দেবতাত্মা হিমালয় প্রশ্ন উত্তর
শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের পক্ষ থেকে সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য দেবতাত্মা হিমালয় প্রশ্ন উত্তর প্রদান করা হলো। শিক্ষার্থীরা এই দেবতাত্মা হিমালয় প্রশ্ন উত্তর অনুশীলনের মধ্য দিয়ে তাদের পাঠ্য বিষয় সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা লাভ করতে পারবে।
শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের সকল প্রকার আপডেট লাভ করতে মোবাইল স্ক্রিনের বা’দিকের নিম্নের অংশে থাকা বেল আইকনটিতে (🔔) টাচ করে শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের নোটিফিকেশন অন করে রাখুন।
দেবতাত্মা হিমালয় প্রশ্ন উত্তরঃ
১) কবি রয়েছেন (হীরাপুর/রাজপুর/গৌরীপুর) প্রাসাদে।
উঃ গৌরীপুর।
২) আমার হাতে ছিল কয়েকখানি ‘যুগান্তর’ পত্রিকার (গান্ধী জয়ন্তী/রবীন্দ্রজয়ন্তী/বুদ্ধ জয়ন্তী) সংখ্যা।
উঃ রবীন্দ্রজয়ন্তী।
৩) নরম একখানা (চাদর/আলোয়ান/শাল) এলায়িত দেহের উপর ছড়ানো।
উঃ শাল।
৪) বিমানে গেলে কলকাতা থেকে দিল্লি পৌঁছোতে লাগে (দু’ঘন্টা/সাড়ে তিন ঘন্টা/তিন ঘন্টা)।
উঃ সাড়ে তিন ঘন্টা।
৫) একটি আলোর নিশানা পেয়ে কবির দীর্ঘ দীপ্ত কণ্ঠের মূর্ছনা উচ্ছ্বসিত হয়ে উঠলেন নবরচিত (কাব্যে/কবিতায়/প্রবন্ধে)।
উঃ কবিতায়।
৬) ভারতের মধ্যে কোথা থেকে তিব্বত নিকটবর্তী ?
উঃ ভারতের মধ্যে কালিম্পং থেকে তিব্বত নিকটবর্তী।
৭) গ্যাংটক থেকে নাথুলা গিরিসংকট কত দূরে ?
উঃ গ্যাংটক থেকে নাথুলা গিরিসংকট ছাব্বিশ মাইল দূরে।
৮) ভারত তিব্বত বাণিজ্যের প্রধান কেন্দ্র কোনটি ?
উঃ কাশ্মীরের পূর্ব প্রান্তে ভারত তিব্বত বাণিজ্যের প্রধান কেন্দ্র গারটক।
৯) মহাকবি রবীন্দ্রনাথ লেখক সম্পর্কে কী জানতেন ?
উঃ রবীন্দ্রনাথ জানতেন লেখক ‘যুগান্তর পত্রিকার অন্যতম সম্পাদক।
১০) কবি কখন উঠে গিয়ে যন্ত্রের সামনে বসলেন ?
উঃ সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা কিংবা আটটার সময়ে কবি উঠে গিয়ে বসলেন যন্ত্রের সামনে।
১১) লেখক রবীন্দ্রনাথের হাতে কী তুলে দিয়েছিলেন ?
উঃ লেখক রবীন্দ্রনাথের হাতে অমল হোমের কলম ও রজনীগন্ধার গুচ্ছ তুলে দিয়ে প্রণাম করেছিলেন।
১২) লেখক কাকে আধুনিক ভারতের কুলগুরু বলেছেন ?
উঃ লেখক রাজা রামমোহন রায়কে আধুনিক ভারতের কুলগুরু বলেছেন।
১৩) তালাকোট কাদের ঘাঁটি ?
উঃ তাকলাকোট তিব্বতিদের ঘাঁটি।
১৪) কত বছর আগে লেখক কার সঙ্গে প্রথম কালিম্পঙে বাস করে গিয়েছিলেন ?
উঃ লেখক চোদ্দো বছর আগে শশাঙ্ক চৌধুরীর সঙ্গে কালিম্পঙে বাস করে গিয়েছিলেন।
১৫) কালিম্পঙে কবির কণ্ঠস্বর ব্রডকাস্ট করার জন্য কে উপস্থিত ছিলেন ?
