পাড়াগাঁর দু-পহর ভালোবাসি কবিতার প্রশ্নের উত্তর

পাড়াগাঁর দু-পহর ভালোবাসি কবিতার প্রশ্নের উত্তর

শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের পক্ষ থেকে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য পাড়াগাঁর দু-পহর ভালোবাসি কবিতার প্রশ্নের উত্তর প্রদান করা হলো। এই পাড়াগাঁর দু-পহর ভালোবাসি কবিতার প্রশ্নের উত্তর অনুশীলনের মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীরা তাদের পরীক্ষা প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারবে। 

শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের সকল প্রকার আপডেট লাভ করতে মোবাইল স্ক্রিনের বা’দিকের নিম্নের অংশে থাকা বেল আইকনটিতে (🔔) টাচ করে শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের নোটিফিকেশন অন করে রাখুন। 

পাড়াগাঁর দু-পহর ভালোবাসি কবিতার প্রশ্নের উত্তরঃ

১) জীবনানন্দ দাশের লেখা দুটি কবিতার বইয়ের নাম লেখো ।

উঃ জীবনানন্দ দাশের লেখা দুটি বই হলো — ‘বনলতা সেন’ এবং ‘সাতটি তারার তিমির’। 

২) তাঁর লেখা প্রথম কাব্যগ্রন্থের নাম কী ? 

উঃ জীবনানন্দ দাশের লেখা প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘ ঝরাপালক ‘। 

৩) ‘দু-পহর’ শব্দের অর্থ কী ? 

উঃ ‘দু-পহর’ শব্দের অর্থ দ্বি-প্রহর। 

৪) ‘কেবল প্রান্তর জানে তাহা’ — ‘প্রান্তর’ কী জানে ? 

উঃ কবির হৃদয়ে কোন গল্প কাহিনি ও অচেনা স্বপ্ন ঘর বেঁধেছে তা ‘প্রান্তর’ জানে।

৫) ‘তাহাদের কাছে যেন এ জনমে নয় – যেন ঢের যুগ ধরে কথা শিখিয়াছে এ হৃদয়’— কাদের কথা এখানে বলা হয়েছে ? 

উঃ এখানে কবির পাড়াগাঁয়ের প্রান্তর ও প্রান্তরের শঙ্খচিলের কথা বলা হয়েছে । 

৬) ‘জলসিড়িটির পাশে ঘাসে’ — কী দেখা যায় ? 

উঃ জলসিড়িটির পাশে ঘাসে দেখা যায় বহুদিনের বুনো চালতার শাখাগুলি ছন্দহীন ভাবে নুয়ে আছে।  

৭) ‘জলে তার মুখখানা দেখা যায়’- জ্বলে কার মুখ দেখা যায় ? 

উঃ জলে বুনো চালতা গাছটিকে দেখা যায় । 

৮) ‘ডিঙিও ভাসিছে কার জলে’ — ডিভিটি কেমন ? 

উঃ ডিভিটি বহুদিনের একটি ঝাঁঝরা ফোঁপরা ডিঙি । 

৯) ডিডিটি কোথায় বাঁধা রয়েছে ? 

উঃ ডিঙিটি জলসিড়ি নদীর পাশে হিজল গাছে বাঁধা আছে । 

১০) পাড়াগাঁয়ের দ্বিপ্রহরকে কবি ভালোবাসেন কেন ?

উঃ কবি জীবনানন্দ বাংলার প্রকৃতির সঙ্গে এক নাড়ির টান খুঁজে পান। পাড়াগাঁয়ের রৌদ্রস্নাত দ্বিপ্রহরটি কবির অত্যন্ত প্রিয়। তার কারণ পাড়াগাঁয়ের দ্বিপ্রহরে কবি যেন তাঁর মনের গল্প, কাহিনির স্বপ্নের সন্ধান পান। ওই নির্জন দুপুরে কবি যেন প্রান্তরের কাছে তাঁর হৃদয়ের কথা শুনতে পান, স্বপ্নের সন্ধান পান। তাই দ্বিপ্রহরটিকে কবি ভালোবাসেন। 

১১) ‘স্বপ্নে যে বেদনা আছে’ — কবির স্বপ্নে কেন বেদনার অনুভূতি ? 

