বঙ্গভূমির প্রতি কবিতার প্রশ্নের উত্তর
শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের পক্ষ থেকে সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য সপ্তম শ্রেণি বাংলা ‘বঙ্গভূমির প্রতি কবিতার প্রশ্নের উত্তর’ প্রদান করা হলো। শিক্ষার্থীরা এই ‘বঙ্গভূমির প্রতি কবিতার প্রশ্নের উত্তর’ অনুশীলন করলে পাঠ্য কবিতাটি আরো ভালো করে তৈরি করতে সমর্থ হবে।
শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের সকল প্রকার আপডেট লাভ করতে মোবাইল স্ক্রিনের বা’দিকের নিম্নের অংশে থাকা বেল আইকনটিতে (🔔) টাচ করে শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের নোটিফিকেশন অন করে রাখুন।
বঙ্গভূমির প্রতি কবিতার MCQ প্রশ্নের উত্তরঃ
১) ‘বঙ্গভূমির প্রতি’ কবিতার কবি- মাইকেল মধুসূদন দত্ত
২) কবি বঙ্গভূমির কাছে প্রার্থনা করেছেন- অমরতা
৩) ‘মধুহীন কোরো না গো তব মনঃ কোকনদে’- এখানে ‘মধু’ বলতে বোঝানো হয়েছে- কবি মধুসূদন
৪) ‘কোকনদ’ শব্দের অর্থ হল- লাল পদ্ম
৫) কবি জীবনকে তুলনা করেছেন- নদের সঙ্গে
৬) নরকুলে সে-ই ধন্য- লোকে যাকে ভোলে না
৭) মধুময় তামরস / কি বসন্ত , কি- শরদে
বঙ্গভূমির প্রতি কবিতা থেকে শূন্যস্থান পূরণঃ
১) রেখো না দাসেরে মনে, এ ______ করি পদে।
উঃ মিনতি
২) ______ কোরো নাগো তব মনঃ কোকনদে।
উঃ মধুহীন
৩) এ _______ হতে নাহি ______ তাহে।
উঃ দেহ আকাশ / খেদ
৪) চির স্থির কবে ______ হয় রে জীবন নদে?
উঃ নীর
৫) মনের মন্দিরে সদা সেবে ______।
উঃ সর্বজন
৬) _______ তামরস কি বসন্ত, কি শরদে!
উঃ মধুময়
বঙ্গভূমির প্রতি কবিতা থেকে MCQ MOCK TEST প্রদান করতে এই লিঙ্কটি অনুসরণ করতে হবে
বঙ্গভূমির প্রতি কবিতার SAQ প্রশ্নের উত্তরঃ
১) ‘বঙ্গভূমির প্রতি’ কবিতায় এক বিদেশি কবির নাম আছে, তিনি কে ?
উঃ ‘বঙ্গভূমির প্রতি’ কবিতায় ইংরেজ কবি লর্ড বায়রন-এর নাম আছে।
২) মা যাতে মনে রাখেন, সেইজন্য কবি নিজেকে কী বলে উল্লেখ করেছেন ?
উঃ মা-এর মনে রাখার জন্য কবি নিজেকে ‘দাস’ বলে উল্লেখ করেছেন।
৩) ‘প্রবাস’ বলতে কী বোঝায় ?
উঃ ‘প্রবাস’ বলতে বোঝায় বিদেশ।
৪) ‘মক্ষিকা’ শব্দটির অর্থ কী ?
উঃ ‘মক্ষিকা’ শব্দটির অর্থ হল ‘মাছি’।
৫) ‘অমৃত’ শব্দটি দিয়ে কবি কী বোঝাতে চেয়েছেন ?
উঃ ‘অমৃত’ শব্দটি দিয়ে কবি পান করে মৃত্যু হবে না, এমন এক পানীয়কে বুঝিয়েছেন।
৬) ‘সুবরদে’ শব্দটি দিয়ে কবি কাকে সম্বোধন করেছেন ?
উঃ ‘সুবরদে’ শব্দটির অর্থ হল- সুবরদাত্রী। এই শব্দ দ্বারা তিনি বঙ্গভূমিকে সম্বোধন করেছেন।
৭) ‘ফুটি যেন স্মৃতি-জলে’- এখানে কার, কী হয়ে ফোটার কথা বলা হয়েছে ?
উঃ উদ্ধৃত অংশে কবির স্মৃতি জল পদ্ম হয়ে ফুটে ওঠার কথা বলা হয়েছে।
বঙ্গভূমির প্রতি কবিতার সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তরঃ
১) ‘বঙ্গভূমির প্রতি’ কবিতায় কবির প্রথম প্রার্থনা কী ছিল ?
