ভারতীর্থ কবিতার প্রশ্ন উত্তর
শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের পক্ষ থেকে সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বাংলা ভারতীর্থ কবিতার প্রশ্ন উত্তর প্রদান করা হলো। শিক্ষার্থীরা এই ভারতীর্থ কবিতার প্রশ্ন উত্তর অনুশীলনের মধ্য দিয়ে তাদের পাঠ্য কবিতাটি সুস্পষ্টভাবে বুঝতে সক্ষম হবে এবং তাদের প্রয়োজনীয় পরীক্ষা প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারবে।
শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের সকল প্রকার আপডেট লাভ করতে মোবাইল স্ক্রিনের বা’দিকের নিম্নের অংশে থাকা বেল আইকনটিতে (🔔) টাচ করে শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের নোটিফিকেশন অন করে রাখুন।
ভারতীর্থ কবিতার প্রশ্ন উত্তরঃ
১) কবিতায় ভারতভূমিকে ‘পুণ্যতীর্থ’ বলা হয়েছে কেন ?
উঃ ভারতবর্ষ এমন এক স্থান, যেখানে নানা সময় ,নানা স্থানের মানুষ এসেছে। মানুষ যেমন পূণ্যের টানে তীর্থক্ষেত্রে যায়, তেমনই ভারতভূমির টানে তারা এখানে ছুটে এসেছে। তাই ভারতভূমিকে পুণ্যতীর্থ বলা হয়েছে।
২) ‘মহামানবের সাগরতীরে’ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন ?
উঃ কবি বলেছেন এখানে মানুষই হল প্রধান দেবতা। মানুষ ভারতভূমির টানে তারা এখানে ছুটে এসেছে। ভারতবর্ষ যেন এক মহামানবের মিলনসাগর। সেই সাগরকে কবি মহামানবের সাগরতীর বলেছেন।
৩) ভারতের প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য ধরা পড়েছে, কবিতা থেকে এমন একটি পক্তি উদ্ধৃত করো।
উঃ পঙ্ক্তিটি হলো ‘ধ্যানগম্ভীর এই যে ভূধর, নদী-জপমালা-ধৃত প্রান্তর’।
৪) ভারতবর্ষকে পদানত করতে কোন্ কোন্ বিদেশি শক্তি অতীতে এদেশে এসেছিল ? তাদের পরিণতি কী ঘটল ?
উঃ অতীতে শক, হুন, পাঠান, মোগল প্রভৃতি জাতি ও বিদেশি শক্তি ভারতবর্ষকে পদানত করতে এদেশে এসেছিল। এখানে এসে তারা সবাই এক দেহে লীন হয়ে গিয়েছিল। আমাদের সভ্যতার মাঝে তারা নিজেদের মিশিয়ে দিয়েছিল।
৫) ‘পশ্চিম আজি খুলিয়াছে দ্বার’ –উদ্ধৃতাংশে কোন্ পরিস্থিতির কথা বলা হয়েছে ? এমন পরিস্থিতিতে কবির অম্বিষ্ট কী ?
উঃ উদ্ধৃতাংশে ব্রিটিশ-ফরাসি ইত্যাদি জাতির ভারতে আগমনের কথা বলা হয়েছে। সেখান থেকে আগত মানুষজন তাদের শিক্ষা ও সংস্কৃতিকে উপহার হিসেবে এদেশে নিয়ে এসেছেন।
কবি মনে করছেন যারা আসছে তারা দেবে আর নেবে, মিলবে এবং মেলাবে কেউ ফিরে যাবে না।
৬) “আমার শোণিতে রয়েছে ধ্বনিতে তার বিচিত্র সুর”— কোন্ সুরের কথা বলা হয়েছে ? তাকে ‘বিচিত্র’ বলার কারণ কী? কেনই বা সে সুর কবির রক্তে ধ্বনিত হয় ?
উঃ যারা গিরি-মরুপথ অতিক্রম করে বিজয়ের জয়গান গেয়ে কলরব করতে করতে ভারতে প্রবেশ করেছিল তাদের সুরের কথা বলা হয়েছে।
যেহেতু সেই সুরে অনেক মানুষের নানান ধ্বনি রয়েছে তাই তাকে বিচিত্র বলা হয়েছে।
কবি এখানে ভারতবর্ষের সাথে একাত্ম অনুভব করছেন তাই কবির রঙে বহু মানুষের মিলনের সেই বিচিত্র সূর ধ্বনিত হয়েছে। কবি অনুভব করছেন তারা সবাই তার মাঝেই বিরাজ করছে।
৭) ‘হে রুদ্রবীণা বাজো বাজো বাজো’ – রুদ্রবীণা কী ? কবি তার বেজে ওঠার প্রত্যাশী কেন ?
