দ্বাদশ শ্রেণি বাংলা ভাষাবিজ্ঞান

দ্বাদশ শ্রেণি বাংলা ভাষাবিজ্ঞান

“দ্বাদশ শ্রেণি বাংলা ভাষাবিজ্ঞান” থেকে এখানে গুরুত্বপূর্ণ কিছু নোট প্রদান করা হলো। শিক্ষার্থীরা নির্দিষ্ট নোটে টাচ/ক্লিক করে সেই বিষয়ের নোটগুলি দেখতে পারবে।

শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের সকল প্রকার আপডেট লাভ করতে মোবাইল স্ক্রিনের বা’দিকের নিম্নের অংশে থাকা বেল আইকনটিতে (🔔) টাচ করে শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের নোটিফিকেশন অন করে রাখুন। 

দ্বাদশ শ্রেণি বাংলা ভাষাবিজ্ঞান থেকে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তরঃ 

দ্বাদশ শ্রেণি বাংলা ভাষাবিজ্ঞান থেকে গুরুত্বপূর্ণ SAQ প্রশ্নের উত্তরঃ

১) ভাষাবিজ্ঞানের কাজ কী?

উঃ ভাষাবিজ্ঞানের কাজ হল ভাষা নিয়ে বিজ্ঞানসম্মত আলোচনা করা।

২) ভাষাবিজ্ঞানের আলোচনায় কোন ভাষার গুরুত্ব বেশি এবং কেন?

উঃ লিখতে পারে এমন মানুষের সংখ্যা সমগ্র পৃথিবীতে মৌখিক ভাষা ব্যবহারকারীদের তুলনায় নিতান্তই সামান্য। তাই ভাষাবিজ্ঞানের আলোচনায় মৌখিক ভাষার গুরুত্ব বেশি।

৩) কে কবে তুলনামূলক ভাষাবিজ্ঞানের সূত্রপাত করেছিলেন?

উঃ ১৭৮৬ খ্রিঃ স্যার উইলিয়াম জোন্‌স রয়াল এশিয়াটিক সোসাইটির সভায় বক্তব্য রাখার সময় গ্রিক, লাতিন, ফরাসি প্রভৃতি ভাষার তুলনামূলক আলোচনা করার মধ্য দিয়ে তুলনামূলক ভাষাবিজ্ঞানের সূত্রপাত করেন।

৪) বর্ণনামূলক ভাষাবিজ্ঞানের জনক কাকে বলা হয়?

উঃ বর্ণনামূলক ভাষাবিজ্ঞানের জনক বলা হয় ভাষাবিজ্ঞানী ফার্দিনান্দ দ্য সোস্যুরকে।

৫) বর্ণনামূলক ভাষাবিজ্ঞানের সূত্রপাত কে করেন?

উঃ প্রাচীন ভারতের বিশিষ্ট ব্যাকরণবিদ পাণীনি রচিত “অষ্ট্যাধ্যায়ী” নামক ব্যাকরণ গ্রন্থটিতে সর্বপ্রথম বর্ণনামূলক ভাষাবিজ্ঞানের পরিচয় পাওয়া যায় বলে অনেকে মনে করেন।

৬) “A Brief Sketch of Bengali Phonetics” গ্রন্থটি কার লেখা?

উঃ গ্রন্থটি ভাষাচার্য সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ের লেখা।

৭) পাশ্চাত্যে বর্ণনামূলক ভাষাবিজ্ঞানের প্রতিষ্ঠাতা কে?

উঃ পাশ্চাত্যে বর্ণনামূলক ভাষাবিজ্ঞানের প্রতিষ্ঠাতা হলেন সুইস ভাষাবিজ্ঞানী ফার্দিনান্দ দ্য স্যসুর।

৮) প্রধান ভাষাবিজ্ঞানের মূলত কয়টি শাখা ও কী কী?

উঃ প্রধান ভাষাবিজ্ঞানের শাখা পাঁচটি। যথা- ধ্বনিবিজ্ঞান, ধ্বনিতত্ব, রূপতত্ত্ব, বাক্যতত্ত্ব ও শব্দার্থতত্ত্ব।

৯) ফলিত ভাষাবিজ্ঞানের ভাগগুলি কী কী?

উঃ ফলিত ভাষাবিজ্ঞানের বিভাগগুলি হল- সমাজভাষাবিজ্ঞান, মনোভাষাবিজ্ঞান, স্নায়ুভাষাবিজ্ঞান, নৃভাষাবিজ্ঞান ও অভিধানবিজ্ঞান।

১০) রেজিষ্টার কী?

