কে বাঁচায়, কে বাঁচে ছোটপ্রশ্নের উত্তর

শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের পক্ষ থেকে কে বাঁচায়, কে বাঁচে গল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের ছোটপ্রশ্নের উত্তর প্রদান করা হলো। ইতিপূর্বে এই গল্প থেকে বেশ কিছু ছোটপ্রশ্নের উত্তর প্রদান করা হয়েছে। আগে প্রদান করা প্রশ্নের উত্তরগুলি দেখতে নিম্নের লিঙ্কে ক্লিক/টাচ করতে হবে। 

কে বাঁচায়, কে বাঁচে ছোটপ্রশ্ন পর্ব ১ 

কে বাঁচায়, কে বাঁচে ছোটপ্রশ্ন পর্ব ২ নিম্নে প্রদান করা হলোঃ 

  • ‘কিন্তু সেটা হয় অনিয়ম।’- এখানে ‘অনিয়ম’ বলতে বোঝানো হয়েছে – রূঢ় বাস্তব কিংবা আধ্যাত্মিক আদর্শ উভয়কেই বর্জন করা
  • ‘ একস্থানে তীক্ষ্ণধার হা- হুতাশ করা মন্তব্য করা হয়েছে ।’— যেখানে এমন করা হয়েছে- সংবাদপত্রে
  • সংবাদপত্রে কতজনের মৃতদেহ ভালোভাবে সদ্‌গতির ব্যবস্থা হয়নি বলে নিন্দা করা হয়েছে –কুড়ি জনের
  • চোখ বুলিয়ে নজরে পড়ল’- নিখিলের নজরে পড়ল – গোটা কুড়ি মৃতদেহকে যথাযথভাবে সদ্‌গতির ব্যবস্থা না করার হা-হুতাশ 
  • ‘মৃত্যুঞ্জয় একতাড়া নোট নিখিলের সামনে রাখল।’ টাকাটা— রিলিফ ফান্ডে দেবে
  • ‘সেদিনের পর থেকে মৃত্যুঞ্জয়ের মুখ বিষণ্ণ- গম্ভীর হয়ে আছে।’— এখানে যে দিনটির কথা বলা হয়েছে – ফুটপাথে প্রথম অনাহারে মৃত্যু দেখার দিন
  • নিখিল মাসিক মাইনে থেকে মোট যত টাকা রিলিফ ফান্ডের জন্য কমাবে বলে ভেবেছে- পনেরো টাকা 
  • ‘একটা কাজ করে দিতে হবে ভাই’— এখানে উল্লিখিত কাজটি ছিল- মাইনের পুরো টাকাটা কোনো রিলিফ ফান্ডে দিয়ে আসা
  • নিখিল মাইনে থেকে টাকা পাঠাত- তিন জায়গায়
  • নিখিল পাঁচ টাকা করে সাহায্য কমিয়ে নেওয়ার কথা ভেবেছিল, কারণ- রিলিফ ফান্ডে দেবে বলে
  • ‘প্রতিমাসে ধার করছিস।’- নিখিলের এমন কথা বলার কারণ – মৃত্যুঞ্জয়ের মাইনের টাকায় মাস চলত না
  • মৃত্যুঞ্জয়ের বাড়িতে থাকে –  ন’জন লোক  
  • ‘এক বেলা খাওয়া ছেড়ে দিয়েছি।’ কারণ – আকালে পীড়িত মানুষদের খেতে দেওয়ার তাগিদ
  • ‘ভেতরে সে পুড়ছে সন্দেহ নেই।’— এখানে ‘পুড়ছে‘ বলতে বোঝানো হয়েছে- আকালে পীড়িতদের কষ্টে মর্মজ্বালাকে
  • ‘আমি না খেলে উনিও খাবেন না।’- যে খাবে না- টুনুর মা
  • টুনুর মার যা স্বাস্থ্যের অবস্থা, তাতে একবেলা খেয়ে কতদিন টিকতে পারবে বলে নিখিলের মনে সংশয় জাগে – পনেরো দিন 
