়ন-কটায়,
দিগন্তরের কাঁদন লুটায় পিঙ্গল তার ত্রস্ত জটায়!
বিন্দু তাহার নয়ন-জলে
সপ্ত মহাসিন্ধু দোলে
কপোল-তলে!
বিশ্ব-মায়ের আসন তারি বিপুল বাহুর ‘পর-
হাঁকে ঐ ‘জয় প্রলয়ঙ্কর!
তোরা সব জয়ধ্বনি কর!
তোরা সব জয়ধ্বনি কর!!
মাভৈ মাভৈ! জগৎ জুড়ে প্রলয় এবার ঘনিয়ে আসে!
জরায়-মরা মুমূর্ষদের প্রাণ লুকানো ঐ বিনাশে!
এবার মহা-নিশার শেষে
আসবে ঊষা অরুণ হেসে
করুণ বেশে!
দিগম্বরের জটায় লুটায় শিশু চাঁদের কর,
আলো তার ভরবে এবার ঘর।
তোরা সব জয়ধ্বনি কর!
তোরা সব জয়ধ্বনি কর!!
ঐ সে মহাকাল-সারথি রক্ত-তড়িত-চাবুক হানে,
রণিয়ে ওঠে হ্রেষার কাঁদন বজ্র-গানে ঝড়-তুফানে!
খুরের দাপট তারায় লেগে উল্কা ছুটায় নীল খিলানে!
গগন-তলের নীল খিলানে।
অন্ধ করার বন্ধ কূপে
দেবতা বাঁধা যজ্ঞ-যূপে
পাষাণ স্তূপে!
এই তো রে তার আসার সময় ঐ রথ-ঘর্ঘর-
শোনা যায় ঐ রথ-ঘর্ঘর।
তোরা সব জয়ধ্বনি কর!
তোরা সব জয়ধ্বনি কর!!
ধ্বংস দেখে ভয় কেন তোর ? – প্রলয় নূতন সৃজন-বেদন!
জীবন তারা অ-সন্দরে করতে ছেদন!
তাই সে এমন কেশে বেশে
প্রলয় বয়েও আসছে হেসে-
মধুর হেসে!
ভেঙে আবার গড়তে জানে সে চির-সুন্দর!
তোরা সব জয়ধ্বনি কর!
তোরা সব জয়ধ্বনি কর!!
ঐ ভাঙা-গড়ার খেলা যে তার কিসের তবে ডর?
তোরা সব জয়ধ্বনি কর!-
বধূরা প্রদীপ তুলে ধরা
কাল ভয়ঙ্করের বেশে এবার ঐ আসে সুন্দর!-
তোরা সব জয়ধ্বনি কর!
তোরা সব জয়ধ্বনি কর!!

দশম শ্রেণি বাংলাঃ প্রলয়োল্লাস কবিতার ছোটো প্রশ্নের উত্তরঃ 

১) মহাকালের চণ্ড – রূপে ‘ আসছেন- সৃষ্টির দেবতা

২) ‘উল্কা ছুটায় নীল খিলানে’— ‘ নীল খিলান ‘ বলতে এখানে বোঝানো হয়েছে – আকাশকে

৩) ‘প্রলয়োল্লাস’ কবিতায় ‘রথঘর্ষর’ বলতে বোঝানো হয়েছে – রথের চাকায় ঘর্ষণের শব্দ

৪) যে ‘ভেঙে আবার গড়তে জানে’ তার নাম হল – চিরসুন্দর

৫) বধূদের যা তুলে ধরতে বলা হয়েছে , তা হল- প্রদীপ

৬) সুন্দর যার বেশে আসছে , সে হল – কাল- ভয়ংকর

৭) ‘প্রলয়োল্লাস’ কবিতায় ‘তোরা সব জয়ধ্বনি কর’ বাক্যটি মোট ব্যবহৃত হয়েছে- উনিশ বার 

৮) ‘দ্বাদশ রবির বহ্নিজ্বালা ভয়াল তাহার নয়নকটায়’- ‘দ্বাদশ রবি’ বলতে বোঝানো হয়েছে – বারোটি রবি

