ষষ্ঠ শ্রেণি বাংলা মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্ক

ষষ্ঠ শ্রেণি বাংলা মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্ক

শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের পক্ষ থেকে ষষ্ঠ শ্রেণি বাংলা মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্ক প্রদান করা হলো। এই প্রশ্নের উত্তরগুলি ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। 

শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের সকল প্রকার আপডেট লাভ করতে মোবাইল স্ক্রিনের বা’দিকের নিম্নের অংশে থাকা বেল আইকনটিতে (🔔) টাচ করে শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের নোটিফিকেশন অন করে রাখুন।

ষষ্ঠ শ্রেণি বাংলা মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্ক (পার্ট ৫):

নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর দাওঃ

১) “ধানকাটার পর একেবারে আলাদা দৃশ্য”– ‘মরশুমের দিনে’ গদ্যাংশ অনুসরণে সেই দৃশ্য বর্ণনা করো। 

উৎসঃ

        লেখক “সুভাষ মুখোপাধ্যায়” রচিত “মরশুমের দিনে” গল্প থেকে প্রশ্নোক্ত অংশটি চয়ন করা হয়েছে। এই গল্পে আমরা ধান কাটার পরের দৃশ্যের বর্ণনা লাভ করি।

ধান কাটার পরের দৃশ্যঃ

        ধান কাটার পর মাঠে যতদূর দৃষ্টি যায়, চোখে পড়ে রুক্ষ মাটির শুকনো ও কঙ্কালসার চেহারা। রোদের প্রখর তাপে তার দিকে দৃষ্টিপাত করা যায় না। গোরুর গাড়ির চাকায়, মানুষের পায়ে রাস্তার ধুলো কখনও ঘূর্ণিঝড়ে বা দমকা হাওয়ায় উড়ে এসে চোখে-মুখে ভরে যায়।

        বেলা বাড়তেই মাটি গরম হয়ে ওঠে। যারা মাঠে যায়, তারা তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরে আসে। পুকুর, নদী, খাল, বিল সব শুকিয়ে যায়। আগুনের হলকায় চারিদিকে হাহাকার শোনা যায়। রাখালেরা ছড়ি-পাঁচন হাতে বট অশ্বত্থ, আম-কাঁঠালের ছায়ায় বসে থাকে। মানুষ জলাশয়ের পাশের রাস্তা ধরে গাছপালার ছায়ায় যাতায়াত করে। 

২) দিন ও রাতের পটভূমিতে হাটের চিত্র ‘হাট’ কবিতায় কীভাবে বিবৃত হয়েছে তা আলোচনা করো।

উৎসঃ

        কবি “যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত” রচিত “হাট” কবিতায় আমরা দিন ও রাতের পটভূমিতে হাটের চিত্ররূপ লাভ করি।

দিন ও রাতের পটভূমিতে হাটের চিত্রঃ

        দূরে দূরে ছড়ানো দশ-বারোখানি গ্রামের কেন্দ্রে অবস্থিত একটি হাটের ছবি কবি কবিতায় অঙ্কন করেছেন। সারাদিন এই হাট অসংখ্য মানুষের কোলাহলে মুখরিত থাকে। আগত মানুষের পণ্যসামগ্রী ক্রয়-বিক্রয়কে কেন্দ্র করে তাদের নিরন্তর দরাদরি চলে। নদীর এক পারের মানুষ অন্য পারে বিক্রির লক্ষ্যে পণ্যসামগ্রী নিয়ে এলে ক্রেতারা তাকে ঘিরে ধরে। সকলেই যাচাই করে দ্রব্যসামগ্রী ক্রয় করতে চায়। তাদের হাতের ছোঁয়ায় সকালে গাছ থেকে পাড়া ফল বিকেলে মলিন হয়ে যায়। তারা কেউ হয়তো লাভবান হয়, আবার কেউ ক্ষতির সম্মুখীন হয়। 