  • ‘এ ভাবে দেশের লোককে বাঁচানো যায় না।’— এমন বলার কারণ – এ অনেকটা একজনের বদলে আর একজনকে খাওয়ানো
  • ‘ভূরিভোজনটা অন্যায়, কিন্তু না খেয়ে মরাটা উচিত নয় ভাই।’— বক্তার নাম- নিখিল
  • ‘আমি কেটে ছেঁটে যতদূর সম্ভব খাওয়া কমিয়ে দিয়েছি।’ বক্তা হলেন – নিখিল
  • ‘ওটা পাশবিক স্বার্থপরতা।’- মৃত্যুঞ্জয়ের মতে পাশবিক স্বার্থপরতাটি হল – বেঁচে থাকার প্রয়োজনে যথাযথ খাবার খাওয়ার মানসিকতা
  • ‘দশজনকে খুন করার চেয়ে নিজেকে না খাইয়ে মারা বড়ো পাপ।’— নিখিল এ কথা বলেছে- সমাজধর্মের নিরিখে
  • “কিন্তু যারা না খেয়ে মরছে তাদের যদি এই স্বার্থপরতা থাকত?’— এখানে নিখিল ‘স্বার্থপরতা’ বলতে বোঝাতে চেয়েছে- নিজের অধিকারবোধ সম্পর্কে সচেতনতা
  • ‘বদ্ধ পাগল’- এখানে বক্তা হল – মৃত্যুঞ্জয়
  • মৃত্যুঞ্জয়ের বাড়ির ছেলেমেয়েগুলির চিৎকার করে কাঁদার কারণ – অনাদর , অবহেলা ও খিদের জ্বালা
  • মৃত্যুঞ্জয়ের সঙ্গে সঙ্গে থাকার টুনুর মায়ের কাতর অনুরোধে নিখিল শর্ত দিয়েছিল- তাকে সুস্থ হয়ে ঘর সামলাতে হবে
  • ‘নিখিলকে বার বার আসতে হয়’– এর কারণ- মৃত্যুঞ্জয় , টুনুর মা ও তাদের প্রতি নিখিলের দরদ এবং দায়বদ্ধতা
  • টুনুর মা নিখিলকে যে অনুরোধ জানিয়েছিল- মৃতুঞ্জয়ের খেয়াল রাখতে 
  • মৃত্যুঞ্জয়ের স্ত্রীর‘ কেবলই মনে পড়ে – ফুটপাথের লোকগুলোর কথা
  • ‘আচ্ছা , কিছুই কি করা যায় না?’ —এখানে যা করার কথা বলা হয়েছে- আকালে পীড়িত মানুষগুলোর অন্নসংস্থানের কথা
  • ‘দারুণ একটা হতাশা জেগেছে ওর মনে।’- এই হতাশার কারণ – যথাসর্বস্ব দান করলেও আকালে পীড়িতদের ভালো করা যাবে না 
  • ‘দারুণ একটা হতাশা জেগেছে ওর মনে।’- যার মনে হতাশা জেগেছে- মৃত্যুঞ্জয়ের মনে 
  • ‘একেবারে মুষড়ে যাচ্ছেন দিনকে দিন।’- মৃত্যুঞ্জয়ের এই মুষড়ে যাওয়ার কারণ- অন্তর্মনের হতাশা
  • “নিখিল চেষ্টা করে তার ছুটির ব্যবস্থা করিয়ে দিয়েছে’- এর কারণ— মৃত্যুঞ্জয় অফিসে যায় না
  • টুনুর মা নিখিলকে ডেকেছে যা বলে – ঠাকুরপো 

 

কে বাঁচায়, কে বাঁচে গল্প থেকে গুরুত্বপূর্ণ কিছু SAQ প্রশ্নের উত্তরঃ 

১) ‘আজ চোখে পড়ল প্রথম’— কী প্রথম চোখে পড়ল?  

উঃ অফিস যাওয়ার পথে মৃত্যুঞ্জয়ের প্রথম  ১৩৫০ বঙ্গাব্দের আকালে পীড়িত এক মানুষের অনাহারে মৃত্যু চোখে পড়ল । 

২) ‘ফুটপাখে হাঁটা তার বেশি প্রয়োজন হয় না’- কেন ফুটপাথে হাঁটার প্রয়োজন হয় না? 