উঃ পুরাণ কাহিনি মতে ‘রুদ্রবীণা’ হল ভগবান শিবের বীনা। এটি একধরণের বাদ্যযন্ত্র।
রুদ্রবীণা হল ধ্বংসের প্রতীক। কবি এখানে চাইছেন যারা আজও ঘৃণার বশে ভারতবর্ষ থেকে দূরে রয়েছে।
রুদ্রবীণার ধ্বনিতে তাদের সে বাঁধন ভেঙে যাবে, তারাও এই মহান ভারতবর্ষে মহামানবের সাগরতীরে উপনীত হবে।
৮) ‘আছে সে ভাগ্যে লিখা’ —ভাগ্যে কী লেখা আছে ? সে লিখন পাঠ করে কবি তাঁর মনে কোন শপথ গ্রহণ করেছেন ?
উঃ যে হোমের আগুনে বিভেদ ভুলে এক বিরাট হৃদয় গড়ে উঠেছিল, এখন সেই হোমের আগুনে দুঃখের রক্তশিখা জ্বলছে, সেই দুঃখকে সহ্য করতে হবে, অন্তরে দহন করতে হবে, তাই ভাগ্যে লেখা।সে লিখন পাঠ করে কবি শপথ গ্রহণ করেছেন যে, একতার ডাক শুনে তিনি সেই দুঃখ বহন করবেন, সমস্ত লজ্জা ও ভয়কে জয় করবেন, এর ফলেই অপমান দূরে সরে যাবে।
৯) ‘পোহায় রজনী’ —অন্ধকার রাত শেষে যে নতুন আশার আলোকোজ্জ্বল দিন আসবে তার চিত্রটি কীভাবে ভারত তীর্থ কবিতায় রূপায়িত হয়েছে ?
উঃ ‘ভারততীর্থ’ কবিতায় কবি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন যে, অন্ধকার রাত শেষে সেই আলোকোজ্জ্বল দিনটি আসবে যে-দিন আর্য-অনার্য, হিন্দু-মুসলমান-খ্রিস্টান সবাই আসবে এবং এক হয়ে মিলিত হবে। ব্রাহ্মণ যেদিন মন শুচি করে পতিতের হাত ধরবে এবং সব অপমান ভার ঘুচে যাবে।
১০) ‘মার অভিষেকে এসো এসো ত্বরা’- কবি কাদের ব্যাকুল আহ্বান জানিয়েছেন ? কোন্ মায়ের কথা এখানে বলা হয়েছে ? এ কোন্ অভিষেক ? সে অভিষেক কীভাবে সম্পন্ন ও সার্থক হবে ?
উঃ কবি আর্য-অনার্য, হিন্দু-মুসলমান, ইংরেজ, খ্রিস্টান, ব্রাহ্মণ-পতিত সবাইকে আহ্বান করেছেন।
এখানে ভারত মায়ের কথা বলা হয়েছে।
এই অভিষেক এক নতুন দিনের নতুন দেশ গঠনের অভিষেক। ভারতমায়ের জয়গানের অভিষেক, এক নতুন ভারততীর্থ গড়ার প্রয়াস।
সে অভিষেক দ্বারা সকল ধর্মবর্ণর্জাতিনির্বিশেষে তাদের পরস্পরের হাত ধরার মধ্যে দিয়ে ভারতভূমি পবিত্র হবে।
ভারতবর্ষ সবার স্পর্শে পবিত্র তীর্থনীরে পরিণত হবে।
১১) টীকাঃ
ওংকার ধ্বনিঃ
ওংকার হল একটি শক্তির প্রতীক। পুরাণ কাহিনি ও প্রাচীন শাস্ত্রমতে, এই ধ্বনি সমস্ত বিশ্বব্রহ্মাণ্ডকে চালনা করে। এই শক্তির জন্য উচ্চারিত মন্ত্রকে বলা হয় ওংকার ধ্বনি।
শকঃ
শক হল একটি যুদ্ধবাজ জাতি। প্রাচীন ভারতে বারবার এদের আক্রমণ ঘটেছে। নিষ্ঠুর ও যোদ্ধা জাতি।শকদের দমন করেন গুপ্ত সম্রাট দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত।
হুনঃ
হুন হল একটি বিদেশি জাতি। এরা মূলত মধ্য এশিয়ায় বসবাস করত। গুপ্ত সম্রাট স্কন্দগুপ্ত ভারতবর্ষে হুন আক্রমণ প্রতিরোধ করেন।
