আকাশে সাতটি তারা কবিতার গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর

আকাশে সাতটি তারা কবিতার গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর

শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের পক্ষ থেকে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য আকাশে সাতটি তারা কবিতার গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর প্রদান করা হলো। শিক্ষার্থীরা এই আকাশে সাতটি তারা কবিতার গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর সমাধানের মধ্য দিয়ে তাদের পাঠ্য আকাশে সাতটি তারা কবিতাটি সম্পর্কে সম্যক ধারণা লাভ করতে পারবে। আকাশে সাতটি তারা কবিতার গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর পাঠ করে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা তাদের পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত হতে পারবে। 

শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের সকল প্রকার আপডেট লাভ করতে মোবাইল স্ক্রিনের বা’দিকের নিম্নের অংশে থাকা বেল আইকনটিতে (🔔) টাচ করে শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের নোটিফিকেশন অন করে রাখুন। 

আকাশে সাতটি তারা কবিতার গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তরঃ 

আকাশে সাতটি তারা কবিতার MCQ প্রশ্নের উত্তরঃ 

১) ‘আকাশে সাতটি তারা’ কবিতার রচয়িতা হলেন- জীবনানন্দ দাশ 

২) ‘আকাশে সাতটি তারা’ কবিতাটি যে কাব্যগ্রন্থ থেকে গৃহীত হয়েছে- রূপসী বাংলা 

৩) কামরাঙা লাল মেঘকে তুলনা করা হয়েছে- মৃত মনিয়ার সঙ্গে 

৪) ‘আসিয়াছে শান্ত অনুগত’- নীল সন্ধ্যা

৫) নীল সন্ধ্যাকে কবি তুলনা করেছেন- কেশবতী কন্যার সঙ্গে 

৬) ‘এ কন্যারে দেখে নি কো’- পৃথিবীর কোনো পথ

৭) রূপসীর চুলের বিন্যাসে যা ঝরে- স্নিগ্ধ গন্ধ 

৮) ধানের গন্ধ হলো- নরম 

৯) চাঁদা-সরপুঁটিদের ঘ্রাণ- মৃদু 

১০) ‘কিশোরের পায়ে দলা’- মুথা ঘাস 

১১) লাল লাল ফলগুলি- বটের 

১২) ‘হাঁসের পালক, শর, পুকুরের জল’- এসবের মাঝে আছে- বাংলার প্রাণ 

 

আকাশে সাতটি তারা কবিতার SAQ প্রশ্নের উত্তরঃ  

১) ‘… মেঘ যেন মৃত মনিয়ার মতো/ গঙ্গাসাগরের ঢেউয়ে ডুবে গেছে’ – মেঘের রং কী?

উঃ মেঘের রঙ কামরাঙা ফলের মতো লাল।

২) বাংলার সন্ধ্যাকে কবি ‘শান্ত অনুগত’ বলেছেন কেন?

উঃ প্রকৃতির শান্ত – স্নিগ্ধ রূপ বোঝানের জন্য কবি ‘শান্ত অনুগত’ শব্দবন্ধ ব্যবহার করেছেন।

৩) ‘আকাশে সাতটি তারা’ – কবিতায় কোন্‌ কোন্‌ গাছের কথা উল্লেখ রয়েছে?

উঃ ‘আকাশে সাতটি তারা’ কবিতায় ‘হিজল, কাঁঠাল এবং জাম’ গাছের উল্লেখ আছে।

৪) “বাংলার নীল সন্ধ্যা” – কেমনভাবে আসে কবির কাছে?

উঃ বাংলা নীল সন্ধ্যা কবির কল্পনায় ‘কেশবতী কন্যার’ মত আসে।

৫) কবির ‘চোখের’ পরে’, ‘মুখের’ পরে’ কী ভাসে?

উঃ কবির ‘চোখের’ পরে’, ‘মুখের’ পরে’ কেশবতী কন্যার চুল অর্থাৎ বাংলার নীল সন্ধ্যার ছবি ফুটে ওঠে।

৬) কিশোরীর চালধোয়া হাত কেমন ছিল?

উঃ কিশোরীর চালধোয়া হাত ছিল ভিজে এবং শীতল।

৭) কামরাঙা – লাল মেঘ কোথায় ডুবে গেছে?