উঃ উপলক্ষ্য অনুযায়ী ভাষা বা উপভাষার যে বদল হয় তাকেই সমাজবিজ্ঞানীরা রেজিষ্টার বলেন।

১১) কোড-বদল কাকে বলে?

উঃ কোন ব্যক্তি বিশেষ উপভাষার যে বিশেষ রীতিটি ব্যবহার করে তাকে বলা হয় কোড। আর সেই ব্যক্তির ভাষা যদি পরিস্থিতি অনুযায়ী পরিবর্তিত হয় তখন সেই প্রকৃয়াকে কোড-বদল বলে।

১২) LAD কী?

উঃ LAD কথাটির অর্থ হল “Language Acquisition Device”. নোয়াম চমস্কি মানুষের ভাষাশিক্ষার সামর্থ বিষয়ে আলোচনায় এই সিদ্ধান্তে উপনীত হন যে, মানব মস্তিষ্কের মধ্যেই তার ভাষাশিক্ষার সামর্থ কেন্দ্রীভূত হয়েছে।তাই মস্তিষ্ককে তিনি ভাষাশিক্ষার যন্ত্র হিসেবে চিহ্নিত করে তার নাম দিয়েছেন LAD.

১৩) LAS কী?

উঃ LAS কথাটির অর্থ হল “Language Acquisition System”.  নোয়াম চমস্কি তার “Language and Mind” গ্রন্থে মানুষের ভাষাশিক্ষার প্রণালীকে LAS বলেছেন। তিনি Device শব্দটির পরিবর্তে মস্তিষ্ককে ভাষাশিক্ষার আধার হিসেবে গ্রহণ করে System শব্দটির ব্যবহার করেছেন।

১৪) নৃভাষাবিজ্ঞানের আলোচ্য বিষয় কী?

উঃ সামাজিক ঐতিহ্য বা প্রচলিত প্রথা ও সংস্কার এবং গোষ্ঠীবদ্ধ পারিবারিক জীবনচর্চা কীভাবে একটি ভাষার গড়ে ওঠা ও বিবর্তনে কাজ করে তা নৃভাষাবিজ্ঞানের আলোচ্য বিষয়।

১৫) শৈলী কী?

উঃ একজন লেখকের মনন, চিন্তন, অনুভব ও উপলব্ধির নিজস্ব যে রীতি তারই প্রকাশ হল শৈলী।

১৬) “Style is the man himself”- উক্তিটি কার?

উঃ ফরাসি প্রকৃতিবিদ, গণিতজ্ঞ তথা লেখক জর্জ লুই ল্যক্লের কোঁত দ্য বুফোঁ এই উক্তিটি করেছেন।

১৭) লা কী?

উঃ ভাষার বিভিন্ন উপাদান, যেমন- ধ্বনি, রূপ বা শব্দাংশ, বাক্য ইত্যাদি এবং তাদের পরস্পরের মধ্যে যে সম্পর্কের জালবিন্যাস রয়েছে তাকে লা বা লাঙ(Langue)  বলে।

১৮) পারোল কী?

উঃ লাঙকে মান্য করেও ভাষা ব্যবহারের উপাদান নির্বাচন ও প্রতিস্থাপনের মধ্য দিয়ে নিজস্ব একটি বিন্যাসে যে বাচনক্রিয়া স্পষ্ট ও প্রকট হয়ে ওঠে তাকে পারোল (Parole) বলে।

১৯) বহুস্বরতা কী?

উঃ উপন্যাস, মহাকাব্য প্রভৃতিতে বিবিধ চরিত্রের মধ্যে স্বভাবগত, পরিবেশগত পার্থক্যের জন্য তাদের স্বরবিন্যাসে বৈচিত্রময় জটিলতা পরিলক্ষিত হয়। মিখাইল বাখাতিন এই বিষয়টিকে বহুস্বরতা বলেছেন।

২০) অভিধানবিজ্ঞান কাকে বলে?

উঃ ভাষাবিজ্ঞানের যে শাখায় কোন শব্দের উৎস, বিকাশ ও বর্তমান প্রয়োগ ধরে তার বিষয়ে বিজ্ঞানসম্মত আলোচনা করা হয় তাকে অভিধানবিজ্ঞান বলে।

২১) Dictionary শব্দটি কবে ও কোথায় পাওয়া যায়?