উঃ কালিম্পঙে কবির কণ্ঠস্বর ব্রডকাস্ট করার জন্য উপস্থিত ছিলেন স্বনামখ্যাত বেতার বিশেষজ্ঞ নৃপেন্দ্র মজুমদার।
১৬) কোন পথে উত্তর ভারত থেকে তিব্বত সীমানা নিকটবর্তী ?
উঃ সমগ্র উত্তরভারতের মধ্যে কালিম্পং থেকে তিব্বত সব থেকে নিকটবর্তী। কালিম্পঙের উপর দিয়ে চলছে রেনক্ রোড। এই রেনক্ রোড গিয়ে মিশেছে জেলাপ-লা গিরিসংকটে। এরপরেই শুরু হয়েছে তিব্বতসীমানা।
১৭) ‘আজকের যুগান্তরের প্রথম পৃষ্ঠায় ছিল’- আজকের যুগান্তরের প্রথম পৃষ্ঠায় কী ছিল ? সেটি কে কীভাবে প্রকাশ করতে চেয়েছিলেন ?
উঃ আজকের যুগান্তরের প্রথম পৃষ্ঠায় ছিল শিল্পীর হাতে আঁকা কবি রবীন্দ্রনাথের একখানি রেখাচিত্র। এই ছবিটিতে ছিল গ্রাম-নগর, দেশ-মহাদেশ এবং দিগন্তরেখা ছাড়িয়ে কবির মাথা উঠেছে ধরলাধার গৌরীশৃঙ্গের মতো। তিনি হিমালয়ের চেয়েও বড়ো, তিনিই পৃথিবীর উচ্চতম শিখর। শিল্পীর আঁকা এই ছবিখানি মধ্যে থেকে এই ভাবটিই লেখক প্রকাশ করতে চেয়েছিলেন।
১৮) ‘সেই আমাদের রোমাঞ পুলক-কোন ঘটনার কথা বলা হয়েছে ?
উঃ ২৫শে বৈশাখের সন্ধ্যায় কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ দেশবাসীর উদ্দেশ্যে তাঁর জন্মদিন উপলক্ষে একটি কবিতা বেতারযোগে পাঠ করবেন। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা-আটটার সময় কবি উঠে গিয়ে বসলেন যন্ত্রের সামনে। লেখক সহ সবাই বাইরে এসে দাঁড়ালেন। বাইরে তাঁদের পাশেই রাখা রয়েছে একটি রেডিও। কলকাতা ঘুরে কবির কণ্ঠ ফিরে আসবে এই যন্ত্রে। সেই ঘটনায় সকলের রোমাঞ ও পুলক অনুভূত হয়েছিল।
১৯) টীকা লেখোঃ
অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞানঃ
তিনি ছিলেন বাংলার সন্তান ও বরেণ্য ধর্ম প্রচারক, আজ থেকে নয়শো বছরেরও বেশি সময় আগে এই জ্ঞানঋষি তিব্বত গিয়ে বৌদ্ধধর্মের নির্মল স্বরূপের প্রচার করেন। তিনি তেরো বছর তিব্বতে বাস করেন এবং লাসার নিকট তাঁর মৃত্যু হয়। গৌতমবুদ্ধের পরেই তিব্বতবাসীরা বোধিস্বত্ব নামে তাঁর মূর্তিকে পূজা করে।
রথীন্দ্রনাথঃ
রথীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলেন ঠাকুর পরিবারের সন্তান। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পুত্র হলেন রথীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
প্রতিমা দেবীঃ
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের পুত্রবধূ ও রথীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্ত্রী হলেন প্রতিমা দেবী।
শরৎচন্দ্র দাসঃ
উনিশ শতকের শেষভাগে ইনি ছদ্মবেশে তিব্বতে যান। আধুনিক ভারতবর্ষ তার কাছে ঋণী। তাঁরই ভ্রমণবৃত্তান্ত শুনে আমরা একালে প্রথম তিব্বত সম্পর্কে জানতে পারি।
শান্ত রক্ষিতঃ
ইনি যশোরের রাজপুত্র। অষ্টম শতাব্দীতে তিনি তিব্বতে গিয়েছিলেন। সেখানে লামারা তাঁকে রাজকীয় সম্বর্ধনা দেন। ইনি অতীশ দীপঙ্করের আগে তিব্বতে যান ও আচার্য বোধিসত্ত্ব উপাধি লাভ করেন।
২০) প্রাচীন পথ ধরে কোন তিনজন প্রসিদ্ধ বাঙালি অতীতে তিব্বতে গিয়েছিলেন ?