উঃ কামরাঙা- লাল মেঘ মৃত মনিয়ার মতো গঙ্গা সাগরে ডুবে গেছে।

৮) কবি ‘আকাশে সাতটি তারা’ কবিতায় কিশোরীর কথা কিভাবে উল্লেখ করেছেন?

উঃ কবি কিশোরীর চাল ধোয়া ভিজে হাতের কথা উল্লেখ করেছেন।

৯) কিশোর পায়ে কি দলছে?

উঃ কিশোর পায়ে মুথাঘাস দলছে।

১০) কবি সন্ধ্যাকে কি বলেছেন?

উঃ কবি সন্ধ্যাকে শান্ত অনুগত সন্ধ্যা বলে উল্লেখ করেছেন।

 

আকাশে সাতটি তারা কবিতার সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তরঃ  

১) ‘আমি এই ঘাসে বসে থাকি’ – কোন সময়ে কবি ঘাসে বসে থাকেন? তখন প্রকৃতির কেমন রূপ তাঁর চোখে ধরা পড়ে?

উৎসঃ

“রূপসী বাংলা”র চিত্ররূপময় কবি “জীবনানন্দ দাশ” রচিত “আকাশে সাতটি তারা” কবিতায় কবি বাংলার সন্ধ্যা প্রকৃতির এক রূপময় চিত্র অঙ্কন করেছেন।

যে সময়ে কবি ঘাসে বসে থাকেনঃ 

আকাশে যখন সপ্তর্ষিমণ্ডল ফুটে ওঠে, তখন কবি ঘাসে বসে থাকেন।

কবির চোখে প্রকৃতির রূপঃ 

তিনি সন্ধ্যা নেমে আসাকে অনুভব করেন। নীল সন্ধ্যার আবেশ তাঁর মনকে স্পর্শ করে। তাঁর মনে হয় কোনো এক কেশবতী কন্যা, কেশরাজি বিস্তার করে পৃথিবীর বুকে সন্ধ্যার অন্ধকারকে নামিয়ে আনছে। তাঁর সেই চুলের স্পর্শ যেন কবি অনুভব করেন তাঁর চোখে মুখে।

 

২) ‘পৃথিবীর কোনো পথ এ কন্যারে দেখে নি কো’ – উদ্ধৃতাংশে কোন্‌ কন্যার কথা বলা হয়েছে? পৃথিবীর কোনো পথ তাকে দেখেনি কেন? 

উৎসঃ

“রূপসী বাংলা”র চিত্ররূপময় কবি “জীবনানন্দ দাশ” রচিত “আকাশে সাতটি তারা” কবিতায় কবি বাংলার সন্ধ্যা প্রকৃতির এক রূপময় চিত্র অঙ্কন করেছেন।

যে কন্যার কথা বলা হয়েছেঃ 

উদ্ধৃতাংশে ‘কেশবতী কন্যা’র কথা বলা হয়েছে।

পৃথিবীর কোনো পথের না দেখার কারণঃ 

সন্ধ্যের অন্ধকারকে ধীরে ধীরে গ্রামবাংলার প্রকৃতির বুকে নেমে আসতে দেখছেন কবি । অন্ধকার নেমে আসছে হিজল, কাঁঠাল, জাম গাছের উপরে। কবি কল্পনা করছেন আকাশে আছে এক রূপসী কেশবতী কন্যা, সেই রমণীর আলুলায়িত কেশ যেন স্পর্শ করছে এই গাছের মাথাকে। কবি তাঁর মাথার উপরে এই রূপসী কন্যার চুলের স্পর্শ অনুভব করেছেন। এই কন্যা কবির কল্পনা। তাই বাস্তব পৃথিবীর পথে এই কন্যাকে কোনো দিন দেখতে পাওয়া যায় না। সে শুধুমাত্র কবির কল্পনাতে মূর্ত হয়ে আছে।

 

৩) “আসিয়াছে শান্ত অনুগত বাংলার নীল সন্ধ্যা” – সন্ধ্যাকে নীল বলার যুক্তি কোথায়?

