প্রলয়োল্লাস কবিতার প্রশ্ন উত্তর

প্রলয়োল্লাস কবিতার প্রশ্ন উত্তর

শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের পক্ষ থেকে দশম শ্রেণির মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের জন্য বাংলা প্রলয়োল্লাস কবিতার প্রশ্ন উত্তর প্রদান করা হলো। শিক্ষার্থীরা এই প্রলয়োল্লাস কবিতার প্রশ্ন উত্তর অনুশীলনের মধ্য দিয়ে তাদের পরীক্ষা প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারবে। এই প্রলয়োল্লাস কবিতার প্রশ্ন উত্তর আলোচনাগুলি শিক্ষার্থীদের কবিতাটি বুঝতে সহায়তা প্রদান করবে। 

শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের সকল প্রকার আপডেট লাভ করতে মোবাইল স্ক্রিনের বা’দিকের নিম্নের অংশে থাকা বেল আইকনটিতে (🔔) টাচ করে শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের নোটিফিকেশন অন করে রাখুন। 

প্রলয়োল্লাস কবিতার প্রশ্ন উত্তরঃ 

প্রলয়োল্লাস কবিতার MCQ প্রশ্নের উত্তরঃ 

১) মহাকালের চণ্ড – রূপে ‘ আসছেন- সৃষ্টির দেবতা

২) ‘উল্কা ছুটায় নীল খিলানে’— ‘ নীল খিলান ‘ বলতে এখানে বোঝানো হয়েছে – আকাশকে

৩) ‘প্রলয়োল্লাস’ কবিতায় ‘রথঘর্ষর’ বলতে বোঝানো হয়েছে – রথের চাকায় ঘর্ষণের শব্দ

৪) যে ‘ভেঙে আবার গড়তে জানে’ তার নাম হল – চিরসুন্দর

৫) বধূদের যা তুলে ধরতে বলা হয়েছে , তা হল- প্রদীপ

৬) সুন্দর যার বেশে আসছে , সে হল – কাল- ভয়ংকর

৭) ‘প্রলয়োল্লাস’ কবিতায় ‘তোরা সব জয়ধ্বনি কর’ বাক্যটি মোট ব্যবহৃত হয়েছে- উনিশ বার 

৮) ‘দ্বাদশ রবির বহ্নিজ্বালা ভয়াল তাহার নয়নকটায়’- ‘দ্বাদশ রবি’ বলতে বোঝানো হয়েছে – বারোটি রবি

৯) ‘জীবনহারা অ-সুন্দরে করতে ছেদন’- আসছে- নবীন

১০) ‘অন্ধ কারার বন্ধ কূপে / দেবতা বাঁধা যজ্ঞ-যূপে’- এক্ষেত্রে কবি ‘দেবতা’ বলতে বুঝিয়েছেন-  ভারতীয় বিপ্লবীকে

১১) এবার মহানিশার শেষে বুঝিয়েছেন ক দীর্ঘ রাত্রি শেষে- দীর্ঘ পরাধীনতার শেষে

১২) ‘বিশ্বপিতার বক্ষ-কোলে’- ঝোলে- কৃপাণ

১৩) ‘তোরা সব জয়ধ্বনি কর’- যাঁর জয়ধ্বনি করতে হবে, তিনি হলেন- প্রলয়ংকর শিব

১৪) ‘মৃত্যু-গহন অন্ধকূপে’ বলতে কবি বুঝিয়েছেন- কুসংস্কারগ্রস্ত সমাজ

১৫) বিশ্বমায়ের আসন- মহাকাল ধারণ করে রেখেছেন

১৬) ‘প্রলয়োল্লাস’ কবিতাটি যে কাব্যগ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত- অগ্নিবীণা

১৭) ‘তোরা সব ____ কর’ – জয়ধ্বনি

১৮) কবি ‘নূতনের কেতন’ বলেছেন – কালবোশেখির ঝড়কে

১৯) ‘প্রলয়োল্লাস’ শব্দের অর্থ হল- ধ্বংসের আনন্দ

২০) ‘প্রলয়োল্লাস’ কবিতাটির মুখ্য উপজীব্য হল- বিপ্লববাদ

২১) অনাগত প্রলয় যেখানে ধমক হেনে আগল ভাঙল, তা হল – সিন্ধুপারের সিংহদ্বারে

২২) ভয়ংকর আসছে – বজ্রশিখার মশাল জ্বেলে

২৩) ‘ঝামর’ শব্দের অর্থ হল – কৃষ্ণবর্ণ

২৪) ধূমকেতুকে ‘জ্বালামুখী’ বলার কারণ হল- ধূমকেতুর পুচ্ছটি ধূম্রনির্মিত

২৫) ‘কৃপাণ’ শব্দটির অর্থ হল – ছোরা

২৬) চরাচর স্তব্ধ হওয়ার কারণ – অট্টরোলের হট্টগোলে

২৭) ‘সপ্ত মহাসিন্ধু দোলে / কপোলতলে’- ‘কপোল’ শব্দের অর্থ হল- গাল

২৮) ‘মাভৈঃ মাভৈঃ’ ধ্বনির তাৎপর্য হল – ভয় না পেয়ে এগিয়ে চল

২৯) ‘মুমূর্ষু’ শব্দের একটি প্রতিশব্দ হল- ভয়ংকর

৩০) ‘প্রলয়োল্লাস’ কবিতায় ‘শিশু-চাঁদ’ বলতে বোঝানো হয়েছে- সদ্য- উদিত চাঁদ

৩১) ‘প্রলয়োল্লাস’ কবিতাটির প্রকাশকাল হল- ১৯২২ খ্রিস্টাব্দ

 

প্রলয়োল্লাস কবিতার SAQ প্রশ্নের উত্তরঃ  

১) প্রলয়োল্লাস কবিতাটি কাজী নজরুল ইসলামের কোন কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত?

উঃ প্রলয়োল্লাস কবিতাটি কাজী নজরুল ইসলামের অগ্নিবীণা কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত।

২) অগ্নিবীণা কাব্যগ্রন্থটি কত খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত হয়?