উঃ ১৫৩৮ খ্রিঃ স্যার থমাস এলিয়টের “ল্যাটিন-ইংরেজি অভিধান” এ ইংরেজি Dictionary  শব্দটির প্রথম উল্লেখ পাওয়া যায়।

২২) শব্দকল্পদ্রুম কী?

উঃ শব্দকল্পদ্রুম একটি সংস্কৃত অভিধান। রাধাকান্ত দেব এই অভিধানটি সংকলন করেন। করুণাসিন্ধু বিদ্যানিধির সম্পাদনায় ১৮০৩ খ্রিঃ থেকে ১৮৫৮ খ্রিঃ পর্যন্ত মোট আটটি খন্ডে অভিধানটি প্রকাশিত হয়।

২৩) স্যার উইলিয়াম জোন্‌স সংস্কৃত ভাষার সঙ্গে কোন কোন ভাষার মিল খুঁজে পেয়েছিলেন?

উঃ তিনি সংস্কৃত ভাষার সঙ্গে গ্রিক ও ফারসি ভাষার সাদৃশ্য খুঁজে পেয়েছিলেন।

দ্বাদশ শ্রেণি বাংলা ভাষাবিজ্ঞান থেকে গুরুত্বপূর্ণ বড়ো প্রশ্নের উত্তরঃ 

১) ভাষাবিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখা এবং তাদের মধ্যেকার সম্পর্ক আলোচনা করো।

উঃ ভাষা সম্পর্কে বিজ্ঞানসম্মত আলোচনাকেই ভাষাবিজ্ঞান বলা হয়। অর্থাৎ মানুষের মনের ভাব প্রকাশের মাধ্যম ভাষা এবং তার সাথে মানব জীবনের সংলগ্ন দিকগুলোর প্রতিই ভাষাবিজ্ঞান আলোকপাত করে।

ভাষাবিজ্ঞানকে দুটি ভাগে ভাগ করা হয়। যথা-

ক) প্রধান ভাষাবিজ্ঞান

খ) ফলিত ভাষাবিজ্ঞান

ভাষাবিজ্ঞানের কেন্দ্রীয় বিন্যাস সম্পর্কিত আলোচনার মধ্যে রয়েছে-

১) ধ্বনিবিজ্ঞান

২) ধ্বনিতত্ত্ব

৩) রূপতত্ত্ব

৪) বাক্যতত্ত্ব

৫) শব্দার্থতত্ত্ব

ভাষার সঙ্গে সমাজ ও অন্যান্য বিদ্যাচর্চার ক্ষেত্রের পারস্পরিক সম্পর্কের আলোচনা করা হয় ফলিত ভাষাবিজ্ঞানে। আর এই ফলিত ভাষাবিজ্ঞানের যেসকল শাখার কথা আমরা আলোচনা প্রসঙ্গে উল্লেখ করতে পারি সেগুলি হল-

১) সমাজভাষাবিজ্ঞান

২) মনোভাষাবিজ্ঞান

৩) স্নায়ুভাষাবিজ্ঞান

৪) নৃভাষাবিজ্ঞান

৫) শৈলীবিজ্ঞান প্রভৃতি।

সমাজ ও সমাজবিজ্ঞানের সঙ্গে ভাষার সম্পর্ক আলোচিত হয় সমাজভাষাবিজ্ঞানে। মনোভাষাবিজ্ঞান মানুষের মনের গতিপ্রবাহের সাথে ভাষার সম্পর্ককে বর্ণনা করে থাকে। মস্তিষ্কের জটিল গতিপ্রকৃতির সাথে মানুষের ভাষার সম্পর্ক সম্পর্কে আলোকপাত করে স্নায়ুভাষাবিজ্ঞান। অপরদিকে নৃতত্ত্বের বিবিধ বিষয়ের সঙ্গে ভাষার আভ্যন্তরীন সম্পর্ক বিশ্লেষণ করা হয় নৃভাষাবিজ্ঞানে। তেমনই ভাষা ও সাহিত্যের নান্দনিক দৃষ্টিভঙ্গির বহিঃপ্রকাশ ঘটে ফলিত ভাষাবিজ্ঞানের বিশেষ শাখা শৈলীবিজ্ঞানে।

অতএব আলোচনা করে দেখা গেল, ভাষাবিজ্ঞানের বিবিধ শাখাগুলি কিরূপে পরস্পর সম্পর্কযুক্ত হয়ে ভাষা সম্পর্কিত চর্চাকে সম্পৃত্ত করে চলেছে।

