তার চোখ এখন বাদার কামটের মতো হিংস্র । বিভাব । দ্বাদশ শ্রেণি বাংলা

শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের (www.sikkhalaya.in) পক্ষ থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ২০২৫ সালের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা প্রদান করতে চলা শিক্ষার্থীদের জন্য তার চোখ এখন বাদার কামটের মতো হিংস্র । ভাত । দ্বাদশ শ্রেণি বাংলা প্রদান করা হলো। দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা ভাত গল্পের প্রশ্নের উত্তরগুলি অনুশীলনের মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীরা তাদের উচ্চমাধ্যমিক ২০২৫ বাংলা পরীক্ষার প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারবে।

তার চোখ এখন বাদার কামটের মতো হিংস্র । বিভাব । দ্বাদশ শ্রেণি বাংলা :

১) “তার চোখ এখন বাদার কামটের মতো হিংস্র”- কে কার প্রতি এরূপ আচরণ করেছিল? তার এরূপ আচরণের কারণ বিশ্লেষণ করো। ২+৩=৫

উৎসঃ

বাংলা সাহিত্যের স্বনামধন্য লেখিকা “মহাশ্বেতা দেবী” রচিত “ভাত” ছোটগল্পটি ১৯৮২ খ্রিষ্টাব্দে “ম্যানিফেস্টো” পত্রিকায় প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল। পরবর্তীকালে গল্পটি তাঁর “শ্রেষ্ঠ গল্প” নামক গল্প সংকলনের অন্তর্গত হয়। প্রশ্নোক্ত অংশটি এই “ভাত” গল্পের অন্তর্গত।

বক্তা ও শ্রোতাঃ

বড়ো বাড়ির বুড়ো কর্তার মৃত্যুর পর অশৌচের জন্য বাড়ির রাঁধা ভাত বাসিনী ফেলে দিতে উদ্যত হলে তাঁর হাত থেকে ভাতের ডেকচি কেড়ে নেওয়ার সময় উচ্ছবের চোখ বাদার কামটে অর্থাৎ কুমিরের মতো হিংস্র হয়ে উঠেছিল।

আচরণের কারণঃ

সুন্দরবনের বাদা অঞ্চলের ভাগচাষি উচ্ছব মাতলা নদীর বন্যায় এক ঝড়-জলের রাতে তাঁর পুত্র, কন্যা ও স্ত্রীকে হারিয়ে ফেলে। একটু ভাতের আশায় হাভাতে উচ্ছব তাঁর গ্রামতুতো বোন বাসিনীর সহায়তায় বড়ো বাড়িতে ভাতের বিনিময়ে হোমযজ্ঞের কাঠ কাটার কাজে নিযুক্ত হয়।

কাঠ কাটতে কাটতে সে বড়ো বাড়িতে ভাতের সমাহারের কথা উচ্ছব জানতে পারে- কনকপানি, পদ্মজালি, ঝিঙেশাল, রামশাল, মোটা সাপটা ইত্যাদি। ভাতের গন্ধ তাকে উতলা করে তোলে। কিন্তু যজ্ঞ শেষ না হওয়ায় কাঠ কাটা শেষ করেও তাঁর ভাত খাওয়া হয় না।

অপেক্ষামান উচ্ছবের ভাতের আশা সাঙ্গ হয়, যখন সন্ধ্যেবেলা বুড়ো কর্তা মারা যান! পিসিমা বাসিনীকে নির্দেশ দেন- “সব্বস্ব রান্না পথে ঢেলে দিগে যা।”

উচ্ছব ভাত খাবার স্বপ্ন পূরণের আশায় ভাতের ডেচকিটা দূরে ফেলে দিয়ে আসার কথা বলে বাসিনীর হাত থেকে নিয়ে প্রায় ছুটতে থাকে। বাসিনী তাকে বাঁধা দিয়ে বলে- “অশুচ বাড়ির ভাত খেতে নি দাদা !” এইরূপ পরিস্থিতিতে ক্ষুধার্ত উচ্ছব হিংস্র হয়ে ওঠে। তাকে দেখে বাসিনীর বাদার কামটের মতো হিংস্র বলে মনে হয় এবং “দাঁতগুলো বের করে সে কামটের মতোই হিংস্র ভঙ্গি করে।”