উৎসঃ

“রূপসী বাংলা”র চিত্ররূপময় কবি “জীবনানন্দ দাশ” রচিত “আকাশে সাতটি তারা” কবিতায় কবি বাংলার সন্ধ্যা প্রকৃতির এক রূপময় চিত্র অঙ্কন করেছেন।

সন্ধ্যাকে নীল বলার যুক্তিঃ

কবি বলেছেন রক্তিম সূর্য অস্ত গেছে। আকাশের রক্তাভ আভা মিলিয়ে গিয়ে আকাশ এখন নীল। এখন দিন ও রাত্রির সন্ধিক্ষণ। সূর্যের রক্তিম ছটাও যেমন নেই, তেমনি রাত্রির গাঢ় অন্ধকারও এখনো নেমে আসেনি, আকাশে সপ্তর্ষিমণ্ডল এখন জ্বলজ্বল করেছে। আকাশ এখন মেঘমুক্ত ঝকঝকে নীল, তাই কবি সন্ধ্যাকে নীল বলেছেন।

 

৪) “আমি এই ঘাসে বসে থাকি” – আমি কে? তিনি এই ঘাসে বসে থাকেন কেন?

উৎসঃ

“রূপসী বাংলা”র চিত্ররূপময় কবি “জীবনানন্দ দাশ” রচিত “আকাশে সাতটি তারা” কবিতায় কবি বাংলার সন্ধ্যা প্রকৃতির এক রূপময় চিত্র অঙ্কন করেছেন।

‘আমি’ বলতে যাকে বোঝানো হয়েছেঃ 

আমি বলতে এখানে কবি জীবনানন্দ দাশকে বোঝানো হয়েছে।

তার ঘাসে বসে থাকার কারণঃ 

কবি প্রকৃতি প্রেমী। গ্রাম বাংলার রূপের সঙ্গে তাঁর মনের নিবিড় যোগাযোগ গড়ে উঠেছে। গ্রামবাংলা যেন তারই সত্ত্বার আরেক রূপ। সূর্যে অস্ত গেছে ‘নীল সন্ধ্যা’ নেমে আসছে, আকাশে সপ্তর্ষিমণ্ডল ফুটে উঠেছে। ধীরে ধীরে সন্ধ্যা নেমে আসছে, তিনি ঘাসের উপর বসে পৃথিবীর বুকে এই সন্ধ্যে নেমে আসার ক্ষণটাকে অনুভব করছেন।

 

৫) ‘কামরাঙা লাল মেঘ’ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন?

উৎসঃ

“রূপসী বাংলা”র চিত্ররূপময় কবি “জীবনানন্দ দাশ” রচিত “আকাশে সাতটি তারা” কবিতায় কবি বাংলার সন্ধ্যা প্রকৃতির এক রূপময় চিত্র অঙ্কন করেছেন।

কামরাঙা লাল মেঘের পরিচয়ঃ

কামরাঙা আমাদের বাংলার একটা ফল। কাঁচা অবস্থায় এই ফলটির রং সবুজ হলেও পরিপক্ক অবস্থায় এটি সিঁদুরে লাল রঙে পরিণত হয়। সূর্য যখন অস্তমিত হতে চলেছে, তখন সূর্যের লাল রঙের আভায় আকাশের মেঘও রক্তিম বর্ণ ধারণ করেছে। যা কবিকে লাল কামরাঙার লাল রঙের কথা মনে করিয়ে দিয়েছে। তাই কবি বলেছেন- ‘কামরাঙা লাল মেঘ’। 

 

আকাশে সাতটি তারা কবিতার বড়ো প্রশ্নের উত্তরঃ  

১) আকাশে সাতটি তারা কবিতায় কবি বাংলার সন্ধ্যার যে চিত্র এঁকেছেন তা উল্লেখ করো।

উৎসঃ

“রূপসী বাংলা”র চিত্ররূপময় কবি “জীবনানন্দ দাশ” রচিত “আকাশে সাতটি তারা” কবিতায় কবি বাংলার সন্ধ্যা প্রকৃতির এক রূপময় চিত্র অঙ্কন করেছেন।

কবিতায় সন্ধ্যার চিত্রঃ

ঘনায়মান সন্ধ্যায় যখন আকাশে সাতটি তারা ফুটে উঠেছে তখন কবি ঘাসের উপর বসে প্রকৃতির এই অপরূপ রূপলাবণ্য প্রত্যক্ষ করেছেন-