উঃ প্রবাসে থাকাকালীন কবি এক মুহূর্তের জন্যও তাঁর অতি প্রিয় বঙ্গভূমিকে ভুলতে পারেননি। তাই বঙ্গভূমির প্রতি তাঁর প্রথম প্রার্থনাই ছিল যে, মা যেন দাস অর্থাৎ কবিকে মনে রাখেন। এই প্রার্থনাকেই তিনি ‘মিনতি’ বলেছেন।
২) ‘প্রবাসে, দৈবের বশে’- প্রবাসে থাকাকালীন কোন্ ঘটনা ঘটার প্রসঙ্গ এনেছেন কবি ?
উঃ প্রবাসে থাকাকালীন ভাগ্যের পরিহাসে কবি তাঁর মৃত্যু ঘটার প্রসঙ্গ এনেছেন। এক্ষেত্রে তাঁর বক্তব্য ভাগ্যের পরিহাসে যদি তাঁর জীবনতারা দেহ-আকাশ থেকে খসে যায়, তবু তিনি সেজন্য দুঃখ করবেন না।
৩) ‘চিরস্থির কবে নীর, হায় রে, জীবন-নদে ?’- এই উদাহরণের আড়ালে কবি কী বলতে চেয়েছেন ?
উঃ ‘বঙ্গভূমির প্রতি’ কবিতায় কবি বলতে চেয়েছেন যে, মানুষ জন্মগ্রহণ করলে তাকে একদিন মরতেই হয়, কেউই অমর নয়। যেমন জীবনরূপ নদীতে জল কখনও স্থির হয়ে থাকে না, তেমনি মানুষের জীবনও যে কোনো দিন শেষ হয়ে যেতে পারে।
৪) ‘হেন অমরতা আমি’- এখানে কবির অমরতা লাভের রূপটি কেমন ?
উঃ ‘বঙ্গভূমির প্রতি’ কবিতাটিতে কবি জন্মভূমির প্রতি তাঁর অকৃত্রিম শ্রদ্ধা – ভালোবাসা প্রকাশ করেছেন। মাতৃরূপিণী শ্যামা জন্মদে-র কাছে সেই অমরতা প্রার্থনা করেছেন, যে অমরতা ধরা থাকে মানবমনে। কবির অমরতা হল মানুষ যেন তাঁকে না ভোলে, মনের মন্দিরে সর্বদা ধরে রাখে।
৫) ‘ভুল দোষ, গুণ ধরো’- ‘ভুল দোষ’ বা ‘গুণ’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে ?
উঃ কবি ‘মধুসূদন দত্ত’ তাঁর ‘বঙ্গভূমির প্রতি’ কবিতায় মাতৃভাষাকে উপেক্ষা করে, স্বদেশ ত্যাগ করে, বিদেশে গিয়েছিলেন বিদেশি ভাষায় সাহিত্যচর্চা করে খ্যাতিমান হবেন বলে। মনের এই সাধকেই ‘ভুল-দোষ’ বলা হয়েছে। আর কাব্য-নাটক রচনা করে তিনি যে বঙ্গভূমির সেবা করতে চান, তাকে ‘গুণ’ বলে প্রচার করেছেন।
বঙ্গভূমির প্রতি কবিতার ব্যাখ্যাধর্মী প্রশ্নের উত্তরঃ
১) ‘বঙ্গভূমির প্রতি’ কবিতাটি কার লেখা ? বঙ্গভূমিকে কবি কী মিনতি করেছেন ?
উঃ ‘বঙ্গভূমির প্রতি’ কবিতাটি কবি ‘মাইকেল মধুসূদন দত্ত’-এর লেখা। কবি তাঁর প্রবাসজীবনে ব্যথাভরা মন নিয়ে বঙ্গভূমিকে আন্তরিকভাবে স্মরণ করেছেন। তাঁর মনে হয়েছে, মায়ের স্নেহচ্ছায়া থেকে তিনি দূরে চলে এসেছেন বলে মা বুঝি তাঁকে ভুলে গেছেন। তাই তিনি মায়ের কাছে আত্মনিবেদনের মাধ্যমে করুণ মিনতি জানিয়েছেন।
কবির মিনতিটি হল- মা যেন তাঁর মাতৃদাস এই সন্তানকে ভুলে না যান। মনের সাধ সাধন করতে গিয়ে যদি কোনো ভুল তাঁর হয়ে থাকে, তবু মায়ের মন যেন কখনও মধুহীন না হয়।
২) প্রবাসকালে কী ঘটলে কবি তার জন্য খেদ করবেন না ?
