বাংলা ব্যাকরণ
শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের পক্ষ থেকে পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য বাংলা ব্যাকরণ বিষয়ে বিবিধ আলোচনা নিয়মিত শিক্ষালয় ওয়েবসাইটে প্রদান করা হয়ে থাকে। বাংলা ব্যাকরণের এই সকল আলোচনাগুলি শিক্ষার্থীদের বাংলা ব্যাকরণ জানতে ও বুঝতে বিশেষভাবে সহায়তা করবে। শিক্ষার্থীদের শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের বাংলা ব্যাকরণ বিভাগ থেকে তাদের সিলেবাসের অন্তর্ভুক্ত বাংলা ব্যাকরণগুলি দেখে নিতে বলা হচ্ছে।
শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের সকল প্রকার আপডেট লাভ করতে মোবাইল স্ক্রিনের বা’দিকের নিম্নের অংশে থাকা বেল আইকনটিতে (🔔) টাচ করে শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের নোটিফিকেশন অন করে রাখো।
নিম্নে বাংলা ব্যাকরণ থেকে প্রাথমিক কিছু ধারণা সম্পর্কে বিষদে আলোচনা করা হলোঃ
১) ব্যাকরণ বলতে কি বোঝো?
উঃ “ব্যাকরণ” একটি সংস্কৃত শব্দ যার ব্যুৎপত্তিগত অর্থ হলো- বিশেষভাবে বিশ্লেষণ করা। কোন ভাষাকে বিশ্লেষণ করলে সেই ভাষার উপকরণ এবং উপাদানগুলোকে পৃথকভাবে চিহ্নিত করে ভাষার অভ্যন্তরীন শৃঙ্খলা সম্পর্কে জানা যায়। ব্যাকরণ ভাষার শৃঙ্খলা রক্ষা করে নিয়ম-কানুন প্রণয়ন করে এবং তা প্রয়োগের রীতি সুত্রবদ্ধ করে। সুতরাং, ব্যাকরণকে ভাষার আইন বলা যায়।
২) ব্যাকরণের সংজ্ঞা দাও।
উঃ যে শাস্ত্রের সাহায্যে ভাষার স্বরূপ ও গঠণপ্রকৃতি নির্ণয় করে সুবিন্যস্ত করা যায় এবং ভাষা শুদ্ধরূপে বলতে, পড়তে এবং লিখতে পারা যায়, তাকে ব্যাকরণ বলে।
৩) ব্যাকরণ পাঠের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করো।
উঃ ভাষাকে শুদ্ধরূপে জানা ও ব্যবহার করার জন্য বাংলা ব্যাকরণ পাঠের প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য। ব্যাকরণের কাজই হলো ভাষার চলার পথ সুনির্দিষ্ট করে দেওয়া।
বাংলা ব্যাকরণ পাঠের প্রয়োজনীয়তাগুলি নিম্নরূপ-
ভাষার প্রকৃতি ও স্বরূপ জানার জন্যঃ
মনের ভাব অনেকভাবে প্রকাশ করা যেতে পারে। যেমন- ইশারা, ইঙ্গিতে, কথা বা ছবির মাধ্যমে। তবে ভাষার মাধ্যমে মনের ভাব সঠিকভাবে প্রকাশ করতে ব্যাকরণ পাঠের প্রয়োজন আছে। কারণ ব্যাকরণ ভাষার প্রকৃতি বা স্বরূপ বিশ্লেষণের মাধ্যমে ভূলত্রুটি নির্ণয় করে শুদ্ধতার নিশ্চয়তা প্রদান করে।
শুদ্ধ উচ্চারণ ও বানান শেখার জন্যঃ
ভাষা লিখতে প্রয়োজন বর্ণের এবং উচ্চারণের জন্য প্রয়োজন ধ্বনির। আর এই বর্ণ এবং ধ্বনিগুলোর শুদ্ধ উচ্চারণ ও বানান ধ্বনিতত্ত্বের আলোচ্য বিষয়। বাংলা ভাষায় উ, ঊ এবং যুক্ত বর্ণের প্রচলন আছে। এছাড়াও আছে ণ,ন,শ,ষ,স এর ব্যবহার। ব্যাকরণ পাঠের মাধ্যমে এগুলোর উচ্চারণ পার্থক্য, বানান বিধি জানা যায়।
শব্দের অর্থ, গঠণ ও ব্যবহার জানার জন্যঃ
শব্দ ব্যবহারের ক্ষেত্রে শব্দের সঠিক অর্থ নির্ণয়ের জন্য এবং নতুন শব্দ গঠণের জন্য রূপতত্ত্ব সম্বন্ধে জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। শব্দ গঠণ এবং সংক্ষিপ্ত করার উপায় হচ্ছে সন্ধি, সমাস, প্রত্যয়, উপসর্গ প্রভৃতি। যেমন- তিন ফলের সমাহার না বলে আমরা বলি ‘ত্রিফলা’।
বাক্য তৈরী ও তার অর্থ প্রকাশের জন্যঃ
বাক্য গঠণ এবং এর সঠিক অর্থ প্রকাশের জন্য এর সাধারণ অর্থ, ভাবার্থ ও ব্যঞ্জনাময় অর্থ জানতে হবে। এছাড়া সরল বাক্য ও জটিল বাক্য গঠণ প্রক্রিয়া জানতে হবে যা বাক্যতত্ত্বের আলোচ্য বিষয়। আবার একই শব্দ বাক্য গঠণের ভিন্নতার কারণে কখনও বিশেষ্য, কখনও বিশেষণ হয়। বাগধারার ব্যবহার, উক্তির পরিবর্তন প্রভৃতিতেও বাক্যতত্ত্ব সাহায্য করে।
কবিতা ও গানের ছন্দ এবং অলঙ্করণের জন্যঃ
ছন্দের শুদ্ধতা, ত্রুটি-বিচ্যুতি ব্যাকরণের আলোচ্য বিষয়। তাছাড়া ভাষার অলঙ্কার প্রয়োগ এবং এর পদ্ধতিও ব্যাকরণ নির্ণয় করে।
সাহিত্যের গুণ বিবেচনার জন্যঃ
সাহিত্যের গুণ, রীতি, দোষ, অলঙ্কার প্রভৃতি সম্পর্কে জ্ঞানার্জন করতে হলে ব্যাকরণ পাঠের বিকল্প নেই।
৪) বাংলা ব্যাকরণ কাকে বলে?