উঃ নিরিবিলি অঞ্চলের বাসিন্দা মৃত্যুঞ্জয়ের পাড়ায় ফুটপাথ কম। ছোটো ভাই ও চাকর থাকায় তাকে দোকান – বাজারও করতে হয় না । বাড়ি থেকে বেরিয়েই সে অফিসের ট্রাম ধরে । তাই তার ফুটপাথে হাঁটার প্রয়োজন হয় না ।

৩) ‘এতদিন শুধু শুনে আর পড়ে এসেছিল’ – কী শুনে আর পড়ে আসার কথা বলা হয়েছে? 

উঃ ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দের দুর্ভিক্ষপীড়িত কলকাতার ফুটপাথে অনাহারক্লিষ্ট মানুষের খিদের জ্বালায় মৃত্যুর কথা এতদিন মৃত্যুঞ্জয় শুনে আর পড়ে এসেছিল ।

৪) ‘সন্দেহ নেই’— কোন্ বিষয়ে সন্দেহ নেই ? 

উঃ ফুটপাথে হাঁটাচলা করলে দুর্ভিক্ষের দিনে অনাহারে মৃত্যু দর্শন যে আগেই ঘটত , এ বিষয়ে মৃত্যুঞ্জয়ের মনে কোনো সন্দেহ নেই । 

৫) মৃত্যুঞ্জয়ের বাড়ি শহরের কেমন জায়গায় অবস্থিত ছিল ? 

উঃ কলকাতা শহরের এক নিরিবিলি অঞ্চলে ছিল মৃত্যুঞ্জয়ের বাড়ি । সে পাড়ায় খুব বেশি ফুটপাথও ছিল না । 

৬) বাড়ি থেকে কীভাবে অফিস যেত মৃত্যুঞ্জয় ? 

উঃ মৃত্যুগ্ধয় বাড়ি থেকে বেরিয়ে দু – পা হেঁটে ট্রামে গিয়ে উঠত এবং একদম অফিসের দোরগোড়ায় গিয়ে নামত । 

৭) মৃত্যুঞ্জয়ের বাড়ির দোকানবাজার করত কারা ? 

উঃ মৃত্যুঞ্জয়ের ছোটো ভাই ও চাকর তার বাড়ির দোকানবাজার ও কেনাকাটা করত । 

৮) ‘কয়েক মিনিটে মৃত্যুঞ্জয়ের সুস্থ শরীরটা অসুস্থ হয়ে গেল’— কারণ কী ছিল ?  

উঃ ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দের দুর্ভিক্ষপীড়িত কলকাতার ফুটপাথে প্রথমবার অনাহারে মৃত্যু দেখে মৃত্যুঞ্জয় অসুস্থ হয়ে পড়েছিল । 

৯) মনে আঘাত পেলে মৃত্যুঞ্জয়ের কী হয় ?   

উঃ মনে আঘাত পেলে মৃত্যুঞ্জয়ের শরীরে তার প্রতিক্রিয়া হয় । মানসিক কষ্ট থেকে শারীরিক অস্থিরতা তৈরি হয় । 

১০) ‘তখন সে রীতিমতো কাবু হয়ে পড়েছে’ — সে কাবু হয়ে পড়েছিল কেন ? 

উঃ কলকাতার ফুটপাথে প্রথম অনাহারে মৃত্যু দেখে মৃত্যুঞ্জয়ের মানসিক বেদনাবোধের সঙ্গে চলতে থাকে শারীরিক কষ্টবোধ । ফলে সে কাবু হয়ে পড়ে । 

১১) ‘একটু বসেই তাই উঠে গেল কলঘরে’— কলঘরে উঠে যাওয়ার কারণ কী ছিল ? 

উঃ কলকাতার ফুটপাথে প্রথম অনাহারে মৃত্যু দেখে মানসিক ও শারীরিকভাবে বিধ্বস্ত মৃত্যুঞ্জয় অফিসের কলঘরে গিয়ে বাড়ি থেকে খেয়ে আসা খাবারের সমস্তটা বমি করে দেয় । 

১২) ‘নিখিল যখন খবর নিতে এল’ – নিখিল এসে কী দেখল ? 