উঃ কবি ‘মাইকেল মধুসূদন দত্ত’ একদা স্বেচ্ছায় প্রবাসজীবন বেছে নিয়েছিলেন। ফ্রান্সে যাওয়ার আগে তিনি বঙ্গভূমির প্রতি এক অকৃত্রিম টান বা আকর্ষণ অনুভব করেন। তারই অনিবার্য ছাপ লক্ষ করা যায় এই কবিতায়। তিনি বলেন দৈব অনুগ্রহে প্রবাসে যদি তাঁর মৃত্যু হয়, তবে তার জন্য তাঁর কোনো খেদ থাকবে না; কারণ কেউই এই পৃথিবীতে অমর নয়।
৩) মৃত্যুর অনিবার্যতা বোঝাতে কবি কবিতায় যে দুটি উদাহরণ রেখেছেন, সে দুটির উল্লেখ করো।
উঃ মৃত্যু যে অনিবার্য তা বোঝাতে কবি প্রথমে বলেছেন-
‘চিরস্থির করে নীর, হায় রে, জীবন – নদে ?’
অন্যদিকে কবি বলেছেন-
‘মক্ষিকাও গলে না গো, পড়িলে অমৃত-হ্রদে !’
৪) ‘বঙ্গভূমির প্রতি’ কবিতায় কবি নির্দেশিত প্রকৃত অমরতার রূপটি কেমন ?
উঃ ‘বঙ্গভূমির প্রতি’ কবিতায় কবি দেশমাতৃকার কাছে তাঁর মনোগত অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছেন। কবি বলেছেন- তিনি যদিও যথেষ্ট গুণের অধিকারী নন, তবুও লোকে যেন তাঁকে না ভোলে, মনের মন্দিরে তাঁকে ধরে রাখে এবং স্মরণ করে।
৫) অমরতার পরিপ্রেক্ষিতে কবি মায়ের কাছে কী বর প্রত্যাশা করেছেন ?
উঃ ‘বঙ্গভূমির প্রতি’ কবিতায় দেশ মায়ের কাছে অমরতা চাইতে গিয়ে কবি মনে করেছেন তাঁর তেমন গুণ নেই, তবে মা যদি দয়া করে তাঁর ভুল – দোষগুলিকে গুণ বলে ধরেন, তবে তাঁকে বর দান করতে পারেন।
যেহেতু মা সুবরদাত্রী, তাই সে বর অবশ্যই অমরতার বর; যে অমরতার অর্থ সৃষ্টির জন্য জনমানসে বেঁচে থাকা। কবি মায়ের কাছে এই বর প্রত্যাশা করেছেন।
৬) কবি সুবরদে বলতে কাকে বুঝিয়েছেন ? তাঁর কাছে কবি কী বর চেয়েছেন ? এভাবে ‘বর’ প্রার্থনার কারণ উল্লেখ করো।
উঃ কবি ‘মাইকেল মধুসূদন দত্ত’ তাঁর ‘বঙ্গভূমির প্রতি’ কবিতায় ‘সুবরদে’ বলে মাতৃভূমি বঙ্গদেশকে বুঝিয়েছেন। মাতৃভূমির কাছে কবি অমর হওয়ার বর চেয়েছেন। কবি মনে করেন, তিনি জীবনে বহু ভুল করেছেন। ভুল করে তিনি বহু মূল্যবান সময়, সম্পদ, শক্তি নষ্ট করেছেন। মাতৃভূমির জন্য তিনি কিছু করতে পারেননি। মাতৃভূমি মাতৃভাষাকে অবহেলা করে তিনি বিদেশে পাড়ি দিয়েছেন। তাই কবি অনুতাপে মাতৃভূমির কাছে এভাবে বর প্রার্থনা করেছেন।
বঙ্গভূমির প্রতি কবিতার রচনাধর্মী প্রশ্নের উত্তরঃ
১) ‘বঙ্গভূমির প্রতি’ কবিতাটি একটি সার্থক গীতিকবিতা কি না আলোচনা করো।
উঃ ইউরোপে থাকাকালীন ফ্রান্সে যাওয়ার পূর্বে ‘মাইকেল মধুসূদন দত্ত’ ‘বঙ্গভূমির প্রতি’ কবিতাটি রচনা করেন।
পাঠ্য কবিতাটি একটি গীতিকবিতা। এই ধরনের কবিতা হল এমন কবিতা, যেখানে কবির মনোভাবই কাব্যিক ব্যঞ্জনায় সার্থক রূপলাভ করে। প্রবাসে কবি নিজেকে বৃহত্তম কাব্যমঞ্চের শ্রেষ্ঠ কবি হিসেবে প্রকাশ করতে চেয়েছিলেন। বেশ কিছু কাব্য-কবিতা ইংরেজি ভাষায় প্রকাশিত হয়েছিল কবির। কিন্তু মাতৃভাষার প্রতি অকৃত্রিম টান অনুভব করেছিলেন কবি মনের গভীরে।
