বিড়াল প্রবন্ধের বিষয়বস্তু
শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের পক্ষ থেকে একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য বিড়াল প্রবন্ধের বিষয়বস্তু প্রদান করা হলো। একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা এই বিড়াল প্রবন্ধের বিষয়বস্তু পাঠ করে নিম্নে দেওয়া গল্পের প্রশ্নের উত্তরগুলি তৈরি করবে।
শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের সকল প্রকার আপডেট লাভ করতে মোবাইল স্ক্রিনের বা’দিকের নিম্নের অংশে থাকা বেল আইকনটিতে (🔔) টাচ করে শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের নোটিফিকেশন অন করে রাখুন।
বিড়াল প্রবন্ধের বিষয়বস্তুঃ
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘কমলাকান্তের দপ্তর’ গ্রন্থের নায়ক কমলাকান্ত চক্রবর্তী আফিমসেবী দরিদ্র ব্রাহ্মণ। একমাত্র অফিম ছাড়া অন্য কোনো জিনিসের প্রতি তাঁর আকর্ষণ নেই। এই আফিমের প্রভাবেই তিনি দিব্যদৃষ্টি ও দিব্যকর্ণের অধিকারী হন। আপাতদৃষ্টিতে তাঁর বক্তব্য খেয়ালি মনের কল্পনা উচ্ছ্বাস মনে হলেও একটু চিন্তা করলেই তাঁর আবেগের তিব্রতা ও অনুভূতির গভীরতা উপলব্ধি করা যায়।
আলোচ্য ‘বিড়াল প্রবন্ধে কমলাকান্ত লঘু সুরে ধনী-দরিদ্রের সামাজিক অসাম্যের বিষয়টি অবলম্বন করে বিড়ালের সাথে এক কাল্পনিক বিতর্ক সৃষ্টি করেছেন। সামান্য ছোট একটি নিরীহ বিড়ালের মুখ দিয়ে সমাজতন্ত্রবাদের মূলতত্ত্ব বিশ্লেষণ করা হয়েছে। কমলাকান্তকে ধনী সম্প্রদায় ও বিড়ালকে দরিদ্র সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি করে পৃথিবীর চিরন্তন সমস্যার যে আলোচনা করা হয়েছে তা বাস্তবিক চিত্তাকর্ষক।
কমলাকান্তের জন্য রক্ষিত দুধ একটি ছোট বিড়াল খেয়ে ফেলায় কমলাকান্ত তাকে প্রহার করতে উদ্যত হয়েছিলেন। এর জবাবে বিড়াল যে সকল বক্তব্য রেখেছে তাতেই ধনী-দরিদ্রের সামাজিক বৈষম্যের বিষয়টি সুন্দর ভাবে ফুটে উঠেছে। বিড়ালের মূল বক্তব্য এই যে বিড়াল চুরি করে দুধ খেয়েছে বলে তাকে মারপিট করা হয় কেন? তারা কেন চুরি করে তার খবর কেউ রাখে না। ধনীরা প্রয়োজনের অতিরিক্ত ধন সঞ্চয় করে রাখে। ফলে সমাজের অন্যত্র ধনের অভাব ঘটে। এই কৃত্রিম অভাবের জন্যই সমাজে দরিদ্র শ্রেণীর উদ্ভব ঘটে। ধনীর মতো তাদেরও ক্ষুধা-তৃষ্ণা আছে, কিন্তু তার সংস্থানের ব্যবস্থা নেই।
মানুষের যেমন ক্ষুধা-পিপাসা আছে বিড়ালেরও তেমনি ক্ষুধা আছে একথা মানুষকে বুঝতে হবে। বিড়াল কমলাকান্তকে উপদেশ দিয়েছে দুধ খাওয়ার মাধ্যমে সে তাকে পরোপকারে সাহায্য করেছে। পরোপকার মানুষের শ্রেষ্ঠ ধর্ম আর ধর্ম লাভে বিড়াল কমলাকান্তের সহায়ক।
বিড়ালের আরো বক্তব্য এই সংসারে যারা বড়ো বড়ো সাধু বলে পরিচিত তারা চোর অপেক্ষাও অধার্মিক। তারা ধন সম্পদ সঞ্চয় করে কিন্তু তার সামান্য অংশও গরীবকে দেয় না। অভাবের তাড়নায় বাধ্য হয়ে গরীবরা চুরি করে। সুতরাং চুরির মূলকারণ এইসব তথাকথিত সাধু ব্যক্তিরা। অথচ বড়ো লোকের জন্য তাদের সকল সহানুভূতি ঝরে পড়ে। বড়ো লোক হলে তাদের ক্ষুধা-তৃষ্ণা গরীবের চেয়ে বেশি হবে এমন কোনো কথা নেই। আসলে তেলা মাথায় তেল দেওয়া মনুষ্য জাতির অভ্যাস।