উঃ নিখিল এসে দেখল যে, কলঘর থেকে ফিরে মৃত্যুঞ্জয় জল পান করে খালি গ্লাস নামিয়ে রেখে দেয়ালের দিকে শূন্যদৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিল। 

১৩) নিখিলের সমপদস্থ মৃত্যুঞ্জয় নিখিলের তুলনায় কত টাকা মাইনে বেশি পায় এবং কেন ?

উঃ নিখিল ও মৃত্যুঞ্জয় সমপদস্থ হলেও মৃত্যুধ্বয়ের বেতন পঞ্চাশ টাকা বেশি। কারণ সে একটা বাড়তি দায়িত্ব পালন করে।  

১৪) ‘কে বাঁচায়, কে বাঁচে’ গল্পের নিখিলের চেহারা প্রকৃতি কেমন ছিল ? 

উঃ ‘কে বাঁচায়, কে বাঁচে’ গল্পের নিখিল রোগা এবং একটু অলস প্রকৃতির হলেও অত্যস্ত তীক্ষ্ণবুদ্ধির মানুষ।  

১৫) নিখিলের কীসে মন ছিল না ? 

উঃ নিখিলের সংসারে মন ছিল না । 

১৬) নিখিল অবসর জীবনটা কীভাবে কাটাতে চায় ? 

উঃ নিখিল বই পড়ে আর একটা চিন্তাজগৎ গড়ে তুলে অবসর জীবনটা কাটাতে চায় । 

১৭) মৃত্যুঞ্জয় ও নিখিলের বৈবাহিক জীবন কত কত বছরের ? 

উঃ মৃত্যুঞ্জয়ের বৈবাহিক জীবন ছ’বছরের এবং নিখিলের আট বছরের । 

১৮) ‘অন্য সকলের মতো মৃত্যুঞ্জয়কে সেও খুব পছন্দ করে’ – কী কারণে সে মৃত্যুঞ্জয়কে পছন্দ করে ? 

উঃ মৃত্যুঞ্জয় ছিল নিরীহ , শান্ত , দরদি , সৎ , সরল ভালোমানুষ । কিন্তু এসব কারণে নয় , মৃত্যুঞ্জয় আদর্শবাদের কল্পনা তাপস বলে নিখিল তাকে পছন্দ করত ।  

১৯) ‘তাকে অবজ্ঞেয় করে দিত’— কাকে , কীভাবে অবজ্ঞেয় করে দিত ?

উঃ মৃত্যুঞ্জয় দুর্বলচিত্ত , ভাবপ্রবণ ও আদর্শবাদী হলে তাকে খোঁচা দিয়ে ক্ষেপিয়ে তুলে তার মনের অন্ধকার দূর করে দেওয়া যেত । ফুটপাথে মৃত্যুজনিত বেদনাবোধকে মৃত্যুঞ্জয়ের কাছে অবজ্ঞেয় করে তোলা সম্ভব হত ।

২০) ‘তখন ভাবে যে নিখিল না হয়ে মৃত্যুঞ্জয় হলে মন্দ ছিল না’ – নিখিল কখন এমন ভাবে ?

উঃ মৃত্যুঞ্জয়ের অন্তরের আশ্চর্য মানসিক শক্তির কাছে। মাঝেমধ্যেই নিখিল কাবু হয়ে পড়ে। তখন সে এমন ভাবে । 

২১) ‘মৃত্যুঞ্জয়ের মানসিক ক্রিয়া- প্রতিক্রিয়া’ কেমন বলে নিখিলের মনে হয়েছে ?

উঃ মৃত্যুঞ্জয়ের মানসিক ক্রিয়া- প্রতিক্রিয়া শ্লথ বা মন্থর, কিন্তু নিস্তেজ নয় ।

২২) ‘মৃত্যুঞ্জয়ের রকম দেখেই নিখিল অনুমান করতে পারল’ – নিখিল কী অনুমান করতে পেরেছিল ?

উঃ নিখিল অনুমান করতে পারল যে, বড়ো একটা সমস্যার সঙ্গে মৃত্যুঞ্জয়ের সংঘর্ষ হয়েছে। আর সংকটের তীব্রতায় সে শার্শিতে আটকানো মৌমাছির মতো মাথা খুঁড়ছে। 

২৩) ‘যেন আর্তনাদ করে উঠল মৃত্যুঞ্জয়’- মৃত্যুঞ্জয় কী বলে আর্তনাদ করে উঠল?  