        সারাদিনের কার্যক্রমের পরে যখন বিকেলে হাট ভাঙ্গে, সেই সন্ধ্যায় তার অন্য এক রুপ দেখা যায়। সন্ধ্যায় হাটে কোনো প্রদীপ জ্বলে না। ক্রয়-বিক্রয় শেষে যখন সকলে ঘরে ফিরে যায়, তখন প্রকৃতির বুকে নেমে আসে নিবিড় অন্ধকার। নদীর পাড় থেকে প্রবহমান বায়ু বন্ধ দোকানগুলির জীর্ণ বাঁশের ফাঁক দিয়ে হাহাকারের মত আওয়াজ তুলে বয়ে যায়। এক একাকী কাক যেন রাতকে ডেকে আহ্বান জানায়। সকালের হাটের ব্যস্ততা রাতের অন্ধকারে যেন মিলিয়ে যায়। 

৩) “মাটির ঘরে দেয়ালচিত্র” রচনায় সাঁওতালি দেয়ালচিত্রের বিশিষ্টতা কীভাবে ফুটে উঠেছে? 

উৎসঃ

        লেখক “তপন কর” রচিত “মাটির ঘরে দেয়ালচিত্র” রচনায় আমরা সাঁওতালি দেয়ালচিত্রের বর্ণনা লাভ করি।

সাঁওতালি দেয়ালচিত্রের বিশিষ্টতাঃ

        আদিবাসী উপজাতিদের মধ্যে দেয়াল চিত্র অঙ্কনে সাঁওতালি দেয়ালচিত্রের বিশিষ্টতা অনন্য। তাদের দেয়াল চিত্রে প্রধানত নানা জ্যামিতিক আকারের প্রাধান্য পরিলক্ষিত হয়। সেই সব দেয়ালচিত্রে থাকে লম্বা রঙ্গিন ফিতের মতো সমান্তরাল রেখা, চতুস্কোন ও ত্রিভুজ। 

        চতুষ্কোণের ভিতর চতুষ্কোন বসিয়ে বা ত্রিভুজের ভিতরে ত্রিভুজ বসিয়ে নকশা করা হয়। মুল বেদীটিকে তারা কালো রঙ করে। তার উওর চওড়া রঙিন সমান্তরাল রেখা এঁকে উপরে সাদা, গেরুয়া, আকাশি ও হলদে রঙের ত্রিভুজ ও চতুষ্কোণের নকশা কাটা হয়। এইভাবে প্রায় ছয় ফুট উঁচু চিত্র তারা অঙ্কন করে। এভাবেই তারা দেয়ালচিত্র অঙ্কনে বিশিষ্ট স্থান অধিকার করেছে। 

অনলাইন কুইজে অংশগ্রহণ করতে এই লিঙ্কটি অনুসরণ করতে হবে 

৪) “পিঁপড়ে” কবিতায় পতঙ্গটির প্রতি কবির গভীর ভালোবাসার প্রকাশ ঘটেছে-আলোচনা করো। 

উৎসঃ

        কবি “অমিয় চক্রবর্তী” রচিত “পিঁপড়ে” কবিতায় পতঙ্গটির প্রতি কবির গভীর ভালোবাসার প্রকাশ পরিলক্ষিত হয়।

পতঙ্গটির প্রতি কবির গভীর ভালোবাসার প্রকাশঃ

        কবি পিঁপড়েকে সহানুভূতির চোখে দেখে বলেছেন, “আহা পিঁপড়ে ছোটো পিঁপড়ে”। এই ‘আহা’, ‘ছোটো’ শব্দগুলি থেকে পিঁপড়ের প্রতি কবির অকৃত্তিম ভালোবাসার পরিচয় আমরা পাই।

        কবি পিঁপড়ের ব্যস্ত চলাফেরার মধ্যে মানুষের ব্যস্ততার মিল খুঁজে পান। সাধারণত মানুষ যেখানে এই তুচ্ছ পিঁপড়েদের পায়ে মাড়িয়ে চলে যায়, সেখানে কবি আশা করেছেন এই পৃথিবীতে যেনো পিঁপড়েদেরও স্থান হয়। আর এর মধ্য দিয়েই পিঁপড়েদের প্রতি কবির গভীর ভালোবাসার পরিচয় পাওয়া যায়। 

৫) “ফাকি” গল্পের অন্যতম প্রধান চরিত্র একটি নিরীহ, নিরপরাধ আমগাছ- উদ্ধৃতিটি কতদূর সমর্থনযোগ্য? 