উঃ প্রত্যেক ভাষার মতো বাংলা ভাষারও নিজস্ব ব্যাকরণ আছে। ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর মতে, যে শাস্ত্র জানলে বাংলা ভাষা শুদ্ধরূপে লিখতে, পড়তে ও বলতে পারা যায় তার নাম বাংলা ব্যাকরণ।
৫) বাংলা ব্যাকরণের আলোচ্য বিষয় কোনগুলি?
উঃ সব ভাষার ব্যাকরণের মতো বাংলা ব্যাকরণেও চারটি আলোচ্য বিষয় আছে। যথা- ধ্বনিতত্ত্ব, শব্দতত্ত্ব বা রূপতত্ত্ব, বাক্যতত্ত্ব এবং অর্থতত্ত্ব।
৬) ভাষা কাকে বলে?
উঃ মানুষের বাকযন্ত্র থেকে উৎপন্ন এবং ভাবপ্রকাশে সক্ষম অর্থবোধক ধ্বনিকে বলা হয় ভাষা।
যেমন- বাংলা ভাষা, ইংরেজি ভাষা
৭) সমার্থক শব্দ বা প্রতিশব্দ কাকে বলে?
উঃ সমার্থক বলতে সমান অর্থকে বুঝায়। অর্থাৎ যে শব্দ অন্য কোন শব্দের একই অর্থ কিংবা প্রায় সমান অর্থ প্রকাশ করে, তাকে সমার্থক শব্দ বলা হয়। সমার্থক শব্দের একটিকে অন্যটির প্রতিশব্দ বলা হয়।
যেমন- দিন/ দিবস।
৮) একই শব্দের বিভিন্নার্থে প্রয়োগ বলতে কি বোঝো?
উঃ শব্দই ভাষার সম্পদ। বাংলা ভাষার শব্দ ভান্ডারে অসংখ্য শব্দ রয়েছে। এক একটি শব্দের এক একটি বিশেষ অর্থ আছে। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায় যে কোন একটি শব্দ শুধুমাত্র একটি বিশেষ অর্থে ব্যবহৃত না হয়ে ভিন্ন ভিন্ন বিশেষ বিশেষ অর্থে ব্যবহৃত হয়। শব্দের এরূপ ব্যবহারকে ভিন্নার্থে প্রয়োগ বলা হয়।
যেমন- আমি তাল খেতে ভালোবাসি। গানের তালে সে নেচে উঠলো।
৯) বিকল্প শব্দ বলতে কি বোঝো?
উঃ কোন শব্দের সমজাতীয় অর্থ কিংবা ইতিবাচক অর্থ প্রকাশের জন্যে যে শব্দ ব্যবহৃত হয়, তাকে বিকল্প শব্দ বলে। বাংলা ভাষাসহ পৃথিবীর অধিকাংশ ভাষায় এ ধরনের শব্দ আছে।
যেমনঃ বাবা- পিতা, জনক।
১০) প্রবাদ বাক্য কাকে বলে?
উঃ যে সব বাক্য বা উক্তি সংক্ষিপ্ত আকারে এবং রূপকার্থে কোনো বিশেষ অর্থ বহন করে, যার মাঝে কোনো বাস্তব সত্য নিহিত রয়েছে এবং পরম্পরাগতভাবে সেই উক্তি দীর্ঘদিন ধরে লোকের মুখে, মুখে চলে আসছে, সেটাকেই প্রবাদ বাক্য বলা যায়।
যেমনঃ আঠারো মাসে বছর, ব্যাঙের সর্দি, গেয়ো যোগী ভিখ পায় না ইত্যাদি।
শিক্ষালয় ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বাংলা ব্যাকরণের বিবিধ আলোচনা দেখতে নিম্নের লিঙ্কটি অনুসরণ করতে হবেঃ
- শিক্ষালয় ওয়েবসাইটে প্রদান করা প্রবন্ধ রচনাগুলি দেখতে এই লিঙ্কে ক্লিক/টাচ করতে হবে
- পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা অধ্যায়ভিত্তিক নোট দেখতে এই লিঙ্কে ক্লিক করতে হবে
- পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির MCQ TEST প্রদান করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করতে হবে
- শিক্ষালয় ইউটিউব চ্যানেলটি দেখতে এই লিঙ্কে ক্লিক/টাচ করতে হবে
শিক্ষালয়ের সাথে ফেসবুকে যুক্ত হতে নিম্নের ছবিতে ক্লিক/টাচ করতে হবেঃ