স্বাধীনতা সংগ্রামে নারী প্রশ্নের উত্তর

স্বাধীনতা সংগ্রামে নারী প্রশ্নের উত্তর

শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের পক্ষ থেকে সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য স্বাধীনতা সংগ্রামে নারী প্রশ্নের উত্তর প্রদান করা হলো। শিক্ষার্থীরা এই প্রশ্নের উত্তরগুলি সমাধান করলে পরীক্ষায় বিশেষভাবে উপকৃত হবে।

শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের সকল প্রকার আপডেট লাভ করতে মোবাইল স্ক্রিনের বা’দিকের নিম্নের অংশে থাকা বেল আইকনটিতে (🔔) টাচ করে শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের নোটিফিকেশন অন করে রাখুন। 

স্বাধীনতা সংগ্রামে নারী প্রশ্নের উত্তরঃ  

ক) স্বাধীনতা সংগ্রামে নারী থেকে MCQ প্রশ্নের উত্তরঃ

১) ননীবালা দেবী বিপ্লবের দীক্ষা পেয়েছিলেন যার কাছে- অমরেন্দ্র চ্যাটার্জী।

২) ননীবালা দেবী অমর চ্যাটার্জী ও তাঁর কয়েকজন সহকর্মীকে আশ্রয় দেন- রিষড়াতে। 

৩) চন্দননগর থেকে পালিয়ে ননীবালা দেবী যান- পেশোয়ারে।

৪) যে কাশীর ডেপুটি পুলিশ সুপার ননীবালা দেবীকে জেরা করতেন- জিতেন ব্যানার্জী।

৫) পুলিশ সুপার গোল্ডির কাছে ননীবালা দেবী যার কাছে থাকার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন- সারদামণি দেবী।

৬) দুকড়িবালা দেবী বিপ্লবের অনুপ্রেরণা পেয়েছিলেন- বোনপো নিবারণ ঘটকের কাছে। 

৭) নিবারণ ঘটক দুকড়িবালা দেবীকে লুকিয়ে রাখতে বলেন- সাতটা মসার পিস্তল। 

৮) বিপ্লবী হরিদাস দত্ত যে ছদ্মবেশে পিস্তল চুরি করেন- গাড়োয়ান।

৯) পিস্তল বাড়িতে রাখার অপরাধে দুকড়িবালা দেবীর যে শাস্তি হয়- দু-বছর সশ্রম কারাদণ্ড। 

১০) দুকড়িবালা দেবীর মৃত্যু হয়- ১৯৭০ সালে।

 

খ) স্বাধীনতা সংগ্রামে নারী থেকে SAQ প্রশ্নের উত্তরঃ  

১) রিষড়াতে তল্লাশির সময় কে কে পলাতক ও গ্রেপ্তার হন ?

উঃ রিষড়াতে তল্লাশির সময় অমরেন্দ্র চ্যাটার্জী পলাতক হন এবং রামচন্দ্র মজুমদার গ্রেপ্তার হন।

২) ননীবালা দেবীকে কোথায় রাখা নিরাপদ হল না ? 

উঃ ননীবালা দেবীকে চন্দননগরে রাখা নিরাপদ হল না।

৩) পুলিশ ননীবালা দেবীকে কাশী থেকে কোথায় নিয়ে এসেছিল ?

উঃ পুলিশ ননীবালা দেবীকে কাশী থেকে কলকাতার প্রেসিডেন্সি জেলে নিয়ে এসেছিল।

৪) ননীবালা দেবী কবে মুক্তি পেয়েছিলেন ?  

উঃ ননীবালা দেবী ১৯১৯ সালে মুক্তি পেয়েছিলেন।

৫) দুকড়িবালা দেবীর বাড়িতে কে কী লুকিয়ে রেখেছিলেন ? 

উঃ দুকড়িবালা দেবীর বোনপো নিবারণ ঘটক সাতটা মসার পিস্তল তাঁর বাড়িতে লুকিয়ে রেখেছিলেন। 

৬) বিচারে দুকড়িবালা দেবীর কী শাস্তি হয়েছিল ?  

উঃ স্পেশাল ট্রাইবুনালের বিচারের রায়ে দুকড়িবালাদেবীর দুই বছরের সশ্রম কারাদন্ড হয়েছিল।

৭) কবে দুকড়িবালা দেবী মুক্তি পান ? 

উঃ ১৯১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে দুকড়িবালা দেবী মুক্তি পান। 

৮) বিপ্লবী রামচন্দ্র মজুমদারের ‘মসার’ (পিস্তল)-এর খোঁজ নেওয়ার জন্য ননীবালা দেবী কী কৌশল অবলম্বন করেছিলেন?   

উঃ বিধবা ননীবালা দেবী রামচন্দ্রবাবুর স্ত্রী সেজে প্রেসিডেন্সি জেলে যান সেখানে গিয়ে রামবাবুর ইন্টারভিউ নিয়ে পিস্তলের গুপ্ত খবর নিয়ে এসেছিলেন।

৯) “এঁদের সকলেরই মাথায় অনেক হাজার টাকার হুলিয়া ছিল” – “হুলিয়া” শব্দের অর্থ কী? এঁরা কারা? এঁদের আশ্রয়দাত্রী কে ছিলেন? হুলিয়া থাকার জন্য এঁরা কীভাবে চলাফেরা করতেন ?