কবির মনের যন্ত্রণাই এই কবিতাটিতে প্রধান ভাব হিসেবে ব্যঞ্জনাময় হয়ে উঠেছে। ছন্দ – অলংকার ও ভাষার সুন্দর প্রকাশে কবিতাটি তাই আধুনিক পদ্ধতিতে ভাবপ্রকাশের শ্রেষ্ঠ নিদর্শন হয়ে উঠেছে। কবিতার বক্তা অর্থাৎ কবি তাঁর মনের ব্যক্তিগত ভাবকেই কবিতায় বড়ো করে স্থান করে দিয়েছেন। তাই বলা যায়, গীতিকবিতা রূপে এটি সার্থকতা অর্জন করেছে।
২) ‘বঙ্গভূমির প্রতি’ কবিতায় কবির দেশভক্তির যে পরিচয় লিপিবদ্ধ আছে তার পরিচয় দাও।
উঃ আধুনিক যুগের মহাকাব্যকার ‘মাইকেল মধুসূদন দত্ত’-এর ‘বঙ্গভূমির প্রতি’ কবিতাটি একটি গীতিকবিতা। কবিতায় প্রবাসে থাকাকালীন কবির দেশের প্রতি আন্তরিক টান ও ভালোবাসা প্রকাশিত হয়েছে। কবি ইউরোপের ফ্রান্সে যাওয়ার পূর্বে যখন এই কবিতা রচনা করেন, তখন তাঁর মনে প্রবল আবেগ দেশকে নিয়ে।
কবি তাঁর এই কবিতায় দেশকে মা সম্বোধন করে তিনি বলেন- মা যেন তাঁকে মনে রাখেন। মনের সাধ সাধন করতে গিয়ে যদি তিনি কোনো ভুলও করে থাকেন, তবুও মা যেন তাঁর মনকুসুমকে মধুহীন না করেন। দেশমাতৃকাকে ভুলে তিনি যে প্রবাসী হয়েছেন- এই দুঃখ থেকে তিনি বলেছেন যে, ভাগ্যের বশে প্রবাসে যদি তাঁর মৃত্যুও হয়, তাতে তাঁর কোনো খেদ নেই! কারণ তিনি জানেন যে, জন্ম নিলে একদিন মরতেই হয়; কেউই অমর নয়।
আর দেশমাতা যদি সন্তানকে মনে রাখেন, তবে তিনি যমকেও ভয় পান না। অবশেষে কবি খেদের সাথে বলেন যে, তাঁর তেমন কোনো গুণ নেই যা দিয়ে তিনি দেশ-মায়ের কাছে অমরতা চাইতে পারেন। তবে মা যেহেতু সুবরদাত্রী, তাই তিনি যদি একান্তই কোনো বর দান করেন, তবে তা যেন হয় দেশের মানুষের মনে চিরকালীন বেঁচে থাকা।
এইভাবেই কবি দেশমাতা তথা বঙ্গভূমির প্রতি তাঁর শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেছেন।
শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের কিছু গুরুত্বপূর্ণ লিঙ্ক নিম্নে প্রদান করা হলোঃ
- বাংলা ব্যাকরণের আলোচনাগুলি দেখতে এই লিঙ্কে ক্লিক/টাচ করতে হবে
- শিক্ষালয় ওয়েবসাইটে প্রদান করা প্রবন্ধ রচনাগুলি দেখতে এই লিঙ্কে ক্লিক/টাচ করতে হবে
- পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা অধ্যায়ভিত্তিক নোট দেখতে এই লিঙ্কে ক্লিক করতে হবে
- পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা অধ্যায়ভিত্তিক MCQ TEST প্রদান করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করতে হবে
- শিক্ষালয় ইউটিউব চ্যানেলটি দেখতে এই লিঙ্কে ক্লিক/টাচ করতে হবে
- পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির সাজেশন দেখতে এই লিঙ্কটি অনুসরণ করতে হবে
শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের সকল প্রকার নোট, সাজেশন, প্রশ্নপত্র ও মক টেষ্টের সুবিধা গ্রহণ করতে নিম্নের ছবিতে ক্লিক/টাচ করে বিষদ তথ্য জেনে নাওঃ