উঃ কবির হৃদয়ে জমা থাকা কষ্ট যেন তিনি পাড়াগাঁয়ের দুপুরের সঙ্গে ভাগ করে নিতে চান। কবির জীবনে পাড়াগাঁর দুপুরের ছবিগুলি অমলিন হয়ে আছে। তিনি যে স্বপ্ন দেখেন তা তাঁর মতে সত্যি হওয়া দুষ্কর। সেখানে রয়েছে গল্প ও কাহিনি। সেই গল্প বা কাহিনি যা বহু জন্মের পারের সুদূর ও পুরাতন। সেই স্বপ্নের কথা কবির মনে জাগ্রত হয়। কিন্তু তা অস্পষ্ট, তাই কবি তাকে ভালোভাবে দেখতে পান না, বুঝতে পারেন না তাই তিনি বেদনাহত হন। তাঁর সেই বেদনাহত ভাবনা স্বপ্নের মধ্যে পরিস্ফুট হয়। তাই কবির স্বপ্নে বেদনার অনুভূতি।

১২) প্রকৃতির কেমন ছবি কবিতাটিতে ফুটে উঠেছে তা আলোচনা করো। 

উঃ জীবনানন্দ দাশ গ্রাম বাংলার অপরূপ সৌন্দর্যের কথা তাঁর এই কবিতায় ব্যস্ত করেছেন। গ্রাম বাংলার দুপুরের রৌধে কীসের যেন গন্ধ লেগে থাকে। তিনি যেন এই জন্মের নয় , বহু জন্মের পুরোনো কোনো কথা বলছেন। তাঁর সেই পুরোনো স্বপ্নের কথা কেউ জানে না জানে কেবল প্রাত্তর আর জানে প্রান্তরের শঙ্খচিল। অর্থাৎ কবির চোখে রৌদ্রের মধ্যেও জমাট হয়ে রয়েছে এক বেদনা। কবি যেন সেই বেদনার ছবি দেখতে পাচ্ছেন শুষ্ক পত্র, শালিকের কন্ঠস্বর, ভাঙা মঠ আর নকশাপেড়ে শাড়ি পরা মেয়েটির মধ্যে। বুনো চালতার শাখাগুলি বহুদিন নুয়ে আছে জলসিড়ি নদীর পাশে ঘাসের মধ্যে। জলে ওই গাছের ছায়া পড়ে আছে। 

একটা ঝাঁঝরা ফোঁপরা ডিঙি নৌকো কেউ হিজল গাছের ডালে বেঁধে রেখেছে। ডিঙি নৌকোটির মালিক নেই। সেটি একাই পড়ে রয়েছে। পাড়াগাঁয়ের বিগ্রাহরিক জীবনের শান্তশিষ্ট এক মায়াময়, রূপ কবির চোখে আজ ধরা পড়েছে। সেই চিত্র দেখে কবির মনে হচ্ছে যেন দুপুরের রৌদ্রে অনেকদিনের পুরোনো ভিজে বেদনার গন্ধ আছে। কোনো সুদুর অতীতের এই গন্ধ যেন কবিকে অজানা প্রাচীন কালের কথা বলছে। এইভাবে আলোচ্য কবিতায় দ্বিপ্রহরের ক্লান্ত ও বিষণ্ণ প্রকৃতির এক পরিচয় ফুটে উঠেছে। 

১৩) ‘কেঁদে কেঁদে ভাসিতেছে আকাশের তলে’ — কবির এমন মনে হওয়ার কারণ কী বলে তোমার মনে হয় ? 

উঃ কবির মনে হয়েছে সমস্ত বিশ্বপ্রকৃতি যেন কেঁদে কেঁদে কবির কাছে আকুতি করছে। কবি দুপুরের বেদনার ছবি তাঁর কবিতায় ব্যক্ত করতে চেয়েছেন। কবি এখানে আকাশের তলে দুপুরের রোদকে দেখে তার মধ্যে বেদনার গন্ধ অনুভব করেছেন। আসলে পাড়াগাঁর দ্বিপ্রহরে এক বিষণ্ণ প্রকৃতিকে কবি দেখেছেন। তিনি দেখেছেন শুকনো ঝরা পাতা, শালিকের স্বর, ভাঙা মঠ, নকশা পাড়ের মেয়েটির হলুদ পাতার মতো সরে যাওয়া আর ঝাঁঝরা হয়ে যাওয়া ডিঙি নৌকো। কবি বোঝাতে চেয়েছেন আসলে প্রতিদিনই প্রকৃতি বিনষ্ট হয়ে চলেছে। এই নষ্ট হয়ে যাওয়া পৃথিবীর কান্নার ছবি সর্বত্র ছড়িয়ে আছে। তাই প্রতি মুহূর্তে ক্ষয় হওয়া প্রকৃতি আকাশের নীচে যেন কেঁদে চলেছে। 