উঃ অগ্নিবীণা কাব্যগ্রন্থটি ১৯২২ খ্রিস্টাব্দের অক্টোবর (কার্তিক, ১৩২৯ বঙ্গাব্দ) মাসে প্রকাশিত হয়।

৩) কাজী নজরুল ইসলামের প্রথম কাব্যগ্রন্থের নাম কী?

উঃ কাজী নজরুল ইসলামের প্রথম কাব্যগ্রন্থের নাম অগ্নিবীণা (প্রকাশ- অক্টোবর, ১৯২২)।

৪) কাজী নজরুল ইসলাম অগ্নিবীণা কাব্যগ্রন্থটি কাকে উৎসর্গ করেন?

উঃ কাজী নজরুল ইসলাম অগ্নিবীণা কাব্যগ্রন্থটি শ্রীবারীন্দ্রকুমার ঘোষকে উৎসর্গ করেন।

৫) প্রলয়োল্লাস অগ্নিবীণা কাব্যগ্রন্থের কত সংখ্যক কবিতা?

উঃ বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম রচিত ‘প্রলয়োল্লাস’ অগ্নিবীণা কাব্যগ্রন্থের প্রথম কবিতা।

৬) ‘তোরা সব জয়ধ্বনি কর!’- কবি কাদের জয়ধ্বনি করতে বলেছেন?

উঃ কাজী নজরুল ইসলাম রচিত ‘প্রলয়োল্লাস’ কবিতায় কবি দেশের স্বাধীনতার জন্য উন্মুখ তরুণ বিপ্লবীদের জয়ধ্বনি করতে বলা হয়েছে।

৭) ‘তোরা সব জয়ধ্বনি কর’- কার জয়ধ্বনি করার কথা বলা হয়েছে?

উঃ কবি কাজী নজরুল ইসলাম রচিত অগ্নিবীণা কাব্যগ্রন্থের প্রথম কবিতা ‘প্রলয়োল্লাস’-এ ধ্বংস ও সৃষ্টির দেবতার জয়ধ্বনি করার কথা বলা হয়েছে।

৮) ‘ওই নূতনের কেতন ওড়ে’ – নূতনের কেতন ওড়ার সংবাদ কে বহন করে এনেছে?

উঃ কাজী নজরুল ইসলামের লেখা ‘প্রলয়োল্লাস’ কবিতায় ‘নূতনের কেতন’ ওড়ার সংবাদ কালবৈশাখীর ঝড় বহন করে এনেছে।

৯) নূতনের কেতন ওড়া বলতে কবি কী বোঝাতে চেয়েছেন?

উঃ কাজী নজরুল ইসলাম ‘প্রলয়োল্লাস’ কবিতায় ‘নূতনের কেতন’ ওড়া বলতে বোঝাতে চেয়েছেন যে, পরাধীনতার বন্ধন থেকে, ঔপনিবেশিকতা থেকে মুক্তির দিন আসন্ন।

১০) ‘আসছে এবার’ – কে, কীভাবে আসছেন?

উঃ কাজী নজরুল ইসলাম রচিত ‘প্রলয়োল্লাস’ কবিতায় প্রলয়ের নেশায় নৃত্যপাগল শিব সিন্ধুপারে সিংহ-দরজায় আঘাত করে আসছেন।

১১) ‘সিন্ধুপারের সিংহদ্বারে ধমক হেনে ভাঙল আগল’ – ‘সিন্ধুপারের সিংহদ্বার’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

উঃ কাজী নজরুল ইসলামের ‘প্রলয়োল্লাস’ কবিতার আলোচ্য অংশে ‘সিন্ধুপারের সিংহদ্বার’ বলতে সমুদ্রপারের আন্দামানের সেলুলার জেলের প্রবেশপথকে বোঝানো হয়েছে।

১২) ‘মহাকালের চণ্ড-রুপে’ – ‘চণ্ড-রূপ’ বলতে কী বোঝ?

উঃ বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম রচিত ‘প্রলয়োল্লাস’ কবিতার আলোচ্য অংশে ‘চণ্ড-রূপ’ বলতে অত্যন্ত ক্রুদ্ধ, ভীষণ, ভয়ানক, ভয়ংকর, উদ্ধত রূপকে বোঝায়।

১৩) ‘আসছে ভয়ংকর’ – ‘প্রলয়োল্লাস’ কবিতায় ভয়ংকরের রূপটি কেমন?

উঃ কাজী নজরুল ইসলাম রচিত ‘প্রলয়োল্লাস’ কবিতায় ভয়ংকরের রূপটি অত্যন্ত ভীষণ ও উদ্ধত। তিনি বজ্রশিখার মশাল জ্বেলে অবতীর্ণ হন।

১৪) ‘গগন দুলায়’- গগন কীভাবে দুলে ওঠে?

উঃ কাজী নজরুল ইসলাম রচিত ‘প্রলয়োল্লাস’ কবিতায় ধ্বংসের দেবতা শিবের কেশরাশির ঝাপটায় গগন অর্থাৎ সারা আকাশ দুলে ওঠে বলে কবি কল্পনা করেছেন।

১৫) ‘ধূমকেতু তার চামর ঢুলায়’ – ‘প্রলয়োল্লাস’ কবিতায় ‘ধূমকেতু’র কী কী বিশেষণ প্রযুক্ত হয়েছে?

উঃ কাজী নজরুল ইসলাম রচিত ‘প্রলয়োল্লাস’ কবিতায় ধূমকেতুর ক্ষেত্রে ‘সর্বনাশী’ ও ‘জ্বালামুখী’ বিশেষণ দুটি প্রযুক্ত হয়েছে।

১৬) ‘বিশ্বপাতার বক্ষ-কোলে/রক্ত তাহার কৃপাণ ঝোলে/ দোদুল দোলে’- পঙ্ক্তিগুলোর অর্থ বুঝিয়ে লেখো।

উঃ আলোচ্য পঙ্ক্তিগুলোর অর্থ হল-সর্বনাশী রূপ ধরে যে ধ্বংসের দেবতার আগমন ঘটে, তা বিশ্বপিতার বক্ষকে রঙাক্ত করে পৃথিবীকে আন্দোলিত করে তোলে।

১৭) ‘ওরে ওই স্তব্ধ চরাচর!’ – ‘চরাচর’ স্তব্ধ কেন?

