পুঁইমাচা গল্পের বিষয়বস্তু

পুঁইমাচা গল্পের বিষয়বস্তু

শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের পক্ষ থেকে একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য পুঁইমাচা গল্পের বিষয়বস্তু প্রদান করা হলো। একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা এই পুঁইমাচা গল্পের বিষয়বস্তু পাঠ করে নিম্নে দেওয়া গল্পের প্রশ্নের উত্তরগুলি তৈরি করবে।

শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের সকল প্রকার আপডেট লাভ করতে মোবাইল স্ক্রিনের বা’দিকের নিম্নের অংশে থাকা বেল আইকনটিতে (🔔) টাচ করে শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের নোটিফিকেশন অন করে রাখুন। 

পুঁইমাচা গল্পের বিষয়বস্তুঃ

কথাশিল্পী বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘পুইমাচা’ গল্পে এক দরিদ্র ব্রাহ্মণ পরিবারের দুঃখ-যন্ত্রণার কথা বর্ণিত হয়েছে। সহায়হরি চাটুয্যে এই ব্রাহ্মণ পরিবারের অসহায় কর্তা। তাঁর তিন মেয়ে। মেয়েদের ঠিকমতাে ভরণপােষণ করার ক্ষমতা সহায়াহরির নেই। মানুষের কাছ থেকে এটা ওটা চেয়েচিন্তে এনে তিনি মেয়েদের খাওয়াতে চান। কিন্তু স্ত্রী অন্নপূর্ণা এটা একেবারেই পছন্দ করেন না। স্বামীর এই মনোভাবকে তিনি কঠোর ভাষায় তিরস্কার করেন। তাঁর কথা হলাে “আমার জোটে খাব, না জোটে খাব না।” তাই, বলে তিনি যে মেয়েদের ভালােবাসতেন না, তা নয়। অন্নপূর্ণা তাঁর মেয়েদের খুব ভালােবাসতেন। পুজো পার্বণের সময় যে করেই হোক তিনি মেয়েদের সাধ্যমতাে খাওয়ানাের প্রচেষ্টা করতেন। কোন মেয়ে কী খেতে ভালােবাসে তা তিনি জানতেন। আর সেগুলো সংগ্রহেরও প্রচেষ্টা তিনি করতেন। 

এ ব্যাপারে তাঁর প্রচেষ্টার কোন কার্পণ্য কখনও দেখা যায়নি। এক্ষেত্রে সহায়হরি ছিলেন একটু ভিন্ন প্রকৃতির। দায়িত্বজ্ঞানহীন এই ব্রাহ্মণ লজ্জা না করে অপরের জিনিস চেয়ে বাড়িতে নিয়ে আসতেন। তাঁর পিতৃবাৎসল্য এতই প্রবল ছিল যে, স্ত্রীর তিরস্কারেও তিনি অবদমিত হতেন না।

সহায়হরির আরেকর্টি অভ্যাস ছিল মাছ ধরার। এক্ষেত্রে তিনি প্রচণ্ড উৎসাহী ছিলেন। এসব কাজে ডুবে থাকতে গিয়ে বড় মেয়ে ক্ষেন্তির বিয়ের বয়স যে উত্তীর্ণ হতে চলেছে, এ ব্যাপারে তার খেয়াল থাকত না। এই নিয়ে স্ত্রী অন্নপূর্ণা তাঁকে কটু কথাও বলতেন। অভাবের সংসারে দুঃখকষ্ট যন্ত্রণা যেন লেগেই থাকত। ক্ষেন্তির একবার বিয়ের সম্বন্ধ স্থির হয়েও ভেঙে গিয়েছিল। এ নিয়েও সামাজিক যন্ত্রণার অন্ত ছিল না। সেই মেয়ে পনেরোয় পা দিলেও তার বিয়ের ব্যাপারে সহায়হরির চিন্তা নেই।

এজন্য অন্নপূর্ণার রাতের দূর হয়ে গেছে। ক্ষেন্তি পুঁইশাক খেতে খুব ভালােবাসত। একবার অরন্ধনের আগের দিন বাড়িতে পুঁইশাক রান্না হলে ক্ষেন্তি একাই তার অর্ধেক খেয়ে ফেলেছিল। রায়েদের ফেলে দেওয়া পাকা পুঁইশাকের ডাটা সংগ্রহ করে ক্ষেন্তি রেঁধে খাওয়ার জন্য বাড়িতে নিয়ে এলে মা অন্নপূর্ণা তাকে তীব্র ভাষায় ভৎসনা করে সব ফেলে দিয়েছিলেন। পরে সেই শাকেরই কিছু অংশ রান্না হলে ক্ষেন্তি পরম তৃপ্তি সহকারে তা গলাধঃকরণ করেছিল। পছন্দসই খাবার পেলে ক্ষেন্তি অনেকটা পরিমাণ খেয়ে নিত। 