উৎসঃ

        লেখক “রাজকিশোর পট্টনায়ক”-এর লেখা “ফাঁকি” গল্পে আমরা একটি নিরীহ, নিরপরাধ আমগাছের পরিচয় লাভ করি।

উদ্ধৃতিটির সমর্থনে যুক্তিঃ

         গল্পের কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থান করছে একটি আম গাছ। গোপালের বাবার তৈরি একটি কলমি আমগাছের চারা ধীরে ধীরে নিজের চেষ্টায় বেড়ে উঠেছিল। বাড়ির লোকজন যেমন তার পরিচর্যা করতো, তেমনই পাড়ার লোক বা ছেলেরাও তার নীচে খেলাধুলো, গল্প করা, বই পড়া, দোল খেতো। গাছের পাতা, ডাল সকলের নিত্যদিনের কাজের জিনিস হয়ে উঠেছিল। এইভাবে বিরাট আকারের এই গাছটি গোপালের বাড়ির নিশানায় পরিণত হয়। বাড়ির হাঁদা ছেলেকে যেমন সবাই আদর করে গায়ে হাত বোলায়, তেমনই গাছটির ফল ও গাছের গায়ে পাতায় হাত বুলিয়ে বাড়ির অন্যরা যেন তার সঙ্গে একাত্মতা অনুভব করতো।

                 একদিন আষাঢ়ের ঝড়ে উই ধরে ফোঁপরা হয়ে যাওয়া গাছটি পড়ে যায়। এইভাবে আমগাছ লাগানো, তার বেড়ে ওঠা, বছরে একবার সামান্য কয়েকটি ফল দিয়ে বাড়ির লোককে খুশি করা ও সবশেষে তার ঝড়ে হঠাৎ করে ফাঁকি দিয়ে চলে যাওয়াই গল্পের প্রধান বিষয়বস্তু। তাই আলোচনার পরিশেষে বলা যায় উদ্ধৃতিটি যথার্থ। 

৬) “পৃথিবী সবারই হোক”- এই আশীর্বাণী “আশীর্বাদ” গল্পে কীভাবে ধ্বনিত হয়েছে? 

উৎসঃ

        লেখক “দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদার”-এর লেখা “আশীর্বাদ” গল্প থেকে প্রশ্নোক্ত অংশটি চয়ন করা হয়েছে।

বক্তাঃ

        প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটির বক্তা হল পিঁপড়ে।

গল্পে মন্তব্যের পরিচয়ঃ

        একদিন প্রচণ্ড বৃষ্টির সময় পিঁপড়ে আশ্রয় নিয়েছিল এক ঘাসের পাতার নীচে।  পিঁপড়ে মাটির নীচে, আর ঘাস মাটির উপরে থাকলেও প্রকৃতপক্ষে মাটি তাদের দুজনেরই। তারপর বৃষ্টি এসে তাদের সাথে গল্প করলে জানা যায় যে, এই ঘাসের দল বৃষ্টির জন্যই আবার ধুলো ঝেড়ে উঠে বসতে পারে।

        এভাবেই বোঝা যায় যে, পৃথিবীতে সবারই প্রয়োজন আছে। তাই পিঁপড়ে সকলের উদ্দেশ্যে কামনা করে যে, এই পৃথিবীর রূপ-রস-গন্ধ-স্পর্শ যেন সকলের উপভোগ্য হয়। 

৭) “ছোট্ট গাড়ির মধ্যে যতটা আরাম করে বসা যায় বসেছি”- এর পরবর্তী ঘটনাক্রম “এক ভূতুড়ে কাণ্ড” গল্প অনুসরণে লেখো।

উৎসঃ

       লেখক “শিবরাম চক্রবর্তী” রচিত “এক ভূতুড়ে কাণ্ড” গল্প থেকে প্রশ্নোক্ত অংশটি গ্রহণ করা হয়েছে।

পরবর্তী ঘটনার পরিচয়ঃ

        নির্জন জায়গায় সাইকেলের টায়ার ফেঁসে কথক চরম বিপদে পড়েন। প্রথমে একটি লরি আসলেও তা না দাঁড়িয়েই চলে যায়। তারপর একটি ধীর গতির বেবি অস্টিন মোটরগাড়ির আগমন ঘটে। কথক মরিয়া হয়ে চলন্ত গাড়িতেই উঠে পড়েন। গাড়িতে উঠে তিনি দেখেন যে, গাড়ি চললেও তাতে কোনো ড্রাইভার ছিলো না ! এমনকি সেই গাড়ির ইঞ্জিনও ছিলো বন্ধ !