উঃ প্রলয়োল্লাস কবিতায় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ধ্বংসের দেবতা প্রলয়ংকর শিবের অট্টহাসির প্রচণ্ড শব্দে চরাচর অর্থাৎ গোটা পৃথিবী স্তব্ধ হয়ে পড়েছে বলে কল্পনা করেছেন।

১৮) ‘দ্বাদশ রবির বহ্নিজ্বালা ভয়াল তাহার নয়নকটায়’ – ‘দ্বাদশ রবি’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

উঃ দ্বাদশ রবি বলতে সূর্যের বারোটি রূপ বা মূর্তির কথা বলা হয়েছে। হরিবংশ মতে, এই মূর্তিগুলি হল-সবিতা, আদিত্য, বিবস্বান, অর্যমা, পুষা, ত্বষ্টা, ভগ, ধাতা, বরুণ, মিত্র, পর্জন্য এবং বিষ্ণু।

১৯) ‘দিগন্তরের কাঁদন লুটায়’ – কোথায় দিগন্তরের কাঁদন লুটিয়ে পড়ে?

উঃ কবি কাজী নজরুল ইসলাম তাঁর ‘প্রলয়োল্লাস’ কবিতায় যে রুদ্রদেবের কল্পনা করেছেন, তাঁর ভয়াল আগুনরাঙা জটাজালে দিগন্তরের কাঁদন লুটিয়ে পড়ে।

২০) ‘সপ্ত মহাসিন্ধু দোলে/কপোলতলে!’ – কার কপোলতলে সপ্ত মহাসিন্ধু দুলে ওঠে?

উঃ উদ্ধৃতাংশে ভাঙনের দেবতা শিবের একফোঁটা চোখের জলে তাঁরই গালে ‘সপ্ত মহাসিন্ধু’ দুলে ওঠার কথা বলা হয়েছে।

২১) ‘বিশ্বমায়ের আসন তারই বিপুল বাহুর পর’ – উদ্ধৃতাংশের অর্থ পরিস্ফুট করো।

উঃ প্রলয়ংকর শিব সৃষ্টি ও রক্ষার কর্তা। বিশ্বমায়ের অস্তিত্বকে তিনি তাঁর বিপুল বাহুর সাহায্যে রক্ষা ও লালনপালন করে থাকেন।

২২) ‘হাঁকে ওই’ – কার হাঁক শোনা যাচ্ছে?

উঃ কাজী নজরুল ইসলাম রচিত ‘প্রলয়োল্লাস’ কবিতার আলোচ্য অংশে ধ্বংসের দেবতা প্রলয়ংকর শিবের হাঁক শোনা যাচ্ছে।

২৩) ‘জরায়-মরা মুমূর্ষুদের প্রাণ-লুকানো ওই বিনাশে’ – পঙ্ক্তিটির অর্থ পরিস্ফুট করো।

উঃ প্রলয়োল্লাস কবিতায় জগৎজুড়ে যে প্রলয় ঘনিয়ে আসছে, তার ধ্বংসলীলার শেষে জরা ও জীর্ণতার অবসান ঘটিয়ে নতুন প্রাণ জেগে উঠবে।

২৪) ‘এবার মহানিশার শেষে’ – কোন্ দৃশ্য দেখা যাবে?

উঃ প্রলয়োল্লাস কবিতায় কবি আশা করেছেন যে ধ্বংসের কালরাত্রির শেষে নতুন ভোরের সূর্য বিপুল সম্ভাবনা জাগিয়ে হেসে উঠবে।

২৫) ‘দিগম্বরের জটায় হাসে শিশু-চাঁদের কর’ – পঙ্ক্তিটির অর্থ বুঝিয়ে লেখো।

উঃ প্রলয়োল্লাস কবিতায় মহাদেবের জটায় ধৃত শিশু-চাঁদের নরম স্নিগ্ধ আলোয় সকলের ঘর ভরে উঠবে বলে কবি আশা প্রকাশ করেছেন।

২৬) ‘বজ্রগানে ঝড়-তুফানে’- কীসের শব্দ নিনাদিত হয়?

উঃ কাজী নজরুল ইসলাম রচিত ‘প্রলয়োল্লাস’ কবিতায় ঝড়-তুফানের সাথে বজ্রপাতে মহাকালের রথের ঘোড়ার হ্রেষাধ্বনি নিনাদিত হয়।

২৭) ‘উল্কা ছুটায় নীল খিলানে!’ – উল্কা কোথায় কীভাবে এসে পড়ে?

উঃ মহাকালের রথের ঘোড়ার খুরের দাপটে আকাশ থেকে জ্বলন্ত পাথর বা উল্কা এসে পড়েছে অন্ধ কারাগারের বন্ধ ঘরগুলিতে, দেবতার উদ্দেশে নিবেদিত যজ্ঞের হাড়িকাঠে এবং পাথরের স্তূপে।

২৮) ‘এই তো রে তার আসার সময়’ – কীভাবে তা বোঝা যাচ্ছে?

উঃ প্রলয়ংকর মেঘের ঘর্ঘর শব্দে কবির মনে হয়েছে যেন মহাকালের রথের শব্দ তাঁর কানে আসছে। ধ্বংসের দেবতার আসার সম্ভাবনা এভাবেই কবিতায় সূচিত হয়েছে।

২৯) ‘ধ্বংস দেখে ভয় কেন তোর?’ – ধ্বংস দেখে কেন ভয় করা উচিত নয় বলে কবি মনে করেন?

উঃ ধ্বংসের মধ্যেই নিহিত থাকে নতুন সৃষ্টির সম্ভাবনা। তাই প্রলয় বা ধ্বংসকে কবি ‘সৃজন-বেদন’ বা নতুন সৃষ্টির যন্ত্রণারূপে দেখেছেন।

৩০) ‘প্রলয় নূতন সৃজন-বেদন’ – কথাটির অর্থ কী?

উঃ বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম রচিত ‘প্রলয়োল্লাস’ কবিতায় আলোচ্য অংশটির অর্থ ধ্বংসের মধ্য দিয়ে যে নবীনের আগমন ঘটে তা আসলে নতুন সৃষ্টির জন্য যন্ত্রণা।

৩১) ‘প্রলয় বয়েও আসছে হেসে’ – ‘প্রলয়’ বহন করেও হাসির কারণ কী?