উঃ অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান, রাজা রামমোহন রায় ও শরৎচন্দ্র দাস।
২১) কোন প্রাচীন পথের রেখা ধরে তাঁরা গিয়েছিলেন ?
উঃ গ্যাংটক থেকে নাথুলা গিরিসংকট হল মাত্র ছাব্বিশ মাইল। এখান থেকে জেলাপ-লা-এ গিরিসংকট তারপরই তিব্বত সীমানা। সেই পথ ধরে তারা গিয়েছিলেন।
২২) এখনকার পর্যটকরা এই প্রাচীন পথটি পরিহার করেন কেন ?
উঃ প্রাচীন পথে দুর্যোগ বেশি এবং দুঃসাধ্যও বটে, তাই এখনকার পর্যটকরা এই পথ পরিহার করেন।
২৩) কোন দুই বিখ্যাত বাঙালি তিব্বতে গিয়ে বোধিসত্ত্ব উপাধি লাভ করেছিলেন ?
উঃ অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান ও যশোরের রাজপুত্র শান্ত রক্ষিত।
২৪) ছদ্মবেশে কে গিয়েছিলেন তিব্বতে ?
উঃ শরৎচন্দ্র দাস।
২৫) স্যার ফ্রান্সিস ইয়ংহাসব্যান্ডকে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করেছিল তিব্বত-বিষয়ক কোন বইটি ?
উঃ শরৎচন্দ্র দাসের তিব্বত ভ্রমণবৃত্তান্ত বইটি।
২৬) কালিম্পঙের কোথায় পড়াশুনো করে অ্যাংলো ইন্ডিয়ান ও ইংরেজ অনাথ ছেলেমেয়েরা ?
উঃ গ্রেহামস হোম-এ পড়াশুনো করে।
২৭) গৌরীপুর প্রাসাদে কারা ছিলেন রবীন্দ্রনাথের সঙ্গী ?
উঃ অ্যাটর্নি হীরেন দত্ত, রথীন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রতিমা দেবী, অনিল চন্দ, মৈত্রেয়ী আর চিত্রিতা গৌরীপুর প্রাসাদে রবীন্দ্রনাথের সঙ্গী ছিলেন।
২৮) লেখকের অনুরোধে কোন্ পত্রিকার জন্য অনেকবার লেখা দিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ ?
উঃ লেখকের অনুরোধে যুগান্তর পত্রিকার জন্য রবীন্দ্রনাথ অনেকবার লেখা দিয়েছিলেন।
২৯) ২৫ বৈশাখের সেই বিশেষ দিনটি যে ছিল শুক্লপক্ষ, লেখা থেকে সেকথা জানতে পারো কেমন করে ?
উঃ সেই দিন রাতে জ্যোৎস্না ছিল।
৩০) কীভাবে গেলে পৌঁছানো যায় কালিম্পঙের গ্রেহামস হোমে ? এই হোমটির বিশিষ্টতা কী ?