“আমি এই ঘাসে বসে থাকি”

অস্তমিত সন্ধ্যা সূর্যের আলোয় গঙ্গা সাগরের বুকে ডুবে যাওয়া মেঘকে তিনি কামরাঙা লাল বর্ণে দেখে তাকে মৃত মনিয়া পাখির সঙ্গে তুলনা করেছেন-

“কামরাঙা-লাল মেঘ যেন মৃত মনিয়ার মতো

গঙ্গাসাগরের ঢেউয়ে ডুবে গেছে”

বাংলার সন্ধ্যাকে কবি প্রত্যক্ষ করেছেন শান্ত অনুগত রূপে-

“আসিয়াছে শান্ত অনুগত

বাংলার নীল সন্ধ্যা”

মায়াময় এই সন্ধ্যাকে কবি কেশবতী কণ্যার সঙ্গে তুলনা করেছেন; যার চুলের স্পর্শ তিনি তার চোখে-মুখে যেন অনুভব করেছেন-

“আমার চোখের ’পরে আমার মুখের ’পরে চুল তার ভাসে”

কবির চোখে বাংলার যে সৌন্দর্য ধরা পরেছে তা পৃথিবীর আর কোথাও কেউ কখনো প্রত্যক্ষ করে নি বলেই কবির মনে হয়েছে।সন্ধ্যার শান্ত স্নিগ্ধ পরিবেশে হিজল-কাঠাল-জাম গাছ, নরম ধান, কলমির ঘ্রাণ, হাঁসের পালক, পুকুরের জল, চাঁদা-সরপুঁটিদের মৃদু ঘ্রাণে বঙ্গ প্রকৃতির প্রাণের সন্ধান কবি লাভ করেছেন-

“এরই মাঝে বাংলার প্রাণ”

কিশোরের পায়ে দলা মুথাঘাস, লাল লাল বটের ফলের ব্যথিত গন্ধের ক্লান্ত নীরবতায় বাংলার রূপময় সন্ধ্যা যেন আরো অপরূপ হয়ে ওঠে, যা কবির অনবদ্য কবিপ্রতিভায় আমাদের কাছে চিত্ররূপ লাভ করেছে।

২) ‘… আকাশে সাতটি তারা যখন উঠেছে ফুটে আমি পাই টের।’- আকাশে সাতটি তারা ফুটে উঠলে কবি কী টের পান?

উৎসঃ

“রূপসী বাংলা”র চিত্ররূপময় কবি “জীবনানন্দ দাশ” রচিত “আকাশে সাতটি তারা” কবিতায় কবি বাংলার সন্ধ্যা প্রকৃতির এক রূপময় চিত্র অঙ্কন করেছেন।

কবি যা টের পানঃ 

কবি প্রকৃতিপ্রেমী, প্রকৃতির সঙ্গে তাঁর মনের নিবিড় যোগ আছে। সূর্য অস্ত যাবার পরে যখন গ্রামবাংলার বুকে সন্ধ্যা নেমে আসে, আকাশে সাতটি তারা ফুটে ওঠে, তা কবির মনকে ছুঁয়ে যায়। প্রকৃতির সেই রূপ, প্রকৃতির সেই গন্ধ কবির খুবই পরিচিত। কবি যদি দূরেও থাকেন তবুও তিনি মানসচক্ষে সেই রূপকে পরিলক্ষিত করতে পারেন। গ্রাম বাংলার বুকে সন্ধ্যে ধীরে ধীরে নেমে আসার চিত্র কবি বহুবার দেখেছেন। তাঁর মনের গভীরে, তাঁর অনুভূতির সঙ্গে, গ্রামবাংলা মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে। বাংলার ধানের গন্ধ, কলমি শাকের গন্ধ, পুকুরের জলের গন্ধ, হাঁসের পালকের গন্ধ, চাঁদা- সরপুঁটি মাছের বিশেষ ধরনের গন্ধ, কিশোরীর চাল ধোয়ার হাতের গন্ধ, মুথাঘাস পায়ের চাপে দলিত হওয়ার যে গন্ধ, সেইসব গন্ধের মধ্যেই মিশে আছে গ্রাম বাংলা। এই সব কিছুই বাংলার রূপ। এইসব কিছুর সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জুড়ে আছে গ্রাম বাংলা। কবি যেখানেই থাকুন না কেন আকাশে সাতটি তারা উঠলে কবি গ্রাম বাংলা এই রুপ অনুভব করেন বা ‘টের’ পান।