উঃ প্রলয়োল্লাস কবিতায় প্রলয় অর্থাৎ ধ্বংসের বার্তা নিয়ে মহাকাল এসেছেন হাসিমুখে, কারণ তিনি যেমন ধ্বংস করবেন, তেমনই নতুন সৃষ্টিও করবেন।

৩২) ‘আসছে নবীন’ – নবীনের আসার উদ্দেশ্য কী?

উঃ কবি কাজী নজরুল ইসলাম ‘প্রলয়োল্লাস’ কবিতায় জীবনহারা, প্রাণহীন, জড়, অসুন্দরকে ধ্বংস করতেই যে নবীনের শুভাগমন, তা ব্যক্ত করেছেন।

৩৩) ‘ওই ভাঙা-গড়া খেলা যে তার কিসের তবে ডর?’ – ‘ভাঙা-গড়া খেলা’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

উঃ ভাঙা-গড়া খেলা বলতে মহাকালের রুদ্ররূপে জীর্ণ পুরাতন সৃষ্টিকে ধ্বংস করা ও শুভংকররূপে নতুন জগৎ সৃষ্টি করাকে বোঝনো হয়েছে।

৩৪) ‘ভেঙে আবার গড়তে জানে সে চিরসুন্দর’- কী ভেঙে আবার নতুন করে গড়ে তোলার কথা বলা হয়েছে?

উঃ কাজী নজরুল ইসলাম রচিত ‘প্রলয়োল্লাস’ কবিতায় জীর্ণ, পুরাতন গতানুগতিকতাকে ভেঙে, যাবতীয় প্রাণহীনতা, নিশ্চলতার অবসান ঘটিয়ে নতুন সম্ভাবনাময় জীবন গড়ে তোলার কথা বলা হয়েছে।

৩৫) ‘বধূরা প্রদীপ তুলে ধর’ – বধূরা কার উদ্দেশে প্রদীপ তুলে ধরবে কেন? 

উঃ কাজী নজরুল ইসলাম ‘প্রলয়োল্লাস’ কবিতায় বধূদের প্রদীপ তুলে ধরার আহ্বান জানিয়েছেন। প্রজ্জ্বলিত প্রদীপ তুলে ধরে বধুরা কাল- ভয়ংকরের রূপে আসা সুন্দরকে বরণ করে নেবে।

 

প্রলয়োল্লাস কবিতার সংক্ষিপ্ত (৩ নম্বরের) প্রশ্নের উত্তরঃ 

১) ‘তোরা সব জয়ধ্বনি কর’- ‘তোরা’ কারা ? তাদের জয়ধ্বনি করতে বলা হচ্ছে কেন ?

উৎসঃ

বাংলা সাহিত্যের বিদ্রোহী কবি “কাজি নজরুল ইসলাম” রচিত “অগ্নিবীণা” কাব্যগ্রন্থের প্রথম কবিতা “প্রলয়োল্লাস” থেকে এই তাৎপর্যপূর্ণ অংশটি চয়ন করা হয়েছে। 

তোরা বলতে যাদের বোঝানো হয়েছেঃ

পাঠ্য কবিতায় ‘তোরা’ বলতে পরাধীন দেশের স্বাধীনতার প্রত্যাশী আপামর জনসাধারণকে বোঝানো হয়েছে। 

তাদের জয়ধ্বনি করতে বলার কারণঃ

ভারতবর্ষের পরাধীনতা কবি নজরুলের কাছে ভীষণ পীড়াদায়ক ছিল। তিনি সর্বদাই এই অবস্থার অবসান চাইতেন। তিনি বুঝেছিলেন কালবৈশাখীর মতো ভয়ংকর শক্তি কিংবা প্রলয় নেশায় মত্ত মহাদেবের মতোই কেউ এসে এই অবস্থার অবসান ঘটাতে পারবে। তাই কবি ভারতীয়দের এই ধ্বংস ও সৃষ্টির দেবতার আগমনের উদ্দেশ্যে জয়ধ্বনি করার আহ্বান জানিয়েছেন।

 

২) ‘এবার মহানিশার শেষে/ আসবে ঊষা অরুন হেসে’- মহানিশা কি? এই মন্তব্যের মধ্য দিয়ে কবি কিসের ইঙ্গিত দিয়েছেন? 

উৎসঃ

বাংলা সাহিত্যের বিদ্রোহী কবি “কাজি নজরুল ইসলাম” রচিত “অগ্নিবীণা” কাব্যগ্রন্থের প্রথম কবিতা “প্রলয়োল্লাস” থেকে এই তাৎপর্যপূর্ণ অংশটি চয়ন করা হয়েছে। 

মহানিশার স্বরূপঃ 

‘মহানিশা’ বলতে রাত্রি দ্বিতীয় প্রহর এবং তৃতীয় প্রহরের মাঝের সময় অর্থাৎ মধ্যরাত্রিকালকে বোঝানো হয়, এই সময় রাত্রি গভীরতম হয়। চারপাশ ডুবে যায় রাত্রির কালো অন্ধকারে।

কবির উদ্দেশ্যঃ 

কবি এই নিকষ কালো অন্ধকার সময়টিকে ভারতের পরাধীনতার কালিমা হিসাবে ইঙ্গিত করেছেন। অন্ধকার যতই গাঢ় হোক না কেন, অন্ধকার কিন্তু চিরস্থায়ী হয়না। কালের নিয়ম মেনে আলোর উদয় হয়। সূর্য ওঠার আগের মুহূর্ত বা ভোরবেলাকে ঊষাকাল বলা হয়, এর কিছুপর অরুন অর্থাৎ সূর্যের উদয় হয়। সূর্যের তীব্র তেজে রাত্রির সকল অন্ধকার দূর হয়ে যায়। কবি স্বাধীনতাকে সকালের সাথে তুলনা করেছেন, কবি বিশ্বাস করেন যে ভারতের বুকেও সূর্যের উদয় হবে যার তীব্র তেজে পরাধীনতার সকল গ্লানি ধুয়ে যাবে। 

 