একসাথে আঠারাে ঊনিশটা পিঠে সে খেয়ে নিতে পারতো। এ নিয়ে সংসারে কখনও কোন কথা উঠত না। কোন প্রকার সংকোচ না করে সে মায়ের কাছ থেকে নারকেল কোরা চেয়ে নিয়ে গােগ্রাসে গিলত। রায়েদের ক্ষেত থেকে পাকা পুঁইশাক এনে মায়ের গালাগাল খাওয়ার পর ক্ষেন্তি কোথা থেকে একটা কুড়িয়ে পাওয়া পুঁইচারা নিয়ে এসে উঠোনের একপাশে পুঁতে দেয়। প্রতিদিন জল ঢেলে ঢেলে সে চারাটিকে বাঁচিয়ে তােলে। বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তার জন্য একটা মাচাও তৈরি করে ক্ষেন্তি। কিন্তু এই পুঁইশাক খাওয়ার যােগ্য হওয়ার পূর্বেই ক্ষেন্তির চল্লিশাের্ধ এক পাত্রের সঙ্গে বিয়ে হয়ে যায়। 

পনেরাে টাকা বাকি থাকার কারণে ক্ষেন্তিকে আর বাপের বাড়িতে আসতে দেওয়া হয়নি। অবশেষে বছর ঘুরতে না ঘুরতে বসন্তরােগে আক্রান্ত হয়ে ক্ষেতি মারা যায়। এরপর কয়েক মাস কেটে গিয়েছে। আবার পৌষ পার্বণের দিন ঘনিয়ে আসে। সন্ধ্যার সময় অন্নপূর্ণ রান্না ঘরের মধ্যে বসে মেয়েদের জন্য পিঠে তৈরি করছিলেন। পুঁটি ও রাধী উনােনের পাশে বসে আগুন পােয়াচ্ছিল। অনেক রাতে পিঠে তৈরি শেষ হলে অন্নপূর্ণা মেয়েদের পিঠে খেতে বসিয়ে দিলেন। তখন আকাশে জ্যোৎস্না ছড়িয়ে পড়েছে। পিঠে খাওয়ার পূর্ব মুহূর্তে হঠাৎ পুঁর্টির ক্ষেন্তি দিদির কথা মনে পড়ল। দিদি যে পিঠে খেতে ভালােবাসতাে এ কথা তারা কেউ ভােলেনি। পুঁটি বলে উঠল দিদি বড় ভালােবাসত। সকলেই কিছুক্ষণ নির্বাক হয়ে বসে রইল। তারপর তাদের সকলের দৃষ্টি একসাথে কেমন করে উঠোনের এক কোণে সেই পুঁইমাচার্টির উপর গিয়ে পড়ল।

পুঁইমাচাৰ্টি বাড়ির সেই পুইলােভী মেয়েটির স্মৃতি পাতায় পাতায়, শিরায় শিরায় জড়িয়ে কেমন ভরপুর হয়ে আছে। বর্ষার জল ও কার্তিকের শিশির গায়ে নিয়ে কচিকচি সবুজ ডগাগুলাে মাচা ছাড়িয়ে বাইরে ছড়িয়ে পড়েছে। কিন্তু এর জন্মদাত্রী আজ বেঁচে নেই। তাই যেন এতে কেউ হাতও দেয়নি। 

গল্পে এক সহজসরল গ্রাম্য বালিকার পুঁইপ্রীতির অন্তরালে এক দরিদ্র ব্রাহ্মণ দম্পতির সন্তান বাৎসল্যের সুগভীর চিত্র অঙ্কিত হয়েছে। সহায়হরি তাঁর সন্তানদের মনােতুষ্টির জন্য এমন কোনাে কাজ নেই যা করতে পারতেন না। আবার আত্মমর্যাদা বজায় রেখে অন্নপূর্ণার সন্তানবাৎসল্য ফল্গুধারার মতােই সর্বদা উৎসারিত হয়েছে। শত দারিদ্র্য তাঁদের বাৎসল্যকে ম্লান করতে পারেনি। 

পুঁইমাচা গল্পের প্রশ্নের উত্তর দেখতে এই লিঙ্কটি অনুসরণ করতে হবে 

একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির সব বিষয়ের সিলেবাস ও নম্বর বিভাজন দেখতে এই লিঙ্কে ক্লিক/টাচ করতে হবে 

শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের কিছু গুরুত্বপূর্ণ লিঙ্ক নিম্নে প্রদান করা হলোঃ

শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের সকল প্রকার নোট, সাজেশন, প্রশ্নপত্র ও মক টেষ্টের সুবিধা গ্রহণ করতে নিম্নের ছবিতে ক্লিক/টাচ করে বিষদ তথ্য জেনে নাওঃ 

paid courses

Ads Blocker Image Powered by Code Help Pro

Ads Blocker Detected!!!

আমরা শনাক্ত করেছি যে আপনি বিজ্ঞাপন ব্লক করতে এক্সটেনশন ব্যবহার করছেন। এই বিজ্ঞাপন ব্লকার নিষ্ক্রিয় করে আমাদের সমর্থন করুন।

Powered By
Best Wordpress Adblock Detecting Plugin | CHP Adblock

You cannot copy content of this page

Need Help?