 

৩) “যেন মৃত মনিয়ার মতো” – কার সঙ্গে মৃত মনিয়ার তুলনা করা হয়েছে? তুলনাটির যথার্থতা বিচার করো।

উৎসঃ

“রূপসী বাংলা”র চিত্ররূপময় কবি “জীবনানন্দ দাশ” রচিত “আকাশে সাতটি তারা” কবিতায় কবি বাংলার সন্ধ্যা প্রকৃতির এক রূপময় চিত্র অঙ্কন করেছেন।

যার সঙ্গে মৃত মনিয়ার তুলনা করা হয়েছেঃ 

সন্ধ্যা নেমে আসছে পশ্চিম দিগন্তে সূর্য অস্ত যাচ্ছে। সূর্যের লাল আভা আকাশকে রক্তাভ করে তুলেছে। এই রক্তরাঙা আকাশকে কবি মৃত মুনিয়ার সঙ্গে তুলনা করেছেন।

তুলনার যথার্থতা বিচারঃ 

কবিতায় মুনিয়ার অর্থ আমাদের কাছে মনিয়া বা মুনিয়া পাখি মনে হলেও প্রকৃত পক্ষে কবি সেই অর্থে মুনিয়া শব্দটি ব্যবহার করে নি। আসলে ‘মনিয়া’র উৎস একটি গ্রিক-ল্যাটিন শব্দ। গ্রিক menos শব্দের অর্থ নিঃসঙ্গ বালক, ল্যাটিন monica-র অর্থ শিশুকন্যা। এমনকি পর্তুগিজ ভাষায় এই menos / monica পরিবর্তিত হয়ে menina-তে পরিণত হয়েছে। অনুমান করা যায় আরবি ভাষায় এই menina থেকেই মুনিয়া শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে এবং আরবি ভাষার প্রভাবে বরিশাল, চট্টগ্রামের বাংলা ভাষায় এই শব্দটিও অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। তাই মনিয়া-র অর্থ পাখি নয়, কন্যাসন্তান। জীবনানন্দের দিনলিপি থেকে জানা যায় মনিয়া আসলে সৈদপুরের এক পাদ্রী এবং এক হিন্দু রমণীর কন্যা। কবির স্মৃতিতে ছিল বাংলার প্রাচীন গঙ্গাসাগরে সন্তান বিসর্জনের প্রথার কথা।

এই কন্যাসন্তান মনিয়াও যেন গঙ্গাসাগরের ঢেউয়ে ডুবে গেছে। আর লাল রঙ যেন সেই কন্যার মৃত্যুকে ইঙ্গিত করেছে। মনিয়ার মতো কন্যারা যেভাবে গঙ্গাসাগরের অতলে ডুবে যায় নিঃশব্দে, তেমনই আকাশের হলুদাভ লাল মেঘ দিগন্তের ওপারে ঢেউয়ের গভীরে যেন ডুবে গেছে।

 

৪) “এরই মাঝে বাংলার প্রাণ” – বাংলার প্রাণস্পন্দন কবি কিভাবে উপলব্ধি করেছেন?

উৎসঃ

“রূপসী বাংলা”র চিত্ররূপময় কবি “জীবনানন্দ দাশ” রচিত “আকাশে সাতটি তারা” কবিতায় কবি বাংলার সন্ধ্যা প্রকৃতির এক রূপময় চিত্র অঙ্কন করেছেন।