৩) ‘অট্টরোলের হট্টগোলে স্তব্ধ চরাচর’- ‘চরাচর’ শব্দের অর্থ কী ? চরাচর স্তব্ধ কেন তা লেখো।  

উৎসঃ

বাংলা সাহিত্যের বিদ্রোহী কবি “কাজি নজরুল ইসলাম” রচিত “অগ্নিবীণা” কাব্যগ্রন্থের প্রথম কবিতা “প্রলয়োল্লাস” থেকে এই তাৎপর্যপূর্ণ অংশটি চয়ন করা হয়েছে। 

চরাচর শব্দের অর্থঃ 

‘চরাচর’ শব্দের অর্থ হল সমগ্র পৃথিবী বা জগৎ। 

চরাচরের স্তব্ধতার কারণঃ 

কবি প্রলয় বা ধ্বংসকে ফুটিয়ে তুলতে কখনও শিব, আবার কখনও সর্বনাশী জ্বালামুখী স্বরূপ চণ্ডীমূর্তির রুদ্রতাণ্ডবের চরাচর স্তব্ধ কেন উপমা টেনে এনেছেন। বিনাশের অট্টহাসির গভীর ব্যঞ্জনা যেন সমগ্র জগতে সৃষ্টি করেছে এক রুদ্ধশ্বাস পরিবেশ। আর তাই প্রলয়ের ভয়াবহ বিস্ফোরণের অজানা আশঙ্কায় এ পৃথিবী নিষ্কম্প-নিস্তব্ধ। 

 

৪) ‘দিগম্বর জটায় হাসে শিশু-চাঁদের কর’- দিগম্বর বলতে কী বোঝায় ? উদ্ধৃতাংশটির বক্তব্য বিষয় নিজের ভাষায় লেখো। 

উৎসঃ

বাংলা সাহিত্যের বিদ্রোহী কবি “কাজি নজরুল ইসলাম” রচিত “অগ্নিবীণা” কাব্যগ্রন্থের প্রথম কবিতা “প্রলয়োল্লাস” থেকে এই তাৎপর্যপূর্ণ অংশটি চয়ন করা হয়েছে।

দিগম্বরের পরিচয়ঃ 

দিগম্বর বলতে দেবাদিদেব মহাদেবকে বোঝানো হয়েছে। ‘দিগম্বর’ শব্দের অর্থ ‘দিক অম্বর’ যাহার, মহাদেব শিবের বস্ত্রসম্ভারের স্বল্পতার কারণে তাঁকে এই নামে সম্বোধন করা হয়েছে।

মূল বক্তব্যঃ 

আমরা জানি শিবের জটায় পবিত্র চন্দ্রের অধিষ্ঠান। পুরাণ মতে তেজস্বিনী গঙ্গা যখন স্বর্গলোক থেকে পৃথিবী ধ্বংসের জন্য আসেন, তখন মহাদেব তা নিজ জটায় ধারণ করেন। এর অর্থ  মহাদেবের জটায় একাধারে ধ্বংস এবং চন্দ্রের আলোকোজ্জল পবিত্র স্নিগ্ধতা সহাবস্থান করে। আজ যখন নবযুগের বার্তায় পৃথিবী উল্লাসিত, প্রাচীন ধারণার অবসান আসন্ন, সেই সময় মানুষের মনের অবস্থা বোঝাতে কবি এই উপমা ব্যবহার করেছেন।

 

৫) ‘আসছে নবীন-জীবনহারা অ-সুন্দরে করতে করতে ছেদন!’- কোন কবিতার পঙ্‌ক্তি এটি ? উদ্ধৃতিটির তাৎপর্য লেখো।

উৎসঃ

বাংলা সাহিত্যের বিদ্রোহী কবি “কাজি নজরুল ইসলাম” রচিত “অগ্নিবীণা” কাব্যগ্রন্থের প্রথম কবিতা “প্রলয়োল্লাস” থেকে এই তাৎপর্যপূর্ণ অংশটি চয়ন করা হয়েছে।

তাৎপর্যঃ 

এই কবিতায় কবি প্রলয়ের ভয়ংকর অথচ সুন্দররূপ চিত্রিত করেছেন। এখানে ‘নবীন’ বলতে কবি দেশের তরুণদের কথা বলেছেন, সাম্যবাদী কবি নজরুল যে সময়ে এই কবিতাটি রচনা করেছেন, সেই সময়ে বিশ্বে রুশবিপ্লব সংগঠিত হয়েছে, সাম্যবাদী ভাবধারার ধাক্কায় একে একে প্রাচীন রাজতান্ত্রিক শক্তির পতন হচ্ছে। কবি চান পরাধীন ভারতে এই নবীনদের আগমন ঘটুক। যাহা সত্য তাহাই সুন্দর, তাই কবি চান পুরাতন, গতানুগতিক ভাবধারা যা কবির ভাষায় অসুন্দর তার বিনাশ ঘটুক নবীনের আগমনে।

 

৬) ‘ভাঙা-গড়া খেলা যে তার’ – কবি ‘ভাঙা- গড়া খেলা’ বলতে কী বুঝিয়েছেন? 

উৎসঃ

বাংলা সাহিত্যের বিদ্রোহী কবি “কাজি নজরুল ইসলাম” রচিত “অগ্নিবীণা” কাব্যগ্রন্থের প্রথম কবিতা “প্রলয়োল্লাস” থেকে এই তাৎপর্যপূর্ণ অংশটি চয়ন করা হয়েছে।

‘ভাঙা-গড়া খেলা’র তাৎপর্যঃ

কোনো কিছু সৃষ্টির জন্য ধ্বংসের প্রয়োজন, এটাই বিশ্বের নিয়ম। কবি যে সময়ে তাঁর এই প্রলয়োল্লাস কবিতাটি লিখেছেন, সেই সময় ভারতবর্ষ ছিল পরাধীন। সাম্রাজ্যবাদী ইংরেজদের দ্বারা শাসিত হত আমাদের দেশ। সাম্যবাদী কবি স্বপ্ন দেখতেন যে একদিন এই পরাধীন দেশে স্বাধীনতা-সূর্য এর উদয় হবে। এই ভাবনা আরো বিস্তৃত হয় রুশ বিপ্লবের হাত ধরে। এই বিপ্লব বিশ্বের মূল সাম্রাজ্যবাদী শক্তির মুলে কুঠারাঘাত করে, সকল পুরানো ধারণাকে জলাঞ্জলি দিয়ে বেঁচে থাকার শক্তি হিসাবে সাম্যবাদকে বেছে নেওয়া হয়। কবি বিশ্বাস করেন যে, আমাদের দেশের তরুণদের হাত ধরে দেশে বিপ্লব আসবে, সেদিন সমস্ত প্রাচীন ধারণা ভেঙে দিয়ে নতুন ভাবে গড়ে উঠবে আমাদের দেশ।

 

৭) ‘ভয়াল তাহার নয়নকটায়’- এখানে তাহার বলতে কার কথা বোঝানো হয়েছে ? ভয়াল শব্দের তাৎপর্য কি ? 