২) তুলনামূলক ভাষাবিজ্ঞান সম্পর্কে আলোচনা করো।

সংজ্ঞাঃ

   ভাষাবিজ্ঞানের যে শাখায় একাধিক ভাষার মধ্যে তুলনামূলক আলোচনার মাধ্যমে সেই ভাষার উৎস, প্রকৃতি ও ক্রমবিকাশের ইতিহাস সম্পর্কে আলোচনা করা হয় তাকে তুলনামূলক ভাষাবিজ্ঞান বলে।

   তুলনামূলক ভাষাবিজ্ঞানের আলোচনার সূত্রপাত করেছিলেন স্যার উইলিয়াম জোন্‌স। কোন ভাষার বিজ্ঞানসম্মত আলোচনায় সেই ভাষার সঙ্গে নিকট বা দূর সম্পর্কিত ভাষার সম্পর্ক বিষয়ে এই ধারায় আলোকপাত করা হয়।

বৈশিষ্ট্যঃ

   ভাষাবিজ্ঞানের এই ধারার বিবিধ বৈশিষ্ট্যগুলি নিমরূপ-

ক) কোন ভাষার ভাষাগত দিকের আলোচনার প্রতিই তুলনামূলক ভাষাবিজ্ঞানে মনোনিবেশ করা হয়।

খ) বিবিধ ভাষার ধ্বনিগত ঐক্য, রূপগত বৈপরীত্য ও সাদৃশ্যের মধ্যে তুলনামূলক আলোচনা করা হয়।

গ) কোন ভাষার অন্তর্গত বিবিধ ধ্বনি বা শব্দের উৎস, ইতিহাস, ক্রমবিকাশ সম্পর্কে তুলনামূলক ভাষাবিজ্ঞান আলোচনা করে।

ঘ) তুলনামূলক ভাষাবিজ্ঞান বিবিধ ভাষার ক্রিয়াগত, অর্থগত ও রূপগত দিকের বিশ্লেষণ করে তাদের মূল উৎস নির্ণয় করে থাকে। 

উদাহরণঃ 

   “মা” এই বাংলা শব্দটির আদিরূপ বৈদিক ভাষায় “মাতৃ”। ঠিক তেমনই, ইউরোপের বিবিধ ভাষায়ও শব্দের আদিরূপের সঙ্গে বর্তমান শব্দের সাদৃশ্য পরিলক্ষিত হয়। এক্ষেত্রে ভাষাগুলির মধ্যে তুলনামূলক ভাষাবিজ্ঞানের  সাহায্য গ্রহণ করতে হয়।

মূল্যায়নঃ

   অতএব আলোচনা করে দেখা গেল, ভাষাবিজ্ঞানের আলোচনায় তুলনামূলক ভাষাবিজ্ঞান এক গুরুত্বপূর্ণ স্থান অর্জন করেছে।

দ্বাদশ শ্রেণি বাংলা ভাষাবিজ্ঞান থেকে আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ বড়ো প্রশ্নের উত্তরঃ 

ভাষাবিজ্ঞান ও তার শাখা-প্রশাখা থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ছোটপ্রশ্নের উত্তর আলোচনা।

উত্তর জানতে এখানে টাচ/ক্লিক করতে হবে

ভাষাবিজ্ঞান কাকে বলে ও তার সাথে ভাষাতত্ত্বের সম্পর্ক আলোচনা করো।

উত্তর জানতে এখানে টাচ/ক্লিক করতে হবে

ঐতিহাসিক ভাষাবিজ্ঞান সম্পর্কে আলোচনা করো।

উত্তর জানতে এখানে টাচ/ক্লিক করতে হবে

বর্ণনামূলক ভাষাবিজ্ঞান সম্পর্কে আলোচনা করো।

উত্তর জানতে এখানে টাচ/ক্লিক করতে হবে

সমাজভাষাবিজ্ঞান সম্পর্কে আলোচনা করো।

উত্তর জানতে এখানে টাচ/ক্লিক করতে হবে

শৈলীবিজ্ঞান সম্পর্কে আলোচনা করো।

উত্তর জানতে এখানে টাচ/ক্লিক করতে হবে

অভিধান ও তার শ্রেণিবিভাগ সম্পর্কে আলোচনা করো।

উত্তর জানতে এখানে টাচ/ক্লিক করতে হবে

 

শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের কিছু গুরুত্বপূর্ণ লিঙ্ক নিম্নে প্রদান করা হলোঃ

শিক্ষালয়ের সাথে ফেসবুকে যুক্ত হতে নিম্নের ছবিতে ক্লিক/টাচ করতে হবেঃ sikkhalaya

You cannot copy content of this page

Need Help?