১৪) ‘পাড়াগাঁর দু-পহর ভালোবাসি’ শীর্ষক কবিতাটি ‘রূপসী বাংলা’ কাব্যগ্রন্থের কতসংখ্যক কবিতা? ‘পাড়াগাঁর দু-পহর ভালোবাসি’ কবিতায় কবি জীবনানন্দের কবি মানসিকতার পরিচয় কীভাবে ধরা দিয়েছে তা বুঝিয়ে দাও। 

উঃ ‘পাড়াগাঁর দু-পহর ভালোবাসি’ শীর্ষক কবিতাটি ‘রূপসী বাংলা’ কাব্যগ্রন্থের পঁচিশ সংখ্যক কবিতা। কবি জীবনানন্দ দাশ তাঁর এই কবিতায় গ্রাম বাংলার একটি চিত্র সুচারুভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। কবি তাঁর এই কবিতায় পাড়াগাঁয়ের দুপুরবেলার একটি অন্যরকম ছবি আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন। তিনি দেখিয়েছেন দুপুরবেলা পৃথিবীর সব কিছু শান্ত থাকে, প্রকৃতি যেন একটা অন্য জগতে বিচরণ করে। সেখানে কোনো মানুষ নেই প্রকৃতিই সেখানে বিদ্যমান। সাধারণত জীবনের ফেলে আসা দিনগুলোর স্মৃতি নির্জনতার মাঝেই মানুষের মনকে নাড়া দেয়, বেদনার্ত করে তোলে। কবির মনের যে বেদনা তা যেন আমরা প্রকৃতির মধ্যে দেখতে পাই। কবি ভালোবাসেন পাড়াগাঁয়ের দুপুর। তাঁর হৃদয়ে যে স্বপ্ন রয়েছে তার কথা জানে এই দুপুর, দুপুরের প্রান্তর এবং প্রান্তরে উড়ে চলা শঙ্খচিল। তাদের কাছে কবি যেন এই জন্ম নয় বহু দুর থেকে আগত জন্মের কথা জানতে পারেন। 

কবি যেন শুষ্ক পাতা, শালিখের ডাক আর ভাঙা মঠের মধ্যে তাঁর সেই পুরোনো স্বপ্নকে খুঁজে পান; যে স্বপ্নে বেদনা আছে। কবির সেই নকশাপেড়ে শাড়ি পরা বালিকা যে রৌদ্রের ভিতর দৌড়ে পালায় তার কথা মনে পড়ে। তিনি সেই মেয়েটির প্রতি আকর্ষণ বোধ করেন। মেয়েটি যেন বহু পুরাতন স্মৃতির মধ্যে বেদনার মতো কবির চোখের সামনে থেকে সরে যায়। চোখের সামনে নুয়ে পড়া বুনো চালতার ডাল যার প্রতিবিম্ব জলে দেখা যায় কিংবা সেই ডিঙি নৌকো যা হিজল গাছে বাঁধা। যার কোনো মাঝি নেই, মালিক নেই, অব্যবহারে সেটি জীর্ণ হয়ে গেছে।

এইসব কিছুর মধ্যে কবি বেদনা খুঁজে পান। দুপুরের ঝিমিয়ে পড়া রোদে কবি যেন তাঁর দূরাগত স্বপ্নের সন্ধান পান। এমন স্বপ্ন যাতে রয়েছে বেদনার ছোঁয়া। এই সব দৃশ্য কবিই শুধুমাত্র হৃদয় দিয়ে অনুভব করেন, আর তা লেখনীর মধ্যে দিয়ে পাঠকের মনে কাব্য ও ছন্দের সপ্তার ঘটায়। 

এভাবেই কবিতায় কবি মানসিকতার পরিচয় পাওয়া যায় । 

১৫) কবিতাটির গঠন – প্রকৌশল আলোচনা করো। 

উঃ জীবনানন্দ দাশ আধুনিক বাংলা কবিতার অন্যতম দিশারী। রবীন্দ্রনাথের পরবর্তী যুগের এই কবিকে যুগসন্ধিক্ষণের কবিরূপে চিহ্নিত করা হয়। কবি জীবনানন্দ দাশের লেখা আলোচ্য কবিতাটি একটি আধুনিক গদ্যধর্মী কবিতা। কবিতায় কবি গ্রামের বিপ্রাহরিক চিত্রটি কোনো রূপকল্প ছাড়াই সহজ ভঙ্গিতে ব্যক্ত করেছেন। কবি তাঁর কবিতায় প্রতিটি পঙ্ক্তিতে তাঁর মনের বেদনার কথা গদ্যরূপে ব্যক্ত করেছেন।