উৎসঃ

বাংলা সাহিত্যের বিদ্রোহী কবি “কাজি নজরুল ইসলাম” রচিত “অগ্নিবীণা” কাব্যগ্রন্থের প্রথম কবিতা “প্রলয়োল্লাস” থেকে এই তাৎপর্যপূর্ণ অংশটি চয়ন করা হয়েছে।

তাহার বলতে যার কথা বোঝানো হয়েছেঃ

এখানে কবি ‘তাহার’ বলতে প্রলয়রূপী নটরাজকে বুঝিয়েছেন।

‘ভয়াল’ শব্দের তাৎপর্যঃ

কবি উল্লিখিত দ্বাদশ রবি হল- বিবস্বান, অর্যমান, পুষা, ত্বষ্টা, সবিদা, ভগ, ধাতা, বিধাতা, বরুণ, মিত্র, শত্রু, উরুক্রম। এই দ্বাদশ রবির তেজ মিশে আছে সেই ভয়ংকরের চোখে, হতাশাগ্রস্ত দেশের আকাশে সে তার উন্মত্ত জটায় ছড়িয়ে দিচ্ছে নতুনের তেজ। তার চোখের জলে সাতটি মহাসাগর দুলে উঠেছে। এই ভয়াল রূপ যেন বিশ্বপ্রকৃতিরই অনুরূপ। সর্বশক্তিমান প্রকৃতিও যেন এই পরাধীনতার বিরুদ্ধে জাগ্রত হয়েছে। 

 

৮) ‘আসছে এবার অনাগত প্রলয়-নেশার নৃত্য পাগল’- ‘অনাগত’ কে ? সে ‘প্রলয়-নেশার নৃত্য পাগল’ কেন ?   

উৎসঃ

বাংলা সাহিত্যের বিদ্রোহী কবি “কাজি নজরুল ইসলাম” রচিত “অগ্নিবীণা” কাব্যগ্রন্থের প্রথম কবিতা “প্রলয়োল্লাস” থেকে এই তাৎপর্যপূর্ণ অংশটি চয়ন করা হয়েছে।

অনাগত-র পরিচয়ঃ

‘অনাগত’ শব্দটির আক্ষরিক অর্থ যা আসেনি। এক্ষেত্রে পরাধীনতার নাগপাশ থেকে আমাদের মুক্ত করতে পারে এমন শক্তির আগমন যে আসন্ন তা আশাবাদী কবি মনশ্চক্ষে প্রত্যক্ষ করেছেন। শিব বা রুদ্ররূপী এই শক্তিকেই কবি ‘অনাগত’ বলেছেন। 

তাৎপর্যঃ 

‘প্রলয়’ ও ‘নৃত্য পাগল’ শব্দ দুটির দ্বারা কবি শিবের বিধ্বংসী ও নটরাজরূপের কথা বলতে চেয়েছেন। কবির কাঙ্ক্ষিত অনাগত শক্তি অত্যাচারী ব্রিটিশ শক্তিকে ধ্বংসের ও মন্থনের দ্বারা আমাদের স্বাধীনতার নতুন সকাল উপহার দেওয়ার স্বপ্নে বিভোর। 

 

৯) ‘বজ্রশিখার মশাল জ্বেলে আসছে ভয়ংকর !’ -‘ভয়ংকর’ বলতে কবি কী বোঝাতে চেয়েছেন ? তার আসার তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো। 

উৎসঃ

বাংলা সাহিত্যের বিদ্রোহী কবি “কাজি নজরুল ইসলাম” রচিত “অগ্নিবীণা” কাব্যগ্রন্থের প্রথম কবিতা “প্রলয়োল্লাস” থেকে এই তাৎপর্যপূর্ণ অংশটি চয়ন করা হয়েছে।

‘ভয়ংকর’-এর তাৎপর্যঃ 

‘ভয়ংকর’ শব্দের অর্থ নবযুগের বার্তাবহ প্রলয়রূপী বিপ্লব বা বিদ্রোহ। রুদ্ররূপী শিবকে কবি ভয়ংকরের প্রতীক রূপে কল্পনা করেছেন। 

ভয়ংকরের আসার তাৎপর্যঃ  

অত্যাচারী ব্রিটিশের শাসনে ভারতবাসী স্থবির হয়ে গিয়েছিল। আর ভারতবর্ষ হয়ে গিয়েছিল অচলায়তন। কালের নিয়মে অশুভ শক্তির বিনাশ ঘটবেই। সেই অচলায়তন ভাঙবে মানুষের সম্মিলিত বিপ্লবের দ্বারা। আশাবাদী কবি আসন্ন বিপ্লবের এই আছড়ে পড়া ঢেউকে ভয়ংকর প্রলয়ের সঙ্গে তুলনা করেছেন।

 

১০) ‘মাভৈঃ মাভৈঃ ! জগৎ জুড়ে প্রলয় এবার ঘনিয়ে আসে’- কবি ‘মাভৈঃ’ বলে কী জানাতে চেয়েছেন ? প্রলয় এসে কোন কাজ করবে বলে কবির মনে হয়েছে ? 

