বাংলা লোকসংগীত

বাংলা লোকসংগীত

শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের পক্ষ থেকে দ্বাদশ শ্রেণির উচ্চমাধ্যমিক বাংলা বিষয়ে বাংলা লোকসংগীতের ধারা থেকে একটি আলোচনামূলক প্রশ্নের উত্তর প্রদান করা হলো। শিক্ষার্থীরা এই বাংলা লোকসংগীতের প্রশ্নের উত্তরটি তৈরি করলে বিশেষভাবে উপকৃত হবে। 

শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের সকল প্রকার আপডেট লাভ করতে মোবাইল স্ক্রিনের বা’দিকের নিম্নের অংশে থাকা বেল আইকনটিতে (🔔) টাচ করে শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের নোটিফিকেশন অন করে রাখুন। 

বাংলা লোকসংগীতঃ

১) বাংলার দুটি লোকসংগীতের ধারার নাম লেখো। যে-কোনো একটি ধারার সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও। ১+৪  

উঃ 

“কি জাদু বাংলা গানে ,

গান গেয়ে দাঁড় মাঝি টানে

গান গেয়ে ধান কাটে চাষা……”

লোকসংগীতঃ 

যে সংগীতে, গ্রাম বাংলার লোকের জীবনের হর্ষ, বিষাদ, সার্থকতা, ব্যর্থতার কথা তথা গ্রাম বাংলার বিভিন্ন অঞ্চলের জীবনযাত্রা, রীতিনীতির চিত্র ফুটে উঠে, তাকেই লোকসংগীত বলা হয়। সংগীতের একটি ধারা লোকসংগীত।

বাংলা লোকসংগীতের ধারাঃ 

বাংলা গানের ধারায় এক স্বতন্ত্র স্থান অধিকার করেছে লোকসংগীত। বাংলা লোকসংগীতের ভান্ডার অত্যন্ত সম্মৃদ্ধ। বাংলা লোক সংগীতের বিভিন্ন প্রকারভেদ আছে। যথা- ভাওয়াইয়া, ভাটিয়ালী, পল্লীগীতি, গম্ভীরা, ইত্যাদি।

একটি বাংলা লোকসঙ্গীতের ধারা বাউল গানের সংক্ষিপ্ত পরিচয়ঃ 

বিবিধ বাংলা লোকসংগীতের ধারাগুলির মধ্যে আমরা আলোচনা করবো বাউলগান সম্পর্কে- 

“কীর্তনে আর বাউলের গানে

আমরা দিয়েছি খুলি

মনের গোপনে নিভৃত ভুবনে

দ্বার ছিল যতগুলি।” 

বাংলার বাউল বা বাউল সংগীত অদ্যাবধি গবেষকেরা যেমন কোনো সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত দিতে পারেন নি। সাধারণত মানা হয় যে ‘বাউল’ শব্দটি এসেছে আরবি শব্দ ‘বাউর’ থেকে, যার অর্থ স্বেচ্ছাচারী, বিশৃঙ্খল বা উন্মাদ। তবে বাউলের উৎপত্তি সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে কোনো এক গবেষক বলেছেন- সংস্কৃত ‘বায়ু’ থেকে বাউল শব্দটির উৎপত্তি, বাংলার যে সব লোক ‘বায়ু’ অর্থাৎ শ্বাস-প্রশ্বাস ক্রিয়ার সাহায্যে সাধনার মাধ্যমে আত্মিক শক্তি লাভ করার চেষ্টা করেন, তারাই বাউল।  

ভিন্ন মতে, সংস্কৃত ‘বাতুল’ শব্দ থেকে বাউল শব্দটির উৎপত্তি। এই গবেষকদের মতে, যে সব লোক প্রকৃতই পাগল, তাই তারা কোনো সামাজিক বা ধর্মের কোনো বিধিনিষেধ মানে না, তারাই বাউল। কেউ বলেছেন ‘বাউর’ শব্দ থেকে বাউলের উৎপত্তি, এর অর্থ এলো-মেলো, বিশৃঙ্খল, পাগল।  

সাধারণভাবে বলা যায়, বাংলার গ্রামে গ্রামে গেরুয়া বসনধারী, হাতে একতারা নিয়ে যারা আপনমনে গান গেয়ে যায়, তাদেরকে বলা হয় বাউল। বাউল হল এক সাধক সম্প্রদায়। তারা গানের মাধ্যমে ঈশ্বরের আরাধনা করে থাকে। তাদের গানকে বলা হয় বাউলগান। পশ্চিমবঙ্গের সর্বাধিক জনপ্রিয় লোকগান হল বাউলগান।

বাউল গানের বৈশিষ্ট্যসমূহঃ 

বাউল গানের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্যগুলি নিম্নরূপ-  

ক) বাউল সাধকেরা সকল প্রকার ধর্মীয় সংকীর্ণতার উর্দ্ধে, ধর্মীয় ভেদাভেদ বা জাতপাতের ঊর্ধ্বে মানবতার গান গেয়ে থাকেন। 

খ) বাউল সাধকদের মতে মানবদেহের মধ্যেই ঈশ্বরের অধিষ্ঠান-

“বাড়ির কাছে আরশী নগর
সেথা পড়শী বসত করে” 

তাদের মতে ঈশ্বর সাধনা মানে দেহ সাধনা। সেইজন্য তাদের গানেও গূঢ় দেহতত্ত্বের আভাস

গ)                                                   “আমার এই একটি তারে কত কথা বাজে গো…” 

সাধারণত একতারা বাদ্যযন্ত্র সহযোগে বাউল গান গাওয়া হয়। বাউলেরা মাঠে-ঘাটে ঘুরে ঘুরে তাদের গান প্রচার করে থাকেন। 

পরিশেষঃ 

অনেকে মনে করেন যে, বাংলাদেশে উনিশ শতক থেকেই বাউল গান জনপ্রিয়তা অর্জন করে। লালন ফকির ছিলেন বাউল গানের অন্যতম প্রবক্তা- 

“সব লোকে কয় লালন কি জাত সংসারে”

লালন ফকিরের অনেক বাউল গান আজও সমান জনপ্রিয়। এমনকি বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর পর্যন্ত বাউল গানের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে লিখেছিলেন- “নিঃসংশয়ে জানি বাউলগানে একটা অকৃত্রিম বিশিষ্টতা আছে, যা চিরকেলে আধুনিক”। বাউল গানের অন্যান্য স্বনামধন্য শিল্পীরা হলেন গোষ্ঠ গোপাল দাস, পূর্ণদাস বাউল প্রমুখ।

এইরূপে আমরা আলোচনার সংক্ষিপ্ত পরিসরে বাউল গানের সংক্ষিপ্ত ধারণা লাভ করতে পারি। 

বাংলা গানের ধারা থেকে আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর দেখতে এই লিঙ্কে ক্লিক/টাচ করতে হবে 

 

শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের কিছু গুরুত্বপূর্ণ লিঙ্ক নিম্নে প্রদান করা হলোঃ 

শিক্ষালয়ের সাথে ফেসবুকে যুক্ত হতে নিম্নের ছবিতে ক্লিক/টাচ করতে হবেঃ sikkhalaya

Ads Blocker Image Powered by Code Help Pro

Ads Blocker Detected!!!

আমরা শনাক্ত করেছি যে আপনি বিজ্ঞাপন ব্লক করতে এক্সটেনশন ব্যবহার করছেন। এই বিজ্ঞাপন ব্লকার নিষ্ক্রিয় করে আমাদের সমর্থন করুন।

Powered By
Best Wordpress Adblock Detecting Plugin | CHP Adblock

You cannot copy content of this page

Need Help?