কবির চোখে বাংলার প্রাণস্পন্দনঃ 

কবি তাঁর এই কবিতার মাধ্যমে গ্রাম বাংলার সান্ধ্যকালীন রূপ ফুটিয়ে তুলেছেন। সবুজ ঘাসে বসে তিনি সন্ধ্যার এক অপরূপ দৃশ্য উপভোগ করেন। সন্ধ্যার আকাশে সাতটি তারা ফুটে ওঠে। সূর্যের অস্ত যাওয়ার পরবর্তী সময়ের লাল বর্ণের আকাশের রং তাঁকে গঙ্গা সাগরের জলের অতলে ডুবে যাওয়া বিসর্জিত কন্যাকে মনে করায়। ধীরে ধীরে সন্ধ্যা সম্পূর্ণ ভাবে নেমে আসে, কোনরূপ চঞ্চলতাহীন সন্ধ্যা যেন প্রকৃতির শান্ত-অনুগত। সন্ধ্যার রং-কে কবির নীল বলে মনে নয়, কবি কল্পনা করেন এ যেন এক ‘কেশবতী কন্যা’। এই কল্পিত কন্যার চুলে স্পর্শ করে কবির চোখ-মুখ। বাংলার পরিচিত গাছ হিজল, কাঁঠাল, জাম গাছেরাও এই কন্যার স্পর্শ থেকে বঞ্চিত হয় না।

সন্ধ্যাকালীন অপরূপ মায়াময় স্নিগ্ধ গন্ধে ভরে ওঠে চারপাশ। নরম ধানের গন্ধ, কলমীর ঘ্রান, হাসের পালক, শর, পুকুরের জল, চাঁদা-শরপুটিদের মৃদু ঘ্রান, কিশোরীর চাল ধোয়া ভিজে হাত, কিশোরের পায়ে দলা মুথাঘাস, লাল বট ফলের ব্যথিত নীরবতা, পল্লীগ্রামের পরিচিত সব বিশেষ মুহূর্ত, ঘটনা কবির প্রাণকে ছুঁয়ে যায়। তাঁর মনের গভীরে, তাঁর অনুভূতির সঙ্গে, গ্রামবাংলা মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়।

আর এর মাঝেই কবি খুঁজে পান বাংলার প্রাণ।  

 

আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ বড়ো প্রশ্নের উত্তরের লিঙ্ক নিম্নে প্রদান করা হলোঃ

“এরই মাঝে বাংলার প্রাণ”- ‘এরই মাঝে’ বলতে কবি কী বোঝাতে চেয়েছেন? ৫

উত্তর দেখতে এই লিঙ্কে ক্লিক/টাচ করতে হবে

“আমি পাই টের”- ‘আমি’ কে? উদ্ধৃতাংশটির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে কবির মনোভাব ব্যক্ত করো। ১+৪

উত্তর দেখতে এই লিঙ্কে ক্লিক/টাচ করতে হবে

নবম শ্রেণি বাংলা নোটঃ 

এই ওয়েবসাইটে পঞ্চম, ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম, নবম, দশম, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা বিষয়ের অন্তর্গত পাঠ্য বিষয়ের সাথে সাথে বাংলা ব্যাকরণ ও নির্মিতি, সাহিত্যের ইতিহাস, ভাষা, ভাষাবিজ্ঞান, বাংলা শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতির ইতিহাস প্রভৃতি বিবিধ বিষয়ে বাংলা নোট প্রদান করা হয়েছে। নির্দিষ্ট শ্রেণি নির্বাচন করে সেই শ্রেণির অন্তর্গত বিষয়গুলি দেখা যাবে।

এছাড়াও শিক্ষালয় ওয়েবসাইটে পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে বাংলা, ইতিহাস, ভূগোল ও রাষ্টবিজ্ঞান বিষয়ে MCQ প্রশ্নের মক টেষ্ট প্রদানের ব্যবস্থা, বাংলা বিষয়ের সাজেশন, ভিডিও আলোচনা, গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের সেট, অনলাইন কুইজ, বিবিধ বিভাগ ও আরো অনেক কিছু। শিক্ষার্থীরা ওয়েবসাইটের মেনু অপশন থেকে এই সকল বিভাগগুলি দেখতে পারবে। 

শিক্ষালয় ওয়েবসাইটের সকল প্রকার নোট, সাজেশন, প্রশ্নপত্র ও মক টেষ্টের সুবিধা গ্রহণ করতে নিম্নের ছবিতে ক্লিক/টাচ করে বিষদ তথ্য জেনে নাওঃ 

paid courses

You cannot copy content of this page

Need Help?