উৎসঃ

বাংলা সাহিত্যের বিদ্রোহী কবি “কাজি নজরুল ইসলাম” রচিত “অগ্নিবীণা” কাব্যগ্রন্থের প্রথম কবিতা “প্রলয়োল্লাস” থেকে এই তাৎপর্যপূর্ণ অংশটি চয়ন করা হয়েছে।

মাভৈ বলতে কবি যা বুঝিয়েছেনঃ 

বিদ্রোহী সত্তার অধিকারী কবি নজরুল ‘মাভৈঃ মাভৈঃ’ শব্দযুগলের ব্যবহার করেছেন, যার অর্থ ভয় কোরো না; অর্থাৎ নির্ভয়ে এগিয়ে চলো।

প্রলয় এসে যে কাজ করবেঃ 

পরাধীনতার অন্ধকার থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য প্রহর গণনারত ভারতবাসীকে কবি পুরাতনকে ধ্বংস করে নূতনের বিজয় পতাকা ওড়ানোর জন্য হৃদয়ে সাহস সঞ্চার করার কথা বলেছেন। মহাপ্রলয়ের ফলে পৃথিবীতে বারে বারে অশুভ শক্তি ধ্বংস হয়ে সৃষ্টির বীজ বপিত হয়েছে। প্রলয়ের ফলে দীর্ঘ পরাধীনতার শেষে স্বাধীনতার সূর্যালোকে ভারতবর্ষ উদ্ভাসিত হয়ে উঠবে- এটাই কবির আশা। 

 

১১) ‘জরায় মরা মুমূর্ষুদের প্রাণ – লুকানো ওই বিনাশে ?’- পঙ্ক্তিটির তাৎপর্য বুঝিয়ে দাও। 

উৎসঃ

বাংলা সাহিত্যের বিদ্রোহী কবি “কাজি নজরুল ইসলাম” রচিত “অগ্নিবীণা” কাব্যগ্রন্থের প্রথম কবিতা “প্রলয়োল্লাস” থেকে এই তাৎপর্যপূর্ণ অংশটি চয়ন করা হয়েছে।

তাৎপর্যঃ 

বিপ্লব আসছে যোদ্ধার বেশে, নতুন সূর্যের সন্ধানে তার অগ্রগমন। কিন্তু এই অগ্রগতির পথে অনেক বাধা। বহু সংস্কার, বহু জরাগ্রস্ত, অন্ধ ও মুমূর্ষু মতবাদ এসে পথের গতি পঙক্তিটির তাৎপর্য শ্লথ করতে চায়। কিন্তু এসবকে বিনাশ করে নতুন দিনের সন্ধানী আলোয়, প্রলয়রূপী বৈপ্লবিক সৃজন তার নিজের পথ করে নেবে। কবি প্রশ্নোধৃত অংশে এই ভাবনাই ব্যক্ত করেছেন। 

 

১২) ‘এই তো রে তার আসার সময়’- ‘তার’ বলতে কাকে বোঝানো হয়েছে ? তার আসার চিহ্নগুলি কী ছিল ?  

উৎসঃ

বাংলা সাহিত্যের বিদ্রোহী কবি “কাজি নজরুল ইসলাম” রচিত “অগ্নিবীণা” কাব্যগ্রন্থের প্রথম কবিতা “প্রলয়োল্লাস” থেকে এই তাৎপর্যপূর্ণ অংশটি চয়ন করা হয়েছে। 

‘তার’ বলতে যাকে বোঝানো হয়েছেঃ 

কবি প্রশ্নোক্ত অংশে ‘তার’ বলতে ‘মহাকাল’-কে বুঝিয়েছেন। 

তার আসার চিহ্নসমূহঃ 

কবি মনে করেছেন, মহাকালই পারেন তার মহাপ্রলয়ের দ্বারা অত্যাচারী ব্রিটিশ শক্তির বিনাশ করে স্বাধীনতা আনতে। আশাবাদী কবি মহাকালের আগমন যে আসন্ন তা যেন অন্তর দিয়ে প্রত্যক্ষ করেছেন। মহাকালের হাতের চাবুক বিদ্যুতের মতো চমকিত হচ্ছে বারবার। বজ্রের শব্দ হ্রেষাধ্বনির মতো অনুরণিত হচ্ছে। আর ঘোড়ার খুরের আঘাতে নীল আকাশ থেকে উল্কা খসে পড়ছে। মহাকালে আগমনবার্তা তার রথের চাকার ঘর্ষণই সূচিত করছে। 

 

১৩) ‘ধ্বংস দেখে ভয় কেন তোর ?’- ধ্বংসকে ভয় না পাওয়ার কারণটি বুঝিয়ে দাও। 

উৎসঃ

বাংলা সাহিত্যের বিদ্রোহী কবি “কাজি নজরুল ইসলাম” রচিত “অগ্নিবীণা” কাব্যগ্রন্থের প্রথম কবিতা “প্রলয়োল্লাস” থেকে এই তাৎপর্যপূর্ণ অংশটি চয়ন করা হয়েছে। 

ধ্বংসকে ভয় না পাওয়ার কারণঃ 

কালের রথে চড়ে মহাপ্রলয়ের মধ্যে দিয়ে মহাকালের বা ভয়ংকরের আগমন দেখে কবি অগ্রদূতকে ভয় না পেতে বলেছেন। প্রলয় ধ্বংসকারী, কিন্তু এটাও সত্য যে প্রলয়ই সৃষ্টির হাতছানি। ধ্বংসের ভয় না পাওয়ার কারণ প্রলয় আমাদের মধ্যে বেদনাবোধ জাগালেও নতুন কিছু সৃষ্টি করে। প্রলয়ই পারে নবচেতনার আলোকে প্রাণহীন অসুন্দরের মধ্যে নতুন প্রাণের সঞ্চার করতে। কবি তাই তার অগ্রদূতকে অভয় দিয়ে বলেছেন প্রলয় চিরসুন্দর। সে ভেঙে আবার গড়তেও পারে। তাই প্ররকে ভয় পাওয়ার কিছু নেই।

 

১৪) ‘কাল ভয়ংকরের বেশে এবার ওই আসে… !’- এমন উক্তি কার সম্পর্কে করা হয়েছে ? এমন উক্তির কারণ কী ?

