পরিবেশ দূষণ ও তার প্রতিকার

পরিবেশ দূষণ ও তার প্রতিকার

শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের জন্য নিয়মিত প্রবন্ধ রচনা প্রদান করা হবে। আজকে আমরা আলোচনা করবো পরিবেশ দূষণ ও তার প্রতিকার প্রবন্ধ রচনাটি সম্পর্কে। 

শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের সকল প্রকার আপডেট লাভ করতে মোবাইল স্ক্রিনের বা’দিকের নিম্নের অংশে থাকা বেল আইকনটিতে (🔔) টাচ করে শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের নোটিফিকেশন অন করে রাখুন। 

পরিবেশ দূষণ ও তার প্রতিকারঃ

“জীবনের সার্থকতা পরিবেশ নির্ভর,

নির্মল অঙ্গনে সবকিছু মনোহর” 

গাছপালা, পশুপাখি, বন্যপ্রাণী, মাছ, কীটপতঙ্গ, আলো, শব্দ, উত্তাপ, জল, বায়ু, মাটি এবং সর্বোপরি মানুষের তৈরি ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, কলকারখানা—এসবকেই এককথায় পরিবেশ বলা হয়। যন্ত্রযুগের বিষবাষ্পে এবং নগরকেন্দ্রিক সভ্যতার অভিঘাতে এই পরিবেশ ক্রমে ক্রমে দূষিত হচ্ছে। বিষিয়ে উঠছে বায়ু, নিভে যেতে বসেছে সভ্যতার আলো।

পরিবেশ হল চারপাশের জাগতিক পরিস্থিতি। বিভিন্ন কারণে এই পরিবেশ দূষিত হয়। এই পরিবেশদূষণকে বিভিন্ন শ্রেণিতে বিভক্ত করা যায়। যথা— (১) বায়ুদূষণ, (২) জলদূষণ, (৩) মাটিদূষণ, (৪) শব্দদূষণ এবং (৫) সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরিবেশদূষণ।

বর্তমান বিশ্বে নানাবিধ মারণাস্ত্র, নানা ধরনের ‘পারমাণবিক পরীক্ষা ও বিস্ফোরণের তেজস্ক্রিয় রশ্মি ও তেজস্ক্রিয় কণা’, শিল্প-কলকারখানায় জ্বালানো গ্যাস ও আবর্জনা, যানবাহনের জ্বালানি দ্বারা বায়ু বিষাক্ত ও দূষিত হয়ে পড়েছে।

আজকের দিনে জলদূষণ এক ভয়ংকর সমস্যা। কলকারখানার দূষিত বর্জ্য পদার্থ দ্বারা পানীয় জল সরবরাহের উৎসগুলো দূষিত হচ্ছে। এর ফলে মানুষ ও জলচর প্রাণীর প্রাণ ওষ্ঠাগত হয়ে উঠেছে।

কৃষি ও শিল্পবিপ্লবই হল ভূমিদূষণের প্রধান কারণ। চাষের জমিতে নানারকম রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ওষুধ প্রয়োগের ফলে ভূমি দূষিত হচ্ছে। শিল্প-কলকারখানার বর্জ্য পদার্থ ও শহর এলাকার আবর্জনার স্তূপ পচে মাটি দূষিত হচ্ছে। এর ফলে নানা সংক্রামক ব্যাধির দ্রুত বিস্তার ঘটছে।

অতি যান্ত্রিকতার ফলে শব্দ আজ মানবজীবনে নিদারুণ সংকট সৃষ্টি করে চলেছে। কলকারখানার শব্দ, যন্ত্রদানবের বিচিত্র হর্ন, বিমানের শব্দ, বাজি-পটকার আওয়াজ মারাত্মক আকার ধারণ করে পরিবেশের ভারসাম্য বিনষ্ট করছে। সড়ক ও শহরের পথে যানবাহনের বিকট আওয়াজে অনেকে শ্রবণশক্তি হারাচ্ছে।

মনস্তাত্ত্বিক দূষণ হল আর-এক জাতীয় দূষণ। সামাজিক অপসংস্কৃতি, বেকারত্ব, অতি পাশ্চাত্য ভাবধারাপ্রীতি, সিনেমা, কুরুচিকর পত্রিকা, পুস্তক প্রভৃতি যুবক-যুবতীদের এবং বিশেষভাবে ছাত্রছাত্রীদের নৈতিক অধঃপতন ঘটাচ্ছে। এর ফলে তাদের মধ্যে কুরুচি ও অপরাধ প্রবণতা বাড়ছে।

নানান ধরনের পরিবেশদূষণের হাত থেকে মুক্তির জন্য আজ বিশ্বের সুস্থ-বুদ্ধিসম্পন্ন মানুষদের সচেষ্ট হতে হবে। সংবাদপত্র, টিভি, রেডিয়ো প্রভৃতি গণমাধ্যমগুলির মাধ্যমে প্রতিকারের প্রচার বাড়াতে হবে এবং ছাত্রছাত্রীদেরও সচেতন হতে হবে। জলদূষণ, মাটিদূষণ রোধ করার জন্য সরকারি আইন কঠোরভাবে বলবৎ করতে হবে। শব্দদূষণের ব্যাপারে উচ্চ আদালতের নির্দেশ মানতে হবে। সাংস্কৃতিক দূষণ যাতে না-ছড়ায় তার জন্য সমস্ত নাগরিক, অভিভাবক, শিক্ষক প্রমুখকে সচেষ্ট হতে হবে। সামাজিক বনসৃজনের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। সাহিত্য ও সংস্কৃতি জগতে যাতে দূষণ না-ঘটে সেই ব্যাপারেও সচেতন থাকতে হবে।

রাষ্ট্রসংঘ সার্বিক দূষণ প্রতিকারের জন্য এগিয়ে এসেছে। প্রতি বছর জনগণকে পরিবেশ সচেতন করবার জন্য ৫ জুন দিনটি ‘বিশ্ব পরিবেশ দিবস’ হিসেবে পালিত হচ্ছে। করবার জন্য ৫ জুন দিনটি ‘বিশ্বপরিবেশ দিবস’ হিসেবে পালিত হচ্ছে। 

আমাদের পরিবেশ যদি মলিনতামুক্ত হয়, তবে পৃথিবীর এই সভ্যতাও সুন্দরভাবে গড়ে উঠবে। এর জন্য চাই সর্বজনীন শিক্ষা ও সচেতনতা। অন্যথায় ‘সুন্দর কুসুমিত মনোহরা’ ধরাই একদিন ‘জরা ও মৃত্যু-ভীষণা’ ধরায় পরিণত হবে। 

শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের কিছু গুরুত্বপূর্ণ লিঙ্ক নিম্নে প্রদান করা হলোঃ

শিক্ষালয়ের সাথে ফেসবুকে যুক্ত হতে নিম্নের ছবিতে ক্লিক/টাচ করতে হবেঃ sikkhalaya

You cannot copy content of this page

Need Help?