উঃ কালিম্পঙের ল্যান্ডমার্ক হল বড়ো গির্জা তারই পাশ দিয়ে চলে গেছে চড়াই-পথ এদিক-ওদিক ঘুরে অনেক উঁচুতে গ্রেহামস্ হোমের দিকে। এই হোমটিতে অ্যাংলো ইন্ডিয়ান এবং সাহেব সুবার অভিভাবকহীন ছেলেমেয়েরা পড়াশুনো করে মানুষ হয়। সমগ্র পাহাড় নিয়ে এ এক বিরাট কীর্তি। এই হোমের পরিচালন ব্যবস্থা সমস্তই খাঁটি সাহেব-মেমদের হাতে।
৩১) ২৫ বৈশাখের ‘যুগান্তর’ পত্রিকার প্রথম পাতায় শিল্পীর আঁকা যে বিশেষ রেখাচিত্রটি প্রকাশ পেয়েছিল, তার বিষয় কী ছিল? রবীন্দ্র-জন্মদিনের শ্রদ্ধার্ঘ্য হিসেবে ছবির এই বিষয়টি তোমার যথার্থ মনে হয় কি না লেখো।
উঃ কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রেখাচিত্র। রবীন্দ্র-জন্মদিনের শ্রদ্ধার্ঘ্য হিসেবে এই ছবিটি যথার্থ। একজন দেশবরেণ্য কবির প্রতি এর চেয়ে ভালো শ্রদ্ধার্ঘ্য হতে পারে না। হিমালয়ের চেয়ে তিনি বড়ো। পৃথিবীর উচ্চতম শিখর তিনি। তাই তাঁকে তাঁর চিত্র এঁকে দেওয়া খুবই আনন্দজনক এবং গর্বের বিষয়।
৩২) কাজটি দুরূহ, অনেকদিন সময় লাগবে- কোন কাজটি সম্পন্ন করবার ইচ্ছে লেখককে জানিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ? কেন সে-কাজ করার ইচ্ছে হয়েছিল তাঁর ? কার সাহায্য প্রত্যাশা করেছিলেন ওই কাজে ?
উঃ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সমগ্র মহাভারতখানা নিজের হাতে একবার লিখতে চেয়েছিলেন। এই কাজটি সম্পন্ন করার ইচ্ছাই তিনি লেখককে জানিয়েছিলেন। কারণ মহাভারতের মতো এতো বড়ো মহাকাব্য পৃথিবীর কোনো কালের কোনো সাহিত্যেই নেই। এই কাজে তিনি বৈদান্তিক অ্যাটর্নি হীরেন দত্তের সাহায্য প্রত্যাশা করেছিলেন।
৩৩) ‘এ ছাড়া আর ঠাকুরবাড়ি কোথায় হে ?’- কোন প্রসঙ্গে এই পরিহাস রবীন্দ্রনাথের ?
উঃ লেখক প্রবোধকুমার সান্যাল কালিম্পঙে এসে একটি ছোটো বাড়িতে উঠেছিলেন, যেটির নাম ছিল ঠাকুরবাড়ি। লেখকের সঙ্গে ২৫ বৈশাখের অপরাহ্ণে কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দেখা হল। লেখক কবিকে জানালেন তিনি এখানকার এক ঠাকুরবাড়িতে এসে উঠেছেন। তখন কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর পরিহাস করে লেখককে বলেছিলেন এ ছাড়া আর ঠাকুরবাড়ি কোথায়। অর্থাৎ পরিহাসের বিষয়টি হল বাড়িতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রয়েছেন সেখানে ছাড়া আর কোথায় বা কোন বাড়ি আর ঠাকুরবাড়ি হতে পারে।
৩৪) ‘কবি যেদিন আমাকে বাগে পেয়েছিলেন।’- ‘বাগে পেয়েছিলেন’- এই বিশিষ্ট ক্রিয়াপদটির অর্থ কী ? তাঁকে কবির ‘বাগে পাওয়ার’ কী পরিচয় রয়েছে লেখকের সেদিনের বিবরণে ?
উঃ এই বিশিষ্ট ক্রিয়াপদটির অর্থ সামনে পাওয়া বা সুযোগ পাওয়া। লেখক যখন কবিকে বললেন এখানকার এক ঠাকুরবাড়িতে এসে উঠেছি, তখন কবি বললেন এ ছাড়া আর ঠাকুরবাড়ি কোথায়। এরপর দু-চারটি কথার পরে তাঁর পরিহাস-সরস বাক্যবাণ ছুটতে লাগল। সেই বাণে লেখক বিশ্ব হচ্ছেন বারংবার এবং হাসির রোল উঠছে এপাশে-ওপাশে।
৩৫) ‘কালিম্পঙে টেলিফোন ছিল না, এই উপলক্ষ্যে তার প্রথম উদবোধন’ – কোন বিশেষ উপলক্ষ্যে, কীভাবে এই উদবোধন সম্পন্ন হল ?