উঃ “হুলিয়া’ শব্দের অর্থ পলাতকের জন্য ঘোষিত পুরস্কার। এঁরা ছিলেন যদুগোপাল মুখার্জী, অমর চ্যাটার্জী, অতুল ঘোষ, ভোলানাথ চ্যাটার্জী, নলিনীকান্ত কর, বিনয়ভূষণ দত্ত ও বিজয় চক্রবর্তী। এঁদের আশ্রয়দাত্রী ছিলেন ননীবালা দেবী। হুলিয়া থাকার জন্য এঁরা দিনের বেলা সারাদিন দরজা বন্ধ করে ঘরে থাকতেন, রাত্রে সুবিধামতো বেরোতেন।

১০) “ননীবালা দেবী পলাতক হলেন” ননীবালা দেবী পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন কেন? তিনি পালিয়ে কোথায় গিয়েছিলেন? সেখানে তিনি কোন্ অসুখে আক্রান্ত হন?

উঃ পুলিশ ননীবালা দেবীকে গ্রেপ্তার করতে তৎপর হয়ে ওঠায় ননীবালা দেবী পালিয়ে গিয়েছিলেন। ননীবালা দেবী তাঁর বাল্যবন্ধুর দাদা প্রবোধ মিত্রকে অনুনয় বিনয় করে তাঁর সঙ্গে পেশোয়ারে পালিয়ে গিয়েছিলেন। সেখানে গিয়ে ননীবালা দেবী কলেরায় আক্রান্ত হন।

১১) “ননীবালা দেবী সবই অস্বীকার করতেন” —ননীবালা দেবী কোন্ কথা অস্বীকার করতেন? তার ফলশ্রুতিই বা কী হত? 

উঃ ননীবালা দেবী বিপ্লবীদের সাথে তাঁর যোগাযোগের কথা অস্বীকার করতেন। তিনি বলতেন কাউকেই তিনি চেনেন না ও কিছুই জানেন না। তার ফলে কাশীর পুলিশ সুপারিনটেন্ডেন্ট জিতেন ব্যানার্জী তাঁকে রোজ প্রায় আধঘণ্টা আলোবাতাসহীন পানিশমেন্ট চেম্বারে অর্থাৎ শাস্তি কুঠুরিতে ঢুকিয়ে রাখাতেন । 

১২) কাশীর জেলের ‘পানিশমেন্ট সেল’টির অবস্থা কেমন ছিল? সেখানে ননীবালা দেবীর উপর কী ধরনের অত্যাচার করা হত ? 

উঃ কাশীর জেলটি ছিল পুরোনো, সেকেলে। সেই জেলের পানিশমেন্ট প্রাচীরের বাইরে সেলটি ছিল মাটির নীচে। তাতে দরজা ছিল একটাই, কিন্তু আলো বাতাস প্রবেশের কোনো জানালা ছিল না। সেখানে তিন দিন প্রায় আধঘণ্টা ধরে ননীবালা দেবীকে ওই কবরের মতো স্থানে আটকে রাখা হত। তৃতীয় দিনে তাঁকে প্রায় ৪৫ মিনিট বন্ধ করে রাখা হয়েছিল। কবরের মতো সেলে আধঘন্টা আটকে রাখার পর দেখা যেত ননীবালা দেবীর অর্ধমৃত অবস্থা। তাঁর স্নায়ুর শক্তিকে চূর্ণ করে দেবার মতো অত্যাচার করা হত। 

১৩) কার কাছে ননীবালা দেবী বিপ্লবের দীক্ষা নেন? সম্পর্কে তিনি ননীবালা দেবীর কে ছিলেন ? 

উঃ বিপ্লবী অমরেন্দ্র চ্যাটার্জীর কাছে ননীবালা দেবী বিপ্লবের দীক্ষা নেন। সম্পর্কে অমরেন্দ্র চ্যাটার্জী ছিলেন ননীবালা দেবীর ভ্রাতুষ্পুত্র।

১৪) ননীবালা দেবী কবে কোথায় জন্মগ্রহণ করেন? তাঁর পিতামাতা কে ছিলেন? তাঁর সম্বন্ধে কি জানা যায় ? 