৯) ‘জীবনহারা অ-সুন্দরে করতে ছেদন’- আসছে- নবীন

১০) ‘অন্ধ কারার বন্ধ কূপে / দেবতা বাঁধা যজ্ঞ-যূপে’- এক্ষেত্রে কবি ‘দেবতা’ বলতে বুঝিয়েছেন-  ভারতীয় বিপ্লবীকে

১১) এবার মহানিশার শেষে বুঝিয়েছেন ক দীর্ঘ রাত্রি শেষে- দীর্ঘ পরাধীনতার শেষে

১২) ‘বিশ্বপিতার বক্ষ-কোলে’- ঝোলে- কৃপাণ 

১৩) ‘তোরা সব জয়ধ্বনি কর’- যাঁর জয়ধ্বনি করতে হবে, তিনি হলেন- প্রলয়ংকর শিব

১৪) ‘মৃত্যু-গহন অন্ধকূপে’ বলতে কবি বুঝিয়েছেন- কুসংস্কারগ্রস্ত সমাজ

১৫) বিশ্বমায়ের আসন- মহাকাল ধারণ করে রেখেছেন

১৬) ‘প্রলয়োল্লাস’ কবিতাটি যে কাব্যগ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত- অগ্নিবীণা

১৭) ‘তোরা সব ____ কর’ – জয়ধ্বনি

১৮) কবি ‘নূতনের কেতন’ বলেছেন – কালবোশেখির ঝড়কে

১৯) ‘প্রলয়োল্লাস’ শব্দের অর্থ হল- ধ্বংসের আনন্দ

২০) ‘প্রলয়োল্লাস’ কবিতাটির মুখ্য উপজীব্য হল- বিপ্লববাদ

২১) অনাগত প্রলয় যেখানে ধমক হেনে আগল ভাঙল, তা হল – সিন্ধুপারের সিংহদ্বারে

২২) ভয়ংকর আসছে – বজ্রশিখার মশাল জ্বেলে

২৩) ‘ঝামর’ শব্দের অর্থ হল – কৃষ্ণবর্ণ

২৪) ধূমকেতুকে ‘জ্বালামুখী’ বলার কারণ হল- ধূমকেতুর পুচ্ছটি ধূম্রনির্মিত

২৫) ‘কৃপাণ’ শব্দটির অর্থ হল – ছোরা

২৬) চরাচর স্তব্ধ হওয়ার কারণ – অট্টরোলের হট্টগোলে

২৭) ‘সপ্ত মহাসিন্ধু দোলে / কপোলতলে’- ‘কপোল’ শব্দের অর্থ হল- গাল

২৮) ‘মাভৈঃ মাভৈঃ’ ধ্বনির তাৎপর্য হল – ভয় না পেয়ে এগিয়ে চল

২৯) ‘মুমূর্ষু’ শব্দের একটি প্রতিশব্দ হল- ভয়ংকর

৩০) ‘প্রলয়োল্লাস’ কবিতায় ‘শিশু-চাঁদ’ বলতে বোঝানো হয়েছে- সদ্য- উদিত চাঁদ

৩১) ‘প্রলয়োল্লাস’ কবিতাটির প্রকাশকাল হল- ১৯২২ খ্রিস্টাব্দ

দশম শ্রেণি বাংলাঃ প্রলয়োল্লাস কবিতার বড়ো প্রশ্নের উত্তরঃ 

১) “দ্বাদশ রবির বহ্নিজ্বালা ভয়াল তাঁহার নয়নকটায়”… “বিন্দু তাঁহার নয়নজলে সপ্তমহাসিন্ধু দোলে”- ‘প্রলয়োল্লাস’ কবিতার উদ্ধৃত উক্তি দুটির তাৎপর্য উল্লেখ করো। ৫

উৎসঃ

বাংলা সাহিত্যের বিদ্রোহী কবি “কাজি নজরুল ইসলাম” রচিত “অগ্নিবীণা” কাব্যগ্রন্থের প্রথম কবিতা “প্রলয়োল্লাস” থেকে এই তাৎপর্যপূর্ণ অংশদুটি চয়ন করা হয়েছে।