উঃ ২৫ বৈশাখের সন্ধ্যায় তাঁর জন্মদিন উপলক্ষ্যে কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর দেশবাসীর উদ্দেশ্যে একটি নবরচিত কবিতা বেতারযোগে পাঠ করবেন। সেজন্য কলকাতার বেতারকেন্দ্রের কর্তৃপক্ষ কলকাতা-কালিম্পঙের মধ্যে টেলিফোনের বন্দোবস্ত করেছিলেন। তখন কালিম্পঙে টেলিফোন না থাকায় সেটাই হল প্রথম উদবোধন টেলিফোন ব্যবস্থার জন্য পাহাড়ে পাহাড়ে টেলিফোনের খুঁটি বসানো এবং তার খাটানো হয়েছে গত কয়েকদিন থেকেই। টেলিফোনের কর্তৃপক্ষ এজন্য প্রচুর অর্থব্যয় করেছেন। কবি তাঁর ঘরের আসনে বসে টেলিফোনে কবিতা পাঠ করবেন এবং বেতার কর্তৃপক্ষ তাঁর কন্ঠস্বরটি ধরে নিয়ে সঙ্গে সঙ্গে ব্রডকাস্ট করবেন, এই ছিল ব্যবস্থা। এই উপলক্ষে কয়েকজন বেতার বিশেষজ্ঞও এসেছিলেন।
৩৬) কিন্তু নৃপেন্দ্রবাবুর ফরমাশ শুনতেই হলো’ নৃপেন্দ্রবাবু কে ? কী ছিল তাঁর ফরমাশ ? কীভাবে তা শুনেছিলেন লেখক ?
উঃ নৃপেন্দ্রবাবু অর্থাৎ নৃপেন্দ্র মজুমদার ছিলেন একজন বেতার-বিশেষজ্ঞ। তিনি লেখককে কবি যে চেয়ারে বসবেন এবং কবিতা পাঠ করবেন সেই চেয়ারে বসে কলকাতাকে একবার ডাকতে বললেন। যদি লেখকের গলা না-ফাটে তবে আর ভয় নেই। লেখক নধর মখমল বসানো চেয়ারে বসে কয়েকবার ডাকলেন হ্যালো, ক্যালকাটা, হ্যালো। কলকাতা থেকে তৎক্ষণাৎ জবাব এল ‘ও. কে’।
৩৭) জন্মদিনে কবির স্বকণ্ঠে বেতার সম্প্রচারিত কবিতা শোনাবার মুহূর্তটি কীভাবে ধরা দিয়েছিল তাঁর শ্রোতাদের চেতনায় ?
উঃ কবি উঠে গিয়ে বসলেন যন্ত্রের সামনে। একটি আলোর নিশানা পেয়ে কবির দীর্ঘ দীপ্ত কণ্ঠের মূর্ছনা উচ্ছ্বসিত হয়ে উঠল। একটা মায়াচ্ছন্ন স্বপ্নলোকের মধ্যে সবাই যেন হারিয়ে গেল। সবাই ভুলে গেল পরস্পরের অস্তিত্ব। শ্রোতাদের পায়ের নীচে কালিম্পং থরথর করতে লাগল কিনা সে কথা তখন আর কারো মনে রইল না। কবির কণ্ঠ ফিরে ফিরে আসবে যন্ত্রে সেই ভেবে তাদের রোমাঞ পুলক অনুভূত হতে লাগল।
৩৮) এ লেখায় একটা হারিয়ে যাওয়া সময়ের ছবি আছে, ভারতবর্ষ তথা বাংলার শ্রেষ্ঠ কয়েকজন সন্তানের কথা আছে, যাঁদের সঙ্গে একসময় তিব্বতের নিবিড় যোগ রচিত হয়েছিল। লেখাটি অনুসরণ করে বাংলার ওই শ্রেষ্ঠ মানুষগুলি সম্পর্কে তোমার যে ধারণা হয়েছে, নিজের ভাষায় লেখো।