উঃ ১৮৮৮ সালে হাওড়া জেলার বালিতে ননীবালা দেবী জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা ছিলেন সূর্য্যকান্ত ব্যানার্জী, মা গিরিবালা দেবী এগারো বছর বয়সে ননীবালা দেবীর বিবাহ হয় এবং মাত্র ষোলো বছর বয়সে তিনি বিধবা হয়ে বাবার কাছেই ফিরে আসেন।

১৫) ‘আপনি দরখাস্ত লিখে দেন’ – কে কাকে দরখাস্ত লিখে দেন? দরখাস্ত লেখার পরের ঘটনাটি লেখো।

উঃ ননীবালা দেবী আই.বি. পুলিশের স্পেশাল সুপারিন্টেডেন্ট গোল্ডির কাছে অনুরোধ করেন যে তিনি বাগবাজারে রামকৃষ্ণ পরমহংস দেবের স্ত্রী সারদা মায়ের কাছে গিয়ে থাকতে চান। এজন্য তিনি গোল্ডির কাছে একটি দরখাস্ত লিখে দিয়েছিলেন। ননীবালা দেবীর দরখাস্ত হাতে নিয়ে গোল্ডি সেটিকে ছিঁড়ে দলা পাকিয়ে ছেঁড়া কাগজের টুকরিতে ফেলে দিয়েছিলেন। সঙ্গে সঙ্গে আহত বাঘের মতো লাফিয়ে উঠে ননীবালা দেবী গোল্ডির মুখে এক চড় বসিয়ে দিয়েছিলেন। দ্বিতীয় চড় মারবার আগেই অন্য সি.আই.ডি কর্মীরা পিসিমা করেন কি’ বলে তাঁর উদ্যত হাতকে চেপে ধরেছিলেন।

১৬) ‘আবার বাড়িভাড়া নেওয়া হয়েছিল কবে কোথায় বাড়িভাড়া নেওয়া হয়েছিল? বাড়ি ভাড়া পাওয়ার শর্ত কী ছিল? সেখানে গৃহকর্ত্রীর বেশে কে এসেছিলেন ?

উঃ ১৯১৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে আবার চন্দননগরে বাড়িভাড়া নেওয়া হয়েছিল। এখানে বাড়িভাড়া পাওয়ার শর্ত ছিল সঙ্গে মেয়েরা না থাকলে বাড়ি ভাড়া পাওয়া যাবে না। চন্দননগরে গৃহকর্ত্রীর বেশে ননীবালা দেবী এসেছিলেন। 

১৭) ‘এই চুরির কাহিনি অভিনব’- অভিনব চুরির ঘটনাটি লেখো।

উঃ ১৯১৪ সালের ২৬ আগস্ট রডা কোম্পানির জেটি সরকার শ্রীশ মিত্র বড়ো সাহেবের হুকুম অনুযায়ী ২০২টি অস্ত্রপূর্ণ বাকসো জাহাজঘাট থেকে খালাস করে সাতটি গোরুর গাড়ি বোঝাই করে নিয়ে আসতে থাকেন। একটি গোরুর গাড়ির গাড়োয়ান সেজে বিপ্লবী হরিদাস দত্ত ইংরেজদের মধ্যে গিয়ে, তাদের কাছ থেকে একটা পুরো গোরুর গাড়ি শুদ্ধ গোলাবারুদ নিয়ে উধাও হয়ে যান। সেই গাড়িতে ছিল ৯টি বাকসো ভরা কার্তুজ এবং একটিতে ৫০টি মসার পিস্তল। তাঁকে কেউ ধরতে পারেনি। ছদ্মবেশে চুরির অভিনবত্ব এটাই।

১৮) দুকড়িবালা দেবীর পরিচয় দাও।

উঃ ১৮৮৭ সালে বীরভূম জেলার নলহাটি থানার ঝাউপাড়া গ্রামে দুকড়িবালা দেবী জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম ছিল নীলমণি চট্টোপাধ্যায় এবং মা কমলকামিনী দেবী। দুকড়িবালা দেবীর স্বামী ছিলেন ঝাউপাড়া গ্রামেরই ফণীভূষণ চক্রবর্তী। ১৯১৭ সালে দুকড়িবালা দেবীর দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের সাজা হয়। তিনি ১৯১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে মুক্তি পান। সম্ভবত ১৯৭০ সালে তাঁর মৃত্যু হয়।

১৯) দুকড়িবালা দেবী কীভাবে বন্দীজীবন কাটাতেন ?

উঃ ১৯১৭ সালে দুকড়িবালা দেবীর বাড়ি তল্লাশির ফলে সাতটা মসার পিস্তল পাওয়া যায়। এতে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। গ্রামের মেয়ে দুকড়িবালা দেবী কোলের শিশুকে বাড়িতে রেখে জেলে গিয়েছিলেন। বন্দীজীবনের অসহ্য পরিবেশের মধ্যে থেকেও প্রতিদিন তিনি আধমণ ডাল ভাঙতেন। এর মধ্যেও তিনি বাবাকে চিঠি লিখেছিলেন যে তিনি ভালোই আছেন। তার জন্য যেন তাঁরা চিন্তা না করেন। শুধু বাচ্চাদের যেন তারা দেখেন এবং তাঁরা যেন না কাঁদে। 

শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের কিছু গুরুত্বপূর্ণ লিঙ্ক নিম্নে প্রদান করা হলোঃ

শিক্ষালয়ের সাথে ফেসবুকে যুক্ত হতে নিম্নের ছবিতে ক্লিক/টাচ করতে হবেঃ sikkhalaya

You cannot copy content of this page

Need Help?