মোগলঃ
মোগল বা মুঘল হল মধ্য এশিয়ার জনজাতি। ভারতবর্ষে এরা কয়েকশো বছর রাজত্ব করেছে। বাবর, আকবর, শাহজাহান প্রমুখরা ছিলেন ভারতবর্ষের মোগল সম্রাট। ভারতে বহু স্থাপত্য কীর্তি মোগলরা তৈরি করেছে।
দ্রাবিড়ঃ
বহু প্রাচীন জনজাতি। বর্তমানে ভারতের দক্ষিণ অঞ্চলে এখন এদের মূলত বসবাস।
ইংরেজঃ
ইউরোপ থেকে আগত জাতি। ইংল্যাণ্ডে বসবাসকারীদের ইংরেজ বলা হয়। ব্যাবসা করতে এসে কালক্রমে ভারতবর্ষে প্রায় পৌনে দুশো বছর এরা রাজত্ব করে। সর্বশেষ এদের হাত থেকেই ভারতবর্ষ স্বাধীনতা লাভ করেছে।
১২) ভারতবর্ষের অতীত ইতিহাসের কথা কবিতায় কীভাবে বিধৃত হয়েছে ?
উঃ প্রাচীনকাল থেকে ভারতবর্ষে বহু জনজাতি এসেছে। শক-হূন-পাঠান ইত্যাদিরা ভারতে এসেছে। কেউ এসেছে রাজত্ব করতে, কেউ বা এসেছে লুণ্ঠন করতে। এই ধরনের ঘটনা ভারতের ইতিহাসে বারংবার ঘটেছে। অতীতের সেই ইতিহাসের পথ দিয়েই এসেছে ইংরেজ। এরা সবাই এসেছে, এসে কালক্রমে ভারতের সাথে একাত্ম হয়ে গেছে।
১৩) কবির দৃষ্টিতে ভবিষ্যৎ ভারতের যে স্বপ্নিল ছবি ধরা পড়েছে, তার পরিচয় দাও।
উঃ কবি কল্পনা করেছেন যে এমন দিন আসবে যে-দিন ভারতীয়দের মধ্যে কোনো ভেদাভেদ থাকবে না। সব ধর্মবর্ণজাতিনির্বিশেষে সমস্ত মানুষ এখানে এসে এক হয়ে যাবে। এক হয়ে একে অপরের সাথে ভ্রাতৃত্ববোধে আবদ্ধ হবে।
ভারততীর্থ কবিতা থেকে MCQ প্রশ্নের MOCK TEST প্রদান করতে নিম্নের লিঙ্কটি অনুসরণ করতে হবে
শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের কিছু গুরুত্বপূর্ণ লিঙ্ক নিম্নে প্রদান করা হলোঃ
- বাংলা ব্যাকরণের আলোচনাগুলি দেখতে এই লিঙ্কে ক্লিক/টাচ করতে হবে
- শিক্ষালয় ওয়েবসাইটে প্রদান করা প্রবন্ধ রচনাগুলি দেখতে এই লিঙ্কে ক্লিক/টাচ করতে হবে
- পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা অধ্যায়ভিত্তিক নোট দেখতে এই লিঙ্কে ক্লিক করতে হবে
- পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা অধ্যায়ভিত্তিক MCQ TEST প্রদান করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করতে হবে
- শিক্ষালয় ইউটিউব চ্যানেলটি দেখতে এই লিঙ্কে ক্লিক/টাচ করতে হবে
- পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির সাজেশন দেখতে এই লিঙ্কটি অনুসরণ করতে হবে
শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের সকল প্রকার নোট, সাজেশন, প্রশ্নপত্র ও মক টেষ্টের সুবিধা গ্রহণ করতে নিম্নের ছবিতে ক্লিক/টাচ করে বিষদ তথ্য জেনে নাওঃ