উঃ “মরে গেল। না খেয়ে মরে গেল।” বলে আর্তনাদ করে উঠল মৃত্যুঞ্জয়।  

২৪) ‘আরও কয়েকটি প্রশ্ন করে নিখিলের মনে হল’ — নিখিলের কী মনে হয়েছিল ? 

উঃ নিখিলের আরও কয়েকটি প্রশ্ন করে মনে হয়েছিল যে মৃত্যুহুয়ের ভিতরটা সে পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছে ।

২৫) ‘সেটা আশ্চর্য নয়’-  কোন ব্যাপারটা আশ্চর্য নয় ? 

উঃ  দুর্ভিক্ষের সময় কলকাতা শহরের ফুটপাথে অনাহারক্লিষ্ট মানুষের মৃত্যুর মতো সহজবোধ্য ব্যাপারটা মৃত্যুঞ্জয় বিশ্বাস করতে পারছে না , এটা নিখিলের কাছে আশ্চর্যের ব্যাপার নয় ।

২৬) অনাহারে মৃত্যুর রূপ দেখে মৃত্যুঞ্জয়ের মনে কী প্রশ্ন জেগেছিল ?

উঃ ক্ষুধার যন্ত্রণা নাকি মৃত্যুযন্ত্রণা কোন্‌টা বেশি ভয়ংকর ।

২৭) ‘পাহাড়প্রমাণ মালমশলা ঢোকাবার চেষ্টা করছে’- বলতে কী বোঝানো হয়েছে ?

উঃ পাহাড়প্রমাণ মালমশলা বলতে ফুটপাথের মৃত্যুর বীভৎসতা ক্ষুধা অথবা মৃত্যুর রূপ কিনা , না – খেয়ে মরা কী ও কেমন , না – খেয়ে মরতে কত কষ্ঠ হয় ও কেমন কষ্ট , ক্ষুধার যাতনা বেশি , না মৃত্যুযন্ত্রণা বেশি— এইসব ভাবনাকে বোঝানো হয়েছে ।

২৮) ‘এ অপরাধের প্রায়শ্চিত্ত কি?’ – মৃত্যুঞ্জয়ের এমন মন্তব্যের কারণ কী ছিল ?

উঃ আকালে পীড়িত হতভাগ্য মানুষদের খিদের জ্বালাকে উপেক্ষা করে, চার বেলা পেট ভরে খাওয়াকে অপরাধ মনে করে মৃত্যুঞ্জয় এমন মন্তব্য করেছে। 

২৯) ‘ধিক্। শত ধিক্ আমাকে’— নিজেকে ধিক্কার জানানোর কারণ কী? 

উঃ দুর্ভিক্ষপীড়িত মানুষের মৃত্যু নিজের চোখে দেখে মৃত্যুঞ্জয় ভাবে লোকবলের অভাবে যথেষ্ট ত্রাণকার্য হচ্ছে না অথচ সে চার বেলা খেয়ে পরে আত্মসুখী অলস জীবনযাপন করছে । তাই মৃত্যুঞ্জয় আত্মধিক্কার জানায় ।

৩০) ‘নিখিল চুপ করে থাকে’— কেন নিখিল চুপ করে থাকে ?

উঃ আকালে পীড়িত হতভাগ্যদের কষ্টে মৃত্যুঞ্জয়ের চোখ ছলছল করে । এই দেখে নিখিল চুপ করে থাকে ।

৩১) ‘নিখিলের মনটাও খারাপ হয়ে যায়’- এর কারণ কী ছিল ?

উঃ অনাহারগ্রস্ত মানুষদের কথা ভেবে মৃত্যুঞ্জয়ের চোখ ছলছল করে । সেই দরদের ছোঁয়া লেগে নিখিলেরও মন খারাপ হয়ে যায় ।

৩২) ‘এ আগুন নিভবে না ক্ষুধার’ — কী করলেও ক্ষুধার আগুন নিভবে না ?

উঃ দেশের সমস্ত দরদ একত্রিত করে ঢাললেও ক্ষুধার্ত মানুষের ক্ষুধার আগুন নিভবে না ।

৩৩) ‘কিন্তু সেটা হয় অনিয়ম’ — অনিয়মটি কী ?