সমগ্র কবিতাটি দুটি স্তবকে বিভক্ত। কিন্তু দুটি স্তবকের আলাদা আলাদা বস্তুব্য নেই। দুটি স্তবক এমনভাবে লেখা হয়েছে যেন স্তবকটির ভেতরের বক্তব্য মিলেমিশে একই কথা বলেছে। একটি স্তবকের বক্তব্য পরবর্তী স্তবকের মধ্যে সঞ্চারিত হবার ফলে পুরো কবিতাটিই একটি স্তবকের ওপরই লেখা হয়েছে বলে মনে হয়েছে। কবিতাটিতে কবি প্রচলিত রচনারীতির অনুসরণ করেন নি। সনেটধর্মী কবিতাটির চৌদ্দটি চরণের মধ্যে বারোটি চরণে ২২ টি করে বর্ণ ব্যবহার করা হলেও চতুর্থ ও সপ্তম চরণে যথাক্রমে ২১ টি ও ২৩ টি বর্ণ ব্যবহার করা হয়েছে, যা চতুর্দশপদী কবিতার ক্ষেত্রে একটি ত্রুটি। 

১৬) ‘গন্ধ লেগে আছে রৌদ্রে যেন ভিজে বোনার’ — কবিতায় কীভাবে এই অপরূপ বিষণ্ণতার স্পর্শ এসে লেগেছে তা যথাযথ পক্তি উদ্ধৃত করে আলোচনা করো। 

উঃ পাঠ্য কবিতাটি একটি বিষণ্ণতার কবিতা সমগ্র কবিতায় কবির বিষণ্ণতা ছড়িয়ে আছে। কবিতায় কবি যেন এক দূরাগত স্বপ্নের কথা, বেদনার কথা ব্যক্ত করেছেন। তাঁর সেই স্বপ্ন বেদনা জাগায়। কবিতায় কবি নানা স্থানে তাঁর বিষণ্নতার কথা তুলে ধরেছেন। যেমন- একস্থানে তিনি বলেছেন ‘স্বপ্নে যে বেদনা আছে’ অর্থাৎ কবিতায় কবি যা দেখাতে চেয়েছেন তা হলো, স্বপ্নে থাকা বেদনা কেবল তাঁরই নয়, এই বেদনা শুকনো পাতা, শালিকের কন্ঠস্বর, ভাঙা মঠ সব কিছুর মধ্যেই সঞ্চারিত হচ্ছে।

আবার যখন কবি বলছেন যে, ‘ভিঙিও ভাসিছে কার জলে’ তখন সেখানে কবির নিঃসঙ্গতা পরিস্ফুট হচ্ছে। কবির মন যেন হিজলগাছের ডালে বাঁধা ডিঙি নৌকাটির মতো একাকী। সেই নৌকো যার কেউ মালিক নেই, কেউ কখনো যার খোঁজ করে না। কবি যেন সেই ডিঙি নৌকোটির মতোই একা নিঃসঙ্গ। সেই নিঃসঙ্গতা বারেবারে যেন তাঁকে বেদনাহত করে। সমগ্র কবিতা জুড়েই কবির বিষণ্ণতা ছড়িয়ে পড়েছে। এই বিষণ্ণতার অপরূপ ছবি টুকরো টুকরোভাবে গোটা কবিতায় চিহ্নিত হয়েছে।

অষ্টম শ্রেণি বাংলা অধ্যায়ভিত্তিক MCQ প্রশ্নের MOCK TEST প্রদান করতে নিম্নের লিঙ্কটি অনুসরণ করতে হবে

click here

 অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ লিঙ্কঃ

শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের কিছু গুরুত্বপূর্ণ লিঙ্ক নিম্নে প্রদান করা হলোঃ

শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের সকল প্রকার নোট, সাজেশন, প্রশ্নপত্র ও মক টেষ্টের সুবিধা গ্রহণ করতে নিম্নের ছবিতে ক্লিক/টাচ করে বিষদ তথ্য জেনে নাওঃ 

paid courses

You cannot copy content of this page

Need Help?