        কথক প্রাথমিকভাবে ভূতের ভয়ে চমকে ওঠেন। ধীরে ধীরে গাড়ির সিটের আরাম কথকের আলস্যকে জাগিয়ে তোলায়, তিনি সেই গাড়িতেই বসে থাকেন। অবশেষে এক রেলওয়ে ক্রসিং এর সামনে এসেও যখন গাড়িটির থামার কোন লক্ষণ দেখা যায় না, তখন তিনি প্রাণ বাঁচাতে সেই গাড়ি থেকে নেমে আসেন।

         কিন্তু অবাক হয়ে কথক দেখেন যে, গাড়িটিও থেমেছে। গাড়ির পেছন থেকে একজন চশমা পরা ব্যক্তি বেরিয়ে এসে জানান যে, মাঝপথে তার গাড়িটি খারাপ হয়ে যাওয়ায় তিনি গাড়িটিকে ঠেলে আনছিলেন এবং কথকের সাহায্য পেলে তার খুব উপকার হবে। এভাবেই কথকের অকারণ ভূতের ভয় দূর হয়। 

৮) “এক যে ছিল ছোট্ট হলুদ বাঘ”- “বাঘ” কবিতা অনুসরণে তার কীর্তিকলাপের পরিচয় দাও।

উৎসঃ

     “নবনীতা দেব সেন”-এর লেখা “বাঘ” কবিতা থেকে উদ্ধৃত অংশটি গৃহীত হয়েছে।

বাঘের কীর্তিকলাপের পরিচয়ঃ

         একটি ছোট্ট বাঘের রাগ, দুঃখ ও নানা কর্মকাণ্ডের পরিচয় আমরা এই কবিতায় লাভ করি। তার বাবা-মায়ের সঙ্গে সে থাকত পাখিরালয়ে। সেখানে শুধুই পাখি ছিল। ছাগল, ভেড়া, হরিণ কিছুই সেখানে ছিলো না। খিদের চোটে মনে রাগ ও অসন্তোষ নিয়ে পাখি ধরতেই সে বাধ্য হতো। কিন্তু পাখিরা উড়ে পালালে সে আরও রেগে যায়।

         এরপর খিদে মেটানোর জন্য সে নদীর ধারে যায় কাঁকড়া ধরতে। সে জানত না যে, দাঁড়া দিয়ে কাঁকড়া চিমটে ধরে। বাঘছানা গর্তে থাবা ঢোকাতেই কাঁকড়া তার দাঁড়া দিয়ে তার থাবা চিমটে ধরে। যন্ত্রণায় কেঁদে ওঠে বাঘছানা। তার বাবা এসে তাকে বিপদ থেকে উদ্ধার করে।

        এরপর বাঘছানা মাছ ধরতে যায় জলকাদায়। আর তার এই কাজে লজ্জা পেয়ে তার মা তাকে বলেন যে, তার ভোঁদড়ের মত মাছ ধরা কখনোই উচিত নয়; কারন সে আসলে বাঘ !

        অবশেষে বাঘছানার কষ্ট উপলব্ধি করে তার বাবা মা সজনেখোলায় বাড়ি বদলালে বাঘছানা ভুলেও আর পাখিরালয়ে যায় না। 

শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের কিছু গুরুত্বপূর্ণ লিঙ্ক নিম্নে প্রদান করা হলোঃ 

শিক্ষালয়ের সাথে ফেসবুকে যুক্ত হতে নিম্নের ছবিতে ক্লিক/টাচ করতে হবেঃ sikkhalaya

You cannot copy content of this page

Need Help?