অবশ্য বড়ো লোকের পোষা সোহাগের বিড়ালের জন্য স্বতন্ত্র ব্যাবস্থা। তাদের প্রচুর আদর যত্ন করা হয়। অথচ রাস্তার বিড়ালের দুঃখ দুর্দশার সীমা থাকে না। তার এই রূপ শোচনীয় অবস্থা দেখেও কারোর দয়া হয় না। চোরের দন্ড দেওয়ার ব্যবস্থা আছে কিন্তু নির্দয়তার দণ্ডের ব্যবস্থা নেই। মানব সমাজের রীতি নীতি অতি বিচিত্র।
কমলাকান্ত ভাবলেন বিড়ালের এই কথাগুলি সমাজতান্ত্রিক। এই সব কথা থেকে সমাজে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। ধনী যদি ইচ্ছামত ধন সঞ্চয় করতে না পারে বা চোরের জন্য সঞ্চিত ধন ভোগ করতে না পারে, তবে সমাজের ধন বৃদ্ধি হবে না। আর ধন বৃদ্ধি না হলে সমাজের মঙ্গলও হবে না। কিন্তু বিড়ালের বক্তব্য সমাজের ধন বৃদ্ধির অন্য নাম ধনীর ধনবৃদ্ধি, এতে গরীবের কোনো মঙ্গল নেই। এর উত্তরে কমলাকান্ত বললেন যে সমাজের উন্নতিতে গরীবের প্রয়োজনে না থাকতে পারে, কিন্তু ধনীর আছে। সুতরাং এই অবস্থায় গরীব যদি চুরি করে তবে তার দন্ড বিধান করা কর্তব্য।
কমলাকান্তের বক্তব্যের জবাবে বিড়াল জানায় যে চোরের ফাঁসিতে তার কোনা আপত্তি নেই। তবে তিনদিন না খেয়ে থেকেও যদি বিচারকের চুরি করে খাবার ইচ্ছে না হয় তা হলেই তিনি ফাঁসির হুকুম দেবেন। কমলাকান্তও তিন দিন উপবাসী থেকে যদি নসিরাম বাবুর ভাঁড়ারে ধরা না পড়েন তবেই বিড়ালকে ঠেঙ্গাতে পারেন। এর উত্তরে কমলাকান্ত গম্ভীর ভাবে বিড়ালকে বলেন যে তার এইসব কথা অত্যন্ত নীতি বিরুদ্ধ আর তার আলোচনাও পাপ।
প্রবন্ধটিতে বঙ্কিমচন্দ্রের সমাজমনস্কতার পাশাপাশি উদার মানবতার পরিচয় পরিস্ফুট হয়েছে। এই প্রবন্ধে তিনি একদিকে শোষণ ও অন্যদিকে বঞ্চনার চিত্র তুলে ধরেছেন। সমাজে ধনী-দরিদ্র থাকুক, না হলে সমাজের উন্নতি বিঘ্নিত হতে পারে। তবে এই ধনী শেণি যদি তাদের স্বার্থ কিছুটা ত্যাগ করে তা দরিদ্রের সেবায় নিয়োজিত করত তাহলে বণ্টনের অসাম্য অনেকাংশেই দূরীভূত হত। প্রাবন্ধিক বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় সেই মনুষ্যত্ব বোধের জাগরণই ঘটাতে চেয়েছেন আলোচ্য প্রবন্ধে।
বিড়াল প্রবন্ধের আরো প্রশ্নের উত্তর দেখতে এই লিঙ্কে ক্লিক/টাচ করতে হবে
একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির সব বিষয়ের সিলেবাস ও নম্বর বিভাজন দেখতে এই লিঙ্কে ক্লিক/টাচ করতে হবে
শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের কিছু গুরুত্বপূর্ণ লিঙ্ক নিম্নে প্রদান করা হলোঃ
- বাংলা ব্যাকরণের আলোচনাগুলি দেখতে এই লিঙ্কে ক্লিক/টাচ করতে হবে
- শিক্ষালয় ওয়েবসাইটে প্রদান করা প্রবন্ধ রচনাগুলি দেখতে এই লিঙ্কে ক্লিক/টাচ করতে হবে
- পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা অধ্যায়ভিত্তিক নোট দেখতে এই লিঙ্কে ক্লিক করতে হবে
- পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা অধ্যায়ভিত্তিক MCQ TEST প্রদান করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করতে হবে
- শিক্ষালয় ইউটিউব চ্যানেলটি দেখতে এই লিঙ্কে ক্লিক/টাচ করতে হবে
- পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির সাজেশন দেখতে এই লিঙ্কটি অনুসরণ করতে হবে
শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের সকল প্রকার নোট, সাজেশন, প্রশ্নপত্র ও মক টেষ্টের সুবিধা গ্রহণ করতে নিম্নের ছবিতে ক্লিক/টাচ করে বিষদ তথ্য জেনে নাওঃ
So beautiful
Nice
শিক্ষালয়ের শিক্ষাজগতে স্বাগত।