উঃ ভারতবর্ষ তথা বাংলার শ্রেষ্ঠ সন্তানদের মধ্যে তিনজন জগৎপ্রসিদ্ধ বাঙালি গিয়েছিলেন তিব্বতে। তার মধ্যে বাংলার চিরদিনের গর্ব ঢাকা বিক্রমপুরের সন্তান অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান লেখক প্রবোধ কুমার সান্যালের এই রচনাটির মধ্য দিয়ে বাংলার তথা ভারতবর্ষের এইসব শ্রেষ্ঠ সন্তানদের সঙ্গে তিব্বতের যোগ যে কত নিবিড় ছিল তা ধরা পড়েছে। জ্ঞান ঋষি দীপঙ্কর তিব্বতে গিয়ে বৌদ্ধধর্মের নির্মল স্বরূপকে প্রচার করেছিলেন। গৌতম বুদ্ধের পরেই তিব্বতবাসীরা তাঁর মূর্তিকে আজও বোধিসত্ত্ব নামে পূজা করে। এরপরে গেছেন রাজা রামমোহন রায়। তৃতীয় যে ব্যক্তি উনিশ শতকের শেষভাগে ছদ্মবেশে তিব্বতে গিয়েছিলেন তাঁর নাম শরৎচন্দ্র দাস। তাঁর কাছে আধুনিক ভারতবর্ষ ঋণী। তাঁর ভ্রমণবৃত্তান্ত শুনে আমরা তিব্বতের বিষয় জানতে পারি। অতীশ দীপঙ্করের আগে আর একজন বাঙালি অষ্টম শতাব্দীতে তিব্বত গিয়েছিলেন এবং আচার্য বোধিসত্ত্ব উপাধি লাভ করেছিলেন। তিনি হলেন যশোহরের রাজপুত্র শান্ত রক্ষিত। বাংলা তথা ভারতবর্ষের গর্ব এইসব শ্রেষ্ঠ কয়েকজন বাঙালি তিব্বতে গিয়ে ভারতবর্ষের নাম শ্রেষ্ঠ আসনে বসিয়ে এসেছেন।
৩৯) এই লেখার একটি প্রধান চরিত্র রবীন্দ্রনাথ আর তাঁর ব্যক্তিত্বময় উপস্থিতি। কালিম্পং শহরে অতিবাহিত তাঁর একটি বিশেষ জন্মদিন উদ্যাপনের সম্পূর্ণ ছবিটি যেভাবে এখানে ফুটে উঠেছে তার পরিচয় দাও।
উঃ ২৫ বৈশাখের কোনো এক অপরাহ্ণে কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কালিম্পঙে ছিলেন। কবির সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন। বিশিষ্ট সব ব্যক্তি ও গুণীজন এবং লেখক স্বয়ং। সেইদিনকার সেই ২৫ বৈশাখের সন্ধ্যায় তিনি দেশবাসীর উদ্দেশ্যে তাঁর জন্মদিন উপলক্ষ্যে একটি নবরচিত কবিতা বেতারযোগে পাঠ করবেন, সেইজন্য কলকাতার বেতারকেন্দ্রের কর্তৃপক্ষ কলকাতা কালিম্পঙের মধ্যে টেলিফোনের বন্দোবস্ত করেছিলেন। কালিম্পঙে তখন টেলিফোন ছিল না। টেলিফোন কর্তৃপক্ষ এজন্য প্রচুর অর্থব্যয় করেছেন। কবি তাঁর ঘরের সামনে আসনে বসে টেলিফোনে কবিতা পাঠ করবেন এবং বেতার কর্তৃপক্ষ তাঁর কণ্ঠস্বরটি ধরে নিয়ে সঙ্গে সঙ্গে ব্রডকাস্ট করবেন, এই ছিল ব্যবস্থা। স্বনামখ্যাত নৃপেন্দ্র মজুমদার বেতার বিশেষজ্ঞও উপস্থিত ছিলেন। মহাকবি মাঝে মাঝে ভীষণ শব্দে গলা ঝাড়া দেন। কিন্তু কাব্য পাঠকালে সেই আওয়াজটির দাপটে সূক্ষ্ম যন্ত্রটা বিদীর্ণ হয়ে যাবে কি না তার জন্য নৃপেনবাবু নিজে লেখককে পরীক্ষা করতে বললেন। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা কিংবা আটটায় কবি উঠে গিয়ে বসলেন যন্ত্রের সামনে। কবি মাত্র মিনিট পনেরো কবিতা পাঠ করলেন। কবির দীর্ঘ দীপ্ত কণ্ঠের মূর্ছনা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ল। সেদিন জ্যোৎস্না ছিল বাইরে। মায়াচ্ছন্ন স্বপ্নলোকের মধ্যে সবাই হারিয়ে গেল এবং ভুলে গেল নিজেদের অস্তিত্ব।