উঃ রুঢ় বাস্তবকে উলটে মধুর আধ্যাত্মিক নীতিতে রুপান্তরিত করার চেষ্টাই হল অনিয়ম । এখানে নিখিল সে – কথাই বলতে চেয়েছে ।

৩৪) ভিক্ষা দেওয়া সম্পর্কে নিখিলের কোন মনোভাব প্রকাশ পেয়েছে ?

উঃ ভিক্ষা হল করুণার দান । তা মানুষকে পরনির্ভরশীল করে তোলে । তাই ভিক্ষা দেওয়া যতই পুণ্যকর্ম বলে মনে করা হোক , নিখিল তাকে ‘ অস্বাভাবিক পাপ বলে মনে করে ।

৩৫) ‘কিছু কিছু টাকা পাঠাতে হয়’ – কাকে, কোথায় টাকা পাঠাতে হয় ?

উঃ নিখিলকে প্রতিমাসে তিন জায়গায় টাকা পাঠাতে হয় ।

৩৬) ‘পাঁচ টাকা করে কমিয়ে দেবে কিনা’– নিখিলের এমন ভাবনার কারণ কী ছিল ?

উঃ দুর্ভিক্ষের সময়ে কালোবাজারির কারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম অত্যন্ত বেড়ে যাওয়ায় নিখিল নিজের সাংসারিক প্রয়োজনে বাধ্য হয়ে সাহায্যের পরিমাণ কমানোর কথা ভাবছিল।

৩৭) ‘একটা কাজ করে দিতে হবে ভাই’— এখানে কী কাজ করার কথা বলা হয়েছে ?

উঃ মৃত্যুঞ্জয় মাইনের পুরো টাকাটাই রিলিফ ফান্ডে দিতে চায় । নিখিলকে এই অনুরোধ জানিয়েই সে একটা কাজ করে দেওয়ার কথা বলে।

৩৮) ‘মাইনের টাকায় মাস চলে না’- মৃত্যুঞ্জয়ের মাইনের টাকায় । মাস চলে না কেন ?

উঃ মৃত্যুঞ্জয়ের পরিবারটি বড়ো। স্ত্রী-ছেলে-মেয়ে ও ভাইকে নিয়ে তার সংসারে ন-জন লোক। তাই মাইনের টাকায় মৃত্যুঞ্জয়ের মাস চলে না। 

৩৯) ‘আমায় কিছু একটা করতে হবে ভাই’- কী করার কথা বলা হয়েছে ?

উঃ শহরের ফুটপাথে অনাহারে মৃত্যু দেখে মৃত্যুঞ্জয় অপরাধবোধে ভুগতে থাকে। সেই তাগিদেই সে নিরন্ন মানুষদের জন্য কিছু একটা করার কথা ভাবে ।

৪০) ‘অন্ন থাকতে বাংলায় না খেয়ে কেউ মরত না’ – কোন যুক্তিতে নিখিল এমন কথা বলেছে ।

উঃ আকালে পীড়িত মানুষদের অখাদ্য গ্রুয়েল দেওয়ার বদলে যদি তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করা যেত , তাহলে অন্ন থাকতে বাংলায় কেউ না খেয়ে মরত না ।

৪১) ‘তুই পাগল নিখিল। বন্ধ পাগল।’— মৃত্যুঞ্জয়ের এমন মনে হয়েছিল কেন ?

উঃ অন্যকে ভিক্ষা দেওয়া পাপ কিংবা নিরন্ন মানুষদের স্বার্থপর করে তোলার সপক্ষে যুক্তি দেয় বলেই নিখিল সম্পর্কে মৃত্যুঞ্জয় এমন মন্তব্য করে। 

৪২) ‘ফেলে শহরের ফুটপাথ ধরে হেঁটে বেড়াতে লাগল। মৃত্যুঞ্জয় তাদের লক্ষ করে’- কাদের লক্ষ করে ?