দ্বাদশ রবির বহ্নিজ্বালা- তাৎপর্যঃ

কবি মহাকালের চন্ডরূপের বর্ণনা প্রদান করতে পৌরাণিক প্রসঙ্গের সাহায্য গ্রহণ করেছেন। পুরাণ মতে দ্বাদশ রবি হলো- ধাতা, মিত্র, অর্যমা, রুদ্র, বরুণ, সূর্য, ভগ, বিবস্বান, পূষা, সবিতা, ত্বষ্টা এবং বিষ্ণু

এই বারোটি সূর্যের সম্মিলিত সূর্যের সমান তেজে বলীয়ান হয়ে তরুণ বিপ্লবীরা দেশের স্বাধীনতা কামনায় মহাকালের রুদ্ররূপের মতো আগমন ঘটাবে। তাদের অগ্নিতেজ দীপ্তিতে সকল প্রকার সামাজিক অবক্ষয় ও দুর্নীতির অবসান ঘটবে বলেই কবির বিশ্বাস।

সপ্তমহাসিন্ধু-তাৎপর্যঃ

বিশ্বমানবের আর্তনাদে মহাকালের ‘কপোলতলে’ অশ্রুবিন্দুধারা যেন সপ্তমহাসিন্ধুতে প্রাবাহিত হয় বলে কবি কল্পনা করেছেন। পৌরাণিক মতানুসারে ‘সপ্তসিন্ধু’ বলতে বোঝায়- লবণ, ইক্ষুরস, সুরা, ঘৃত, দধি, ক্ষীর, স্বাদূদক এই সাতটি সমুদ্র।

কবি অনাগত প্রলয়ংকরের কোমলতার দিকটিকে নির্দেশ করতে তার অশ্রুবিন্দুর লবণতাকে পৃথিবীর সাতসমুদ্রের লবণাক্ত জলের উপমায় উপমিত করেছেন।

কবি প্রশ্নোক্ত দুই উপমার মাধ্যমে মহাকালের রুদ্র ও কোমল রূপের সার্থক বর্ণনা প্রদান করেছেন।

শিক্ষালয় ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বাংলা ব্যাকরণের নোটগুলি দেখতে এই লিঙ্কে ক্লিক/টাচ করতে হবে 

দশম শ্রেণি বাংলাঃ প্রলয়োল্লাস কবিতার আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ বড়ো প্রশ্নের উত্তরঃ 

“তোরা সব জয়ধ্বনি কর”- কাদের কেন জয়ধ্বনি করতে বলা হয়েছে? জয়ধ্বনির তাৎপর্য লেখো।

উত্তর জানতে এখানে টাচ/ক্লিক করতে হবে

“ওই ভাঙাগড়া খেলা যে তার, কিসের তবে ডর”- উৎস নির্দেশ করে মন্তব্যটির তাৎপর্য বুঝিয়ে দাও।

উত্তর জানতে এখানে টাচ/ক্লিক করতে হবে

“বজ্র শিখার মশাল জ্বেলে আসছে ভয়ংকর”- উৎস নির্দেশ করে তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।

উত্তর জানতে এখানে টাচ/ক্লিক করতে হবে

“তার আসার সময় ওই রথ ঘরঘর”- প্রসঙ্গ আলোচনা করে তাৎপর্য আলোচনা করো।

উত্তর জানতে এখানে টাচ/ক্লিক করতে হবে

“প্রলয়োল্লাস” কবিতা অবলম্বনে কবির স্বদেশপ্রীতির পরিচয় দাও।

উত্তর জানতে এখানে টাচ/ক্লিক করতে হবে

“কাল ভয়ংকরের বেশে এবার ওই আসে সুন্দর”- তাৎপর্য আলোচনা করো।

উত্তর জানতে এখানে টাচ/ক্লিক করতে হবে

শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের সকল প্রকার নোট, সাজেশন, প্রশ্নপত্র ও মক টেষ্টের সুবিধা গ্রহণ করতে নিম্নের ছবিতে ক্লিক/টাচ করে বিষদ তথ্য জেনে নাওঃ 

paid courses

You cannot copy content of this page