শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের জন্য নিয়মিত প্রবন্ধ রচনা প্রদান করা হবে। আজকে আমরা আলোচনা করবো বিজ্ঞান ও কুসংস্কার প্রবন্ধ রচনাটি সম্পর্কে।
শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের সকল প্রকার আপডেট লাভ করতে মোবাইল স্ক্রিনের বা’দিকের নিম্নের অংশে থাকা বেল আইকনটিতে (🔔) টাচ করে শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের নোটিফিকেশন অন করে রাখুন।
বিজ্ঞান ও কুসংস্কার প্রবন্ধ রচনাঃ
ভূমিকাঃ
প্রাগৈতিহাসিক যুগে মানুষ ছিল নিতান্তই প্রকৃতি নির্ভর। প্রকৃতির নির্মম ঝড় ঝঞ্ঝায়, প্রবল বন্যা ও ক্ষরায় এবং ভূমিকম্পের বিধবংসী আলোড়নে মানবজীবন ক্ষণে ক্ষণে বিপর্যস্ত হয়েছে। চন্দ্রগ্রহণ, সূর্যগ্রহন এ সব কিছুকে সে দৈব নির্ভর বলে মেনে নিয়েছে। আর দৈনন্দিন জীবনে যা কিছু ভালো মন্দ ঘটেছে সব কিছুর পিছনে দেব-দেবীর সবাকু দৃষ্টির প্রভাব আছে বলে বিশ্বাস করেছে।
কুসংস্কারের স্বরূপঃ
যে বিশ্বাসের পিছনে কোন যুক্তি নির্ভরতা নেই, কোন তথ্যভিত্তিক প্রমাণাদি নেই , তাকেই আমরা কুসংস্কার বলি। অর্থাৎ যুক্তিহীন অন্ধবিশ্বাসই হল কুসংস্কার।
বিজ্ঞানের স্বরুপঃ
বিজ্ঞান কথাটির অর্থ হল বিশেষ জ্ঞান। অর্থাৎ কোন কিছু অজানা বিষয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্য দিয়ে কোন কিছু সিদ্ধান্ত গ্রহন। সেক্ষেত্রে একই কার্যকরণের ফলে একই ফল হয়। সেটাই অমোঘ সত্য। সেটাই বিজ্ঞান। এখানে আছে শুধু বিচার-বিবেচনা, যুক্তি দিয়ে বিশেষ জ্ঞানে পৌছানো।
কুসংস্কারের বিভিন্ন প্রকাশঃ
একবিংশ শতাব্দীর ঊষালগ্নে, কম্পিউটার, রোবট ইত্যাদির যুগে পাহাড়ের মত উচু করে দাঁড়িয়ে আছে হাচি, টিকটিকি, পিছু ডাকা আরও কত কী। ভোরের স্বপ্ন নাকি বিফল হয় না, মেয়েদের বাম চোখ নাচলে নাকি শুভ হয় অপরপক্ষে ডান চোখ নাচা নাকি ভারি অপায়া, কিছুদিন আগে ঘটে যাওয়া মেয়েদের চুল কাটা ভূতের উপস্থিতি প্রভূতি। এছাড়া এমনকি পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যক্ষ বাড়ির বাইরে বের হওয়ার সময় ঝাঁট দেখেছিলেন বলে সেদিনটি আর কাজেই যাওয়া হল না, এইরকম অনেক হাজার হাজার নাগপাশে আমাদের দিনক্ষণ বাঁধা।
কুসংস্কারে আস্থার কারণঃ
বিজ্ঞানের কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। বিজ্ঞান কখনো কোন মানুষের ভাগ্য নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। বিজ্ঞান কোনো পরীক্ষার্থীর ভালো করে দিতে পারে না। কোন খেলায় কোন পক্ষ জয়ী হবে তা বলে দিতে পারে না। তাই এই সব যে অনিশ্চয়তা সেখানে বিজ্ঞান আপাত পরাজয়। আর সেখানেই শুরু দৈব বিশ্বাসের। জয় হয় দৈব নির্ভরতার। অতএব কুসংস্কার থাকবেই। যে কুসংস্কারের প্রভাবে মানুষ শুধুমাত্র ভাগ্যবাদী হয়। কোন কর্ম না করে শুধুমাত্র সৌভাগ্যের অপেক্ষায় থাকে তা নিশ্চয় মানুষের পক্ষে ক্ষতিকর। তাই কর্ম করে যেতে হবে নিষ্ঠার সঙ্গে অর্থাৎ কর্ম ও ভাগ্যের সমন্বয়ে আসে সাফল্য।
কুসংস্কার দূরীকরণে আমাদের করণীয়ঃ
কুসংস্কার দূরীকরণের প্রধান হাতিয়ার হল বিজ্ঞান। মানুষের বিজ্ঞান চেতনাকে বৃদ্ধি করতে পারলেই এই দূরারোগ্য ব্যধি থেকে আমরা মুক্তি পেতে পারি। এ ব্যাপারে বিজ্ঞান পরিচালিত বিতর্ক সভা, আলোচনা চক্র, প্রদর্শনাদি অনেক সুফল দিতে পারে।
উপসংহারঃ
বিজ্ঞান চেতনাই পারে মানুষকে কুসংস্কার থেকে মুক্তি দিতে। তাই সব কিছুকে যুক্তি দিয়ে, বুদ্ধি দিয়ে, বিচার করে গ্রহন করার মানসিকতা গড়ে তুলতে হবে। আর তার জন্য চাই শিক্ষা , সার্বিক শিক্ষা । শিক্ষা প্রসারের সঙ্গে সঙ্গে কুসংস্কারের অপসারণ অবশ্যম্ভাবী।
শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের কিছু গুরুত্বপূর্ণ লিঙ্ক নিম্নে প্রদান করা হলোঃ
শিক্ষালয়ের সাথে ফেসবুকে যুক্ত হতে নিম্নের ছবিতে ক্লিক/টাচ করতে হবেঃ
Anupam Dhar
I am a professional teacher from Haldibari, West Bengal, creator of sikkhalaya.in, a free educational website that aims to teach people all over the world. My passion for education and commitment to providing accessible learning opportunities has made me a catalyst for spreading knowledge beyond geographical boundaries.