উঃ ডাস্টবিনের ধারে, গাছের নীচে, খোলা ফুটপাথে, অনেক রাতে বন্ধ দোকানের সামনের রোয়াকে কিংবা ভোর চারটে থেকে লাইন দিয়ে বসে থাকা দুর্ভিক্ষপীড়িত, অনাহারক্লিষ্ট মানুষগুলোকে মৃত্যুঞ্জয় লক্ষ করে। 

৪৩) ‘এখন সেটা বন্ধ করে দিয়েছে’- কী বন্ধ করার কথা বলা হয়েছে ? 

উঃ মৃত্যুঞ্জয় দুর্ভিক্ষপীড়িত ফুটপাথবাসীর একই দুঃখ ও দুর্ভাগ্যের কাহিনি শুনে শুনে ক্লান্ত ও হতাশ হয়ে এখন তা শোনা বন্ধ করে দিয়েছে।  

৪৪) ‘কারো বুকে নালিশ নেই, প্রতিবাদ নেই’- কেন?  

উঃ দুর্ভিক্ষপীড়িত নিরন্ন হতভাগ্যের দল ভাগ্যের হাতে নিজেদের সঁপে দিয়ে সব মুখবুজে মেনে নেওয়ায় , তাদের কোনো নালিশ কিংবা প্রতিবাদ নেই ।

৪৫) ‘ভাষা ও বলার ভঙ্গি পর্যন্ত তাদের এক ধাঁচের’ – যাদের কথা বলা হয়েছে তাদের ভাষা ও বলার ভঙ্গি কেমন ?

উঃ গ্রাম্য মানুষের গ্রামীণ আঞ্চলিক ভাষাগত উচ্চারণ আর অনাহারক্লিষ্ট মানুষের অর্ধচেতন ঝিমানো সুরে একই দুঃখ ও হতভাগ্যের কাহিনি প্যানপ্যানানির মতো বা একঘেয়ে শোনায় ।

৪৬) ‘অখাদ্য গ্রুয়েল’ – ‘গ্রুয়েল’ কী?

উঃ গ্রুয়েল হল দুর্ভিক্ষের সময় সরকারি লঙ্গরখানা থেকে বিতরিত এক ধরনের যব জাতীয় তরল খাদ্য। 

৪৭) ‘মৃত্যুঞ্জয়ের বাড়ির অবস্থা শোচনীয়’- বলতে কী বোঝানো হয়েছে ?

উঃ মৃত্যুঞ্জয় অফিসে না গিয়ে ফুটপাথবাসী নিরন্ন মানুষের সঙ্গে দিন কাটায়। তার স্ত্রী অর্ধাহারে শয্যাশায়ী। ছেলেমেয়েরা অবহেলায় , খিদেয় কাঁদে। তাই তার বাড়ির অবস্থা শোচনীয়। 

৪৮) ‘নিখিলকে বার বার আসতে হয়’- কেন ?

উঃ মৃত্যুঞ্জয়ের অনুপস্থিতিতে বাড়ির বেহাল ও শোচনীয় অবস্থা দেখে দরদ ও ভালোবাসার তাগিদে নিখিল সেখানে বার বার আসে। 

৪৯) ‘উঠতে পারলে আমিই তো ওর সঙ্গে ঘুরতাম ঠাকুরপো’- টুনুর মা এরকম কথা বলে কেন ?

উঃ মৃত্যুঞ্জয়ের সঙ্গে থেকে থেকে টুনুর মাও অনেকটা ওর মতো হয়ে গেছে বলেই এরকম কথা বলে। 

৫০) ‘ছেলেমেয়েগুলির জন্য সত্যি আমার ভাবনা হয় না’- তাহলে কীসের ভাবনা হয় ?

উঃ টুনুর মায়ের তার নিজের ছেলেমেয়েদের বদলে কেবলই মনে পড়ে ফুটপাথবাসী নিরন্ন লোকগুলোর কথা ।

৫১) ‘নিখিল শোনে আর তার মুখ কালি হয়ে যায়’- ‘মুখ কালি’ হওয়ার কারণ কী ছিল ?

উঃ সহকর্মী ও বন্ধু মৃত্যুঞ্জয়ের হতাশ ও মুষড়ে যাওয়া অস্বাভাবিক অব স্থার কথা শুনে দুঃখে নিখিলের ‘মুখ কালি হয়ে যায়’। 

You cannot copy content of this page

Need Help?