উৎসঃ

বাংলা সাহিত্যের বিদ্রোহী কবি “কাজি নজরুল ইসলাম” রচিত “অগ্নিবীণা” কাব্যগ্রন্থের প্রথম কবিতা “প্রলয়োল্লাস” থেকে এই তাৎপর্যপূর্ণ অংশটি চয়ন করা হয়েছে। 

যার কথা বলা হয়েছেঃ 

উদ্ধৃত অংশে কবি চিরসুন্দর বা চিরনবীন সম্পর্কে মন্তব্যটি করেছেন। 

কবির মন্তব্যের কারণঃ 

বিদ্রোহী কবি পরাধীন ভারতের মুক্তিকামী মানুষের অন্তরের বৈপ্লবিক শক্তিকে উদ্বুদ্ধ করতে চেয়েছেন। তাঁর বিশ্বাস জীর্ণ লোকাচার, প্রচলিত জড়তা, নিশ্চল প্রাণহীনতা এবং দাসত্বের অবসান ঘটলেই গড়ে উঠবে নতুন জীবন। সুতরাং, বিনাশের ভয়াবহতার মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে সত্য ও সুন্দরের বীজ। কবি ধ্বংসের মধ্যেই খুঁজে পেয়েছেন নব সৃষ্টির অনুপ্রেরণা। আর তাই তিনি সেই ভয়ংকর সুন্দরেরই বন্দনা গান রচনা করেছেন। 

 

প্রলয়োল্লাস কবিতার বড়ো প্রশ্নের উত্তরঃ  

১) “দ্বাদশ রবির বহ্নিজ্বালা ভয়াল তাঁহার নয়নকটায়”… “বিন্দু তাঁহার নয়নজলে সপ্তমহাসিন্ধু দোলে”- ‘প্রলয়োল্লাস’ কবিতার উদ্ধৃত উক্তি দুটির তাৎপর্য উল্লেখ করো। ৫

উৎসঃ

বাংলা সাহিত্যের বিদ্রোহী কবি “কাজি নজরুল ইসলাম” রচিত “অগ্নিবীণা” কাব্যগ্রন্থের প্রথম কবিতা “প্রলয়োল্লাস” থেকে এই তাৎপর্যপূর্ণ অংশদুটি চয়ন করা হয়েছে।

দ্বাদশ রবির বহ্নিজ্বালা- তাৎপর্যঃ

কবি মহাকালের চন্ডরূপের বর্ণনা প্রদান করতে পৌরাণিক প্রসঙ্গের সাহায্য গ্রহণ করেছেন। পুরাণ মতে দ্বাদশ রবি হলো- ধাতা, মিত্র, অর্যমা, রুদ্র, বরুণ, সূর্য, ভগ, বিবস্বান, পূষা, সবিতা, ত্বষ্টা এবং বিষ্ণু

এই বারোটি সূর্যের সম্মিলিত সূর্যের সমান তেজে বলীয়ান হয়ে তরুণ বিপ্লবীরা দেশের স্বাধীনতা কামনায় মহাকালের রুদ্ররূপের মতো আগমন ঘটাবে। তাদের অগ্নিতেজ দীপ্তিতে সকল প্রকার সামাজিক অবক্ষয় ও দুর্নীতির অবসান ঘটবে বলেই কবির বিশ্বাস।

সপ্তমহাসিন্ধু-তাৎপর্যঃ

বিশ্বমানবের আর্তনাদে মহাকালের ‘কপোলতলে’ অশ্রুবিন্দুধারা যেন সপ্তমহাসিন্ধুতে প্রাবাহিত হয় বলে কবি কল্পনা করেছেন। পৌরাণিক মতানুসারে ‘সপ্তসিন্ধু’ বলতে বোঝায়- লবণ, ইক্ষুরস, সুরা, ঘৃত, দধি, ক্ষীর, স্বাদূদক এই সাতটি সমুদ্র।

কবি অনাগত প্রলয়ংকরের কোমলতার দিকটিকে নির্দেশ করতে তার অশ্রুবিন্দুর লবণতাকে পৃথিবীর সাতসমুদ্রের লবণাক্ত জলের উপমায় উপমিত করেছেন।

কবি প্রশ্নোক্ত দুই উপমার মাধ্যমে মহাকালের রুদ্র ও কোমল রূপের সার্থক বর্ণনা প্রদান করেছেন।

প্রলয়োল্লাস কবিতার আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ বড়ো প্রশ্নের উত্তর শুধুমাত্র শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের সাবস্ক্রাইবারদের জন্যঃ 

“তোরা সব জয়ধ্বনি কর”- কাদের কেন জয়ধ্বনি করতে বলা হয়েছে? জয়ধ্বনির তাৎপর্য লেখো।

উত্তর জানতে এখানে টাচ/ক্লিক করতে হবে

“ওই ভাঙাগড়া খেলা যে তার, কিসের তবে ডর”- উৎস নির্দেশ করে মন্তব্যটির তাৎপর্য বুঝিয়ে দাও।

উত্তর জানতে এখানে টাচ/ক্লিক করতে হবে

“বজ্র শিখার মশাল জ্বেলে আসছে ভয়ংকর”- উৎস নির্দেশ করে তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।

উত্তর জানতে এখানে টাচ/ক্লিক করতে হবে

“তার আসার সময় ওই রথ ঘরঘর”- প্রসঙ্গ আলোচনা করে তাৎপর্য আলোচনা করো।

উত্তর জানতে এখানে টাচ/ক্লিক করতে হবে

“প্রলয়োল্লাস” কবিতা অবলম্বনে কবির স্বদেশপ্রীতির পরিচয় দাও।

উত্তর জানতে এখানে টাচ/ক্লিক করতে হবে

“কাল ভয়ংকরের বেশে এবার ওই আসে সুন্দর”- তাৎপর্য আলোচনা করো।

উত্তর জানতে এখানে টাচ/ক্লিক করতে হবে

দশম শ্রেণি বাংলা নোটঃ 

শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের কিছু গুরুত্বপূর্ণ লিঙ্ক নিম্নে প্রদান করা হলোঃ

শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের সকল প্রকার নোট, সাজেশন, প্রশ্নপত্র ও মক টেষ্টের সুবিধা গ্রহণ করতে নিম্নের ছবিতে ক্লিক/টাচ করে বিষদ তথ্য জেনে নাওঃ 

paid courses

You cannot copy content of this page

Need Help?