৪০) ইতিহাস-ভূগোলের ইতিবৃত্তে জড়ানো কালিম্পং নামে একটা শহরকে নতুন করে চিনতে তোমার কেমন লাগল, একটা অনুচ্ছেদে তা লেখো।
উঃ লেখক প্রবোধকুমার সান্যাল কালিম্পং শহরটির খুব সুন্দর বর্ণনা দিয়েছেন। কালিম্পঙের উপর দিয়ে চলছে রেনক্ রোড তিব্বতের দিকে। এই পথ দুর্যোগপূর্ণ এবং দুঃসাধ্য। রেনক রোড গিয়েছে ‘জেলাপ-লা’ গিরিসংকটে, তারপরেই তিব্বত সীমানা। এই পথ দিয়ে তিনজন জগৎপ্রসিদ্ধ বাঙালি গিয়েছিলেন তিব্বতে। কাশ্মীরের পূর্ব প্রান্তে ভারত-তিব্বত বাণিজ্যের প্রধান কেন্দ্র হল গারকট, ওখানে তাকলাকোট হল তিব্বতিদের ঘাঁটি। নেপালেও আছে নামচে বাজার দিয়ে তিব্বত যাওয়ার পথ। অন্যপথ থাকলেও বাংলার এই পথই সর্বশ্রেষ্ঠ। তিব্বতিদের প্রধান ব্যবসা হল পশম। কালিম্পঙের যে পথ চলে গেছে উত্তরে সেখানে পশমের ঘাঁটি। বড়ো গির্জাটা হল কালিম্পঙের ল্যান্ডমার্ক। তার পাশ দিয়ে চড়াই পথ চলে গেছে অনেক উঁচুতে গ্রেহামস হোম এ। এখানে অভিভাবকহীন ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা করে। এখানকার সবই সুন্দর, প্রকৃতি যেন এখানে আপন খেয়ালে নিজে হাতে সবকিছু রচনা করেছে। ইতিহাস ও ভূগোলের ইতিবৃত্তে জড়ানো শহরটি আমার খুব ভালো লেগেছে।
দেবতাত্মা হিমালয় থেকে MCQ প্রশ্নের MOCK TEST প্রদান করতে নিম্নের লিঙ্কটি অনুসরণ করতে হবে
শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের কিছু গুরুত্বপূর্ণ লিঙ্ক নিম্নে প্রদান করা হলোঃ
- বাংলা ব্যাকরণের আলোচনাগুলি দেখতে এই লিঙ্কে ক্লিক/টাচ করতে হবে
- শিক্ষালয় ওয়েবসাইটে প্রদান করা প্রবন্ধ রচনাগুলি দেখতে এই লিঙ্কে ক্লিক/টাচ করতে হবে
- পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা অধ্যায়ভিত্তিক নোট দেখতে এই লিঙ্কে ক্লিক করতে হবে
- পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা অধ্যায়ভিত্তিক MCQ TEST প্রদান করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করতে হবে
- শিক্ষালয় ইউটিউব চ্যানেলটি দেখতে এই লিঙ্কে ক্লিক/টাচ করতে হবে
- পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির সাজেশন দেখতে এই লিঙ্কটি অনুসরণ করতে হবে
শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের সকল প্রকার নোট, সাজেশন, প্রশ্নপত্র ও মক টেষ্টের সুবিধা গ্রহণ করতে নিম্নের ছবিতে ক্লিক/টাচ করে বিষদ তথ্য জেনে নাওঃ